তড়িৎ বর্তনী
তড়িৎ বর্তনী বা তড়িৎ নেটওয়ার্ক হল বিভিন্ন বৈদ্যুতিক উপাদান যেমন রোধ, ধারক, আবেশক, চাবি ইত্যাদির আন্তঃসংযোগ। এটি তড়িৎ সরবরাহ এবং ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্কের মতই দীর্ঘ হতে পারে।
তড়িৎ বর্তনী বলতে অনেকগুলো বৈদ্যুতিক উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত এমন একটি বদ্ধ লুপ বুঝায় যাতে বিদ্যুৎ এক স্থান থেকে যাত্রা শুরু করে আবার সে স্থানে ফিরে আসার সুযোগ পায়। কিন্তু নেটওয়ার্ক কেবল বিভিন্ন উপাদানের সমন্বয় হলেই হয়ে যায়। এর জন্য বিদ্যুৎ প্রবাহ শর্ত নয়। তড়িৎ এবং নদীর মাঝে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। অর্থাৎ একটা নদী থেকে বিদ্যুৎ সম্পর্কিত নানা বিষয় সহজে বোঝা যায়। নদীতে পানি প্রবাহিত হয়। নদীর পানি উৎস (যেমন ঝরনা) হতে উৎপন্ন হয়ে সাগরের দিকে প্রবাহিত হয়। তড়িৎ এর ক্ষেত্রে, একে বিদ্যুৎ পাওয়ার স্টেশন( Power generation station) বলে। নদী যেমন পানি প্রবাহের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। তড়িৎ বর্তনীতে তার বা ক্যাবল ( conductor) তড়িৎ বহন করে। নদীর পানির স্রোত হচ্ছে কারেন্ট (current, প্রতিক I, একক amp)। নদীর মুখে যদি বাধ দেওয়া হয়, তড়িৎ ক্ষেত্রে একে রোধ ( resistance, প্রতিক R, একক Ohm) বলে। নদীর পানি যে চাপে সাগরের দিকে প্রবাহিত হয় তড়িৎ ক্ষেত্রে একে তড়িৎ চাপ বা বিভব পার্থক্য (Voltage, প্রতিক E ও V, একক volt) বলে। এবং প্রধান বিষয় হলো নদীর পানি, তড়িৎ ক্ষেত্রে এটি কে পাওয়ার বা বৈদ্যুতিক এনার্জি ( Energy, প্রতিক P, একক watt, ) বলে।
প্রকারভেদ
সম্পাদনাতড়িৎ বর্তনী তিন প্রকার। যথাঃ ১) শ্রেণিসংযোগ বর্তনী (series circuit) এবং (২) সমান্তরাল বর্তনী (Parallel circuit )। (৩) মিশ্র বর্তনী ( Mix circuit)
শ্রেণিসংযোগ বর্তনীঃ যে বর্তনীতে তড়িৎউপকরণগুলো পরপর সাজানো থাকে তাকে শ্রেণীসংযোগ বর্তনী বলে। এবং শ্রেণি সংযোগে কারেন্ট প্রবাহের জন্য শুধুমাত্র একটি পথ থাকে।
সমান্তরাল বর্তনীঃ যে বর্তনীতে তড়িৎ উপকরনগুলো এমনভাবে সাজানো থাকে যে প্রত্যেকটির একপ্রান্ত গুলো একটি সাধারণ বিন্দুতে এবং অন্যপ্রান্তগুলো অন্য একটি সাধারণ বিন্দুতে সংযুক্ত থাকে তবে তাকে সমান্তরাল বর্তনী বলে। এবং সমান্তরাল বর্তনীতে কারেন্ট প্রবাহের জন্য একাধিক পথ থাকে।
মিশ্র বর্তনীঃ যে তড়িৎ বর্তনীতে লোড সমূহ শ্রেণি এবং সমান্তরাল উভয় ভাবে সংযোগ থাকে, তাকে মিশ্র সার্কিট বা মিশ্র বর্তনী বলে।