বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার ধস
২৪ নভেম্বর ২০১২ সালে চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট এলাকায় বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারের স্টিলের গার্ডার ধসে পড়ে ১৭ জন নিহত হয়। স্থানীয় সময় (জিএমটি +৬) ছিল ৭:৩০টায়, হঠাৎ করে তিনটি গার্ডার নির্মাণের সময় ফ্লাইওভার (ওভারপাস) থেকে পড়ে যায়। পরে বাংলাদেশ সরকার জানায় যে ঘটনাস্থলে ১৫ জন মারা যায় এবং পঞ্চাশ জন আহত হয়েছিল।[১][২][৩][৪]
সময় | সন্ধ্যা ৭.০০ টা, ২৪ নভেম্বর ২০১২ |
---|---|
অবস্থান | বহদ্দারহাট, চট্টগ্রাম মহানগর |
হতাহত | |
৫০ জন আহত | |
নিহত | প্রায় ১৭ জন |
এর আগে ২৯ জুন, ২০১২ সালে বহদ্দারহাটের এই নির্মাণাধীন ফ্লাইওভার থেকে ১৩০ ফুট দীর্ঘ কংক্রিটের গার্ডার ভেঙে পড়েছিল।[৫]
স্থান
সম্পাদনাবহদ্দারহাটের কেন্দ্রস্থলে বড় শহর ঘড়ি থেকে প্রায় ২০ মিটার (৬৬ ফুট) কাছাকাছি ফ্লাইওভার থেকে তিনটি গার্ডার ভেঙ্গে পড়ে।
ঘটনা
সম্পাদনা২৪ নভেম্বর ২০১২, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় গার্ডারগুলো ভেঙ্গে পড়ে। গার্ডারগুলো নিচে পড়ার কারণে একটি বিকট শব্দ তৈরি হয়। এতে যারা ঐ স্থানের কাছাকাছি ছিল তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। দেখার জন্য লোকজন ঐ জায়গার দিকে ছুটতে শুরু করে। তারা আহত মানুষকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসে।
আনুমানিক ৫০০ জন মানুষ এই গার্ডারগুলির নিচে অবস্থান করছিল। তাছাড়া, সেখানে অস্থায়ী মার্কেট ছিল যাতে প্রচুর খদ্দের ছিল।
বহদ্দারহাট এলাকার আশেপাশের শিক্ষার্থীরা সাধারণত তাদের বন্ধুদের সাথে কোচিংয়ের টিউটোরিয়াল ক্লাস শেষ করার পর সন্ধ্যায় "বহদ্দার বাড়ি পুকুর পাড়" এর সামনে গল্প-গুজব করতে পছন্দ করত। ঐ গার্ডারগুলির নিচে বসার জায়গা ছিল। এ ঘটনার সন্ধ্যায় অনেক শিক্ষার্থী ওই জায়গায় বসে গল্পগুজব করছিল।
জরুরি উদ্ধার তৎপরতা
সম্পাদনাযখন ঘটনাটি ঘটে তখন স্থানীয় লোকেরা সেই পরিস্থিতিতে আটকে থাকা ব্যক্তিদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে। ১৫ মিনিটের মধ্যে ফায়ার ব্রিগেড দলটি ওই স্থানে পৌঁছে যায়। এই ঘটনায় প্রায় ১৭ জন প্রাণ হারায়। গার্ডার তাদের উপর সরাসরি পড়েছিল এবং তারা সবাই মারা যায়। অনেক অসনাক্ত মৃতদেহ পাওয়া যায়। এতে প্রায় ৫০ জন আহত হয়। অনেক মানুষ পঙ্গু হয়।
ঘটনা পরবর্তী
সম্পাদনাঘটনার পর উত্তেজিত জনতা এ ফ্লাইওভার প্রকল্পের বিভিন্ন সরঞ্জাম ও বহদ্দারহাট পুলিশবক্সে আগুন ধরিয়ে দেয় ও ওই এলাকায় ভাংচুর চালায়। তারা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রেভিনিউ), ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী যানবাহন এবং একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করে। এসময় উত্তেজিত জনতা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাথরও নিক্ষেপ করে।[৬]
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করেও ব্যর্থ হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। ঘটনার পর রাত ১১টা থেকে উদ্ধারকাজ শুরু করে সেনাবাহিনী।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "চট্টগ্রামে ফ্লাইওভারের গার্ডার ভেঙে নিহত ১৪"। banglanews24.com। ২৫ নভেম্বর ২০১২।
- ↑ "Bangladesh overpass collapse kills as many as 13" (ইংরেজি ভাষায়)। GlobalPost। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-২৯।
- ↑ "Overpass collapse kills 11 in Bangladesh; protests erupt" (ইংরেজি ভাষায়)। সিএনএন। ২০১২-১১-২৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-২৯।
- ↑ "13 killed in Bangladesh overpass collapse" (ইংরেজি ভাষায়)। news.com.au। ২০১২-১১-২৫। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-২৯।
- ↑ "চট্টগ্রামে ভেঙে পড়ল নির্মাণাধীন ফ্লাইওভার"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ২৯ জুন ২০১২। ২৬ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০১৯।
- ↑ "স্বপ্নের ফ্লাইওভার এখন মূর্তিমান আতঙ্ক"। banglanews24.com। ৩১ ডিসেম্বর ২০১২।