বহুশ্রুতীয়
বহুশ্রুতীয় হলো বসুমিত্র, শ্রীপুত্রপরিপশ্চা ও অন্যান্য উৎস অনুসারে আদি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের একটি, এবং মহাসাংঘিক সম্প্রদায়ের উপ-সম্প্রদায়।
ইতিহাস
সম্পাদনামধ্য ভারতের উজ্জয়িনী থেকে ষষ্ঠ শতকের একজন সন্ন্যাসী পরমার্থ লিখেছেন যে বহুশ্রুতীয় সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতার নাম ছিল যাজ্ঞবল্ক্য।[১] পরমার্থের বিবরণে, যাজ্ঞবল্ক্য বুদ্ধের সময়ে বসবাস করতেন এবং তাঁর বক্তৃতা শুনেছিলেন বলে কথিত আছে, কিন্তু বুদ্ধের পরিনির্বাণের সময় তিনি সমাধির গভীর অবস্থায় ছিলেন।[২] যাজ্ঞবল্ক্য এই সমাধি থেকে ২০০ বছর পরে আবির্ভূত হওয়ার পরে, তিনি আবিষ্কার করেন যে মহাসাংঘিকরা কেবল সূত্রগুলির উপরিভাগের অর্থ শিক্ষা দিচ্ছেন, এবং তাই তিনি তাদের সম্পূর্ণ অর্থ ব্যাখ্যা করার জন্য বহুশ্রুতীয় সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।[৩]
পরমার্থ বহুশ্রুতীয় সম্প্রদায়ের উৎপত্তিকে মহাযান শিক্ষার সাথে যুক্ত করে:[৪]
মহাসাংঘিক সম্প্রদায়ের এই অর্হৎ সম্পূর্ণভাবে ভাসা ভাসা অর্থে এবং গভীর অর্থে পাঠ করেছেন। পরবর্তীকালে, মহাযানের বোধ ছিল। কেউ কেউ বিশ্বাস করেননি। যারা বিশ্বাস এনেছে তারা তা পাঠ করেছে এবং ধরে রেখেছে। মহাসাংঘিক সম্প্রদায়ের যারা এই শিক্ষাগুলি প্রচার করেছিলেন, এবং অন্যরা যারা তাদের প্রচার করেননি। প্রাক্তনরা "যারা অনেক শুনেছে" (বহুশ্রুতীয়) নামে পৃথক সম্প্রদায়ের গঠন করেছিল। [...] এই সম্প্রদায়ের থেকেই সত্যসিদ্ধিশাস্ত্র এসেছে। এই কারণেই সেখানে মহাযানের ধারণার মিশ্রণ পাওয়া যায়।
মতবাদ
সম্পাদনাপরমার্থের মতে, বহুশ্রুতীয়রা হীনযান ও মহাযান উভয় শিক্ষাই গ্রহণ করেছিল।[৫] তিনি আরো বলেন, বহুশ্রুতীয় সম্প্রদায়টি "প্রচলিত সত্য" ও "চূড়ান্ত সত্য" উভয়কেই সম্পূর্ণরূপে গ্রহণ করার জন্য গঠিত হয়েছিল।[৬] শ্রীপদ্ম ও অ্যান্টনি বারবারের মতে, এই পূর্ণ ব্যাখ্যার বহুশ্রুতীয় উপলব্ধির মধ্যে মহাযান শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত ছিল।[৭]
বসুমিত্রের মতে, বহুশ্রুতীয়রা বুদ্ধের অনিক্ক, দুঃখ, শূন্যতা, অনাত্তা ও নির্বাণ এর শিক্ষাকে সুপ্রমন্ডন বলে মনে করতেন, যখন অন্যান্য বিষয়ে তাঁর ব্যাখ্যাগুলিকে জাগতিক হিসাবে বিবেচনা করা হত।[৮] কে. বেঙ্কট রমনান লিখেছেন:[৯]
অস্তিত্বের মৌলিক উপাদানগুলির (ধর্ম-শূন্যতা) অসারত্বের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে শর্তহীন বাস্তবতার চূড়ান্ততার উপর জোর দেওয়ার কৃতিত্ব মহাসাংঘিকদের। এইগুলির প্রতিটি শাখা স্পষ্টভাবে জাগতিক এবং চূড়ান্তের মধ্যে পার্থক্য তৈরি করেছিল, জাগতিকের অ-চূড়ান্ততার উপর জোর দিতে এসেছিল এবং এইভাবে চূড়ান্তের দিকে মনোযোগ নিবদ্ধ করতে সহায়তা করেছিল। বহুশ্রুতীয়রা বুদ্ধের ট্রান্সমন্ডেন শিক্ষা থেকে জাগতিককে আলাদা করেছেন এবং মনে করতেন যে পরবর্তীটি সরাসরি একজনকে কলুষ থেকে মুক্তির দিকে নিয়ে যায়।
মহাসাংঘিক সম্প্রদায়ের মতো, বহুশ্রুতীয়রা বিশ্বাস করত যে অর্হতগণ ভুল ছিল।[১০]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Warder, A.K. Indian Buddhism. 2000. p. 267
- ↑ Warder, A.K. Indian Buddhism. 2000. p. 267
- ↑ Warder, A.K. Indian Buddhism. 2000. p. 267
- ↑ Walser, Joseph. Nāgārjuna in Context: Mahāyāna Buddhism and Early Indian Culture. 2005. pp. 51-52
- ↑ Baruah, Bibhuti. Buddhist Sects and Sectarianism. 2008. p. 48
- ↑ Walser, Joseph. Nāgārjuna in Context: Mahāyāna Buddhism and Early Indian Culture. 2005. p. 52
- ↑ Sree Padma. Barber, Anthony W. Buddhism in the Krishna River Valley of Andhra. 2008. p. 61
- ↑ Dutt, Nalinaksha. Buddhist Sects in India. 1998. p. 117
- ↑ Ramanan, K. Venkata. Nāgārjuna's Philosophy. 1998. pp. 62-63
- ↑ Walser, Joseph. Nāgārjuna in Context: Mahāyāna Buddhism and Early Indian Culture. 2005. p. 218