বানৌজা সাঙ্গু
বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ (সংক্ষেপেঃ বানৌজা) সাঙ্গু বাংলাদেশ নৌবাহিনীর আইল্যান্ড-শ্রেনীর একটি উপকূলীয় টহল জাহাজ। জাহাজটি গভীর সমুদ্র এবং উপকূলীয় অঞ্চলে টহল প্রদান, উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম, অবৈধ অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান রোধ, জলদস্যূতা দমন, মৎস্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম।[১][২][৩][৪][৫]
ইতিহাস | |
---|---|
বাংলাদেশ | |
নাম: | বানৌজা সাঙ্গু |
নির্মাতা: | হাল, রাসেল অ্যান্ড কোম্পানি, অ্যাবেরডিন |
ইয়ার্ড নম্বর: | ৯৭৪ |
নির্মাণের সময়: | ১৪ মে, ১৯৭৬ |
অভিষেক: | ১৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৭ |
অর্জন: | ২০০৪ |
কমিশন লাভ: | ৩ অক্টোবর, ২০০৪ |
মাতৃ বন্দর: | খুলনা |
শনাক্তকরণ: | পি৭১৩ |
অবস্থা: | সক্রিয় |
সাধারণ বৈশিষ্ট্য | |
প্রকার ও শ্রেণী: | আইল্যান্ড-শ্রেণীর টহল জাহাজ |
ওজন: | ১,২৬০ টন |
দৈর্ঘ্য: | ৫৯.৫ মিটার (১৯৫ ফু) |
প্রস্থ: | ১১ মিটার (৩৬ ফু) |
গভীরতা: | ৪.৫ মিটার (১৫ ফু) |
প্রচালনশক্তি: |
|
গতিবেগ: | ১৬.৫ নট (৩০.৬ কিমি/ঘ; ১৯.০ মা/ঘ) |
সীমা: | ৭,০০০ নটিক্যাল মাইল (৮,১০০ মা; ১৩,০০০ কিমি), ১২ নট (২২ কিমি/ঘ; ১৪ মা/ঘ) গতিতে |
লোকবল: | ৩৯ জন (৫ জন কর্মকর্তা) |
সেন্সর এবং কার্যপদ্ধতি: |
|
রণসজ্জা: |
|
ইতিহাস
সম্পাদনাবানৌজা সাঙ্গু জাহাজটি সমুদ্রগামী ট্রলার এফপিভি জুরা (১৯৭৩) এবং এফপিভি ওয়েস্ট্রা (১৯৭৪) জাহাজদ্বয়ের নকশার উপর ভিত্তি করে হল, রাসেল অ্যান্ড কোম্পানি দ্বারা নির্মিত হয়। জাহাজটি মূলত মৎস্য সুরক্ষা জাহাজ হিসাবে ব্রিটিশ রাজকীয় নৌবাহিনীর জন্য নির্মিত হয়, ১৯৭৭ সালে এটি এইচএমএস গার্নসি হিসেবে ব্রিটিশ রাজকীয় নৌবাহিনীর বহরে প্রবেশ করে। পরবর্তীতে ২০০৪ সালে জাহাজটিকে বাংলাদেশ নৌবাহিনী সংগ্রহ করে। যুক্তরাজ্য থেকে ৮,০০০ মাইল (১৩,০০০ কিমি) পথ পাড়ি দিয়ে ২০০৪ সালের মে মাসে মোংলা নৌঘাঁটিতে পৌঁছায়। পথিমধ্যে জাহাজটি টানজিয়ার বন্দর, মরোক্কো, পোর্ট সাইদ, মিশর, জেদ্দা, সৌদি আরব, সালালাহ বন্দর, ওমান এবং শ্রীলঙ্কার কলম্বো বন্দরে শুভেচ্ছা সফর হিসাবে সংক্ষিপ্ত স্টপওভার করে এবং সেইসাথে রেশন ও জ্বালানী সংগ্রহ করে। অবশেষে জাহাজটি ৩ অক্টোবর, ২০০৪ সালে কমোডর কমান্ডিং খুলনা এর কমান্ডের অধীনে জাহাজটি কমিশন লাভ করে। পরবর্তীতে জাহাজটি কমোডর কমান্ডিং বিএন ফ্লোটিলা (চট্টগ্রাম) দ্বারা পরিচালিত হয়। বর্তমানে প্রায় ১০০ জন নৌসদস্য জাহাজটিতে কর্মরত রয়েছেন।
বানৌজা সাঙ্গু সেপ্টেম্বর ২০১১ সালে বঙ্গোপসাগরে মার্কিন নৌবাহিনীর সাথে ক্যারেট মহড়ায় অংশগ্রহণ করে। জাহাজটি এক বছর পরে ক্যারাট ২০১২-এও অংশ নেয়। এছাড়াও জাহাজটি ২০০৮ এবং ২০১৪ সালে ভারতের আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে একটি দ্বিবার্ষিক বহুপাক্ষিক অনুশীলন মিলানে অংশগ্রহণ করে।
বৈশিষ্ট্য ও যান্ত্রিক কাঠামো
সম্পাদনাবানৌজা সাঙ্গু জাহাজটির দৈর্ঘ্য ৫৯.৫ মিটার (১৯৫ ফু), প্রস্থ ১১ মিটার (৩৬ ফু) এবং গভীরতা ৪.৫ মিটার (১৫ ফু)। এটি স্বাভাবিক অবস্থায় ওজন ১,০০০ টন (৯৮০ লং টন) এবং পূর্ণ অবস্থায় ১,২৮০ টন (১,২৬০ লং টন)। জাহাজটিতে রয়েছে ২টি ৫,৬৪০ অশ্বশক্তি (৪,২১০ কিওয়াট) ক্ষমতা সম্পন্ন রাস্টন ১২আরকেসি ডিজেল ইঞ্জিন। যার ফলে জাহাজটি সর্বোচ্চ ১৬.৫ নট (১৯.০ মা/ঘ; ৩০.৬ কিমি/ঘ) গতিতে চলতে সক্ষম। এছাড়াও জাহাজটি ১২ নট (১৪ মা/ঘ; ২২ কিমি/ঘ) গতিতে ৭,০০০ নটিক্যাল মাইল (৮,১০০ মা; ১৩,০০০ কিমি) সমুদ্র এলাকা জুড়ে টহল কার্যক্রম পরিচালনা করতে সক্ষম।
রণসজ্জা
সম্পাদনাবানৌজা সাঙ্গু জাহাজটির উপকূলবর্তী অঞ্চল এবং গভীর সমুদ্রে অভিযান পরিচালনায় এর সক্ষমতা বিশেষভাবে প্রশংসনীয়। অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ, চোরাচালান রোধ এবং জলদস্যূতা দমনে জাহাজটিতে রয়েছে:
- ১টি বোফোর্স ৪০ মিমি কামান;
- ২টি ৭.৬ মিমি স্বয়ংক্রিয় মেশিনগান।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Sailing under a different flag – former Royal Navy vessels serving with other navies | Navy Lookout"। www.navylookout.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৪-০৫। ২০২২-০৫-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৪-১৭।
- ↑ "The Daily Star Web Edition Vol. 4 Num 331"। archive.thedailystar.net। ২০২৩-০৪-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৪-১৭।
- ↑ "Navy Ship... OPV - Patrolling..."। ১৭ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ এপ্রিল ২০২৩।
- ↑ "CARAT 2012"। DVIDS (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০৪-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৪-১৭।
- ↑ "UNROCA (United Nations Register of Conventional Arms)"। www.unroca.org। ২০২১-১১-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-১৮।
- Brown, David K.; Moore, George (২০১২)। Rebuilding the Royal Navy: Warship Design Since 1945। Barnsley, UK: Seaforth Publishing। আইএসবিএন 978-1-84832-150-2।
- Couhat, Jean Laybayle; Baker, A. D., সম্পাদকগণ (১৯৮৬)। Combat Fleets of the World 1986/87: Their Ships, Aircraft and Armament। Annapolis, Maryland: Naval Institute Press। আইএসবিএন 0-85368-860-5।
- Gardiner, Robert; Chumbley, Stephen, সম্পাদকগণ (১৯৯৫)। Conway's All The World's Fighting Ships 1947–1995। Annapolis, Maryland, USA: Naval Institute Press। আইএসবিএন 1-55750-132-7।