ফুলকুমার
ফুলকুমার ২০০০ সালের বাংলাদেশী চলচ্চিত্র। এটি পরিচালনা ও প্রযোজনা করেছেন আশিক মোস্তফা, এবং এটি তার অভিষেক চলচ্চিত্র। ১৯৯৩ সালে রচিত শহীদুল জহিরের "এই সময়"[৩] গল্প অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির চিত্রনাট্য রচনা করেছেন নুরুল আলম আতিক।[৪] অভিনয়ে ছিলেন জাইন জাফর, কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়, পারভিন কনা, আজাদ আবুল কালাম,[৫] শতাব্দী ওয়াদুদ ও সুমিতা দেবী প্রমুখ।
ফুলকুমার | |
---|---|
পরিচালক | আশিক মোস্তফা |
প্রযোজক | আশিক মোস্তফা |
চিত্রনাট্যকার | নুরুল আলম আতিক |
উৎস | শহীদুল জহির কর্তৃক "এই সময়" (১৯৯৩) |
শ্রেষ্ঠাংশে |
|
সুরকার | রাহুল আনন্দ |
চিত্রগ্রাহক | সমিরণ দত্ত |
সম্পাদক | সামির আহমেদ |
প্রযোজনা কোম্পানি | জলছবি মুভি ফ্যক্টরি |
পরিবেশক | সাবটেক্সট |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ৫৮ মিনিট |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
নির্মাণব্যয় | ৳২,০০০,০০০[২] |
জাদুবাস্তবতার অবয়বে বাংলাদেশের সমাজ বাস্তবতার পর্যালোচনা এই চলচ্চিত্র যা ফুলকুমার তথা মোহাম্মদ সেলিম চরিত্রটির ব্যক্তিগত বেদনার কাহিনী, যা তার মাতৃমোহকে কেন্দ্র করে বিস্তৃত।[৬] এটি একটি আধিকারিক পেটি বুর্জোয়া ঘোরে শিশুদের আগত বয়সের দর্শনীয় ও অবিচ্ছিন্ন অধ্যয়ন। এটি সুমিতা দেবী অভিনীত সর্বশেষ চলচ্চিত্র।[৭]
কাহিনিসংক্ষেপ
সম্পাদনাজন্মের পর মোহাম্মদ সেলিম বাবা-মা হারায়। পুরান ঢাকার একটি মহল্লায় সেলিম তার দাদীর কাছে বেড়ে উঠে। সে তার মাকে একটি লালপরী হিসাবে কল্পনা করে। যে কারণে সে ফুলের বাগান করে। তার আছে স্বপ্নের এক দুনিয়া, যেখানে তার মা ফুলপরী হয়ে হাজির হয়। ফুল বাগান সেলিমকে আনন্দ দেয়, আর মহল্লার মানুষকে দেয় এলার্জির মহামারি। বাগানের দিকে নজর যায় মহল্লার তিন হিরো আবু, হাবু আর শফি তিন ভাইয়ের। এলার্জি হটাতে বাগানের ওপর হামলা করে তারা। আবার সেই বাগানেই তারা ফিরে আসে ফুলের সন্ধানে। সেলিমের হাত দিয়ে ফুল পাঠায় শিরীনের কাছে, যার দিকে নজর রাখে মহল্লার আরো সব পান্ডা, মেজর সাব আর মওলানা সাব। সবার সব উপহার ফিরিয়ে দেয় শিরীন, রয়ে যায় শুধু সেলিমের বয়ে আনা ফুল। একদিন - কেবল ফুল নয়, ফুলকুমারকেই টেনে নেয় সে।
অভিনয়ে
সম্পাদনা- জেইন জাফর - মোহাম্মদ সেলিম (বালক) (জেইন নামে)
- কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় - সেলিম (কিশোর) (ছোটন নামে)
- পারভিন কণা - শিরিন আক্তার
- আজাদ আবুল কালাম - আবু
- শাহেদ ইকবাল - হাবু
- শতাব্দী ওয়াদুদ - শফি
- সুমিতা দেবী - দাদী
- ঝুনা চৌধুরী - শিরিনের বাবা
- শিউলি আহমেদ - বাড়িওয়ালী
- তারেক শাহরিয়ার - মেজর সাব
- সোনিয়া জাফর - মেজরের স্ত্রী
- সামির আহমেদ - বাড়িওয়ালীর ছেলে
- গিয়াস উদ্দিন সেলিম - বিবাহের কাজি
- নুরুল আলম আতিক - চোর
- অমিতাভ রেজা চৌধুরী - মৌলভি
- আকরাম খান - মৌলভি
- শাহিদ - মাওলানা সাব
- অ্যাপোলো নওরোজ - ডাক্তার
- জয়ন্ত হাওলাদার
- মনি
- সেলিম
- রীতা
নির্মাণ ও মুক্তি
সম্পাদনানিউ ইয়র্কের স্কুল অব ভিজ্যুয়াল আর্টসে অধ্যয়নকালীন স্নাতক পর্বের অংশ হিসেবে ১৬মিমি প্রযুক্তিতে আশিক মোস্তফা চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেন। ২০০০ সালের ১০ জুলাই ঢাকার পানাম নগরে চিত্রায়নের কাজ শুরু হয় এবং ঢাকায় মুক্তি পায় ২০০২ সালের জুন মাসে। এই ছবির মধ্য দিয়েই শুরু হয় জলছবি মুভি ফ্যাক্টরির যাত্রা, সুত্রপাত ঘটে বাংলা চলচ্চিত্রের নতুন ধারার, বিকশিত হয় নুরুল আলম আতিক, অমিতাভ রেজা চৌধুরী, আকরাম খান, সামির আহমেদ, গিয়াস উদ্দিন সেলিম, অনিমেষ আইচ, কৃষ্ণেন্দু চট্যোপাধ্যায় সহ একঝাক তরুণ নির্মাতা ও চলচ্চিত্রকর্মী যারা সকলেই এই চলচ্চিত্রটির সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। ‘কাল্ট ক্ল্যাসিক’ হিসাবে বিবেচিত এই চলচ্চিত্রটি তখন অসংখ্য নবীন নির্মাতাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল! [৮][৪][৬]
২০০৩ সালের ১২ মার্চ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টিবুরন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে, ১৯ এপ্রিল গার্ডেন স্টেট চলচ্চিত্র উৎসবে, ২৯ এপ্রিল অ্যাথেন্স আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র ও ভিডিও উৎসবে এবং ১৫ জুলাই ডালাসের এশিয়ান চলচ্চিত্র উৎসবে চলচ্চিত্রটি প্রদর্শিত হয়।[১][৯] একই বছর ১০ ডিসেম্বর ঢাকা আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসবে এটি প্রদর্শিত হয়।[১][৯]
মনোনয়ন
সম্পাদনাআয়োজক | বছর | বিভাগ | প্রাপক ও মনোনীত | ফলাফল | সূত্র. |
---|---|---|---|---|---|
অ্যাথেন্স আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র ও ভিডিও উৎসব | ২০০৩ | শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র | আশিক মোস্তফা | মনোনীত | [৯] |
জলছবি মুভি ফ্যাক্টরি | মনোনীত | ||||
গার্ডেন স্টেট চলচ্চিত্র উৎসব | ২০০৩ | শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র | আশিক মোস্তফা | মনোনীত | |
জলছবি মুভি ফ্যাক্টরি | মনোনীত | ||||
টিবুরন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব | ২০০৩ | শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র | আশিক মোস্তফা | মনোনীত | |
জলছবি মুভি ফ্যাক্টরি | মনোনীত |
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ "ফুলকুমার - মুক্তির তথ্য" (ইংরেজি ভাষায়)। আইএমডিবি। ৭ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০২২।
- ↑ "ফুলকুমার (২০০২)" (ইংরেজি ভাষায়)। আইএমডিবি। ৭ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০২২।
- ↑ "The Creator of Post-Modern Bengali Literature"। দ্য ডেইলি স্টার (বাংলাদেশ)। ১৪ মার্চ ২০১৪। ৭ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ অক্টোবর ২০২২।
- ↑ ক খ রেজা, অমিতাভ (৩ আগস্ট ২০০২)। "ফুলকুমারঃ চলচ্চিত্রে অন্য ধারার সম্ভাবনা"। ঢাকা: প্রথম আলো।
- ↑ রহমান, শাওরীন (১৬ ডিসেম্বর ২০১৭)। "THROUGH THE EYES OF AZAD ABUL KALAM"। দ্য ডেইলি স্টার (বাংলাদেশ)। ১৯ মার্চ ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ অক্টোবর ২০২২।
- ↑ ক খ ডিপার্ট ডেস্ক। "অব্যান্ট-গার্ডেন ফুলের শিশু"। departmag.com (ইংরেজি ভাষায়)। departmag। ১৮ এপ্রিল ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ অক্টোবর ২০২২।
- ↑ মারিয়া, শান্তা। "সেই শ্যামলবরণ মেয়েটি"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ১ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ হালদার, মিঠু (১০ মার্চ ২০১৮)। "ট্যাম্পেয়ার উৎসবে 'ইন্টেরিয়র্স এন্ড এক্সটেরিয়র্স'"। প্রিয়। ৭ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ ক খ গ "ফুলকুমার - পুরস্কার" (ইংরেজি ভাষায়)। আইএমডিবি। ৭ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০২২।