বব সিম্পসন

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার

রবার্ট ব্যাডেলি সিম্পসন, এও (ইংরেজি: Bob Simpson; জন্ম: ৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৬) নিউ সাউথ ওয়েলসের মারিকভিল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ও বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে প্রতিনিধিত্ব করেন। এছাড়াও জাতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন তিনি।

বব সিম্পসন
১৯৫২ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে বব সিম্পসন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
রবার্ট ব্যাডেলি সিম্পসন
জন্ম (1936-02-03) ৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৬ (বয়স ৮৮)
মারিকভিল, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া
ডাকনামসিমো, ববি
উচ্চতা১.৭৯ মিটার (৫ ফুট ১০ ইঞ্চি)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি লেগ স্পিন
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার
সম্পর্কঅ্যান্ড্রু হিলডিচ (জামাতা)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২০৯)
২৩ ডিসেম্বর ১৯৫৭ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট৩ মে ১৯৭৮ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৪৪)
২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৮ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ ওডিআই১২ এপ্রিল ১৯৭৮ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৫৩–১৯৫৬নিউ সাউথ ওয়েলস
১৯৫৬–১৯৬১ওয়েস্টার্ন ওয়ারিয়র্স
১৯৬১–১৯৬৮; ১৯৭৭–১৯৭৮নিউ সাউথ ওয়েলস
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৬২ ২৫৭
রানের সংখ্যা ৪৮৬৯ ৩৬ ২১,০২৯ ১৬৫
ব্যাটিং গড় ৪৬.৮১ ১৮.০০ ৫৬.২২ ৩৩.০০
১০০/৫০ ১০/২৭ ০/০ ৬০/১০০ ০/০
সর্বোচ্চ রান ৩১১ ২৩ ৩৫৯ ৩৭
বল করেছে ৬৮৮১ ১০২ ২৭,৯৯৮ ১৬৬
উইকেট ৭১ ৩৪৯
বোলিং গড় ৪২.২৬ ৪৭.৫০ ৩৮.০৭ ৩৩.৫০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৫/৫৭ ২/৩০ ৫/৩৩ ২/৩০
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১১০/০ ৪/০ ৩৮৩/০ ৬/০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৪

ঘরোয়া ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলস, ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া দলে খেলেছেন। ববি বা সিমো ডাক নামে পরিচিত বব সিম্পসন অস্ট্রেলিয়া দলের সফলতম কোচের মর্যাদা পেয়ে আসছেন। আত্মীয়তার দিক দিয়ে সাবেক অস্ট্রেলীয় টেস্ট ক্রিকেটার অ্যান্ড্রু হিলডিচ সম্পর্কে তার জামাতা হন।

খেলোয়াড়ী জীবন

সম্পাদনা

ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে অস্ট্রেলিয়া দলে খেলেছেন সিম্পসন। পাশাপাশি অনিয়মিতভাবে লেগ স্পিন বোলিং করতেন। ১৯৫৭-৫৮ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টেস্ট দলে অন্তর্ভুক্ত হন সিম্পসন। তরুণ ও নবীন অস্ট্রেলিয়া দলকে সর্বাপেক্ষা দূর্বল দল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। টেস্টের পূর্বে প্রস্তুতিমূলক খেলায় সিম্পসন ধারাবাহিকতা বজায় রাখেন। ট্রান্সভালের বিপক্ষে ১০৩ ও ইস্টার্ন প্রভিন্সের বিপক্ষে অপরাজিত ৫৩* করেন। সাত খেলায় তিনি ৬০.৬৬ গড়ে ৩০৪ রান সংগ্রহ করেন।

জোহেন্সবার্গে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে। হিউ টেফিল্ডের বলে লেগ বিফোর উইকেটে শিকার হবার পূর্ব পর্যন্ত ৬০ রান করেন।[] দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ২৩* করেন ও তিন ক্যাচ পান।[] কিন্তু পরবর্তী চার টেস্টে তিনি মাত্র ৫৩ রান যোগ করতে সক্ষম হন। তিনি সর্বমোট ২২.৬৭ গড়ে ১৩৬ রান পান।[] কিন্তু তার ক্যাচের বিষয়ে ব্যতিক্রমধর্মী ফলাফল প্রদর্শন করেন ও ১৩ ক্যাচ নিয়ে দলে ভূমিকা রাখেন।[] সর্বমোট ১৬ খেলায় ২৬ ক্যাচ পান তিনি।[] পরবর্তীতে সহঃ অধিনায়ক নীল হার্ভের পরামর্শক্রমে ব্যাটিংয়ের ধরন পাল্টিয়ে বেশ সফলকাম হন তিনি।[]

১৯৬৪ সালে অ্যাশেজ সিরিজ খেলার জন্যে অস্ট্রেলিয়া দলের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেন। ২৩ জুলাই, ১৯৬৪ তারিখে ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে টেস্ট ক্রিকেটে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক হিসেবে বব সিম্পসন ৩১১ রানের মনোরম ইনিংসের কল্যাণে সফরকারীরা পাহাড়সম ৬৫৬/৮ তুলে।[] অবশ্য ইংরেজ দলও ৬০০ রানের কোটা স্পর্শ করতে পেরেছিল। উভয় দলই তাদের প্রথম ইনিংসে ছয় শতাধিক রান সংগ্রহ করলে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায়।

খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর গ্রহণের দশ বছর পর ৪১ বছর বয়সে বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেট চলাকালীন অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়কত্ব করে ব্যাপক সাড়া ফেলেন।

১৯৮৬ সালে অস্ট্রেলিয়া দলের কোচের জন্য মনোনীত হন।[] জুলাই, ১৯৯৬ সালে জিওফ মার্শ দায়িত্ব নেয়ার পূর্ব পর্যন্ত এ পদে আসীন ছিলেন। ধারাবাহিকভাবে টেস্ট সিরিজ পরাজিত অস্ট্রেলিয়া দল সিম্পসনের সুযোগ্য নির্দেশনায় প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফিরে আসে ও বিশ্ব ক্রিকেটে শক্তিশালী দলে রূপান্তরিত হয়। তন্মধ্যে ১৯৮৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে শিরোপা লাভ অন্যতম। ১৯৮৯ সালে ইংল্যান্ডে অ্যাশেজ জয় করে। পূর্বতন একচ্ছত্র প্রাধান্যবিস্তারকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলকে ১৯৯৫ সালে তাদের মাঠেই প্রভাববিস্তার করে অস্ট্রেলিয়া দল। এছাড়াও ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেটে লিচেস্টারশায়ার ও ল্যাঙ্কাশায়ার দলের কোচের দায়িত্ব পান।

সম্মাননা

সম্পাদনা

১৯৬৫ সালে উইজডেন কর্তৃক তিনি বর্ষসেরা ক্রিকেটারের মর্যাদা পান। ১৯৮৫ সালে স্পোর্ট অস্ট্রেলিয়া হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত হন।[] এছাড়াও ২০০৬ সালে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট হল অব ফেম ও ২০১৩ সালে আইসিসি ক্রিকেট হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত হন সিম্পসন।[]

১৯৭৮ সালে মেম্বার অব দি অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়া এবং ২০০৭ সালে অফিসার অব দি অর্ডার উপাধিতে ভূষিত হন।[][১০] ২০০০ সালে অস্ট্রেলীয় স্পোর্টস মেডেল এবং ২০০১ সালে শতবার্ষিকী পদক লাভ করেন।[১১][১২]

অর্জনসমূহ

সম্পাদনা

একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে বব সিম্পসন ক্রিকেটের ইতিহাসের টাই হওয়া উভয় টেস্টের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। প্রথমটিতে খেলোয়াড় হিসেবে ও পরেরটিতে অস্ট্রেলিয়া দলের কোচ হিসেবে অংশগ্রহণ ছিল তার।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Perry, p. 236.
  2. Cricinfo - Statsguru - RB Simpson - Tests - Innings by innings list[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. Cricinfo
  4. Haigh, p. 114.
  5. Cricinfo.com
  6. Perry, p. 320.
  7. "Bob Simpson AO MBE"। Sport Australia Hall of Fame। ২৪ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০১৩ 
  8. "Simpson to be inducted into the ICC Cricket Hall of Fame"। International Cricket Council। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ২০১৩ 
  9. "Simpson, Robert Baddeley, AM"। It's an Honour। ২৪ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০১৩ 
  10. "Simpson, Robert Baddeley, AO"। It's an Honour। ২৪ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০১৩ 
  11. "SIMPSON, Robert Baddeley: Australian Sports Medal"। It's an Honour। ২৪ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০১৩ 
  12. "SIMPSON, Robert Baddeley: Centenary Medal"। It's an Honour। ২৪ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০১৩ 

আরও দেখুন

সম্পাদনা

আরও পড়ুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা
পূর্বসূরী
রিচি বেনো
অস্ট্রেলীয় টেস্ট ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯৬৩/৬৪–১৯৬৫/৬৬
উত্তরসূরী
ব্রায়ান বুথ
পূর্বসূরী
ব্রায়ান বুথ
অস্ট্রেলীয় টেস্ট ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯৬৫/৬৬-১৯৬৫/৬৬
উত্তরসূরী
ব্রায়ান বুথ
পূর্বসূরী
ব্রায়ান বুথ
অস্ট্রেলীয় টেস্ট ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯৬৫/৬৬-১৯৬৭/৬৮
উত্তরসূরী
বিল লরি
পূর্বসূরী
গ্রেগ চ্যাপেল
অস্ট্রেলীয় টেস্ট ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯৭৭/৭৮
উত্তরসূরী
গ্রাহাম ইয়ালপ