অকাল জরা

(প্রোজেরিয়া থেকে পুনর্নির্দেশিত)

অকাল জরা বা প্রজরা (ইংরেজি: Progeria) একটি খুবই বিরল বংশাণুগত রোগ যেখানে রোগী খুব অল্প বয়সে বুড়িয়ে যায়।[] একাধিক অকালজরাকল্প সংলক্ষণ (প্রোজেরয়েড সিনড্রোম) আছে যাদের মধ্যে অকাল জরা অন্যতম।[] অকাল জরার ইংরেজি পরিভাষা প্রোজিরিয়া (Progeria) শব্দটির উৎপত্তি হল গ্রিক শব্দ "pro" (πρό), যার অর্থ পূর্বে বা অপরিপক্ক এবং "gēras" (γῆρας), যার অর্থ বৃদ্ধ বয়স[] রোগটি খুবই বিরল এবং খুব কমসংখ্যক শিশু এই রোগ নিয়ে জন্মায়।[] অকাল জরাগ্রস্ত রোগী সাধারণত তেরো-চৌদ্দ থেকে বিশ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকে।[][১০]

অকাল জরা
প্রতিশব্দHutchinson–Gilford progeria syndrome (HGPS),[][] progeria syndrome[]
উচ্চারণ
বিশেষত্বঅন্তঃক্ষরা গ্রন্থিবিজ্ঞান উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

এটি একটি বংশাণুগত রোগ যা সাধারণত নতুন পরিব্যক্তির ফলে হয়। খুব বিরল ক্ষেত্রে এটি বংশীয় হয় কারণ এর বাহক সাধারণত সন্তান জন্মদান পর্যন্ত বেঁচে থাকে না। যদিও অল্প বয়সে বুড়িয়ে যাওয়া সকল রোগকে অকাল জরা বলা হয় তবে প্রায়শই অকাল জরা পরিভাষাটি দিয়ে নির্দিষ্টভাবে হাচিনসন-গিলফোর্ড অকাল জরা সংলক্ষণ (HGPS) কে বোঝায়। বিজ্ঞানীগণ অকাল জরা নিয়ে বিশেষভাবে আগ্রহী কারণ তাঁদের ধারণা এই রোগ নিয়ে গবেষণা করলে মানুষের স্বাভাবিক বুড়িয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে অনেক তথ্য জানা যাবে।[১১][১২][১৩]

বিজ্ঞানী জোনাথন হাচিনসন ১৮৮৬ সালে প্রথম অকাল জরা রোগের বর্ণনা দেন।[১৪] আরেক বিজ্ঞানী হেস্টিংস গিলফোর্ড ১৮৯৭ সালে পৃথকভাবে এই রোগের বর্ণনা দেন।[১৫] তাই পরবর্তীতে এই রোগের নাম হাচিনসন-গিলফোর্ড অকাল জরা সংলক্ষণ রাখা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে প্রতি ৪০ লক্ষ জন্মগ্রহণকারী শিশুর মধ্যে ১টি শিশু এই রোগে আক্রান্ত হয়।[১৬] বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রায় ১০০ জন অকাল জরা রোগী আছে বলে জানা যায়। মেডিকেল ইতিহাসে ১৪৩ জন অকাল জরা রোগীর কথা জানা যায়।[১৭]ভারতে একই পরিবারে পাঁচ জন অকাল জরার রোগী আছে।[১৮] এই রোগের কার্যকর কোনও চিকিৎসা নেই।[১৯] তাই এটি ভালো হওয়ার রোগ না। এই রোগীরা সাধারণত তেরো বছরের বেশি বাঁচে না।[২০] কমপক্ষে ৯০% রোগী ধমনী-কঠিনীভবনের (অ্যাথেরোসক্লেরোসিস) বিভিন্ন জটিলতা যেমন হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, প্রভৃতি কারণে মারা যায়। [২১]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. James, William; Berger, Timothy; Elston, Dirk (২০০৫)। Andrews' Diseases of the Skin: Clinical Dermatology (10th সংস্করণ)। Saunders। পৃষ্ঠা 574আইএসবিএন 0-7216-2921-0 
  2. Rapini, Ronald P.; Bolognia, Jean L.; Jorizzo, Joseph L. (২০০৭)। Dermatology: 2-Volume Set। St. Louis: Mosby। আইএসবিএন 1-4160-2999-0 
  3. Dictionary Reference: Progeria
  4. The Free Dictionary: Progeria
  5. Sinha, Jitendra Kumar; Ghosh, Shampa; Raghunath, Manchala (মে ২০১৪)। "Progeria: a rare genetic premature ageing disorder"Indian J Med Res.139 (5): 667–74। পিএমআইডি 25027075পিএমসি 4140030  
  6. Ramírez CL, Cadiñanos J, Varela I, Freije JM, López-Otín C (২০০৭)। "Human progeroid syndromes, aging and cancer: new genetic and epigenetic insights into old questions"Cell. Mol. Life Sci.64: 155–70। ডিওআই:10.1007/s00018-006-6349-3পিএমআইডি 17131053 
  7. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  8. Progeria ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ ডিসেম্বর ২০০৯ তারিখে, Incidence of Progeria and HGPS.
  9. Ewell Steve Roach; Van S. Miller (২০০৪)। Neurocutaneous Disorders। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 150আইএসবিএন 978-0-521-78153-4 
  10. Kwang-Jen Hsiao (১৯৯৮)। Advances in Clinical Chemistry:33। Academic Press। পৃষ্ঠা 10। আইএসবিএন 0-12-010333-8 
  11. McClintock D, Ratner D, Lokuge M; ও অন্যান্য (২০০৭)। Lewin, Alfred, সম্পাদক। "The Mutant Form of Lamin A that Causes Hutchinson–Gilford Progeria Is a Biomarker of Cellular Aging in Human Skin"PLoS ONE2 (12): e1269। ডিওআই:10.1371/journal.pone.0001269পিএমআইডি 18060063পিএমসি 2092390 বিবকোড:2007PLoSO...2.1269M 
  12. Korf B (২০০৮)। "Hutchinson–Gilford progeria syndrome, aging, and the nuclear lamina"N. Engl. J. Med.358 (6): 552–5। ডিওআই:10.1056/NEJMp0800071পিএমআইডি 18256390। ৭ মার্চ ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  13. Merideth MA, Gordon LB, Clauss S ও অন্যান্য (২০০৮)। "Phenotype and course of Hutchinson–Gilford progeria syndrome"N. Engl. J. Med.358 (6): 592–604। ডিওআই:10.1056/NEJMoa0706898পিএমআইডি 18256394পিএমসি 2940940  [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  14. Hutchinson J (১৮৮৬)। "Case of congenital absence of hair, with atrophic condition of the skin and its appendages, in a boy whose mother had been almost wholly bald from alopecia areata from the age of six"। LancetI (3272): 923। ডিওআই:10.1016/S0140-6736(02)06582-0 
  15. Gilford H; Shepherd, RC (১৯০৪)। "Ateleiosis and progeria: continuous youth and premature old age"Brit. Med. J.2 (5157): 914–8। পিএমআইডি 14409225পিএমসি 1990667  
  16. Hennekam RC (২০০৬)। "Hutchinson–Gilford progeria syndrome: review of the phenotype"। Am. J. Med. Genet. A140 (23): 2603–24। ডিওআই:10.1002/ajmg.a.31346পিএমআইডি 16838330 
  17. "Progeria Info"। ২০১৩-১২-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-১১-২৮ 
  18. Grant, Matthew (22 February 2005). "Family tormented by ageing disease". BBC News. Retrieved on 3 May 2009.
  19. "Progeria: Treatment"। MayoClinic.com। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৩-১৭ 
  20. Steve Sternberg (এপ্রিল ১৬, ২০০৩)। "Gene found for rapid aging disease in children"USA Today। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১২-১৩ 
  21. "Progeria"। MayoClinic.com। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৩-১৭ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা

টেমপ্লেট:Disorders involving multiple endocrine glands টেমপ্লেট:Progeroid syndromes