বুধ (সংস্কৃত: बुध) হল একটি সংস্কৃত শব্দ যে শব্দের অর্থ হল গ্রহ।[] বুধ হলেন একজন পৌরাণিক চরিত্র। এছাড়া তিনি একজন দেবতাও[] এছাড়াও তিনি আরও অনেক নামে পরিচিত যেমন সৌম্য (সংস্কৃত: सौम्य, অর্থ: চন্দ্রের পুত্র), রোহিনেয় (রোহিণীর পুত্র) এবং Tunga[] তার নামানুসারে সপ্তাহের একটি দিনের নাম বুধবার[]

বুধ
অন্তর্ভুক্তিগ্রহ, নবগ্রহ, দেবতা
গ্রহবুধ
মন্ত্র
গায়ত্রী মন্ত্র: ওঁ সৌম্যরূপায় বিদ্মহে বাণেশায় ধীমহি তন্নোঃ বুধঃ প্রচোদয়াৎ।
প্রণাম মন্ত্র: প্রিয়ঙ্গুকলিকশ্যামং রূপেণাপ্রতিমং বুধম্। সৌম্যং সর্বগুণোপেতং নমামি শশিনঃ সুতম্।।
দিবসবুধবার
ব্যক্তিগত তথ্য
মাতাপিতামাতা: তারা ( বৃহস্পতির পত্নী)
পিতা: চন্দ্র
সঙ্গীইলা[]
সন্তানপুর্রূরূবা (পুত্র)

পরিচিতি

সম্পাদনা

বুধ'কে ভারতীয় গ্রন্থে একজন দেবতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রায়শই তাকে চন্দ্র এবং তারার(বৃহস্পতির পত্নী) পুত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এবং তিনি বিকল্পভাবে দেবী রোহিণী এবং চন্দ্রদেবের পুত্র হিসেবে বর্ণিত হন।[] তার শরীর কিয়দ পিঙ্গল বর্ণের কিংবা সবুজাভ, পিঙ্গল পোশাক পরিহিত। আগুন ও বাতাসের তৈরি তার রথ টেনে নেয় আটটি বাতাসের তৈরি ঘোড়া।[] কিছু অন্য গ্রন্থানুযায়ী, দেবগুরু বৃহস্পতির বহু শিষ্য ছিল। চন্দ্রও ছিলেন ওনার এক শিষ্য। চন্দ্রকে তো সুন্দর মানা হতই বরং সৌন্দর্যের অপর নাম চন্দ্র ছিল। এদিকে দেবাচার্য বৃহস্পতির স্ত্রী তারা ছিলেন পরম সৌন্দর্যের অধিকারিণী। এই দেখে তারাদেবী চন্দ্রের প্রতি মোহিতা হন এবং ওনার স্ত্রী হয়ে যান। বৃহস্পতির বহু বোঝানোর সত্ত্বেও তিনি তার কথা শুনতে রাজি হননা। এই দেখে বৃহস্পতি ও চন্দ্রের মধ্যে মহামারী যুদ্ধের সূচনা ঘটে যাকে তারকাম্যং যুদ্ধও বলে। এবার শত্রুর শত্রুকে মিত্র ভেবে অসুরগুরু শুক্রাচার্য চন্দ্রের পক্ষে হয়ে যান। যেহেতু বৃহস্পতি ছিলেন দেবগুরু, তাই সমগ্র দেবতা ওনারই পক্ষই স্বীকার করলেন। যুদ্ধটির ফলে নেমে আসে প্রলয়। এবার সৃষ্টির রচয়িতা ব্রহ্মা আর চুপ থাকতে পারলেন না। উনি হস্তক্ষেপ করে তারাকে জিজ্ঞাসা করলেন যে যেই শিশুটির তারা জন্ম দিয়েছেন, সে কার পুত্র — চন্দ্রের না বৃহস্পতির ? বহু জিজ্ঞাসা করার পর তারাদেবী স্বীকার করলেন যে এই শিশুটি চন্দ্রের পুত্র। চন্দ্র প্রসন্ন হয়ে শিশুটির নাম রাখলেন বুধ। বুধের গাম্ভীর্যপূর্ণ বুদ্ধির জন্য এনার এই নাম। পরবর্তীকালে চন্দ্রদেব বুধের দায়িত্ব সঁপে দেন ওনার প্রিয় পত্নী রোহিণীকে। তাই বুধদেবকে রৌহিণেয়ও বলা হয়।

বুধদেব পীতবস্ত্র ধারণ করেন এবং ওনাকে বুদ্ধিদাতা ও গন্ধর্বদের প্রণেতাও মানা হয়। সোম অর্থাৎ চন্দ্রের পুত্র বলে বুধের অপর নাম সৌম্য।

শ্রীবুধের বাহন বহু চিত্রে সিংহ দেখানো হয়েছে।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Roshen Dalal (২০১০)। Hinduism: An Alphabetical Guide। Penguin Books India। পৃষ্ঠা 88। আইএসবিএন 978-0-14-341421-6 
  2. Terry Mahoney (২০১৩)। Mercury। Springer Science। পৃষ্ঠা 2। আইএসবিএন 978-1-4614-7951-2 
  3. Mahoney, T. J. (২০১৩-১১-১৮)। Mercury (ইংরেজি ভাষায়)। Springer Science & Business Media। আইএসবিএন 978-1-4614-7951-2