ফকির আবদুল মান্নান শাহ

ফকির আবদুল মান্নান শাহ (১ জানুয়ারী ১৯০১-৩১ অক্টোবর ১৯৯৩) রাজনীতিবিদ, এমএলএ ও পাকিস্তানের মন্ত্রী ছিলেন। যিনি তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান মুসলীম লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পরবর্তীতে সভাপতি ছিলেন। তিনি ১৯৬৫-১৯৬৯ সালে পাকিস্তানের কৃষি ও খাদ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[][]

ফকির আবদুল মান্নান শাহ
পাকিস্তানের কৃষি ও খাদ্যমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
১৯৬৫ – ১৯৬৯
পূর্ব পাকিস্তান আইন পরিষদের এমএলএ
কাজের মেয়াদ
১৯৪৭ – ১৯৫৪
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১ জানুয়ারী ১৯০১
ঘাগটিয়া গ্রাম, ঘাগটিয়া, কাপাসিয়া, গাজীপুর, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
(বর্তমান বাংলাদেশ)
মৃত্যু৩১ অক্টোবর ১৯৯৩
৮৪ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, তেজগাঁও, ঢাকা
নাগরিকত্বব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)
পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
বাংলাদেশ
সন্তানহান্নান শাহ
শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান
মোবারক শাহ
আনোয়ারা ইদ্রিস
আঞ্জুমান আরা বেগম মিনু

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন

সম্পাদনা

ফকির আবদুল মান্নান শাহ ১ জানুয়ারী ১৯০১ সালে গাজীপুরের কাপাসিয়ার ঘাগটিয়া ইউনিয়নে ঘাগটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ফকির আব্দুল ওয়াহাব ও মাতা মোছাম্মৎ রুছমুতেন নেছা।[] গ্রামের মাদ্রাসায় তার প্রাথমিক শিক্ষাজীবন শুরু হয়। ১৯২৫ সালে মেট্রিকুলেশন, ১৯২৭ সালে ইন্টারমিডিয়েট, ১৯২৯ সালে স্নাতক এবং ১৯৩৪ সালে আইন ডিগ্রী (বিএল) অর্জন করেন।[]

পারিবারিক জীবন

সম্পাদনা

ফকির আবদুল মান্নান শাহর তিন ছেলে ও দুই মেয়ে। বড় ছেলে প্রয়াত হান্নান শাহ সাবেক সাংসদ, পাটমন্ত্রী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের রাজনীতিবিদ ছিলেন। মেঝছেলে শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের জৈষ্ঠ বিচারক ছিলেন। ছোট ছেলে মোবারক শাহ যুক্তরাষ্ট্রে আমেরিকান এক্সপ্রেসে চাকুরি করতেন। বড় মেয়ে আনোয়ারা ইদ্রিস ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের প্রথম নির্বাচিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের চাচী। ছোট মেয়ে আঞ্জুমান আরা বেগম মিনু ঢাকার মহাখালীতে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক পদে কর্মরত ছিলেন বর্তমান আমেরিকা প্রবাসী।[]

রাজনৈতিক ও কর্মজীবন

সম্পাদনা

শিক্ষকতার মাধমে ফকির আবদুল মান্নান শাহর কর্মজীবন শুরু হয়। এর পর ১৯৩৪ সালে ব্রিটিশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনার আলীপুর জজ কোর্টে আইন পেশা শুরু করে ১৯৩৫ সালে আইনজীবী হিসেবে ঢাকা জজকোর্টে যোগ দেন। ১৯৫১ সালে তিনি ঢাকার হাইকোর্টের এডভোকেট হিসেবে যোগদান করে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। তিনি ঢাকা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন উপদেষ্টা এবং সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন। ঢাকা জেলা কারাগার পরিদর্শন কমিটির সদস্য ছিলেন।[]

১৯৩৬ সালে তিনি কৃষক প্রজা পার্টির সদস্যভুক্তির মাধ্যমে রাজনীতিতে প্রবেশ করে ১৯৪৬ সালে মুসলিম লীগের প্রার্থী হিসেবে পাকিস্তানের এমএলএ নির্বাচিত হয়ে পাকিস্তান আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ১৯৪৭-১৯৫৪ সালে তিনি পূর্ববাংলা আইন পরিষদের (এমএলএ) সদস্য ছিলেন। ১৯৫৩ -১৯৫৮ সালে তিনি তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান মুসলীম লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৬৫-১৯৬৯ সালে কনভেনশন মুসলিম লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট প্রার্থী তাজউদ্দীন আহমদের নিকট পরাজিত হন। ১৯৬৫ সালে পূর্ব পাকিস্তান মন্ত্রী পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত কৃষি ও খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। [][]

মৃত্যু

সম্পাদনা

ফকির আবদুল মান্নান শাহ ৩১ অক্টোবর ১৯৯৩ সালে ঢাকার তেজগাঁওয়ের ৮৪ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ এ মৃত্যুবরণ করেন।[]

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "বিএনপি নেতা হান্নান শাহ আর নেই"www.bhorerkagoj.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-২৩ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. "ফকির আব্দুল মান্নান কাপাসিয়ার কৃতি সন্তান!"গাজীপুর প্রেস। ২৬ জুলাই ২০১৮। ২০২০-০১-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-২৩ 
  3. "হান্নান শাহ আর নেই || প্রথম পাতা"জনকন্ঠ (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-২৩ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. "ফকির আব্দুল মান্নান"সংগ্রামের নোটবুক। ২০২০-০১-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-২৩ 
  5. প্রতিবেদক, নিজস্ব। "হান্নান শাহ ইন্তেকাল করেছেন"DailyInqilabOnline। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-২৩ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা