বাঙালি টাইগার ফোর্স

বাঙালি টাইগার ফোর্স(বিটিএফ) বা বেঙ্গল টাইগার ফোর্স (বিটিএফ) ভারতের আসামের একটি বাঙালি হিন্দু সশস্ত্র সংগঠন।

প্রতিষ্ঠা

সম্পাদনা

আসামে বাঙ্গালি হিন্দুদের আসামিদের কাছে হেন্সতার শিকার হতে হয়। নানা অজুহাতে বাঙালি হিন্দুদের উপর আসামে অত্যাচার করা হয়।এতে আসু, আলফা সহ বিভিন্ন আসামি জাতিয়বাদী সংগঠনের হাত থাকে।এর প্রতিরোধে ১৯৯৬ সালের ৯ ই ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় বাঙালি টাইগার ফোর্স(বিটিএফ)। এই দলটি আসাম রাজ্যে বসবাসরত বাঙালি হিন্দুদের সুরক্ষার জন্য সশস্ত্র লড়াই করে যাচ্ছিল।এটির বোড়ো লিবারেশন টাইগার্স (বিএলটি) এর সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল বলা হয় । যেটি কিনা আসাম রাজ্যে বসবাসরত বোড়োদের সুরক্ষার জন্য সশস্ত্র লড়াই করত।বলা হয়ে থাকে এর অধীনে বাঙালি টাইগার ফোর্স প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছিল।কিন্তু পরে এটি অ্যান্টি-বোড়ো হয়ে ওঠে[][]। সুভাষ চন্দ্র সরকার ছিলেন এর চেয়ারম্যান-কাম-সি-ইন-সি।

কার্যক্রম

সম্পাদনা

কথিত আছে বাঙালি টাইগার ফোর্সের একটি গুপ্ত ঘাটি ছিল দারাংয়ের কৈমারি গ্রাম।তারা ১৯৯৮ সালের ১৪ আগস্ট রাত সাড়ে দশটায় টাঙ্গলায় মিলনপুর অঞ্চলের দারং জেলায় কমপক্ষে ছয়জন খুন হয়।জার জন্য বাঙালি টাইগার ফোর্সকে দায়ী করা হয় ।এতে দু'জন মহিলা ও আসামের রাজস্বমন্ত্রী জোয়াই নাথ সারমার এক নিকটাত্মীয় ছিল।

১৯৯৮ সালের   ১০ ই আগস্ট কচি চা এস্টেটের ব্যবস্থাপক মিঃ পি.আর.পাণ্ড্য অপহৃত হয়। বাঙালি টাইগার ফোর্স (বিটিএফ) কে এর জন্য দায়ী করা হয়[]

আসাম পুলিশের অস্ত্র লুট

সম্পাদনা

বিটিএফ আসাম পুলিশের কাছ থেকে অস্ত্র লুট করেছিল[]

আত্মসমর্পণ

সম্পাদনা

বাঙ্গালী টাইগার ফোর্স (বিটিএফ) ২০০৬ সালের ১৪ আগস্ট গুয়াহাটিতে নগরীর একটি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৌয়ের উপস্থিতিতে বিটিসি চুক্তিতে সই করে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে অঘোষিত যুদ্ধবিরতি করার পরে অস্ত্র ফেলেছিল।সুভাষ চন্দ্র সরকারের নেতৃত্বে দলটি মোট ৩২৫ ক্যাডার সহ মূলধারায় ফিরেন।অনুষ্ঠানের সময় বিটিএফ তাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ আত্মসমর্পণ করে।আসাম রাজ্যে এটি ছিল প্রথম কোনো সশস্ত্র সংগঠনের আত্মসমর্পণ। তাদের কাছে তখন ৩২ টি বন্দুক, দুটি মার্কিন কার্বাইন, বেশ কয়েকটি পিস্তল, গ্রেনেড এবং ২০০০ রাউন্ড গোলাবারুদ ছিল। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন যে আত্মসমর্পণকারী পুনর্বাসন প্যাকেজ পাবে।বিটিএফের 'সি-ইন-সি' সরকার প্রতিটি ক্যাডার এবং নিহতদের পরিবারের জন্য পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেছিলেন। এছাড়াও তিনি ক্যাডারদের বিরুদ্ধে বিচারাধীন মামলা প্রত্যাহার এবং সশস্ত্র বাহিনীতে যোগ দিতে চেয়েছিলেন। মি সরকার রাজ্যের বাঙালি হিন্দুদের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার রক্ষার জন্য একটি অল আসাম ভাষাগত সংখ্যালঘু স্বায়ত্তশাসিত কাউন্সিল গঠনেরও আবেদন করেছিলেন[]

পুনঃসশস্ত্র সংগ্রাম

সম্পাদনা

২০১০ সালের ২ মার্চ আসামের দরং জেলায় সুরক্ষা বাহিনীর সাথে লড়াইয়ে সাত সদস্যের বাঙালি টাইগার ফোর্সের চারজন গুলিবিদ্ধ হন। বাকিরা জীবন বাঁচাতে অন্ধকারে পালিয়ে যায়। তাদের কাছে তিনটি .৬..৬৫ টি বোর রিভলবার, একটি ৯ মিমি পিস্তল, তিনটি হ্যান্ড গ্রেনেড, একটি ৯ মিমি পিস্তলের দুটি ম্যাগাজিন, ১৪ রাউন্ড গোলাবারুদ এবং কিছু নথি পাওয়া গেছে বলে পুলিশ জানায়।২০০৬ সালে বাঙালি টাইগার ফোর্সের বেশিরভাগ কর্মী অস্ত্র রাখার পরে আসাম রাজ্যে বাঙালি টাইগার ফোর্স বিদ্রোহীদের এটি প্রথম বড় ঘটনা ছিল[]

বিজেপিকে তিরস্কার

সম্পাদনা

লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি বাঙালি হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তবে ক্ষমতায় আসার পরে বিজেপি এই প্রতিশ্রুতি পূরণ করে না।এর প্রতিবাদে ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ কালাইগাও এ বিটিএড অঞ্চলে সম্প্রদায়ের উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাঙালি টাইগার ফোর্সের পুনর্বাসন কো-অর্ডিশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিবেক রায় প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাঙালি জনগণকে এমন একটি দলের পক্ষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানায় যা এই সম্প্রদায়ের কল্যাণ সমর্থক। বিজেপি যতক্ষণ প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করার ঘোষণা দেয় না, ততক্ষণ বাঙালি জনগণের আগামী নির্বাচনে দলটিকে বয়কট করা উচিত[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Assam: BAC fails to check militancy"Hindustan Times (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৪-১২-১৭। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-১৬ 
  2. Jan 16, TNN |; 2002; Ist, 21:22। "Bodo rebels kill 13 non-tribals | India News - Times of India"The Times of India (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-১৬ 
  3. "jkalita"www.cs.uccs.edu। ২০১৯-১২-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-১৬ 
  4. "President's medal for Puducherry police chief"The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। Special Correspondent। ২০১৬-০১-২৮। আইএসএসএন 0971-751X। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-১৫ 
  5. Staff (২০০৬-০৮-১৪)। "BTF militants lay down arms in Asom"oneindia (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-১৫ 
  6. March 3, 2010,THE TELEGRAPH CORRESPONDENT
  7. "BTF slams BJP"The Sentinel (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০৩-২০। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-১৬