ফ্রেডরিক ওলব্রিক্ট
ফ্রেডরিক ওলব্রিক্ট (৪ অক্টোবর ১৮৮৮ – ২১ জুলাই ১৯৪৪) ছিলেন একজন জার্মান জেনারেল। হিটলারকে উৎখাতের উদ্দেশ্যে প্রণীত ২০ জুলাই পরিকল্পনায় তিনি অন্যতম পরিকল্পনাকারী ছিলেন। পরিকল্পনা ব্যর্থ হওয়ার পর তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়।
ফ্রেডরিক ওলব্রিক্ট | |
---|---|
জন্ম | লিসনিগ, জার্মান সাম্রাজ্য | ৪ অক্টোবর ১৮৮৮
মৃত্যু | ২১ জুলাই ১৯৪৪ বার্লিন, নাৎসি জার্মানি ৫২°৩০′২৮″ উত্তর ১৩°২১′৪৪″ পূর্ব / ৫২.৫০৭৮৯২° উত্তর ১৩.৩৬২১৯° পূর্ব | (বয়স ৫৫)
আনুগত্য |
|
সেবা/ | জার্মান সেনাবাহিনী |
কার্যকাল | ১৯০৭–৪৪ |
পদমর্যাদা | জেনারেল |
নেতৃত্বসমূহ | ২৪তম ইনফেন্ট্রি ডিভিশন |
যুদ্ধ/সংগ্রাম | প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ |
পুরস্কার | নাইট'স ক্রস অব দ্য আইরন ক্রস |
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাফ্রেডরিক ওলব্রিক্ট ১৮৮৮ সালের ৪ অক্টোবর লিসনিগে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা এমিল ওলব্রিক্ট একজন শিক্ষক ছিলেন।
১৯০৭ সালে তিনি লিপজিগের পদাতিক রেজিমেন্ট ১০৬ এ যোগ দেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তিনি লড়াই করেছেন। এরপর তিনি ক্যাপ্টেন হিসেবে রাইখসভারে অন্তর্ভুক্ত হন।
ওলব্রিক্ট ও তার স্ত্রী ইভা কোপেলের এক ছেলে ও এক মেয়ে ছিল।
কর্মজীবন
সম্পাদনাওলব্রিক্ট ভাইমার প্রজাতন্ত্রের সমর্থক অন্যতম জার্মান সামরিক অফিসার ছিলেন। ১৯২৬ সালে ফরেন আর্মি ব্যুরোর প্রধান হিসেবে রাইখ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ পান। ১৯৩৩ সালে তিনি ড্রেসডেন ডিভিশনের চীফ অব স্টাফ হন।
১৯৩৫ সালে তিনি ড্রেসডেনে অবস্থানকারী চতুর্থ আর্মি কর্পসে নিয়োগ পান। ১৯৩৮ সালে ২৪তম পদাতিক ডিভিশনের নেতৃত্ব লাভ করেন।
১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনার সময় পোল্যান্ড আক্রমণকালে ওলব্রিক্ট ২৪তম পদাতিক ডিভিশনের কমান্ডার ছিলেন। ব্যক্তিগত সাহস এবং নেতৃত্বদানের কৌশলের কারণে তিনি নাইট'স ক্রস অব দ্য আইরন ক্রস লাভ করেন। ১৯৪০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনি জেনারেল হন। তাকে সেনা হাই কমান্ডে তিনি চীফ অব দ্য জেনারেল আর্মি নিযুক্ত হয়েছিলেন। পরে তিনি আর্মড ফোর্স রিপ্লেসমেন্ট অফিসের প্রধান নিযুক্ত হন।
অপারেশন ভেলকুরি
সম্পাদনা১৯৪১-১৯৪২ সালে ওলব্রিক্ট অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা করতে শুরু করেন। নাৎসি শাসনের অবসানের উদ্দেশ্যে তিনি কর্নেল-জেনারেল লুডভিগ বেক, কার্ল ফ্রেডরিক গোয়ার্ডলার ও মেজর-জেনারেল হেনিং ফন ট্রেসকোর সাথে মিলে হিটলারকে হত্যার পথ খুজতে থাকেন। ১৯৪৩ সালে কর্নেল ক্লজ ফন স্টফেনবার্গ তার দপ্তরে কাজে যোগ দেন। স্টফেনবার্গ পরবর্তীতে হিটলারকে হত্যাচেষ্টার প্রধান ব্যক্তি হয়ে উঠেছিলেন। হিটলারকে হত্যার উদ্দেশ্যে স্টফেনবার্গ একটি বোমা স্থাপন করেছিলেন। তবে বোমাটি বিষ্ফোরিত হলেও হিটলার নিহত হননি।
অভ্যুত্থানের দিন অর্থাৎ ১৯৪৪ সালের ২০ জুলাই ওলব্রিক্ট ও কর্নেল আলব্রেক্ট মার্তজ ফন কুইরেনহেইম অপারেশন ভেলকুরি শুরু করেন এবং এর অংশ হিসেবে সেনা মোতায়েন শুরু হয়। এসময় হিটলার বেঁচে যাওয়ার কথা তাদের অজ্ঞাত ছিল। কিন্তু হিটলার জীবিত আছেন প্রতীয়মান হওয়ার পর বিদ্রোহ স্তিমিত হয়ে পড়ে। অনেকের মতে বার্লিনের যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ নিতে ব্যর্থ হওয়ার ফলে অভ্যুত্থানটি ব্যর্থ হয়েছিল। হিটলারের একটি বক্তৃতা সম্প্রচারের পর অভ্যুত্থান সম্পূর্ণ শেষ হয়ে যায়। ফলে নাৎসিরা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারে সক্ষম হয়।
মৃত্যুদন্ড
সম্পাদনাঅভ্যুত্থানের রাতে ওলব্রিক্ট বান্ডলারব্লকে গ্রেপ্তার হন। পরিকল্পনাকারীদেরকে জীবিত গ্রেপ্তার করার জন্য হিটলারের নির্দেশ সত্ত্বেও কর্নেল-জেনারেল ফ্রেডরিক ফ্রম সামরিক আদালতে তড়িঘড়ি করে সম্পন্ন একটি সংক্ষিপ্ত বিচারে ওলব্রিক্ট, আলব্রেক্ট মার্তজ ফন কুইরেনহেইম, ক্লজ ফন স্টফেনবার্গ ও ভের্নার ফন হেফটেনকে মৃত্যুদন্ড দেন। ধারণা করা হয় যে নীরব সমর্থন দানের অভিযোগ থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য ফ্রম তাদের মৃত্যুদন্ড দিয়েছিলেন। বান্ডলারব্লকের উঠানে ফায়ারিং স্কোয়াড গুলি করে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে। ওলব্রিক্টকে সবার আগে গুলি করা হয়।
পুরস্কার ও পদক
সম্পাদনা- জার্মান ক্রস (রৌপ্য) (১ আগস্ট ১৯৪৩)
চরিত্রায়ন
সম্পাদনাবিভিন্ন চলচ্চিত্রে ফ্রেডরিক ওলব্রিক্টের চরিত্র উপস্থাপন করা হয়েছে। তার ভূমিকায় অভিনয় করা অভিনেতাদের মধ্যে রয়েছেন:
- উইলফ্রাইড ওর্টমেন (লিবারেশন: ডিরেকশন অব দ্য মেইন ব্লো চলচ্চিত্র) (১৯৭১)
- মাইকেল বাইর্ন (দ্য প্লট টু কিল হিটলার চলচ্চিত্র) (১৯৯০)
- রাইনার বুক (স্টফেবনার্গ চলচ্চিত্র) (২০০৪)
- বিল নিগি (ভেলকুরি চলচ্চিত্র) (২০০৮)
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনাগ্রন্থপঞ্জি
সম্পাদনা- Fellgiebel, Walther-Peer (২০০০) [1986]। Die Träger des Ritterkreuzes des Eisernen Kreuzes 1939–1945 — Die Inhaber der höchsten Auszeichnung des Zweiten Weltkrieges aller Wehrmachtteile [The Bearers of the Knight's Cross of the Iron Cross 1939–1945 — The Owners of the Highest Award of the Second World War of all Wehrmacht Branches] (German ভাষায়)। Friedberg, Germany: Podzun-Pallas। আইএসবিএন 978-3-7909-0284-6।
- Georgi, Friedrich (1989). Soldat im Widerstand. General der Infanterie Friedrich Olbricht; 2. Aufl., Berlin u. Hamburg. আইএসবিএন ৩-৪৮৯-৫০১৩৪-৯.
- Helena P. Page, General Friedrich Olbricht. Ein Mann des 20. Juli; 2. Aufl., Bonn u. Berlin 1994 (আইএসবিএন ৩-৪১৬-০২৫১৪-৮) (Note the author of this book is better known under her married name Helena Schrader.)
- Helena Schrader, Codename Valkyrie General Friedrch Olbricht and the plot against Hitler; Haynes Publishing 2009 (আইএসবিএন ৯৭৮-১৮৪৪২৫৫৩৩৭).
- Scherzer, Veit (২০০৭)। Die Ritterkreuzträger 1939–1945 Die Inhaber des Ritterkreuzes des Eisernen Kreuzes 1939 von Heer, Luftwaffe, Kriegsmarine, Waffen-SS, Volkssturm sowie mit Deutschland verbündeter Streitkräfte nach den Unterlagen des Bundesarchives [The Knight's Cross Bearers 1939–1945 The Holders of the Knight's Cross of the Iron Cross 1939 by Army, Air Force, Navy, Waffen-SS, Volkssturm and Allied Forces with Germany According to the Documents of the Federal Archives] (German ভাষায়)। Jena, Germany: Scherzers Miltaer-Verlag। আইএসবিএন 978-3-938845-17-2।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- Report from Olbricht's son-in-law Friedrich Georgi ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৪ মে ২০১১ তারিখে about the talk on 20 July, in which Olbricht explained his motivations, just before he was arrested.
সামরিক দপ্তর | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী লেফটেন্যান্ট জেনারেল সিগিসিমুন্ড ফন ফরস্টের |
২৪তম পদাতিক ডিভিশনের কমান্ডার ১০ নভেম্বর ১৯৩৮ – ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৪০ |
উত্তরসূরী লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাস্টিন ফন ওবের্ননিতস |