বাংলা ধ্বনিতত্ত্ব
এই নিবন্ধটির একটা বড়সড় অংশ কিংবা সম্পূর্ণ অংশই একটিমাত্র সূত্রের উপর নির্ভরশীল। |
বাংলা ধ্বনিতত্ত্ব বলতে বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত যাবতীয় ধ্বনির বিবরণ, এগুলির উচ্চারণ ও ব্যবহারবিন্যাসের আলোচনাকে বোঝায়। বাংলা ভাষার ঔপভাষিক বৈচিত্র্য ব্যাপক এবং বিভিন্ন বাংলা উপভাষার ধ্বনিব্যবস্থাও তাই স্বতন্ত্র।
ধ্বনি প্রকরণ
সম্পাদনাস্বরধ্বনি
সম্পাদনাঅ১ (অল্প সংবৃত); অ২ (বেশি সংবৃত); আ; ই (ঈ); উ (ঊ); এ১; এ২; ও
সব স্বরধ্বনিরই উচ্চারণে হ্রস্বদীর্ঘত্ব আছে। তবে সাধারণ নিয়ম হল হ্রস্ব উচ্চারণ। হ্রস্ব উচ্চারণের উদাহরণের প্রয়োজন নাই। দীর্ঘ উচ্চারণের উদাহরণ দেওয়া হল।
- অ১: সব (কিন্তু [সব্বাই] হ্রস্ব)
- অ২: সকল (কিন্তু [সক্কলে] হ্রস্ব)
- আ: থামা (অনুজ্ঞা), দেখা
- ই (ঈ): সই (= সহ্য করি), ভারি (= মুটে; কিন্তু [ভারি] বিশেষণ হ্রস্ব)
- উ (ঊ): উট (কিন্তু [উটের] হ্রস্ব)
- এ১: এ কে? (কিন্তু [একে ভাত দাও] হ্রস্ব)
- এ২: এক (কিন্তু [এক্লা] হ্রস্ব)
- ও: ও কে? (কিন্তু [ওকে বসাও] হ্রস্ব)
স্বরধ্বনি
সম্পাদনাবাংলা ভাষাতে ৭টি পূর্ণ স্বরধ্বনি আছে; এগুলিকে অ, আ, ই, উ, এ, ও এবং অ্যা বর্ণ দিয়ে নির্দেশ করা যায়। পূর্ণস্বরধ্বনিগুলিকে নাকি স্বরে বা অনুনাসিকভাবেও উচ্চারণ করা যায় (ঁ দিয়ে নির্দেশ করা হয়)। এছাড়াও বাংলা ভাষাতে অর্ধস্বরধ্বনি আছে চারটি; এগুলি ই, উ, এ এবং ও স্বরধ্বনিগুলির অর্ধোচ্চারিত রূপ। পূর্ণ এবং অর্ধস্বরধ্বনিগুলি একত্রিত হয়ে বাংলায় ১৭টির মত দ্বিস্বরধ্বনি উচ্চারিত হয়; এগুলিকে অয়, অও, আউ, আয়, আও, ইই, ইউ, এই, ছুটে , এও, অ্যায়, অ্যাও, ওই, ওউ, ওয়, ওও দিয়ে নির্দেশ করা যেতে পারে।
লিখিত বাংলার বর্ণমালা, যা স্কুল কলেজে শিক্ষা দেওয়া হয়, সেগুলিতে ঈ, ঊ, ঋ, ৯-এর অস্তিত্ব থাকলেও উচ্চারণের ক্ষেত্রে এগুলি স্বরধ্বনি হিসেবে উচ্চারিত হয় না। দীর্ঘ ঈ এবং দীর্ঘ ঊ সংস্কৃতে দীর্ঘভাবে উচ্চারিত হলেও কথ্য বাংলাতে সবসময় দীর্ঘ উচ্চারিত হয় না। ঋ-কে রি এবং ৯-কে লি হিসেবে উচ্চারণ করা হয়। অন্যদিকে অ্যা স্বরধ্বনিটি বাংলার একটি মৌলিক পূর্ণ স্বরধ্বনি হলেও শিক্ষামাধ্যমে প্রচলিত বর্ণমালাতে একে সেভাবে স্থান দেয়া হয়নি। বাংলা ভাষাতে দ্বিস্বরধ্বনির সংখ্যা সতেরটির মত হলেও কেবল ওই এবং ওউ-এর জন্য আলাদা দুইটি বর্ণ আছে, যথাক্রমে ঐ এবং ঔ, এবং এগুলিকে স্কুলপাঠ্য বর্ণমালার স্বরবর্ণ ভাগে স্থান দেওয়া হয়েছে।
নিচে আন্তর্জাতিক ধ্বনিমূলক বর্ণমালাতে বাংলা স্বরধ্বনিগুলি উচ্চারণস্থল ও উচ্চারণকৌশল অনুযায়ী ছক আকারে দেখানো হল।
সম্মুখজিভ | কেন্দ্রীয়জিভ | পশ্চাৎজিভ | |
---|---|---|---|
সংবৃতওষ্ঠাধর | ই ঈ i ii | উ ঊ u uu | |
সংবৃত-মধ্যওষ্ঠাধর | এ e | ও ঔ ঐ o ouu oi | |
বিবৃত-মধ্যওষ্ঠাধর | অ্যা/এ্যা æ | অ ɔ | |
বিবৃতওষ্ঠাধর | আ a |
ব্যঞ্জনধ্বনি
সম্পাদনাবাংলা ভাষায় মোট ব্যঞ্জনধ্বনি ৩০টি – ক্, খ্, গ্, ঘ্, ঙ্, চ্, ছ্, জ্, ঝ্, ট্, ঠ্, ড্, ঢ্, ত্, থ্, দ্, ধ্, ন্, প্, ফ্, ব্, ভ্, ম্, র্, ল্, শ্, স্, হ্, ড়্, ঢ়্;
যদিও বর্ণমালার ব্যঞ্জনবর্ণ ভাগে আরও ৯ টি বর্ণ স্থান দেওয়া হয়েছে, যেমন—(১)ঞ (২)ণ (৩)য (৪)ষ (৫) য় (৬)ৎ (৭)ং (৮)ঃ (৯)৺
- অর্থাৎ ব্যঞ্জনবর্ণ মোট ৩৯ টি
কিন্তু ব্যঞ্জনধ্বনি মোট ৩০ টি
- বাংলায় ‘ঙ’-এর উচ্চারণ দু’প্রকার।
- হলন্ত উচ্চারণে নাসিক্য কন্ঠ্য বর্ণ। যেমন—ব্যাঙ্, রঙ্, ঢঙ্।
- স্বরধ্বনির সঙ্গে ‘ঙ’ যুক্ত হলে ‘গ’-ধ্বনির স্পর্শ আসে। যেমন—বাঙালি (বাঙ্গালি), লাঙল (লাঙ্গোল্), রঙিন (রোঙ্গিন্)।
- বাজতে, সেজদা, মজদুর, রাজধানী প্রভৃতি শব্দের ‘জ’ অনেকটা আইপিএ t͡z বা z-এর মতো। শব্দের মধ্যে হলন্ত অক্ষরে ‘জ’ থাকলে এরূপ উচ্চারণ পাওয়া যায়।
- ঝাল, ঝোলা, ঝরঝর শব্দে ‘ঝ’-এর উচ্চারণ স্বাভাবিক; কিন্তু ‘বুঝতে হবে’ বাক্যাংশের ‘ঝ’ অনেকটা ‘জ’-এর মতো।
- ‘ঞ’ বর্ণটি ‘ইঁঅঁ’-র মত উচ্চারিত হয়। ‘চ’-বর্গের কোন বর্ণ সংযুক্ত হলে ‘ঞ’-এর উচ্চারণ দন্ত্য-‘ন’-এর মতো হয়। যেমন—পঞ্চ (পন্চো), অঞ্জলি (অন্জোলি), বাঞ্ছা (বান্ছা)।
- ‘ণ’ উচ্চারণে ‘ন’-এর সঙ্গে অভিন্ন; তবে ’ট’-বর্গীয় ধ্বনির ঠিক আগে বসলে জিহ্বা উল্টিয়ে মূর্ধন্য-‘ণ’ উচ্চারিত হয়।
- ‘ড়’ ঘোষ অল্পপ্রাণ তাড়নজাত ধ্বনি ও এর মহাপ্রাণ রূপ ‘ঢ়’। ‘ড’ ও ‘ঢ’-এর মতো ‘ড়’ ও ‘ঢ়’-তে দ্বিত্ব বা ‘য্’-ফলা হয় না।
- ‘ন’ একটি দন্তমূলীয় বর্ণ।
- বাংলায় বর্গীয়-‘ব’ অন্তঃস্থ-‘ব’-এর লিপি ও উচ্চারণে পার্থক্য লুপ্ত হয়েছে। সংযুক্ত বর্ণে ব্যঞ্জনবর্ণের পরে ‘ব্’-ফলারূপে সাধারণত অন্তস্থঃ-‘ব’ যুক্ত হয়। ‘ব্’-ফলারূপে এর উচ্চারণ চার প্রকার—
- ‘ব্’-ফলা যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণটির দ্বিত্ব হয়। যেমন—অশ্ব, পঞ্চত্ব, পক্ব।[১]
- শব্দের প্রথম বর্ণে ‘ব্’-ফলা থাকলে উচ্চারণে শ্বাসাঘাত বা জোর পড়ে। যেমন—ত্বরা, স্বভাব, দ্বীপ।
- তৎসম শব্দে ‘হ্’-যুক্ত ‘ব্’-ফলার উচ্চারণ কিছুটা ‘উঅ’ বা আইপিএ w-এর মতো। যেমন—আহ্বান (আওহান্), জিহ্বা (জিউহা)।
- একাধিক সংযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণে ‘ব্’-ফলা যুক্ত হলে ‘ব্’-ফলা অনুচ্চারিত থাকে। যেমন—উচ্ছ্বসিত (উচ্ছোশিতো), মহত্ত্ব (মহৎতো), সান্ত্বনা (শান্তোনা)।
- বাংলায় ‘য’-এর উচ্চারণ ‘জ’-এর অনুরূপ। যেমন—যশোদা (জশোদা), যদি (জোদি)। ‘য’ ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে যুক্ত হলে ‘য্’-ফলার উচ্চারণ ছ’প্রকার:
- ‘য়’-এর উচ্চারণ ‘ইঅ’ বা আইপিএ j-এর মতো।
- তৎসম শব্দে ‘অ’, ‘আ’, ‘উ’ এবং ‘ও’-বর্ণের পর অবস্থিত ‘য়’ স্পষ্ট শ্রুত হয়। যেমন—সময়, বায়ু, দয়া।
- তদ্ভব শব্দে ‘এ’-কার এবং ‘ও’-কারের পরে অবস্থিত ‘য়’ অশ্রুত থাকে। যেমন—কেয়া (কেআ), মোয়া (মোআ), কিন্তু ‘আয়া’ ব্যতিক্রম।
- ‘র’:
- শব্দের মধ্যে বা শেষে ‘র্’-ফলা যুক্ত হলে সংযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ উচ্চারণে দ্বিত্ব হয়। যেমন—অপ্রতুল (অপ্প্রোতুল্), বক্র (বক্ক্রো)।
- শব্দের আদি ব্যঞ্জনবর্ণে ‘র্’-ফলা কিংবা অন্যত্র থাকলে ব্যঞ্জনবর্ণের দ্বিত্ব হয় না। যেমন—প্রতুল, সন্ত্রস্ত, ঘ্রাণ।
- রেফ্-এর উচ্চারণ বেশ শিথিল কিন্তু ‘র্’-ফলার উচ্চারণ কঠিন। সাধু বাংলায় রেফ্ ‘র’-ফলার উচ্চারণ কখনও লুপ্ত হয় না।
- শব্দের মধ্যে বা অন্ত কোনো ব্যঞ্জনবর্ণে ‘ল্’-ফলা যুক্ত হলে ব্যঞ্জনবর্ণটির দ্বিত্ব হয়। যেমন—বিপ্লব (বিপ্প্লব্), শুক্ল (শুক্ক্লো), অশ্লীল (অস্স্লীল্)।
- ‘শ’, ‘ষ’, ‘স’—এই তিনটি ধ্বনির উচ্চারণ একরকম ‘শ’ বা আইপিএ ʃ-এর মতো।
শ, ষ, স-এর শুদ্ধ বা ভদ্র সমাজে প্রচলিত বাংলা উচ্চারণ, ইংরেজির sh-এর মতো—বাংলা ভাষায় কদাচ এগুলোকে ইংরেজির S-র মতো উচ্চারণ করা উচিত নহে।
— সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়- কখনো-কখনো ত, থ, ন, র, ল-এর পূর্বে বসলে ‘শ’ ও ‘স’ দন্ত্য-‘স’ বা আইপিএ s ধ্বনির মতো উচ্চারিত হয়। যেমন—শ্রী (স্রী), শ্লীল (স্লীল্), সমস্ত (শমোস্তো)।
- শব্দের শুরুতে যুক্তব্যঞ্জনে ক, খ, প, ফ-এর আগে বসা ‘স’ আইপিএ s-এর মত উচ্চারিত হয়। যেমন—স্কন্ধ, স্খলন, স্পর্শ, স্ফূর্তি।
- ‘ং’-এর উচ্চারণ ‘ঙ্’-এর মত।
- ‘ঁ’ (চন্দ্রবিন্দু)-এর কাজ স্বরধ্বনিকে অনুনাসিকতা প্রদান করা; এটি কোন ব্যঞ্জনধ্বনি নয়।
- ‘ৎ’ হল অন্ত্যস্বরবিহীন ‘ত্’।
- ‘ঃ’ হল অন্ত্যস্বরবিহীন ‘হ্’।
স্পর্শ | অন্তঃস্থ্য | |||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
অর্ধস্বর | তাড়নজাত | কম্পনজাত | পার্শ্বিক | উষ্ম | ||||||||
অঘোষ | ঘোষ | ঘোষ | ঘোষ | ঘোষ | ঘোষ | অঘোষ | ঘোষ | |||||
অল্পপ্রাণ | মহাপ্রাণ | অল্পপ্রাণ | মহাপ্রাণ | নাসিক্য | অল্পপ্রাণ | মহাপ্রাণ | ||||||
কণ্ঠ্য | ক্ | খ্ | গ্ | ঘ্ | ঙ্, ং | ঃ | হ্ | |||||
তালব্য | চ্ | ছ্ | জ্ | ঝ্ | য়্ | শ্, ষ্, স্ | ||||||
মূর্ধা | ট্ | ঠ্ | ড্ | ঢ্ | ণ্ | ড়্ | ঢ়্ | ষ্ | ||||
দন্তমূলীয় | ঞ্, ন্ | র্ | ল্ | |||||||||
দন্ত্য | ত্, ৎ | থ্ | দ্ | ধ্ | ন্ | শ্, স্ | ||||||
ওষ্ঠ্য | প্ | ফ্ | ব্ | ভ্ | ম্ |
মান্য চলিত বাংলা উচ্চারণে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে মোটামুটি সমতা বিধান করা হয়, তবে মান্য চলিত ভাষাভাষী বক্তাদের উচ্চারণের ক্ষেত্রেও এলাকাভেদে কিছু বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায়:
- ১ /f/: "ফ" বর্ণটি বক্তাভেদে অঘোষ মহাপ্রাণ ওষ্ঠ্য স্পর্শধ্বনি [pʰ] হিসেবে কিংবা অঘোষ ওষ্ঠ্য উষ্মধ্বনি [ɸ]~[f] হিসেবে উচ্চারিত হতে পারে।
- ২ অনেক মান্য চলিত বাংলা বক্তার ভাষায় /s/ একটি বহুব্যবহৃত স্বরধ্বনিমূল (সিরকা – সির্কা, অস্থির – অস্থির্, ব্যস – ব্যাস্ বা বাস্)।
- অনেক বক্তার উচ্চারণে /s/ এবং /ʃ/ ধ্বনিমূল দুইটি ভিন্নভাবে উচ্চারিত হয় (আস্তে – আস্তে, কিন্তু আসতে – আশ্তে)। আবার অনেকে এই দুটিকে একই ধ্বনি /s/ দিয়ে উচ্চারণ করেন।
- কিছু বিদেশী শব্দ যেগুলিতে আদিতে /s/ ধ্বনি ছিল, সেটি মান্য চলিত বাংলাতে [tʃʰ] (পছন্দ – পছোন্দো, হিন্দি-উর্দু पसंद/پسند থেকে) কিংবা [ʃ] (সবজি – শোব্জি, ফার্সি سبزى থেকে)।
- ৩ /z/: বিদেশী কিছু শব্দের /z/ ধ্বনি বাংলায় [dʒ] উচ্চারিত হয় (সবজি – শোব্জি, ফার্সি سبزى থেকে)।
- ৪ /ɽ/: বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে প্রচলিত মান্য চলিত বাংলা ভাষার অনেক বক্তা /ɽ/ এবং /r/ ধ্বনি দুইটিকে ভিন্নভাবে উচ্চারণ করেন না। তাদের মুখে পড়ে [pɔɽe]/পরে [pɔre], কড়া [kɔɽa]/করা [kɔra] একই রকম শোনায় (জোড়ার দ্বিতীয় শব্দটির মত)।
অক্ষর/দল/সিলেবল
সম্পাদনামুখের ভাষার যে অংশ একবারে, এক ধাক্কায় উচ্চারণ করা যায়, সহজভাবে ধ্বনিবিজ্ঞানের পরিভাষায় তাকেই সিলেবল, দল বা অক্ষর বলে। বাংলা ভাষার সিলেবলগুলির কেন্দ্রে বা নিউক্লিয়াসে থাকে একটি স্বরধ্বনি। এই কেন্দ্রের আগে বা পরে শূন্য, এক বা একাধিক ব্যঞ্জনধ্বনি বসতে পারে। অর্থাৎ বাংলা সিলেবলের বিন্যাস স্ব, স্বব, বস্বব, ববস্ব, ববস্বব, ইত্যাদি বিভিন্ন রকমের হতে পারে। সব মিলিয়ে প্রায় পনেরটির মত বিন্যাস পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে বস্ব অর্থাৎ ব্যঞ্জন+স্বর সিলেবলটিই (খা, দু, পা, নি, ইত্যাদি) বাংলা ভাষাতে সবচেয়ে বেশি দেখতে পাওয়া যায়। নিউক্লিয়াসের স্বরধ্বনির আগে সর্বোচ্চ তিনটি ব্যঞ্জন থাকতে পারে, আর নিউক্লিয়াসের পরে সর্বোচ্চ থাকতে পারে দুইটি ব্যঞ্জনধ্বনি। সংকেত আকারে লিখলে বাংলা সিলেবলের সংগঠন এভাবে দেখানো যায়: (C) (C) (C) V (C) (C)। এখানে C ব্যঞ্জন এবং V স্বর নির্দেশ করছে। বন্ধনী দিয়ে বোঝানো হয়েছে C-এর উপস্থিতি ঐচ্ছিক।
উল্লেখ্য খাঁটি বা তদ্ভব বাংলাতে V, CV, VC, CVC --- এই চার ধরনের সিলেবলই মূলত ব্যবহৃত হয়। নিউক্লিয়াসের স্বরধ্বনির আগে বা পরে দুই বা ততোধিক ব্যঞ্জনধ্বনি দেখতে পাওয়া যায় সংস্কৃত থেকে ধার করা তৎসম শব্দে এবং ইংরেজি ও অন্যান্য বিদেশী ভাষা থেকে ধার করা শব্দে। নিচে বাংলায় প্রচলিত সিলেবল বিন্যাসগুলির একটি তালিকা দেওয়া হল।
সিলেবলের গঠন | উদাহরণ |
---|---|
V | আ (যেমন- আমি); ই (যেমন- ইতি) |
CV | কি, খা, দে, নে, তু (যেমন- তুমি) |
VC | এক, ওঠ্, আন্ |
CVC | কান, চোখ, মুখ, ঢোল, ফুল, পাট, দম, লোক, বের, ফল |
CCV | শ্রী (বিশ্রী), প্রে (প্রেম), দ্রু (দ্রুতি), প্র (প্রসেসর), ফ্রি |
CCVC | ঘ্রাণ, প্রাণ, স্নান, ম্লান, ভ্রম, ক্রোশ, ট্রাক, ট্রেন, ক্লিপ, স্কুল, ড্রেন, প্লেন |
CCCV | স্ত্রী, স্ক্রু |
CCCVC | স্ত্রীর, স্প্রিং, স্ক্রিন |
CVCC | এগুলি বিরল। |
VV | ঐ, আয়, ঔ (ঔষধ) |
CVV | বউ, খায়, দেই, হয় |
VVC | আইন, ঐশ (ঐশ্-শরিক = ঐশ্বরিক) |
CVVC | বৌদ (বৌদ্-ধ = বৌদ্ধ), বাইশ, মাইক, লাইন |
CCVV | ত্রৈ (ত্রৈমাসিক), প্রা (প্রায়) |
CCVCC | স্টাইল |
CCCVV | স্ত্রৈ (স্ত্রৈণ), স্ট্রাই (স্ট্রাইকার) |
ধ্বনির উপস্থিতির নিয়ম
সম্পাদনা- বিদেশী বা তৎসম নয়, এমন বাংলা শব্দের শুরুতে বা শেষে একাধিক ব্যঞ্জন পাশাপাশি বসে না।
- বাংলা শব্দের শুরুতে ঙ্ বসে না (তুলনীয় ভিয়েতনামীয়, তাগালোগ এবং আফ্রিকার বিভিন্ন ভাষার শুরুতে ব্যবহৃত ঙ ধ্বনি)। ড়, ঢ় দিয়েও শব্দ শুরু হয় না।
- বাংলা শব্দের শেষে হ্, বসে না।
- শব্দ বা সিলেবলের শুরু ছাড়া অন্য কোথাও অ বা অ্যা বসে না।
ধ্বনি পরিবর্তনের নিয়ম
সম্পাদনাএই অনুচ্ছেদটি সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন। |
ভাষার পরিবর্তন ধ্বনির পরিবর্তনের সাথে সম্পৃক্ত। ধ্বনি পরিবর্তন নানা প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়। নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো।
১. আদি স্বরাগম (Prothesis) : উচ্চারণের সুবিধার জন্য বা অন্য কোনো কারণে শব্দের আদিতে স্বরধ্বনি এলে তাকে বলে আদি স্বরাগম (Prothesis)। যেমন – স্কুল > ইস্কুল, স্টেশন > ইস্টিশন। এরূপ - আস্তাবল, আস্পর্ধা ।
২. মধ্য স্বরাগম, বিপ্রকর্ষ বা স্বরভক্তি (Anaptyxis) : সময় সময় উচ্চারণের সুবিধার জন্য সংযুক্ত ব্যঞ্জন- ধ্বনির মাঝখানে স্বরধ্বনি আসে। একে বলা হয় মধ্য স্বরাগম বা বিপ্রকর্ষ বা স্বরভক্তি। যেমন-
অ – রত্ন > রতন, ধর্ম > ধরম, স্বপ্ন > স্বপন, হর্ষ > হরষ ইত্যাদি।
ই – প্রীতি > পিরীতি, ক্লিপ > কিলিপ, ফিল্ম > ফিলিম ইত্যাদি। -
উ – মুক্তা > মুকুতা, তুর্ক > তুরুক, ভ্র্ , ভুরু ইত্যাদি ।
এ- গ্রাম > গেরাম, প্রেক > পেরেক, স্রেফ > সেরেফ ইত্যাদি।
শ্লোক > শোলোক, মুরগ > মুরোগ > মোরগ ইত্যাদি।
৩. অন্ত্যস্বরাগম (Apothesis) : কোনো কোনো সময় শব্দের শেষে অতিরিক্ত স্বরধ্বনি আসে। এরূপ স্বরাগমকে বলা হয় অন্ত্যস্বরাগম। যেমন – দিশ্ > দিশা, পোখত্ > পোক্ত, বেঞ্চ, বেঞ্চি, সত্য > সত্যি ইত্যাদি ৷
৪. অপিনিহিতি (Apenthesis) : পরের ই-কার আগে উচ্চারিত হলে কিংবা যুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনির আগে ই-কার বা উ-কার উচ্চারিত হলে তাকে অপিনিহিতি বলে। যেমন – আজি > আইজ, সাধু > সাউধ, রাখিয়া > রাইখ্যা, বাক্য > বাইক্য, সত্য > সইত্য, চারি > চাইর, মারি > মাইর ইত্যাদি।
৫. অসমীকরণ (Dissimilation) : একই স্বরের পুনরাবৃত্তি দূর করার জন্য মাঝখানে যখন স্বরধ্বনি যুক্ত হয় তখন তাকে বলে অসমীকরণ। যেমন – ধপ + ধপ > ধপাধপ, টপ + টপ > টপাটপ ইত্যাদি।
৬. স্বরসঙ্গতি (Vowel harmony) : একটি স্বরধ্বনির প্রভাবে শব্দে অপর স্বরের পরিবর্তন ঘটলে তাকে স্বরসঙ্গতি বলে। যেমন – দেশি > দিশি, বিলাতি > বিলিতি, মুলা > মুলো ইত্যাদি ।
ক. প্রগত (Progressive) : আদিস্বর অনুযায়ী অন্ত্যস্বর পরিবর্তিত হলে প্রগত স্বরসঙ্গতি হয়। যেমন – মুলা > মুলো, শিকা > শিকে, তুলা > তুলো। -
খ. পরাগত (Regressive) : অন্ত্যস্বরের কারণে আদ্যস্বর পরিবর্তিত হলে পরাগত স্বরসঙ্গতি হয়। যেমন- আখো > আখুয়া > এখো, দেশি > দিশি ৷
গ. মধ্যগত (Mutual) : আদ্যস্বর ও অন্ত্যস্বর অনুযায়ী মধ্যস্বর পরিবর্তিত হলে মধ্যগত স্বরসঙ্গতি হয়। যেমন— বিলাতি > বিলিতি ।
ঘ. অন্যোন্য (Reciprocal) : আদ্য ও অন্ত্য দুই স্বরই পরস্পর প্রভাবিত হলে অন্যোন্য স্বরসঙ্গতি হয়। যেমন – মোজা > মুজো । ঙ. চলিত বাংলায় স্বরসঙ্গতি : গিলা > গেলা, মিলামিশা > মেলামেশা, মিঠা > মিঠে, ইচ্ছা > ইচ্ছে ইত্যাদি। পূর্বস্বর উ-কার হলে পরবর্তী স্বর ও-কার হয়। যেমন মুড়া > মুড়ো, চুলা > চুলো
ইত্যাদি। বিশেষ নিয়মে – উড়ুনি > উড়নি, এখনি > এখুনি হয়।
৭. সম্প্রকর্ষ বা স্বরলোপ : দ্রুত উচ্চারণের জন্য শব্দের আদি, অন্ত্য বা মধ্যবর্তী কোনো স্বরধ্বনির লোপকে বলা হয় সম্প্রকর্ষ। যেমন – বসতি > বতি, জানালা > জান্লা ইত্যাদি।
ক. আদিস্বরলোপ (Aphesis) : যেমন – অলাবু > লাবু > লাউ, উদ্ধার > উধার > ধার ।
খ. মধ্যস্বর লোপ (Syncope) : অগুরু > অগ্রু, সুবর্ণ > স্বর্ণ।
গ. অন্ত্যস্বর লোপ (Apocope) : আশা > আশ, আজি > আজ, চারি > চার (বাংলা), সন্ধ্যা > সঞঝা >
সাঁঝ। (স্বরলোপ বস্তুত স্বরাগমের বিপরীত প্রক্রিয়া।)
৮. ধ্বনি বিপর্যয় : শব্দের মধ্যে দুটি ব্যঞ্জনের পরস্পর পরিবর্তন ঘটলে তাকে ধ্বনি বিপর্যয় বলে। যেমন – ইংরেজি বাক্স > বাংলা বাস্ক, জাপানি রিক্সা > বাংলা রিস্কা ইত্যাদি। অনুরূপ – পিশাচ > পিচাশ, লাফ, ফাল।
৯. সমীভবন (Assimilation) : শব্দমধ্যস্থ দুটি ভিন্ন ধ্বনি একে অপরের প্রভাবে অল্প-বিস্তর সমতা লাভ করে। এ ব্যাপারকে বলা হয় সমীভবন। যেমন – জন্ম > জন্ম, কাঁদনা > কান্না ইত্যাদি।
ক. প্রগত (Progressive) সমীভবন : পূর্ব ধ্বনির প্রভাবে পরবর্তী ধ্বনির পরিবর্তন ঘটে। অর্থাৎ পরবর্তী ধ্বনি পূর্ববর্তী ধ্বনির মতো হয়, একে বলে প্রগত সমীভবন। যেমন – চক্র > চক্ক, পৰ্ব্ব > পক্ক, পদ্ম > পদ্দ, লগ্ন > লগ্গ ইত্যাদি ।
খ. পরাগত (Regressive) সমীভবন : পরবর্তী ধ্বনির প্রভাবে পূর্ববর্তী ধ্বনির পরিবর্তন হয়, একে বলে পরাগত সমীভবন। যেমন – তৎ + জন্য > তজ্জন্য, তৎ + হিত > তদ্ধিত, উৎ + মুখ > উন্মুখ ইত্যাদি ।
গ. অন্যোন্য (Mutual) সমীভবন : যখন পরস্পরের প্রভাবে দুটো ধ্বনিই পরিবর্তিত হয় তখন তাকে বলে
অন্যোন্য সমীভবন। যেমন— সংস্কৃত সত্য > প্রাকৃত সচ্চ। সংস্কৃত বিদ্যা > প্রাকৃত বিজ্জা ইত্যাদি। ১০. বিষমীভবন (Dissimilation) : দুটো সমবর্ণের একটির পরিবর্তনকে বিষমীভবন বলে। যেমন – শরীর > শরীল, লাল > নাল ইত্যাদি।
১১. দ্বিত্ব ব্যঞ্জন (Long Consonant) বা ব্যঞ্জনদ্বিত্বা : কখনো কখনো জোর দেয়ার জন্য শব্দের অন্তর্গত ব্যঞ্জনের দ্বিত্ব উচ্চারণ হয়, একে বলে দ্বিত্ব ব্যঞ্জন বা ব্যঞ্জনদ্বিত্বা। যেমন – পাকা > পাক্কা, সকাল > সক্কাল ইত্যাদি।
১২. ব্যঞ্জন বিকৃতি : শব্দ-মধ্যে কোনো কোনো সময় কোনো ব্যঞ্জন পরিবর্তিত হয়ে নতুন ব্যঞ্জনধ্বনি ব্যবহৃত হয়। একে বলে ব্যঞ্জন বিকৃতি। যেমন— কবাট > কপাট, ধোবা > ধোপা, ধাইমা > দাইমা ইত্যাদি ।
১৩. ব্যঞ্জনচ্যুতি : পাশাপাশি সমউচ্চারণের দুটি ব্যঞ্জনধ্বনি থাকলে তার একটি লোপ পায়। এরূপ লোপকে বলা
হয় ধ্বনিচ্যুতি বা ব্যঞ্জনচ্যুতি। যেমন – বউদিদি > বউদি, বড় দাদা > বড়দা ইত্যাদি ।
১৪. অন্তর্হতি : পদের মধ্যে কোনো ব্যঞ্জনধ্বনি লোপ পেলে তাকে বলে অন্তর্হতি । যেমন – ফাল্গুন > ফাগুন,
ফলাহার > ফলার, আলাহিদা > আলাদা ইত্যাদি ।
১৫. অভিশ্রুতি (Umlaut) : বিপর্যস্ত স্বরধ্বনি পূর্ববর্তী স্বরধ্বনির সাথে মিলে গেলে এবং তদনুসারে পরবর্তী স্বরধ্বনির পরিবর্তন ঘটলে তাকে বলে অভিশ্রুতি। যেমন - করিয়া থেকে অপিনিহিতির ফলে ‘কইরিয়া’ কিংবা বিপর্যয়ের ফলে ‘কইরা’ থেকে অভিশ্রুতিজাত ‘করে’। এরূপ – শুনিয়া > শুনে, বলিয়া > বলে, হাটুয়া > হাউটা > হেটো, মাছুয়া > মেছো ইত্যাদি
১৬. র-কার লোপ : আধুনিক চলিত বাংলায় অনেক ক্ষেত্রে র-কার লোপ পায় এবং পরবর্তী ব্যঞ্জন দ্বিত্ব হয়। যেমন – তর্ক > তক্ক, করতে > কত্তে, মারল > মাল্ল, করলাম > কল্লাম ।
১৭. হ-কার লোপ : আধুনিক চলিত ভাষায় অনেক সময় দুই স্বরের মাঝামাঝি হ-কারের লোপ হয়। যেমন—পুরোহিত > পুরুত, গাহিল > গাইল, চাহে > চায়, সাধু > সাহু > সাউ, আরবি আল্লাহ্ > বাংলা আল্লা,ফারসি শাহ্> বাংলা শা ইত্যাদি।
য়-শ্ৰুতি ও ব-শ্ৰুতি (Euphonic glides ) : শব্দের মধ্যে পাশাপাশি দুটো স্বরধ্বনি থাকলে যদি এ দুটো স্বর মিলে একটি দ্বি-স্বর (যৌগিক স্বর) না হয়, তবে এ স্বর দুটোর মধ্যে উচ্চারণের সুবিধার জন্য একটি ব্যঞ্জনধ্বনির মতো অন্তঃস্থ ‘য়' (Y) বা অন্তঃস্থ ‘ব’ (W) উচ্চারিত হয়। এই অপ্রধান ব্যঞ্জনধ্বনিটিকে বলা হয় য়-শ্রুতি ও ব-শ্রুতি। যেমন – মা + আমার মা (য়) আমার > মায়ামার। যা + আ যা (ও) য়া = = = যাওয়া। এরূপ – নাওয়া, খাওয়া, দেওয়া ইত্যাদি ।
স্বরধ্বনির রূপান্তর
সম্পাদনা- পরবর্তী সিলেবলের কেন্দ্রে ই বা উ থাকলে
- পূর্ববর্তী সিলেবলের অ, ও হয়ে যায়। যত (উচ্চারণ জতো), কিন্তু মতি (উচ্চারণ মোতি)।
- পূর্ববর্তী সিলেবলের অ্যা, এ হয়ে যায়। দেখা (দ্যাখা), কিন্তু দেখি।
- পূর্ববর্তী সিলেবলের এ, ই হয়ে যায়। লেখা, কিন্তু লিখি।
- পূর্ববর্তী সিলেবলের ও, উ হয়ে যায়। শোনা, কিন্তু শুনি।
- ব্যতিক্রম: যদি পূর্ববর্তী সিলেবলের অ-টি একটি উপসর্গের হয়, তবে এর উচ্চারণ পরিবর্তিত হয় না। যেমন- অপূর্ব, সম্পূর্ণ।
- শব্দের শুরুতে র-ফলা যুক্ত ব্যঞ্জনের নিহিত অ, ও হয়ে যায়। যেমন- শ্রম (স্রোম্), ভ্রম (ভ্রোম্), ইত্যাদি। ব্যতিক্রম: ক্রয়।
- লিখিত বাংলায় পরের বর্ণে য-ফলা থাকলে আগের বর্ণটির অ, ও হয়ে যায়। যেমন- অরণ্য (অরোন্নো), সদ্য (শোদ্দো), পর্যন্ত (পোর্জোন্তো), পথ্য (পোত্থো)।
- লিখিত বাংলায় পরের বর্ণ ক্ষ বা জ্ঞ হলে আগের বর্ণের নিহিত অ, ও হয়ে যায়। যেমন- বক্ষ (বোক্খো), লক্ষ (লোক্খো), যজ্ঞ (জোগ্গোঁ)।
- ব্যতিক্রম: যদি পূর্ববর্তী সিলেবলের অ-টি একটি উপসর্গের হয়, তবে এর উচ্চারণ পরিবর্তিত হয় না। যেমন- অজ্ঞ (অগ্গোঁ), সংজ্ঞা (শংগাঁ)।
- শব্দের মাঝে বা শেষে অবস্থিত নিহিত অ, সবসময় ও উচ্চারিত হয়। যেমন- ছাগল (ছাগোল্), প্রধানত (প্রোধানোতো), ভিন্ন (ভিন্নো)।
- ব্যতিক্রম: যদি সিলেবলটি উপসর্গের পরে অবস্থিত শব্দমূল হয়, তবে সেই শব্দমূলের শুরুর অ, ও হয় না। যেমন- বিকল (বিকোল উচ্চারিত হয় না), হৃদয় (হৃদোয় উচ্চারিত হয় না)।
গ্রন্থপঞ্জি
সম্পাদনা- আধুনিক বাংলা ব্যাকরণ ও ভাষা বিচিত্রা, নবম ও দশম শ্রেণির জন্য, ডঃ বিশ্বজীবন মজুমদার, ডিসেম্বর ২০০৪ (পুনর্মুদ্রণ জানুয়ারি ২০১০), দে বুক কনসার্ন
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ admin (২০২২-০৫-০৪)। "ব ফলা উচ্চারণের নিয়ম উদাহরণ সহ - সহজ ব্যাখ্যা || বাংলা ব্যাকরণ"। SuggestFor (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-১৯।