বিজন চৌধুরী

বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত চিত্রশিল্পী

বিজন চৌধুরী ( ২১ নভেম্বর ১৯৩১ – ১৬ মার্চ ২০২২) ছিলেন একজন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি চিত্রশিল্পী[] আদ্যন্থ বামপন্থী বিজন চৌধুরী ছিলেন সোসাইটি অফ কনটেম্পোরারি আর্টিস্টস্ অ্যান্ড ক্যালকাটা পেইন্টার্সের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।[][]

বিজন চৌধুরী
জন্ম(১৯৩১-১১-২১)২১ নভেম্বর ১৯৩১
কালীঘাট কলকাতা ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু১৬ মার্চ ২০১২(2012-03-16) (বয়স ৮০)
পেশাচিত্রশিল্পী
দাম্পত্য সঙ্গী 
সন্তান   
পিতা-মাতাকুঞ্জবিহারী চৌধুরী (পিতা)
বিনোদিনী দেবী (মাতা)       

জন্ম ও শিক্ষা জীবন

সম্পাদনা

বিজন চৌধুরীর জন্ম ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের ২১ নভেম্বর ব্রিটিশ ভারতের কলকাতার কালীঘাটে। পিতা কুঞ্জবিহারী ও মাতা বিনোদিনী দেবী। তাদের পূর্ব নিবাস অধুনা বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার কোটালিপাড়ায়। বিজনের শিক্ষা শুরু কালীঘাটের ওরিয়েন্টাল অ্যাকাডেমিতে। পরে ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ হতে কলকাতার গভর্নমেন্ট কলেজ অব আর্ট অ্যান্ড ক্র্যাফট-এ ১৯৪৫ চিত্রাঙ্কন শিক্ষা নিতে থাকেন।[]

কিন্তু তার মার্কসবাদী বিশ্বাসের কারণে স্নাতক হওয়ার আগেই ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে বহিষ্কার করা হয়। [] ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন প্রতিষ্ঠিত ইন্সটিটিউট অফ আর্টসে (অধুনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ) শিক্ষা সম্পূর্ণ করে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন [][][] ইতিমধ্যে ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে তিনি সরাসরি জড়িয়ে পড়েন ভাষা আন্দোলনে। []

কর্মজীবন

সম্পাদনা

১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ফিরে এসে সক্রিয় অংশ নেন বামপন্থী আন্দোলনে। এক সময় ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন। ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে সোসাইটি অফ কনটেম্পরারি আর্টিস্ট গঠনকারী শিল্পীদের অন্যতম ছিলেন তিনি। ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে নিখিল বিশ্বাস, প্রকাশ কর্মকার, রবীন মণ্ডল, যোগেন চৌধুরী, ধর্ম চৌধুরী প্রমুখকে সঙ্গে নিয়ে বেঙ্গল স্কুল অফ আর্ট- এর ঐতিহ্য থেকে বেরিয়ে এসে ক্যালকাটা পেইন্টার্স প্রতিষ্ঠা করেন। [] সত্তরের দশকের শেষদিকে তিনি ইন্ডিয়ান কলেজ অফ আর্ট অ্যান্ড ড্রাফ্টসম্যানশিপের প্রধান হন। [] দীর্ঘ কয়েক দশক তিনি চারুকলা পর্ষদের সহ-সভাপতি ছিলেন তিনি। কয়েকবছর সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন।

তার শিল্পকর্ম কলকাতা বিমানবন্দর, যুবকেন্দ্র, কলকাতা বন্দরের কমিশনারের কার্যালয় সহ শহরের নানা স্থানে স্থান পেয়েছে। দেশ-বিদেশের সর্বত্রই সমুদ্র পেয়েছে তার ছবি। []

দেশের দিল্লি, পাটনা, কলকাতাসহ নানা জায়গায় শিল্পকর্মের প্রদর্শনী হয়। ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে প্যারিসেও এক ক্ষুদ্রাকৃতির প্রদর্শনী আয়োজিত হয়েছিল। []

পুরস্কার ও সম্মাননা

সম্পাদনা

মৃত্যু

সম্পাদনা

বিশিষ্ট চিত্রকর বিজন চৌধুরী বেশ কিছুদিন বার্ধক্যজনিত বঙ্কো-নিউমোনিয়ায় ভুগছিলেন। ফুসফুস সংক্রমণ হওয়ায় উত্তরপাড়ার এক নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি বেলভিউ নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। ২০১২ খ্রিস্টাব্দের ১৬ মার্চ শুক্রবার ৮০ বৎসর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। []

তার মৃত্যুর পর, বেঙ্গল গ্যালারি অফ ফাইন আর্টস বেঙ্গল গ্যালারী ২০১২ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে তার চিত্রকর্মের একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করে। [][]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, দ্বিতীয় খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, জানুয়ারি ২০১৯ পৃষ্ঠা ২৫১, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-২৯২-৬
  2. Sarkar, Sandip (৭ এপ্রিল ২০০৬)। "Romantic tales of lonely women"The Telegraph। Calcutta। ২০ মে ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  3. "চলে গেলেন বিশিষ্ট চিত্রকর বিজন চৌধুরী"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-১৬ 
  4. Sengupta, Ratnottama (১৯ মার্চ ২০১২)। "Bengal's contemporary art loses a gem"The Times of India। ৩ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  5. "Bijan Choudhury exhibition at Bengal Gallery"দ্য ডেইলি স্টার। Dhaka। ২২ মে ২০১২। 
  6. "বিজন চৌধুরী"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-২৬ 
  7. "বিজন চৌধুরী"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-২৬ 
  8. "Bijan Choudhury's rare paintings on display"Dhaka Mirror। ৩০ মে ২০১২।