বিজয়চন্দ্র মজুমদার
বিজয়চন্দ্র মজুমদার (২৭ শে অক্টোবর ১৮৬১ — ৩০ শে ডিসেম্বর ১৯৪২) একজন বাঙালি কবি, ভাষাতত্ত্ববিদ প্রত্নতাত্ত্বিক ও গবেষক। তিনি সর্বপ্রথম চর্যাপদের ভাষা নিয়ে আলোচনা করেন।
বিজয়চন্দ্র মজুমদার | |
---|---|
জন্ম | ২৭ শে অক্টোবর ১৮৬১ |
মৃত্যু | ৩০ শে ডিসেম্বর ১৯৪২ |
জাতীয়তা | বাঙালি |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) ভারত |
শিক্ষা | বি এল |
পেশা | কবি, ভাষাতত্ত্ববিদ প্রত্নতাত্ত্বিক ও গবেষক |
নিয়োগকারী | কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক |
পিতা-মাতা |
|
জন্ম ও শিক্ষা জীবন -
সম্পাদনাবিজয়চন্দ্র মজুমদার ২৭ শে অক্টোবর, ১৮৬১ খ্রি. বাংলাদেশের ফরিদপুরের খানাকুলে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতার নাম হরচন্দ্র মজুমদার। হুগলি ব্রাঞ্চ স্কুল থেকে প্রবেশিকা, কলকাতার মেট্রোপলিটন কলেজ থেকে বি এ (১৮৮৫) এবং ১৮৯৫ খি. বি এল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন । সাহিত্য ইতিহাস বিজ্ঞান ও আইনের উপর তার সমান দখল ছিল।[১]
কর্মজীবন
সম্পাদনাকর্মজীবন শুরু করেন বামড়া ফিউডেটরি স্টেটের রাজপুত্রের প্রাইভেট টিউটর (১৮৮৫) হিসাবে। পরবর্তীকালে উক্ত স্টেটের কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট হন। চল্লিশ বৎসরকাল তিনি সোনপুর রাজ্যের আইন-উপদেষ্টার কাজ করেন। পুরী জেলা স্কুলের শিক্ষক (১৮৮৭), সম্বলপুর জেলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক (১৮৯১) এবং পরবর্তীকালে সম্বলপুর ও কলকাতা হাইকোর্টে আইন ব্যবসায় রত থাকেন। সংস্কৃত, পালি, প্রাকৃত ভাষায় সমান দক্ষতা অর্জন করে ছিলেন। ভারতীয় ঐতিহ্য সম্বন্ধে বক্তৃতা দিতে তিনি আমন্ত্রিত হয়ে ১৯০৮ খ্রি. লণ্ডনের মহাধর্ম সম্মেলনে যোগ দেন। অতিরিক্ত পড়াশোনার জন্য ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি অন্ধ হয়ে যান। ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপকরূপে যোগদান করেন। জীবনের শেষভাগে দৃষ্টিশক্তিহীনতা তার জ্ঞান পিপাসা বিন্দুমাত্র কমাতে পারে নি। এই সময়ের মধ্যেই তিনি তার বিখ্যাত ' ওড়িশা ইন মেকিং' গ্রন্থটি প্রধানত বিভিন্ন অনুশাসন লিপি থেকে তথ্য সংগ্রহ করে রচনা করেন (১৯২৫)। অনুশাসন ফলকের উপর হাত বুলিয়ে তিনি তার পাঠোদ্ধার করতে পারতেন। তার স্মৃতিশক্তিও ছিল অসাধারণ। অন্ধ হয়েও তিনি যে অক্লান্ত ও অবিশ্রান্তভাবে সাহিত্য ইতিহাস বিজ্ঞান সম্পর্কে গবেষণা করতে পেরেছেন, অসাধারণ স্মৃতিশক্তি তার প্রধান কারণ। ফাল্গুন ১৩২৮ ব. প্রকাশিত বঙ্গবাণী পত্রিকার সম্পাদনা তিনি ও দীনেশচন্দ্র সেন যৌথভাবে নিষ্পন্ন করতেন। বঙ্গবাণী শেষের চার বছর তিনি একাই সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া 'শারদীয়া বাংলা'(১৩৩৯), 'বার্ষিক শিশুসাথী'(১৩৩৫) সম্পাদনা করেছেন।[২]
সাহিত্যকর্ম
সম্পাদনাতার রচিত কাব্যগ্রন্থ: ফুলশর (১৮৯১), যজ্ঞ ও ভস্ম (১৯৯৮) কবিতা, যুগপূজা, পঞ্চকমালা, হেঁয়ালি, ভারতবর্ষের ইতিহাস (১৯১৫), প্রাচীন সভ্যতা (১৯১৫) এলিমেন্টস অব সোস্যাল অ্যানথ্রোপলজি, অ্যাবরিজিয়নস অব হাইল্যান্ড অব সেন্ট্রাল ইণ্ডিয়া, হিস্ট্রি অব দ্য বেঙ্গলী ল্যাঙ্গুয়েজ প্রভৃতি। থেরীগাথা ও গীতগোবিন্দ যথাক্রমে পালি ও সংস্কৃত থেকে বাংলায় অনুদিত গ্রন্থ।[৩]
মৃত্যু
সম্পাদনা৩০ শে ডিসেম্বর ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে বিজয়চন্দ্র প্রয়াত হন ।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ( প্রথম খণ্ড)। কলকাতার সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ৪৬৫, ৪৬৬।
- ↑ "মজুমদার, বিজয়চন্দ্র - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৮-০৫।
- ↑ "বিজয়চন্দ্র মজুমদার - উইকিসংকলন একটি মুক্ত পাঠাগার"। bn.wikisource.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৮-০৫।