ফয়েজুুর রহমান (জন্ম: অজানা) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে।[]

ফয়েজুর রহমান
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর প্রতীক

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

সম্পাদনা

ফয়েজুর রহমানের জন্ম টাঙ্গাইল জেলা শহরের দিঘুলিয়ায়। তার বাবার নাম মনসুর রহমান এবং মায়ের নাম মাহফুজা খাতুন। তার স্ত্রীর নাম খালিদা রহমান। তাদের এক ছেলে ও তিন মেয়ে। []

কর্মজীবন

সম্পাদনা

১৯৭১ সালে পড়াশোনা শেষ করে চাকরির অপেক্ষায় ছিলেন ফয়েজুর রহমান। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি যুদ্ধে যোগ দেন। ৩ এপ্রিল টাঙ্গাইলের প্রতিরোধ ভেঙে পড়লে তিনি আশ্রয় নেন ভুয়াপুরে। পরে কাদেরিয়া বাহিনী গঠিত হলে ওই বাহিনীতে যোগ দেন। বিভিন্ন স্থানে বীরত্বের সঙ্গে গেরিলা ও সম্মুখযুদ্ধ করেন। স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশনে চাকরি করেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

সম্পাদনা

১৯৭১ সালের ৩ বা ৪ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল জেলার অন্তর্গত ঘাটাইলে মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে ঢাকায় আক্রমণের জন্য মিত্রবাহিনী টাঙ্গাইলে বিমান থেকে ছত্রীসেনা নামানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নভেম্বরের শেষ দিকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন ক্যাপ্টেন টাঙ্গাইলে আসেন। তিনি কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান আবদুল কাদের সিদ্দিকীর সহায়তায় ছত্রীসেনা অবতরণের জন্য তিনটি স্থান নির্ধারণ করেন। এর একটি ছিল ঘাটাইল উপজেলার ব্রাহ্মণশাসন-মোগলপাড়ার পশ্চিমের তিন-চার বর্গমাইলের গোরাঙ্গীর চক। ওই এলাকাসহ আশপাশের কয়েক বর্গমাইল এলাকা মুক্ত রাখা ও নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব পড়ে কাদেরিয়া বাহিনীর ওপর। ছত্রীসেনা কোন দিন সেখানে অবতরণ করবে, তা প্রথম দিকে কাদের সিদ্দিকীর জানা ছিল না। এদিকে, ওই সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিভিন্ন দল জামালপুর, শেরপুর থেকে পশ্চাদপসরণ করে ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল সড়কের এলেঙ্গা ও ঘাটাইলে সমবেত হয়। ফলে ঘাটাইলে ছত্রীসেনা নামানোর বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় কাদের সিদ্দিকী সিদ্ধান্ত নেন, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে আক্রমণের। রাতে তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে আক্রমণ করেন। এই যুদ্ধে ফয়েজুর রহমান অংশ নেন। সারা রাত সেখানে যুদ্ধ হয়। যুদ্ধের একপর্যায়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মর্টার শেলের স্প্লিন্টারের আঘাতে ফয়েজুর রহমান গুরুতর আহত হন। পরে সহযোদ্ধারা তাকে যুদ্ধস্থল থেকে নিয়ে যান গোপালপুর উপজেলার গুলিপচা গ্রামে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল মুক্ত হয়ে যায়। এরপর তাকে মির্জাপুরের কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।[]

পুরস্কার ও সম্মাননা

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না" | তারিখ: ১৫-১১-২০১১[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ১৪০। আইএসবিএন 9789843351449 
  3. একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (প্রথম খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। এপ্রিল ২০১২। পৃষ্ঠা ১৭১। আইএসবিএন 9789843338884 

পাদটীকা

সম্পাদনা

বহি:সংযোগ

সম্পাদনা