অতিসংক্রমণকারী
রোগবিস্তার বিজ্ঞানের আলোচনায় অতিসংক্রমণকারী বলতে সংক্রামক রোগাক্রান্ত একটি অস্বাভাবিকভাবে সংক্রামক জীবকে বোঝায়। মানববাহিত রোগের ক্ষেত্রে একজন অতিসংক্রমণকারী বলতে এমন একজন সংক্রামক রোগাক্রান্ত ব্যক্তিকে বোঝায়, যার থেকে সাধারণের তুলনায় অন্য ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তির সংক্রামিত হবার সম্ভাবনা বেশি।
অতিসংক্রমণের কিছু কিছু ক্ষেত্রে ৮০/২০ বিধি পরিলক্ষিত হয়,[১] যেখানে প্রায় ২০% সংক্রামিত ব্যক্তি ৮০% রোগ সংবহনের জন্য দায়ী। তবে যদি ৮০%-এর কম বা বেশি শতাংশ সংবহনের জন্য দায়ী হলেও অতিসংক্রমণ ঘটেছে বলা হতে পারে।[২] যেসমস্ত মহামারীতে এ ধরনের অতিসংক্রমণ ঘটনাগুলি (Super Spreader EVents, সংক্ষেপে SSEV) বেশি থাকে, সেগুলিতে রোগাক্রান্ত ব্যক্তিদের সিংহভাগ অপেক্ষাকৃত কম সংখ্যায় তাদের সংস্পর্শে আসা দ্বিতীয় কোনও ব্যক্তিকে সংক্রামিত করেন।
অতিসংক্রমণ ঘটনাগুলির পেছনে একাধিক নিয়ামকের প্রভাব থাকে, যেমন- সম্প্রদায়ব্যাপী অনাক্রম্যতা হ্রাস, হাসপাতালীয় সংক্রমণ, সংক্রমণ প্রাবল্য (Virulence), বাহিত ভাইরাসের পরিমাণ (Viral load), অপরোগনির্ণয় (Misdiagnosis), বায়ুপ্রবাহ গতিবিজ্ঞান, অনাক্রম্যতা দমন এবং অন্য রোগ সংক্রামক জীবাণুর সহ-সংক্রমণ ।[৩]
একটি অতিসংক্রমণ ঘটনার সংজ্ঞা
সম্পাদনাযদিও অতিসংক্রমণ ঘটনার শিথিল কিছু সংজ্ঞা বিদ্যমান, তবুও কোন্ বৈশিষ্ট্যগুলি একটি রোগবিস্তারের ঘটনাকে অতিসংক্রমণ ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করতে সাহায্য করে, সেগুলি নির্ধারণের চেষ্টা করা হয়েছে। লয়েড-স্মিথ ও তাঁর সহযোগীরা (২০০৫) অতিসংক্রমণ ঘটনা শনাক্ত করতে নিম্নোক্ত কর্মনির্দেশনাবিধি সংজ্ঞায়িত করেছেন:[২]
- আলোচনাধীন রোগ এবং জনসমষ্টির জন্য প্রযোজ্য কার্যকর জনন সংখ্যা, R-এর মান প্রাক্কলন করা;
- স্বতন্ত্র ভিন্নতা ছাড়াই যাদৃচ্ছিকভাবে নির্ধারিত প্রক্রিয়ার কারণে Z-এর প্রত্যাশিত পরিসীমা প্রতিনিধিত্ব করে, এরূপ গড় R দিয়ে পোয়াসোঁ বিন্যাস করা;
- অতিসংক্রমণকে এভাবে সংজ্ঞায়িত করা: যখন কোনও সংক্রামিত ব্যক্তি Z(n)-এর চেয়ে বেশি সংখ্যক দ্বিতীয় ব্যক্তিকে সংক্রামিত করেন, যেখানে Z(n) পোয়াসোঁ ( R ) বিন্যাসের n-তম শতকরা।
এই কর্মনির্দেশনাবিধি ৯৯-তম শতকরার অতিসংক্রমণ ঘটনাকে এমন একটি ঘটনা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে যা সমসত্ব জনসমষ্টির ৯৯% সংক্রমণের ঘটনার বেশি সংক্রমণ ঘটায়। [২]
আরও দেখুন
সম্পাদনা- সূচক রোগী (Index case)
- রোগের প্রাদুর্ভাব
- বৈশ্বিক মহামারী
- সংক্রমণ প্রাবল্য
- রোগবিস্তার বিজ্ঞানের প্রকোষ্ঠভিত্তিক প্রতিমানসমূহ (Compartmental models in epidemiology)
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Galvani, Alison P.; May, Robert M. (২০০৫)। "Epidemiology: Dimensions of superspreading": 293–95। ডিওআই:10.1038/438293a। পিএমআইডি 16292292। পিএমসি 7095140
|pmc=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। - ↑ ক খ গ Lloyd-Smith, JO; Schreiber, SJ (২০০৫)। "Superspreading and the effect of individual variation on disease emergence": 355–59। ডিওআই:10.1038/nature04153। পিএমআইডি 16292310। পিএমসি 7094981
|pmc=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। - ↑ Stein, Richard A. (২০১১)। "Superspreaders in Infectious Disease": 510–13। ডিওআই:10.1016/j.ijid.2010.06.020 । পিএমআইডি 21737332।