বানৌজা হাতিয়া
বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ (সংক্ষেপেঃ বানৌজা) হাতিয়া বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সন্দ্বীপ-শ্রেণীর একটি ল্যান্ডিং ক্রাফট ইউটিলিটি (এলসিউই) জাহাজ। এই জাহাজটিকে দেশীয় প্রযুক্তিতে খুলনা শিপইয়ার্ডে নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে জাহাজটি ২১ এলসিইউ স্কোয়াড্রন এর অধীনে সামুদ্রিক এবং উপকূলীয় অঞ্চলে উভচর অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি সেনাসদস্য, রসদ, অস্ত্র ও গোলাবারুদ, ট্যাংক, সামরিক যানবাহন এবং বিভিন্ন প্রকার সামরিক সরঞ্জাম পরিবহনে সক্ষম। এছাড়াও জাহাজটি দুর্যোগ কালীন সময়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা ও দুর্যোগ পরবর্তী ত্রাণ তৎপরতা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে।[১][২][৩][৪][৫][৬][৭][৮]
ইতিহাস | |
---|---|
বাংলাদেশ | |
নাম: | বানৌজা হাতিয়া |
নির্মাতা: | খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড |
নির্মাণের সময়: | ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ |
অভিষেক: | ৩০ এপ্রিল, ২০১৫ |
কমিশন লাভ: | ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ |
মাতৃ বন্দর: | চট্টগ্রাম |
শনাক্তকরণ: | এল৯০৪ |
অবস্থা: | সক্রিয় |
সাধারণ বৈশিষ্ট্য | |
প্রকার ও শ্রেণী: | সন্দ্বীপ-শ্রেণীর ল্যান্ডিং ক্রাফট ইউটিলিটি |
ওজন: | ৬০০ টন |
দৈর্ঘ্য: | ৪২ মিটার (১৩৮ ফু) |
প্রস্থ: | ১০ মিটার (৩৩ ফু) |
গভীরতা: | ১.৩০ মিটার (৪.৩ ফু) |
প্রচালনশক্তি: |
|
গতিবেগ: | ১২ নট (২২ কিমি/ঘ; ১৪ মা/ঘ) |
সীমা: | ১,২০০ নটিক্যাল মাইল (২,২০০ কিমি; ১,৪০০ মা) |
সহনশীলতা: | ৭ দিন |
লোকবল: | ২৫ জন |
সেন্সর এবং কার্যপদ্ধতি: |
|
রণসজ্জা: |
|
ইতিহাস
সম্পাদনাসশস্ত্র বাহিনীর জন্য গৃহীত দীর্ঘমেয়াদী আধুনিকায়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার দেশীয় উৎস থেকে সমরাস্ত্র সংগ্রহ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এছাড়াও উপকূলবর্তী নৌঘাঁটিতে চলাচল করার জন্য এসব উভচর জাহাজের প্রয়োজন ছিলো। যুদ্ধ ও শান্তি কালীন সময়ে চট্টগ্রাম, মোংলা, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ এবং তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় উভচর অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি ল্যান্ডিং ফোর্স, ট্যাংক, অস্ত্র, গোলাবারুদ ও রসদ সরবরাহের জন্য এসব জাহাজের প্রয়োজনীয়তা বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয়। সে অনুযায়ী বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য খুলনা শিপইয়ার্ডে জাহাজ নির্মানের পদক্ষেপ নেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সালে তৎকালীন নৌবাহিনী প্রধান ভাইস এডমিরাল এম ফরিদ হাবিব-এনডি, এনবিপি, ওএসপি, বিসিজিএম, এনডিসি, পিএসসি খুলনা শিপইয়ার্ড প্রাঙ্গনে এক অনুষ্ঠানে কিল লেয়িং এর মাধ্যমে জাহাজ নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। জাহাজটি নির্মাণে সম্পূর্ণ প্রজেক্ট ডিজাইন, সাপ্লাই এবং লজিস্টিক ম্যানেজমেন্ট সম্পন্ন করে দেশীয় প্রতিষ্ঠান গোল্ডেন মেরিটাইম টেকনোলজি, ঢাকা। নির্মাণকাজ শেষে ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সালে বানৌজা হাতিয়া বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে কমিশন লাভ করে।
বৈশিষ্ট্য ও যান্ত্রিক কাঠামো
সম্পাদনাবানৌজা হাতিয়া জাহাজটির দৈর্ঘ্য ৪২ মিটার (১৩৮ ফু), প্রস্থ ১০ মিটার (৩৩ ফু) এবং গভীরতা ১.৩০ মিটার (৪.৩ ফু)। এই উভচর জাহাজটির ওজন ৬০০ টন এবং জাহাজটিতে রয়েছে ২টি শ্যাফট ও ২টি ডি১৩ বি-এনএমএইচ ৬০০ অশ্বশক্তি (৪৫০ কিওয়াট) ভলভো পেন্টা ডিজেল ইঞ্জিন (সুইডেন/মেক্সিকো)। জাহাজটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১২ নট (২২ কিমি/ঘ; ১৪ মা/ঘ)। সমুদ্রপৃষ্ঠ অনুসন্ধানের জন্য এটি ১টি ফুরুনো ডিআরএস৪ডব্লিউ র্যাডার (জাপান) এবং ১টি ফুরুনো এফএআর-৩৩২০ চার্ট র্যাডার (জাপান) দ্বারা সজ্জিত। এটি ২৫ জন জনবল নিয়ে একনাগাড়ে ৭ দিন অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি ১১৫ টন কার্গো বহন করতে সক্ষম। এছাড়াও জাহাজটি ৩টি সামরিক ট্যাংক, ২১৫ জন সেনাসদস্য এবং ৬টি সামরিক ট্রাক পরিবহন করতে সক্ষম।
রণসজ্জা
সম্পাদনাদুর্যোগ ও শান্তিকালীন সময়ে সহায়ক ভূমিকায় নিয়োজিত এই জাহাজটিতে রয়েছে:
- ২টি ২০ মিমি বিমান-বিধ্বংসী কামান;
- ৪টি সিআইএস-৫০ ১২.৭ মিমি বিমান-বিধ্বংসী মেশিনগান;
- এছাড়াও যুদ্ধকালীন বিশেষ পরিস্থিতিতে জাহাজটিতে ৬টি ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র কিউডব্লিউ-২ ম্যানপ্যাড মোতায়েন করা যায়।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "LANDING CRAFT UTILITY – Khulna Shipyard Ltd" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-১১-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-২৭।
- ↑ "গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ০৭ (সাত) বছরের অগ্রগতির তথ্য প্রচারের ব্যবস্থাকরণ সম্পর্কিত" (পিডিএফ)। ২০১৬-০৪-০৭। ২০২২-১০-১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-০৭।
- ↑ "প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মংলায় অয়েল ফ্লিট ট্যাঙ্কার কমিশনিং এবং ল্যান্ডিং ক্রাফট ইউটিলিটি (এলসিইউ) সংযুক্তকরণ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন"। pmo.gov.bd/। ২০১৫-০৯-০৬। ২০২১-১২-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-০৭।
- ↑ "বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে বানৌজা কে জে আলী, বানৌজা সন্দীপ ও বানৌজা হাতিয়া এর কমিশনিং, নবনির্মিত এলসিটি-১০৩ ও এলসিটি-১০৫ সংযুক্তিকরণ অনুষ্ঠান"। ২০২১-১২-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-৩০।
- ↑ "বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে । #নৌবাহিনী"। ২৬ মার্চ ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০২৩।
- ↑ "ঘূর্ণিঝড় 'মোখা' মোকাবেলায় উপকূলীয় এলাকার বসবাসকারীদের আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য সতর্ক করছে নৌবাহিনী দুর্যোগ পরবর্তী জরুরি উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য প্রস্তুত নৌবাহিনীর ২১ জাহাজ, হেলিকপ্টার ও এমপিএ"। আইএসপিআর। ২০২৩-০৫-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-২০।
- ↑ "ভাসানচরে পৌঁছাল রোহিঙ্গাদের প্রথম দল"। ২৪ জুন ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০২৩।
- ↑ "প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বার্ষিক প্রতিবেদন ২০১৫-২০১৬ অর্থবছর, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার" (পিডিএফ)। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-১৮।