ব্যালন ডি’অর
ব্যালন ডি’অর বা মূল ফরাসি উচ্চারণে বালোঁ দর (ফরাসি: Ballon d'Or; আ-ধ্ব-ব: [balɔ̃ dɔʁ]; "সোনার ফুটবল") একটি ফুটবল পুরস্কার যা প্রতি বছর ফরাসি ক্রীড়া সাময়িকী ফ্রঁস ফুতবোল (France Football) প্রদান করে থাকে। এটি ব্যক্তিগত পর্যায়ে ফুটবল খেলোয়াড়দের জন্য সবচেয়ে প্রাচীন পুরস্কারগুলির মধ্যে অন্যতম। [১] পুরস্কারটি ১৯৫৬ সাল থেকে প্রদান করা শুরু হয়। তবে ২০১০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে বিশ্ব ফুটবল সংস্থা ফিফা-র সাথে একটি চুক্তি অনুযায়ী এটিকে ফিফা বিশ্বের বর্ষসেরা ফুটবলার পুরস্কারটির (১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত) সাথে সাময়িকভাবে একীভূত করে দেওয়া হয় এবং একীভূত পুরস্কারটির নাম দেওয়া হয় ফিফা বালোঁ দর। তবে এই অংশীদারিত্ব ২০১৬ সালে সমাপ্ত হবার পর থেকে পুরস্কারটির আবার "বালোঁ দর" নামে ফেরত যায়, এবং ফিফাও নিজস্ব পৃথক একটি পুরস্কারে ফেরত যায়, যার নাম ফিফা সেরা পুরুষ খেলোয়াড়। ফিফা বালোঁ দর বিজয়ীদেরকে ফিফা ও ফ্রঁস ফুতবোল সাময়িকী উভয়েই বিজয়ী হিসেবে গণ্য করে থাকে। [২][৩]
ব্যালন ডি’অর (বালোঁ দর) Ballon d'Or | |
---|---|
তারিখ | ১৯৫৬ |
দেশ | ফ্রান্স |
পুরস্কারদাতা | ফ্রঁস ফুতবোল |
প্রথম পুরস্কৃত | ১৯৫৬ |
বর্তমান বিজয়ী | রোদ্রিগো এর্নান্দেস (১ম পুরস্কার) |
সর্বাধিক পুরস্কার | লিওনেল মেসি (৮ বার) |
সর্বাধিক মনোনয়ন | লিওনেল মেসি ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো (প্রত্যেকে ১৭ বার করে) |
ওয়েবসাইট | francefootball.fr |
ফরাসি ক্রীড়া লেখক-সাংবাদিক গাব্রিয়েল আনো (Gabriel Hanot) এই পুরস্কারটির পরিকল্পনা করেন। পূর্ববর্তী বছর জুড়ে যে পুরুষ খেলোয়াড়টি সবচেয়ে ভাল কৃতিত্ব দেখিয়েছে বলে পরিগণিত হয়, তাকে বালোঁ দর পুরস্কারটি দেওয়া হত। ১৯৫৬ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ফুটবল সাংবাদিকদের ভোটাভুটিতে এটি নির্ধারিত হত।[৪] ২০০৭ সাল থেকে জাতীয় ফুটবল দলসমূহের প্রশিক্ষক ও অধিনায়কদেরকেও ভোটাধিকার প্রদান করা হয়।[৪] আদিতে বালোঁ দর শুধুমাত্র ইউরোপীয় ফুটবল খেলোয়াড়দেরকে প্রদান করা হত এবং এটি সেসময় বর্ষসেরা ইউরোপীয় ফুটবলার পুরস্কার হিসেবে পরিচিত ছিল। ১৯৯৫ সাল থেকে ইউরোপীয় ক্লাবে সক্রিয় যেকোনও জাতীয়তার খেলোয়াড়কে এই পুরস্কারের আওতায় আনা হয়। ২০০৭ সালে সমগ্র বিশ্বের সমস্ত পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড়কে এই পুরস্কারের আওতায় আনা হলে এটি একটি বিশ্ব পুরস্কারে পরিণত হয়।
ব্যালন ডি’অর বিজয়ী ফুটবল খেলোয়াড়দের তালিকা
সম্পাদনাসর্বোচ্চ পুরস্কার বিজয়
সম্পাদনাখেলোয়াড় হিসেবে
সম্পাদনা- যেসব খেলোয়াড় কমপক্ষে একাধিক বার বালোঁ দর (ব্যালন ডি’অর) জিতেছেন
অবস্থান | পুরস্কার | খেলোয়াড় |
---|---|---|
১. | ৮ | লিওনেল মেসি |
২. | ৫ | ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো |
৩. | ৩ | মিশেল প্লাতিনি মার্কো ফন বাস্তেন ইয়োহান ক্রুইফ |
৪. | ২ | ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার আলফ্রেদো দি স্তেফানো কেভিন কিগান রোনালদো কার্ল-হাইন্ৎস রুমেনিগে |
ক্লাব অনুযায়ী
সম্পাদনা- যেসব ক্লাবের খেলোয়াড় কমপক্ষে দু'বার বালোঁ দর (ব্যালন ডি’অর) জিতেছেন।
অবস্থান | ক্লাব | সোনা | রুপা | ব্রোঞ্জ | মোট |
---|---|---|---|---|---|
১ | বার্সেলোনা | ৭ | ৬ | ৪ | ১৭ |
২ | জুভেন্টাস | ৮১/২ | ৫ | ৩ | ১৬১/২ |
৩ | এসি মিলান | ৬ | ৩ | ৬ | ১৫ |
৪ | বায়ার্ন মিউনিখ | ৫ | ৬ | ৫ | ১৬ |
৫ | রিয়াল মাদ্রিদ | ৪১/২ | ৭ | ৪ | ১৫১/২ |
৬ | ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড | ৩ | ৩ | ২ | ৮ |
৭ | ইন্টার মিলান | ২ | ৬ | ৩ | ১১ |
৮ | হ্যামবার্গার এসভি | ২ | ১ | ১ | ৪ |
৯ | ডাইনামো কিয়েভ | ২ | ২ |
দেশ অনুযায়ী
সম্পাদনা- যেসব দেশের খেলোয়াড় কমপক্ষে দুইবার বালোঁ দর (ব্যালন ডি’অর) জিতেছে।
অবস্থান | দেশ | পুরস্কার | বিজয়ী খেলোয়াড় (বছর) |
---|---|---|---|
১ | আর্জেন্টিনা | ৮ | লিওনেল মেসি (২০০৯,২০১০,২০১১,২০১২,২০১৫,২০১৯,২০২১,২০২৩ |
২ | পর্তুগাল | ৭ | ইউসেবিও (১৯৬৫), লুইস ফিগো (২০০০),ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো (২০০৮,২০১৩,২০১৪,২০১৬,২০১৭) |
২ | নেদারল্যান্ডস | ৭ | ইয়োহান ক্রুইফ (১৯৭১, ১৯৭৩, ১৯৭৪), রুড হুলিত (১৯৮৭), মার্কো ফন বাস্তেন (১৯৮৮, ১৯৮৯, ১৯৯২) |
২ | জার্মানি | ৭ | গার্ড ম্যুলার (১৯৭০), ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার (১৯৭২, ১৯৭৬), কার্ল-হাইনৎস রুমেনিগে (১৯৮০, ১৯৮১), লোথার ম্যাথেয়াস (১৯৯০), ম্যাথেয়াস সামার (১৯৯৬) |
২ | ফ্রান্স | ৭ | রেমন্ড কোপা (১৯৫৮), মিশেল প্লাতিনি (১৯৮৩, ১৯৮৪, ১৯৮৫), জিন-পিয়েরে পাপিন (১৯৯১), জিনেদিন জিদান (১৯৯৮), করিম বেঞ্জেমা (২০২২) |
৩ | ইতালি | ৫ | ওমার সিভোরি (১৯৬১), গিয়ান্নি রিভেরা (১৯৬৯), পাওলো রসি (১৯৮২), রবার্তো ব্যাজিও (১৯৯৩), ফ্যাবিও ক্যানাভারো (২০০৬) |
৩ | ইংল্যান্ড | ৫ | স্ট্যানলি ম্যাথিউস (১৯৫৬), ববি চার্লটন (১৯৬৬), কেভিন কিগান (১৯৭৭, ১৯৭৮), মাইকেল ওয়েন (২০০১) |
৩ | ব্রাজিল | ৫ | রোনালদো (১৯৯৭, ২০০২), রিভালদো (১৯৯৯), রোনালদিনহো (২০০৫),কাকা (২০০৭) |
৪ | সোভিয়েত ইউনিয়ন | ৩ | লেভ ইয়েসিন (১৯৬৩); ওলেগ ব্লখিন (১৯৭৫), ইগর বেলানভ (১৯৮৬) |
৫ | স্পেন | ২ | আলফ্রেদো দি স্তেফানো (১৯৫৯), লুইজ সুয়ারেজ (১৯৬০) |
৫ | চেক প্রজাতন্ত্র | ২ | জোসেফ ম্যাসোপাস্ট (১৯৬২), পাভেল নেদভেদ (২০০৩) |
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Tradition helps the high standing of the Ballon d'Or"। AS। ৯ অক্টোবর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০২০।
- ↑ https://www.cambridge.org/core/journals/perspectives-on-politics/article/abs/messi-ronaldo-and-the-politics-of-celebrity-elections-voting-for-the-best-soccer-player-in-the-world/36CB5CB44D4C06866305408163A49290
- ↑ https://www.sportbible.com/football/ballon-dor-votes-lionel-messi-cristiano-ronaldo-665271-20230302?source=facebook&fbclid=IwAR3LI1jGmPSn6t7ceIM-ql4o5eV5meCTB5dcbvPMeTArHAGJnDHlIuzPR_Y
- ↑ ক খ Straeten, Karine van der; Laslier, Jean-François; Daoust, Jean-François; Blais, André; Arrondel, Luc; Anderson, Christopher J. (২০২০)। "Messi, Ronaldo, and the Politics of Celebrity Elections: Voting for the Best Soccer Player in the World"। Perspectives on Politics। 18: 91–110। আইএসএসএন 1537-5927। ডিওআই:10.1017/S1537592719002391 ।