বরিশাল মহাশ্মশান
বরিশাল মহাশ্মশান উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় এবং প্রায় ২০০ বছরের প্রাচীন একটি শ্মশান। ১৯২৭ সাল থেকে এই শ্মশানে উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ দীপাবলি উৎসব পালিত হয়ে আসছে।[১][২]
বরিশাল মহাশ্মশান | |
---|---|
অবস্থান | কাউনিয়া, বরিশাল |
স্থানাঙ্ক | ২২°৪২′৫০″ উত্তর ৯০°২১′৩৮″ পূর্ব / ২২.৭১৩৯৫৬° উত্তর ৯০.৩৬০৪৩৩° পূর্ব |
নির্মিত | ১৮৫০ |
অবস্থান ও গঠন
সম্পাদনাবরিশাল নগরীর কাউনিয়ায় এই মহাশ্মশানের অবস্থান। শ্মশানটি প্রায় ২০০ বছর আগে ৫ একর ৯৬ শতাংশ জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়। নতুন পুরনো মিলিয়ে মহাশ্মশানে ৬১ হাজারেরও বেশি সমাধি রয়েছে। এরমধ্যে ৫০ হাজারের অধিক পাকা, ১০ হাজার কাঁচা মঠ রয়েছে। এছাড়া ৮০০ মঠ রয়েছে যাদের স্বজনরা এই দেশে নেই, সেসব মঠ হলুদ রং করা হয়েছে। স্বজন না থাকা মঠগুলোতে কমিটির পক্ষ থেকে মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয়ে থাকে।[১]
ইতিহাস
সম্পাদনাবরিশাল নগরীর পশ্চিম কাউনিয়া ও নতুন বাজার এলাকায় ৬ একর জমির উপর এ মহাশশ্মানের জন্ম বরিশাল নগরীর পত্তনের পূর্বেই। ইতিহাস থেকে জানা যায় ধর্ণাঢ্য জমিদারদের আর্থিক সহায়তায় নতুন বাজারে প্রথম মহাশ্মশান স্থাপিত হয়। পরে তা কাউনিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।[৩]
দীপাবলি উৎসব
সম্পাদনাবরিশালের এই শ্মশানে ১৯২৭ সাল থেকে উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ দীপাবলি উৎসব উদযাপিত হয়ে আসছে। প্রতি বছর পূর্ব পুরুষের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে দীপাবলির সময় ভারত, নেপালসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ১০-১৫ হাজার মানুষ এখানে আসেন।
কালীপূজার আগেরদিন ভূত চতুর্দশীর পুন্য তিথীতে প্রতিবছর হিন্দুধর্মাবলম্বীরা তাদের প্রয়াত স্বজনদের সমাধিতে দ্বীপ জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রিয়জনের স্মৃতির উদ্দেশ্যে জ্বালানো মোমের আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে পুরো শশ্মান। পাশাপাশি প্রয়াত স্বজনদের সমাধি ফুল দিয়ে সাজিয়ে প্রয়াত প্রিয়জনের উদ্দেশে তার সমাধিস্থলে নিবেদন করেন প্রয়াতের পছন্দের নানা ধরনের খাবার। দুই দিনব্যাপী এই শ্মশানে চলে দীপাবলি উৎসব।[১][২][৩]
উল্লেখযোগ্য শেষকৃত্য
সম্পাদনা- সত্যানন্দ দাশ - জীবনানন্দ দাশের পিতা[১]
- সর্বানন্দা দাশ - জীবনানন্দ দাশের পিতামহ[১]
- দেবেন্দ্রনাথ ঘোষ
- কালিচন্দ্র ঘোষ
- মনোরমা বসু
- অশ্বিনীকুমার দত্ত - বাঙালি রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক এবং লেখক (মৃত্যুর ৮০ বছর পর ২০১২ সালে ভারতের কেওড়াতলা মহাশ্মশান থেকে চিতাভস্য এনে এ মহামশ্মশানে স্থাপন করা হয়)[৩]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "হাজারো প্রদীপের আলোয় আলোকিত বরিশাল মহাশ্মশান"। somoynews.tv। ২৪ অক্টোবর ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০২৪।
- ↑ ক খ "বরিশাল মহাশ্মশানে দীপাবলি"। ডেইলি স্টার - বাংলা। ২০২২-১০-২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-১৭।
- ↑ ক খ গ "প্রদ্বীপের আলোয় আলোকিত বরিশাল মহাশ্মশান"। দৈনিক ইত্তেফাক। ১৩ নভেম্বর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০২৪।