বুস্টার নুপেন
আয়াল্ফ পিটার বুস্টার নুপেন (ইংরেজি: Buster Nupen; জন্ম: ১ জানুয়ারি, ১৯০২ - মৃত্যু: ২৯ জানুয়ারি, ১৯৭৭) নরওয়ের অ্যালসান্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী দক্ষিণ আফ্রিকান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও অধিনায়ক ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯২১ থেকে ১৯৩৬ সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে খেলেছেন তিনি।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | আয়াল্ফ পিটার বুস্টার নুপেন | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | অ্যালসান্ড, নরওয়ে | ১ জানুয়ারি ১৯০২|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ২৯ জানুয়ারি ১৯৭৭ জোহেন্সবার্গ, ট্রান্সভাল প্রদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা | (বয়স ৭৫)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | বোলার, অধিনায়ক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৯৮) | ৫ নভেম্বর ১৯২১ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৬ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৮ মে ২০১৮ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে গটেংয়ের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলারের দায়িত্ব পালন করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন বুস্টার নুপেন।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট
সম্পাদনাঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে শক্তিশালী ট্রান্সভাল দলের পক্ষে খেলেছিলেন। ১৯২০-এর দশকের শেষার্ধ্বে ম্যাটিং পিচে তুলনামূলকভাবে দূর্বল ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে মৃত্যুদূতের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। এ সময়ে তার বোলিংয়ে লব্ধ উইকেটগুলোতে চমৎকার শিল্পকর্মের দিকে নিয়ে যায়।
১৯৩১-৩২ মৌসুমের ঘরোয়া ক্রিকেটে চমৎকার বোলিং করেন। মাত্র ৪৩৪ রান দিয়ে ৪৩ উইকেট পান। তন্মধ্যে, গ্রিকুয়াল্যান্ড ওয়েস্টের বিপক্ষে ৯/৪৮ ও ৭/৮৮ লাভ করেছিলেন।[১]
কারি কাপ প্রতিযোগিতায় ট্রান্সভালের পক্ষে ২৯ খেলায় অংশ নিয়ে ১২.৯২ গড়ে ১৯০ উইকেট দখল করেন তিনি। তন্মধ্যে, নয়বার খেলায় দশ বা ততোধিক উইকেট পেয়েছিলেন তিনি।[২]
টেস্ট ক্রিকেট
সম্পাদনা১৯২১-২২ মৌসুম থেকে ১৯৩৫-৩৬ মৌসুম পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল বুস্টার নুপেনের।[৩] এ সময়ে তিনি ১৭ টেস্টে অংশগ্রহণ করতে পেরেছিলেন। ৫ নভেম্বর, ১৯২১ তারিখে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক ঘটে বুস্টার নুপেনের।
১৯২৭-২৮ মৌসুমে নিজ দেশে ইংরেজ দলের বিপক্ষে খেলার জন্যে মনোনয়ন পেয়েছিলেন তিনি। প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ড দল খুব সহজেই ১০ উইকেটে জয় তুলে নেয়।[৪] দ্বিতীয় টেস্টে পূর্ববর্তী খেলার তুলনায় স্বল্প ব্যবধানের পরাজয় ছিল। পরের খেলাতেই টেস্ট সিরিজের ভারসাম্য স্থানান্তরিত হয়ে পড়ে। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়।[৫] এমনকি সিরিজের চতুর্থ টেস্টে ফলাফল আরও পরিবর্তিত হয়ে পড়ে। দক্ষিণ আফ্রিকা চার উইকেটে বিজয়ী হয়। চূড়ান্ত টেস্টে আট উইকেটে জয় পেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা দল সিরিজে সমতা আনে। উভয় দলই দুইটি করে জয় পায়। ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে জর্জ বিসেট দুইটি উইকেট পান। বুস্টার নুপেন পান ৫/৮৩। কিন্তু, ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে জর্জ বিসেট সিরিজের সেরা বোলিংসহ খেলোয়াড়ী জীবনের সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ৭/২৯ গড়েন।[৬] খেলা শেষে বুস্টার নুপেনসহ জর্জ বিসেট, বব ক্যাটারল ও আর্নেস্ট টিল্ডসলেকে কিংসমিড ক্রিকেট গ্রাউন্ডের সীমানায় চারা গাছ রোপণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।[৭]
ইংল্যান্ডের মুখোমুখি, ১৯৩০-৩১
সম্পাদনা১৯৩০-৩১ মৌসুমে পাঁচ টেস্টের সিরিজ খেলার জন্য ইংল্যান্ড দল দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করে। তবে, প্রথম টেস্টে নামি ডিনের অংশগ্রহণ ছিল না। ঐ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক নামি ডিনের দূর্বল ক্রীড়াশৈলীর কারণে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দলকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়। ফলশ্রুতিতে এ সুযোগের সদ্ব্যবহার করেন ও টেস্ট ক্রিকেটে নিজস্ব সেরা বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান। জোহেন্সবার্গে সিরিজের প্রথম টেস্টে ৫/৬৩ ও ৬/৮৭ লাভ করে দলকে ২৮ রানে জয় এনে দেন।[৮] নুপনেকে দল থেকে বাদ দেয়ার শর্তে নামি ডিন খেলতে রাজী হন বলে উইজডেনে উল্লেখ করা হয়।[৯]
এরপর নামি ডিন অধিনায়কের দায়িত্ব পেয়ে সিরিজের দ্বিতীয় ও তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। উভয় খেলাতেই ব্যাট হাতে তেমন কিছু করতে পারেননি। তবে, উভয় খেলাই ড্রয়ে পরিণত হয়। ফলে, তার দল ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে।[১০][১১]
এছাড়াও ড্র হওয়া চতুর্থ টেস্টে ৩/১৪৮ ও ৬/৪৬ লাভ করেন বুস্টার নুপেন।[১২] তবে, দক্ষিণ আফ্রিকায় স্থাপিত প্রথম দুইটি টার্ফ পিচে অনুষ্ঠিত তৃতীয় ও পঞ্চম টেস্ট থেকে নিজকে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত রাখেন।
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনানরওয়েজীয় পরিবারের সন্তান ছিলেন তিনি। শৈশবকালেই তার একটি চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।[১৩] জোহেন্সবার্গের রাজা অষ্টম এডওয়ার্ড স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। এরপর ৪৫ বছর জোহেন্সবার্গে অ্যাটর্নি হিসেবে আইনচর্চায় নিমগ্ন থাকেন।
২৯ জানুয়ারি, ১৯৭৭ তারিখে ৭৫ বছর বয়সে ট্রান্সভাল প্রদেশের জোহেন্সবার্গে বুস্টার নুপেনের দেহাবসান ঘটে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Transvaal v Griqualand West, 1931–32
- ↑ Obituary, Cricketer, April 1977, p. 69.
- ↑ "Buster Nupen"। www.cricketarchive.com। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০১২।
- ↑ "Scorecard: South Africa v England"। www.cricketarchive.com। ১৯২৭-১২-৩১। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০২-২৮।
- ↑ "Scorecard: South Africa v England"। www.cricketarchive.com। ১৯২৮-০১-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০২-২৮।
- ↑ "Scorecard: South Africa v England"। www.cricketarchive.com। ১৯২৮-০২-০৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০২-২৯।
- ↑ "Cricket: The Last Day's Play: Bissett's Fast Bowling"। The Times (44812)। London। ৯ ফেব্রুয়ারি ১৯২৮। পৃষ্ঠা 6।
- ↑ "Scorecard: South Africa v England"। www.cricketarchive.com। ২৪ ডিসেম্বর ১৯৩০। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০১২।
- ↑ "M.C.C. Team in South Africa"। Wisden Cricketers' Almanack। Part II (1932 সংস্করণ)। Wisden। পৃষ্ঠা 649।
- ↑ "Scorecard: South Africa v England"। www.cricketarchive.com। ১ জানুয়ারি ১৯৩১। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০১২।
- ↑ "Scorecard: South Africa v England"। www.cricketarchive.com। ১৬ জানুয়ারি ১৯৩১। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০১২।
- ↑ South Africa v England, Johannesburg, 1930–31 (II)
- ↑ "Mayhem in Queenstown"। ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০১৮।
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে বুস্টার নুপেন (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে বুস্টার নুপেন (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)