ফালি ফালি ক’রে কাটা চাঁদ
ফালি ফালি ক’রে কাটা চাঁদ হুমায়ুন আজাদ রচিত একটি উপন্যাস। ফেব্রুয়ারি, ২০০১ সালে[৩] (ফাল্গুন, ১৪০৭ বঙ্গাব্দ) একুশে গ্রন্থমেলায় আগামী প্রকাশনী, ঢাকা থেকে এটি গ্রন্থাকারে প্রথম প্রকাশিত হয়।
লেখক | হুমায়ুন আজাদ |
---|---|
প্রচ্ছদ শিল্পী | সমর মজুমদার |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
বিষয় | ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ[১], চরমপন্থী নারীবাদ, আত্মপ্রেম, আত্মঅহংকার, পুরুষবিদ্বেষ |
ধরন | উপন্যাস |
প্রকাশিত | ফেব্রুয়ারি, ২০০১ |
প্রকাশক | আগামী প্রকাশনী |
মিডিয়া ধরন | ছাপা (শক্তমলাট) |
পৃষ্ঠাসংখ্যা | ১৫২[২] |
আইএসবিএন | ৯৮৪-৭-০০০-৬০৬৩৯-৮ {{ISBNT}} এ প্যারামিটার ত্রুটি: অবৈধ উপসর্গ |
ওসিএলসি | ৫৯৫৩০৭৪৭ |
পূর্ববর্তী বই | নিজের সঙ্গে নিজের জীবনের মধু (২০০০) |
পরবর্তী বই | শ্রাবণের বৃষ্টিতে রক্তজবা (২০০২) |
আজাদ এই উপন্যাস উৎসর্গ করেছেন "বিপন্ন চাঁদদের"।[৪] আজাদ এই উপন্যাসটি সম্পর্কে বলেছিলেন যে, এটি একটি কর্মজীবী স্বাধীন এবং ব্যক্তিস্বতন্ত্রবাদী নারীকেন্দ্রিক উপন্যাস যেখানে মূল নারী চরিত্র মনে করে যে মানসিক সম্পর্ক হচ্ছে বিশ্বাস এবং আস্থার ব্যাপার, এটা যে কোনো মানুষের সঙ্গে করা যায় না।[১]
সারাংশ
উপন্যাসের মূল চরিত্র ৩৬ বছর বয়সী ডক্টর শিরিন আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতত্ত্বের অধ্যাপিকা, বিবাহিত, অভিভাবক দ্বারা বিয়ে হয়েছে তার, যদিও সে তার স্বামী দেলোয়ারকে ভালোবাসেনা কিন্তু সামাজিক দায়িত্ব হিসেবে তার সঙ্গে সংসার করে। শিরিন একবার নৃতাত্ত্বিক অনুসন্ধানের জন্যে সিলেটের মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে যায়, ওখানের এক রেস্টহাউজে খালেদ নামের এক পুরুষের সঙ্গে ছোটোখাটো বন্ধুত্ব হওয়ার পর খালেদ তার সঙ্গে যৌনমিলন করে শিরিনেরই পরোক্ষ মৌনসম্মতিতে, শিরিনই তাকে তার নিজের কক্ষে ঢুকিয়ে দরোজা বন্ধ করে দেয়, যদিও পরের দিন খালেদ দ্বিতীয়বার তার সঙ্গে মিলন করতে চাইলে শিরিন রাজি হয়না; শিরিন বুঝতে পারে এ ঘটনাটি তার জীবন বদলে দিয়েছে, ঘটনাটি দিয়ে সে-ই তার জীবন বদলে দিয়েছে এবং সে ঠিক করে যে, স্বামী দেলোয়ারের সঙ্গে আর সংসার করবেনা। কমলগঞ্জ থেকে ঢাকা ফিরে আসার পর দেলোয়ার শিরিনের সঙ্গ পাবার চেষ্টা করলেও শিরিন তাকে ঠিকমত পাত্তা দেয়না, শিরিনের বাবামাও শিরিনকে এ-ব্যাপারে ধরে কিন্তু শিরিন নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকে; উপন্যাসের শেষ দিকে শিরিনের সঙ্গে দেলোয়ার জোরপূর্বক দৈহিক মিলন করতে চাইলে শিরিন তার নিজের মনে মনে বলতে থাকে যে সে শুধু সত্যিকারের প্রেমিকের সঙ্গেই দৈহিক মিলন করতে পারে যদিও স্বামী হিসেবে দেলোয়ার শিরিনের সঙ্গে আগে ঠিকই দৈহিকমিলন করতে পারতো কিন্তু শিরিন খালেদ নামের ঐ ব্যক্তির সঙ্গে ঘটনাটির পর দেলোয়ারের সঙ্গে আর মিলন করতে চায়না। শিরিনের নিজের ভাষায়ঃ
“ | সে আমাকে নগ্ন করার চেষ্টা করে, আমি বাঁধা দিই, তার হাত বারবার সরিয়ে দিতে থাকি, কিছুতেই আমি আজ নগ্ন হবোনা, হে প্রিয় শরীর, কোনো ধর্ষণকারীর সামনে আমি তোমাকে নগ্ন করবোনা, তোমার সৌন্দর্য ধর্ষণকারীর জন্য নয়, তুমি শুধু প্রেমিকের ছোঁয়ায় ফুটতে পারো; সে টেনে আমার শাড়ি ব্লাউজ ছিঁড়ে ফেলার চেষ্টা করে, পারেনা, আমি আজ তার সামনে নগ্ন হবোনা; সে আমাকে চেপে ধরে নিজে নগ্ন হতে থাকে। | ” |
শিরিন আলাদা একটি বাসা নিয়ে থাকছিলো; খালেদ শিরিনকে প্রেম এবং বিয়ের প্রস্তাব দিলে শিরিন গুরুত্ব দেয়না এবং দেলোয়ার শিরিনের বাসায় এসে শিরিনের সঙ্গে মিলন করতে চাইলে শিরিনের বাঁধায় দেলোয়ার পারেনা, এভাবেই উপন্যাসের সমাপ্তি ঘটে; নিজে পছন্দ না করলে শিরিন কোনো পুরুষের সঙ্গেই থাকবেনা - এটাই উপন্যাসের মূল বক্তব্য।
চরিত্রসমূহ
- শিরিন আহমেদ - একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতত্ত্বের অধ্যাপিকা যে স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরা করতে ভালোবাসে
- মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন খান - পেশায় একজন বড় ব্যবসায়ী, শিরিনের সঙ্গে এই ব্যক্তির অভিভাবক দ্বারা বিয়ে হয়েছে
- খালেদ - পেশায় একজন প্রকৌশলী, বিবাহিত, চার সন্তানের জনক, শিরিনের দেহভোগকারী
- নাসরীন - শিরিনের কনিষ্ঠ ভগ্নী
- সুমন - শিরিনের কনিষ্ঠ ভ্রাতা
- রামকৃষ্ণ - শিরিন সিলেটের যে রেস্টহাউজে ওঠে সেই রেস্টহাউজের কেয়ারটেকার এবং কুক
আরো দেখুন
তথ্যসূত্র
- ↑ ক খ "সাহস ও সৃষ্টির অদম্য লেখক হুমায়ুন আজাদ"। arts.bdnews24.com। ৩১ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৯।
- ↑ "ফালি ফালি করে কাটা চাঁদ - হুমায়ুন আজাদ"। rokomari.com।
- ↑ মুহম্মদ সাইফুল ইসলাম (২০১২)। "আজাদ, হুমায়ুন"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ হুমায়ুন আজাদ (ফেব্রুয়ারি ২০০১)। "উৎসর্গ"। ফালি ফালি ক’রে কাটা চাঁদ। ঢাকা: আগামী প্রকাশনী। আইএসবিএন 984-7-000-60639-8
|আইএসবিএন=
এর মান পরীক্ষা করুন: invalid prefix (সাহায্য)।