বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সামরিক পরিকল্পনা
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আগে, পূর্ব পাকিস্তানে ভারতের বড় আকারের সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার কোনও পরিকল্পনা ছিল না। ১৯৬২-এর চীন-ভারত যুদ্ধের পর থেকে, ভারতীয় সেনা পূর্ব কমান্ডের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল ভারতের উত্তর ও পূর্ব সীমান্ত, শিলিগুড়ি করিডোর রক্ষা করা[১] এবং মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, মণিপুরে বিদ্রোহী এবং পশ্চিমবঙ্গে নকশালদের বিরুদ্ধে লড়াই করা।[২]
১৯৪৮ সাল থেকে বেশিরভাগ পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী পশ্চিম পাকিস্তানে অবস্থান করছিল এবং পূর্ব পাকিস্তান সম্পর্কে সেনাবাহিনীর কৌশলগত ভূমিকা ছিল পশ্চিম পাকিস্তানে ভারতকে পরাজিত না করা পর্যন্ত সেখানে ভূমিকা রাখা।[৩] পাকিস্তান সেনাবাহিনী পূর্ব কমান্ড শেষ পর্যন্ত যমুনা, পদ্মা ও মেঘনা দ্বারা বেষ্টিত অঞ্চল বৃত্তাকার ঢাকা বরাবর তাদের বাহিনীকে কেন্দ্র করে ঢাকাকে শেষ রক্ষার পরিকল্পনা করেছিল।[৪]
ভারতীয় পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড মোতায়েন ১৯৭১
সম্পাদনাভারতীয় সেনাবাহিনী ১৯৬৫ সাল থেকে পূর্ব পাকিস্তানে অবস্থানরত পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে সমতা বজায় রেখেছিল এবং ১৯৭১ সালে পশ্চিমবঙ্গে একটি সাঁজোয়া ব্রিগেড এবং একটি পদাতিক ডিভিশন মোতায়েন করেছিল। মিজোরাম, মণিপুর এবং নাগাল্যান্ডে পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য কমান্ড ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছিল। পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের ৪টি প্রশাসনিক ইউনিট ছিল: বেঙ্গল এরিয়া কর্পস (নবম বিভাগ এবং অন্যান্য ইউনিট), থার্টি থ্রি কর্পস (তৃতীয় সাঁজোয়া ব্রিগেড, ১৭তম, ২৭তম, ও ২০তম পর্বতমালা বিভাগ) শিলিগুড়ি করিডোর পাহারা দেওয়ার পাশাপাশি পাশাপাশি প্রয়োজনে সিকিম এবং ভুটানের সুরক্ষাও নিশ্চিত করা, ১০১ কমিউনিকেশন জোন (কোন যুদ্ধ শাখা ছিল না, ছিল প্রশাসনিক শাখা, যা ৩৩ ও ৪ কর্পস মধ্যবর্তী এলাকায় পরিচালনা করা হত), ৪ কর্পস (২য়, ৫তম, ২৩তম, ৫৭তম, ৮৭তম এবং ৮ম পর্বত বিভাগ) যা আসাম, অরুণাচল, মনিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা ও নাগাল্যান্ডের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
এপ্রিল ১৯৭১: বাংলাদেশে ভারতীয় হস্তক্ষেপ?
সম্পাদনামেজর জেনারেল রও ফরমান আলী এবং লেঃ জেনারেল সাহাবজাদা ইয়াকুব খান বাঙালি নাগরিকদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান পরিচালনার বিরোধিতা করার প্রধান কারণ ছিল ভারতীয় আক্রমণের ভয়, যা পাকিস্তান সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে সামনা করতে প্রস্তুত ছিল না।