ফজলুল কাদের চৌধুরী
ফজলুল কাদের চৌধুরী পূর্ব পাকিস্তানের একজন রাজনীতিবিদ এবং পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ৫ম স্পিকার।
ফজলুল কাদের চৌধুরী | |
---|---|
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার | |
কাজের মেয়াদ ২৯ নভেম্বর ১৯৬৩ – ১২ জুন ১৯৬৫ | |
ডেপুটি | মোহাম্মদ আফজাল চিমা |
পূর্বসূরী | মৌলভি তমিজউদ্দিন খান |
উত্তরসূরী | আবদুল জব্বার খান |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ২৬ মার্চ ১৯১৯ রাউজান, চট্টগ্রাম, ব্রিটিশ ভারত, (অধুনা বাংলাদেশ) |
মৃত্যু | ১৭ জুলাই ১৯৭৩ (বয়স ৫৪) পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, ঢাকা, বাংলাদেশ |
রাজনৈতিক দল | মুসলিম লীগ (১৯৬২ সালের আগে) কনভেনশন মুসলিম লীগ (১৯৬২-১৯৬৯) |
সন্তান | সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী
জামালউদ্দিন কাদের চৌধুরী সাইফুদ্দিন কাদের চৌধুরী |
আত্মীয়স্বজন | ফজলুল কবির চৌধুরী (ভাই)
ফজলুর রহমান (ঢাকার রাজনীতিবিদ) (ভায়রা-ভাই/শ্যালীপতি) মুর্তজা রেজা চৌধুরী (ভায়রা-ভাই/শ্যালীপতি) |
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
সম্পাদনাতিনি ১৯১৯ সালের ২৬ শে মার্চ চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার গহিরা গ্রামের বক্সে আলী চৌধুরী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম খান বাহাদুর আব্দুল জব্বার চৌধুরী ও মাতার নাম বেগম ফাতেমা খাতুন।[১] ফজলুল কাদের চৌধুরী কলকাতা প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে স্নাতক এবং কলকাতা ল’ কলেজ থেকে বিএল ডিগ্রী লাভ করেন।[২]
কর্মজীবন ও অবদান
সম্পাদনাতিনি ১৯৪১ সালে অল ইন্ডিয়া মুসলিম ষ্টুডেন্ট ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি নির্বাচিত হন এবং ব্রিটিশ বিরোধী পাকিস্তান আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৫৪ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ফজলুল কাদের চৌধুরী ১৯৬৩ সালে তদানীন্তন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের স্পিকার পদে অধিষ্ঠিত হন।[১] আইয়ুব খান দেশ ছাড়ার সময় তিনি পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতিও ছিলেন। আইয়ুব খানের মন্ত্রিসভায় তিনি কৃষি ও পূর্ত মন্ত্রণালয়, শিক্ষা ও তথ্য মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেন। কনভেনশন মুসলিম লীগ (১৯৬২) গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি নিজ জেলায় বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সমাজ কল্যাণ এবং উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন।[২] এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, বাংলাদেশ মেরিন একাডেমী, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।[৩][৪][৫][৬]
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ কালে ভূমিকা
সম্পাদনাফজলুল কাদের চৌধুরী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং আওয়ামী লীগ উত্থাপিত ছয় দফার বিরোধী ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ কালে তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের বিপক্ষে এবং ঐক্যবদ্ধ পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। [২] ১৯৭১ সালের ২৮ ডিসেম্বর প্রায় দেড় মণ সোনা নিয়ে নৌযানে করে দেশ থেকে পালানোর সময় আনোয়ারা উপজেলার গহীরা উপকূলে মুক্তিযুদ্ধাদের হাতে ধরা পরেন।[৭]
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনাতাঁর স্ত্রী সৈয়দা সেলিনা আক্তার ছিলেন তরফ থেকে আসা কুমিল্লা নিবাসী সৈয়দ আজিজুল্লাহ্ ও সৈয়দা আম্মাতুল এলা রাজিয়া খাঁতুনের দোসরা কন্যা। ফজলুল কাদের চৌধুরীর বড় শালী সৈয়দা রোকেয়া আক্তার ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক অর্থমন্ত্রী মুর্তজা রেজা চৌধুরী স্ত্রী।[৮]
মৃত্যু
সম্পাদনাপুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক থাকা অবস্থায় ১৯৭৩ সালে ১৮ জুলাই হার্ট অ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়।[২]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "দৈনিক আজাদী"। ২০১৬-০৩-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০১-০৩।
- ↑ ক খ গ ঘ মুয়ায্যম হুসায়ন খান (২০১২)। "চৌধুরী, ফজলুল কাদের"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ "জননেতা ফজলুল কাদের চৌধুরীর ৪৬তম শাহাদৎ বার্ষিকী পালিত"। যায়যায়দিন (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-২৬।
- ↑ রিপোর্টার, স্টাফ। "ফজলুল কাদের চৌধুরী অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছিলেন"। DailyInqilabOnline (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-২৬।
- ↑ "সত্যকে সত্য বলার জন্য জ্ঞান অর্জন করতে হবে : সেলিনা কাদের চৌধুরী" (১)। নয়া দিগন্ত। ২৮ নভেম্বর ২০১৪, শুক্রবার। সংগ্রহের তারিখ 26 ডিসেম্বর 2014। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] - ↑ "চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও ফজলুল কাদের চৌধুরী"। BengaliNews24.com।
- ↑ "একাত্তরের দানব যুদ্ধাপরাধী ফজলুল কাদের চৌধুরী - সাব্বির হোসাইন"। Sylhet today। ২০২০-০৩-১৫। Archived from the original on ২০২০-০৩-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-১২।
- ↑ সৈয়দ কামালউদ্দীন আহমদ (৩০ জুন ২০২১), তরফের সৈয়দ বংশ ও লাকসাম নবাব পরিবার
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনারাজনৈতিক দপ্তর | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী মৌলভি তমিজউদ্দিন খান |
জাতীয় পরিষদের স্পিকার ১৯৬৩–১৯৬৫ |
উত্তরসূরী আবদুল জব্বার খান |