বঙ্গ সোনাহাট রেলওয়ে স্টেশন
১৮৮৭-৮৮ সালে ব্রিটিশ শাসন আমলে ইংরেজরা তাদের সৈন্য ও রসদ নিয়ে চলাচলের জন্য লালমনিরহাট থেকে ভারতের মনিপুরী রাজ্যে যাওয়ার জন্য গোলকগঞ্জ হয়ে গোয়াহাটি পর্যন্ত একটি মিটার গেজ রেলপথ নির্মাণ করে। লালমনিহাট থেকে মোগলহাট, গীতালদহ, আবুতারা, বামনহাট, ভুরুঙ্গামারি, পাটেশ্বরী, সোনাতলা এবং গোলকগঞ্জ এই কয়টি রেলওয়ে স্টেশন ছিল, গোলকগঞ্জ ছিল জংসন স্টেশন। ৪৮ পরবর্তী দেশ ভাগের পর ভারত পাকিস্তান নামে আলাদা দুটি রাষ্ট্রের জন্ম হয়। তখন এই পথটির মোগলহাটের পর গীতালদহ, আবুতারা বামনহাট অংশ ভারতের সিমানায় পড়ে এবং বাংলাদেশের সিমানায় ভুরুঙ্গামারি ও পাটেশ্বরী নামে স্টেশন পার হয়ে ভারতের সিমানায় সোনাতলা ও গোলকগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন পড়ে, ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত এই পথটিতে ট্রেন চলাচল করত, মোগলহাটে ধরলা নদীর উপর রেলওয়ে ব্রীজটির বন্যায় দুপাশে মাটি সরে গেলে এ পথের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তখন মোগলহাট পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করত, ১৯৯৬ সাল থেকে লোকসানের অজুহাতে এ পথের ট্রেন চলাচল পুরোপুরী বন্ধ হয়ে যায়। ভারত তাদের সিমানা দিয়ে নতুন করে রেলপথ চালু করলেও অযত্নে আর আবহেলায় পরে আছে ভুরুঙ্গামারি।
কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলা সদর থেকে ৫-৬কিঃ মিঃ পূর্ব দিকে পাইকেরছড়া ইউনিয়নে হারিয়ে যাওয়া এই রেলপথের একটি স্মৃতি চিহ্ন এখনও আছে। সেটি সোনাহাট রেলওয়ে ব্রীজ। ব্রিজটি প্রায় ১২০০ ফুট লম্বা।
১৯৭১-এ মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধারা এই ব্রিজের একটি অংশ ভেঙ্গে দেয়। পাকিস্তানী সৈন্য চলাচলে বাধা সৃষ্টি করতে। পরবর্তীকালে তা আবারও মেরামত করা হয়। এই ব্রিজটি দুধকুমর নদীর উপর নির্মিত। বর্তমানে এটি সাধারন ব্রিজের মতোই ব্যবহৃত হচ্ছে সে এলাকার মানুষ প্রতিদিন এখান দিয়ে যাতায়াত করছেন।