বাগানের গিরগিটি
বাগানের গিরগিটি (বৈজ্ঞানিক নাম: Calotes versicolor) যা ‘রক্তচোষা’ নামে অতি পরিচিত একপ্রকার নিরীহ সরীসৃপ। প্রতিনিয়ত বন-বাগান ও ঝোপঝাড় ধ্বংস হওয়ার কারণে দিনে দিনে এই সরীসৃপগুলো হুমকির সম্মুখীন হয়ে পরছে।[২]
বাগানের গিরগিটি অথবা রক্তচোষা | |
---|---|
বাগানের গিরগিটি | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Animalia |
পর্ব: | কর্ডাটা |
শ্রেণী: | Reptilia |
বর্গ: | Squamata |
উপবর্গ: | Iguania |
পরিবার: | Agamidae |
গণ: | Calotes |
প্রজাতি: | C. versicolor |
দ্বিপদী নাম | |
Calotes versicolor (Daudin, 1802)[১] |
আকার
সম্পাদনাএই বাগানের গিরগিটি গড়ে ৪৪ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। লেজটিই প্রায় ৩২ সেন্টিমিটার। আর দেহ মাত্র ১২ সেন্টিমিটার। দেহের ওপরের অংশ বাদামি থেকে ধূসর। তবে এই রং প্রয়োজনের সময় পরিবর্তন করতে পারে, যেমন—হালকা জলপাই বাদামি, জলপাই-ধূসর বা হলদে। পিঠের ওপর ও পাশে কতগুলো ফোঁটা আর দাগ থাকে। দেহের নিচের অংশ ময়লা-সাদা। পিঠের ওপর শিরদাঁড়া বরাবর কাঁটা রয়েছে। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ গিরগিটির চোখের নিচের আঁশগুলো কালচে।[২]
স্বভাব
সম্পাদনাএই সরীসৃপগুলোকে শহর, গ্রাম, বন—সবখানেই দেখা যায়। খোলা মাঠ, ঝোপঝাড়, বনের প্রান্ত, বাগান, পার্ক প্রভৃতি জায়গা বেশি পছন্দ। মূলত কীটপতঙ্গভোজী হলেও ডিম, ছোট ছোট কাঁকড়া ও অন্যান্য ছোট মেরুদণ্ডী প্রাণীতেও এদের অরুচি নেই।[২] অনেকে এই প্রাণীটিকে 'রক্তচোষা' বলে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি খুবই ভীতু এবং লাজুক স্বভাবের প্রানী। এরা সহজে কাউকে কামড়ায় না। কামড়ালেও এদের কামড় সম্পূর্ণ বিষহীন এবং কোন ব্যাথাও হয়না।[৩] মানুষের ভুল ধারণার কারণে অনেকে এদের দেখলেই মেরে ফেলে এবং এই কারণেই এই প্রাণীটি এখন বিলুপ্তপ্রায়।
প্রজননকাল
সম্পাদনাএপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর প্রজননকাল। এ সময় পুরুষগুলোর দেহে প্রজননের রং খোলে। লাল-কালো গলা ফুলিয়ে স্ত্রীকে আকর্ষণ করে। প্রজননের পর স্ত্রী নরম মাটিতে কয়েক সেন্টিমিটার লম্বা গর্ত করে ৬-২০টি ডিম পাড়ে। সাদা, লম্বাটে ও নরম খোসার ডিমগুলো ছয়-সাত সপ্তাহে ফোটে। বাচ্চা ৭ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। প্রজনন-উপযোগী হতে বছর খানেক সময় লাগে। প্রজনন মৌসুমে পুরুষ গিরগিটির সামনের পা দুটোসহ মাথা থেকে বুক পর্যন্ত কমলা-লাল রং ধারণ করে। অনেক সময় দুটো পুরুষ গিরগিটি মারামারি করলেও মুখমণ্ডল ও মাথা টকটকে লাল দেখায়। সদ্য ফোটা ও অল্প বয়স্ক বাচ্চার রং হালকা সোনালি-হলুদ থেকে বাদামি। প্রজনন-পরবর্তী দেহের রং কালচে বা কালচে ধূসর। এই সরীসৃপগুলো প্রজনন মৌসুম ছাড়াও শিকারি প্রাণী বা শত্রুর হাত থেকে আত্মরক্ষার জন্য দেহের রং পরিবর্তন করে হয় শত্রুকে ভয় দেখায়, না-হয় প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে যায়।[২]
গ্যালারি
সম্পাদনা-
A Garden Lizard in Gazipur District, Bangladesh.
-
After eating prey in Narsapur, Medak district, India.
-
seen in Pune, Maharashtra, India
-
A Juvenile Male seen in Andhra Pradesh, India.
-
Oriental garden lizard in Chotian, Punjab
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Calotes versicolor[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], Reptiles Database
- ↑ ক খ গ ঘ রক্তচোষা নয়, নিরীহ গিরগিটি ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০২০-০৬-১১ তারিখে,আ ন ম আমিনুর রহমান, দৈনিক প্রথম আলো। ঢাকা থেকে প্রকাশের তারিখ: ০৮-১১-২০১২ খ্রিস্টাব্দ।
- ↑ Williams, Martin। "Are Chameleons Dangerous? The Full Guide For Owners"। Mercury Pets (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-২০।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- Calotes versicolor at the TIGR Reptile Database
- http://itgmv1.fzk.de/www/itg/uetz/herp/photos/Calotes_versicolor.jpg[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]