পৌড়ী গাড়োয়াল জেলা
পৌড়ী গাড়োয়াল ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের একটি জেলা। এর সদর দফতর পৌড়ী শহরে অবস্থিত। এটিকে কখনও কখনও শুধু গাড়োয়াল নামেও উল্লেখ করা হয়, যদিও এটি বৃহত্তর গাড়োয়াল অঞ্চলের এর সাথে বিভ্রান্ত হওয়া উচিত নয়, এটি যার কেবল একটি অংশ।
পৌড়ী গাড়োয়াল জেলা | |
---|---|
উত্তরাখণ্ডের জেলা | |
উত্তরাখণ্ডে পৌড়ী গাড়োয়াল জেলার অবস্থান | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | উত্তরাখণ্ড |
বিভাগ | গাড়োয়াল |
সদর দপ্তর | পৌড়ী |
তহশিল | ৯ |
সরকার | |
• জেলা কালেক্টর | সুশীল কুমার, আইএএস |
• বিধানসভা নির্বাচনকেন্দ্র | শ্রীনগর, পৌড়ী, ইয়ামকেশ্বর, চৌবাট্টাখাল, ল্যানসডাউন, কোটদ্বার |
আয়তন | |
• মোট | ৫,৩২৯ বর্গকিমি (২,০৫৮ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৬,৮৬,৫২৭ |
• জনঘনত্ব | ১৩০/বর্গকিমি (৩৩০/বর্গমাইল) |
• পৌর এলাকা | ১২.৮৯% |
জনসংখ্যার উপাত্ত | |
• সাক্ষরতা | ৮২.০২% |
• যৌন অনুপাত | ১১০৩ |
সময় অঞ্চল | আইএসটি (ইউটিসি+০৫:৩০) |
যানবাহন নিবন্ধন | ইউকে-১২ |
প্রধান মহাসড়ক সমূহ | জাতীয় সড়ক ১২১, জাতীয় সড়ক ১১৯, জাতীয় সড়ক ৫৮ |
গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত | ১,৫৪৫ মিলিমিটার (৬০.৮ ইঞ্চি) মিমি |
ওয়েবসাইট | https://pauri.gov.in/ |
ভূগোল
সম্পাদনাআংশিকভাবে গঙ্গা সমভূমি এবং আংশিকভাবে উত্তর হিমালয়ে অবস্থিত, পৌড়ী গাড়োয়াল জেলা ৫,২৩০ বর্গকিলোমিটার (২,০২০ বর্গমাইল) অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত এবং এটি ২৯°৪৫’ থেকে ৩০°১৫’ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৭৮° ২৪’ থেকে ৭৯° ২৩’ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। জেলাটি দক্ষিণ-পশ্চিমে উত্তর প্রদেশের বিজনোর জেলা থেকে শুরু করে, দক্ষিণাবর্তে (ঘড়ির কাঁটার দিকে), উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বার, দেরাদুন, তেহরি গড়ওয়াল, রুদ্রপ্রাগ, চামোলি, আলমোড়া জেলা, এবং নৈনিতাল দিয়ে সীমাবদ্ধ।
জলবায়ু
সম্পাদনাপৌড়ী গাড়োয়ালের আবহাওয়া গ্রীষ্মে মনোরম থাকে এবং শীতকালে বেশ ঠান্ডা পড়ে। বর্ষাকালে জলবায়ু শীতল থাকে এবং চারিদিক সবুজে ভরে থাকে। তবে, কোটদ্বার এবং সংলগ্ন ভাব্বার অঞ্চলে, বেশ গরম থাকে, গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা ৪০° সেলসিয়াসে পৌঁছে যায়। শীতকালে, পৌড়ীর অনেক অংশে তুষারপাত হয়।
ইতিহাস
সম্পাদনাগড়োয়াল হিমালয়ের মানব সভ্যতা ভারতীয় উপমহাদেশের বাকী অংশের সাথেই এগিয়েছিল। প্রথম ঐতিহাসিক রাজবংশের কথা পাওয়া যায় কাত্যুরি রাজাদের শাসনকালে। তারা ৮০০ থেকে ১১০০ খ্রিষ্টাব্দ অবধি একীভূত উত্তরাখণ্ডের উপরে রাজত্ব করেছিল। শিলালিপি এবং মন্দিরে খোদাই আকারে তাদের নথি পাওয়া গেছে। কাত্যুরিদের পতনের পরে, গড়ওয়াল অঞ্চলটি চৌষট্টির বেশি ভাগে ভাগ হয়ে গিয়ে আলাদা আলাদা নেতারা শাসন করছিল। ১৫শ শতাব্দীর মাঝামাঝি, চাঁদপুরগড় অঞ্চলটি জগৎপালের শাসনে একটি শক্তিশালী রাজত্ব হয়ে উঠেছিল (১৪৫৫ থেকে ১৪৯৩), যিনি কনকপালের বংশধর ছিলেন। ১৫শ শতকের শেষে, অজয়পাল চাঁদপুরগড় শাসন করেছিলেন এবং অঞ্চলটির বিভিন্ন নেতাকে একত্রিত করে অঞ্চলটির একীকরণে সফল হয়েছিলেন। তাঁর রাজ্যটি গাড়োয়াল নামে পরিচিতি লাভ করে। পরবর্তীকালে, ১৫০৬ সালের আগে তিনি চাঁদপুর থেকে দেবলগড়ে তার রাজধানী স্থানান্তরিত করেন, এবং পরে তাঁর রাজধানী হয় শ্রীনগর, ১৫০৬ থেকে ১৫১৯ পর্যন্ত।[১]
রাজা অজয়পাল এবং তাঁর উত্তরসূরীরা প্রায় তিনশো বছর ধরে গাড়োয়াল অঞ্চলের শাসক ছিলেন। এই সময়কালে তাঁরা কুমায়ুন, মোগল, শিখ এবং রোহিলাদের বহু আক্রমণের মুখোমুখি হয়েছিলেন। গড়ওয়ালের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল গোর্খাদের আক্রমণ, যারা চরম নৃশংসতার পরিচয় দিয়েছিল। গোর্খায়ানী শব্দটি গণহত্যার এবং লুণ্ঠন কারী সেনাবাহিনীর সমার্থক হয়ে উঠেছে। দোতি ও কুমায়ুন বশ করার পরে, গোর্খারা গাড়োয়াল আক্রমণ করেছিল এবং গড়ওয়ালী বাহিনীর কঠোর প্রতিরোধ সত্ত্বেও লাঙ্গুরগড় পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল। এরপরে, গোর্খাদের পিছনে একটি চীনা আগ্রাসনের খবর আসায় তারা সরে যেতে বাধ্য হয়েছিল। ১৮০৩ সালে, গোর্খারা আবার আক্রমণ চালিয়েছিল। কুমায়ুন দখল করার পরে তারা গাড়োয়ালকেও সংযুক্ত করে। প্রাথমিক পরাজয়ের পরে, রাজা প্রদ্যুম্ন শাহ তাঁর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পুনর্বিন্যাস করতে দেরাদুনে পালিয়ে যান। গাড়োয়ালি সৈন্যরা প্রচুর হতাহত হয় এবং খুদবুদার যুদ্ধে রাজা নিজেই নিহত হন। ১৮০৪ সালে গোর্খারা গাড়োয়ালের শাসক হয় এবং এই অঞ্চলটি বারো বছর শাসন করে।[১]