বানৌজা দুর্দান্ত

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ

বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ (সংক্ষেপেঃ বানৌজা) দুর্দান্ত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি টাইপ ০২১-শ্রেণীর মিসাইল বোট। এটি নদী এবং উপকূলবর্তী অঞ্চলে টহল প্রদান, উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম, অবৈধ অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান রোধ, জলদস্যূতা দমন, মৎস্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম।[][][][][]

ইতিহাস
বাংলাদেশ
নাম: বানৌজা দুর্দান্ত
নির্মাতা: জিংনান শিপইয়ার্ড, সাংহাই
কমিশন লাভ: ১০ নভেম্বর, ১৯৮৮
কার্যসময়: ১৯৮৮-২০২৪
মাতৃ বন্দর: চট্টগ্রাম
শনাক্তকরণ: পি৮১২৬
অবস্থা: সক্রিয়
সাধারণ বৈশিষ্ট্য
প্রকার ও শ্রেণী: টাইপ ০২১-শ্রেণীর মিসাইল বোট
ওজন:
  • ১৭১ টন (স্বাভাবিক অবস্থায়)
  • ২০৫ টন (পূর্ণ অবস্থায়)
দৈর্ঘ্য: ৩৮.৬ মিটার (১২৭ ফু)
প্রস্থ: ৭.৬ মিটার (২৫ ফু)
গভীরতা: ২.৭ মিটার (৮.৯ ফু)
প্রচালনশক্তি:
  • ৩ × ডয়েটজ টিসিডি২০২০ভি১৬ ডিজেল ইঞ্জিন (জার্মানি);
  • বিএফ৪এম ১০১৩ এমসি ডিজেল জেনারেটর (জার্মানি);
  • ৩ x শ্যাফট
গতিবেগ: ৩৫ নট (৬৫ কিমি/ঘ; ৪০ মা/ঘ)
সীমা: ৭০০ নটিক্যাল মাইল (৮১০ মা; ১,৩০০ কিমি), ৩০ নট (৫৬ কিমি/ঘ; ৩৫ মা/ঘ) গতিতে
লোকবল: ২৮ জন
সেন্সর এবং
কার্যপদ্ধতি:
  • ১ × ফুরুনো ডিআরএস৪ডব্লিউ র‍্যাডার (জাপান);
  • ১ × ফুরুনো এফএআর-৩৩২০ চার্ট র‍্যাডার (জাপান)
রণসজ্জা:
  • ৪ × সি-৭০৪ জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র;
  • ২ × একে-২৩০ ৩০ মিমি বিমান বিধ্বংসী স্বয়ংক্রিয় মেশিনগান (টুইন ব্যারেল)

ইতিহাস

সম্পাদনা

১৯৮০-এর দশকে বাংলাদেশের উপকূলবর্তী অঞ্চলে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে জোরদার করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনী গণচীন হতে স্বল্পপাল্লার দ্রুতগামী টাইপ ০২১-শ্রেণীর ক্ষেপণাস্ত্রবাহী জাহাজ সংগ্রহ করে। এরই ধারাবাহিকতায় বানৌজা দুর্দান্ত ১০ নভেম্বর, ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে কমিশন লাভ করে। এই জাহাজটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর উপকূল প্রতিরক্ষার সক্ষমতা অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে, হিট এন্ড রান কৌশল অবলম্বন করে বহিঃশত্রুর জাহাজ ধ্বংস করতে সক্ষম। দুর্ভাগ্যবশত, ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে বানৌজা দুর্দান্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়, পরবর্তীতে বাংলাদেশ নৌবাহিনী সদস্যদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় জাহাজটি মেরামত করে নৌবহরে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়। ২০১০ সালে মিড লাইফ আপগ্রেডেশন হিসেবে পুরনো এসওয়াই-১ ক্ষেপণাস্ত্রকে আরো শক্তিশালী ও উন্নত সি-৭০৪ ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হয়।

বৈশিষ্ট্য ও যান্ত্রিক কাঠামো

সম্পাদনা

বানৌজা দুর্দান্ত জাহাজটির দৈর্ঘ্য ৩৮.৬ মিটার (১২৭ ফু), প্রস্থ ৭.৬ মিটার (২৫ ফু) এবং গভীরতা ২.৭ মিটার (৮.৯ ফু)। জাহাজটিতে রয়েছে ৩টি ডয়েটজ টিসিডি২০২০ভি১৬ ডিজেল ইঞ্জিন (জার্মানি) এবং বিএফ৪এম ১০১৩ এমসি ডিজেল জেনারেটর (জার্মানি)। যার ফলে জাহাজটি ঘন্টায় সর্বোচ্চ ৩৫ নট (৬৫ কিমি/ঘ; ৪০ মা/ঘ) গতিতে চলতে সক্ষম। এছাড়াও জাহাজটি ৩০ নট (৫৬ কিমি/ঘ; ৩৫ মা/ঘ) গতিতে ৭০০ নটিক্যাল মাইল (১,৩০০ কিমি) সমুদ্র এলাকা জুড়ে টহল কার্যক্রম পরিচালনা করতে সক্ষম। সমুদ্রপৃষ্ঠ অনুসন্ধানের জন্য এটি ১টি ফুরুনো ডিআরএস৪ডব্লিউ র‍্যাডার (জাপান) এবং ১টি ফুরুনো এফএআর-৩৩২০ চার্ট র‍্যাডার (জাপান) দ্বারা সজ্জিত।

রণসজ্জা

সম্পাদনা

বানৌজা দুর্দান্ত জাহাজটির আকার আয়তন অপেক্ষাকৃত ছোট হলেও নদী এবং উপকূলবর্তী অঞ্চলে অভিযান পরিচালনায় এর সক্ষমতা বিশেষভাবে প্রশংসনীয়। শত্রু জাহাজ মোকাবেলা, চোরাচালান রোধ, জলদস্যূতা দমনে জাহাজটিতে রয়েছে:

  • ৪টি সি-৭০৪ জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র;
  • ২টি একে-২৩০ ৩০ মিমি (টুইন ব্যারেল) বিমান বিধ্বংসী স্বয়ংক্রিয় মেশিনগান।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "TECNICAL SPECIFICATION FOR SPARE PARTS BNS DURDANTA"NAVAL STORES DEPOT, CHATTOGRAM. BANGLADESH। ২০২৩-০৬-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-১৮ 
  2. "BNS Durdanto (Fast Attack Craft Of Bangladesh Navy) Missile Boat P8126 | Type 021-Class Missile Boat"। ২০ মার্চ ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ মার্চ ২০২৩ 
  3. "নৌবাহিনী জাহাজ বানৌজা দুর্দান্ত"। ১৪ জুন ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুন ২০২৩ 
  4. "বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ বানৌজা দুর্দান্ত"। ১৪ জুন ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুন ২০২৩ 
  5. "বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ বানৌজা দুর্দান্ত"। ১ জুলাই ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জুলাই ২০২৩