পুষ্পালতা দাস

ভারতীয় স্বাধীনতা কর্মী, সমাজকর্মী এবং গান্ধীবাদী

পুষ্পালতা দাস (১৯১৫–২০০৩) একজন ভারতীয় স্বাধীনতা কর্মী, সমাজসেবক, গান্ধীবাদঈ এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম রাজ্যের বিধায়ক ছিলেন। [] তিনি ১৯৫১ সাল থেকে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভার সদস্য, আসাম বিধানসভার সদস্য এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য ছিলেন।[] তিনি কস্তুরবা গান্ধী জাতীয় স্মৃতিসৌধ ট্রাস্ট ও আসামের খাদি এবং গ্রামীণ শিল্প কমিশন-এ সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[] ভারত সরকার তাঁকে সমাজে অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পদ্মভূষণ প্রদান করেছিল।[]

পুষ্পালতা দাস
জন্ম(১৯১৫-০৩-২৭)২৭ মার্চ ১৯১৫
মৃত্যু৯ নভেম্বর ২০০৩(2003-11-09) (বয়স ৮৮)
পেশাভারতীয় স্বাধীনতা কর্মী
সমাজকর্মী
কর্মজীবন১৯৪০–২০০৩
প্রতিষ্ঠানবানার সেনা
কস্তুরবা গান্ধী জাতীয় স্মৃতিসৌধ ট্রাস্ট
দাম্পত্য সঙ্গীঅমিয় কুমার দাস
সন্তান
পিতা-মাতারামেশ্বর সাইকিয়া
স্বর্ণলতা

প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষা

সম্পাদনা

পুষ্পালতা দাস ১৯১৫ সালের ২রা মার্চ তারিখে ভারতের আসামের উত্তর লখিমপুরে রামেশ্বর সাইকিয়া এবং স্বর্ণলতার ঘরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।[] তিনি পানবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তাঁর স্কুল জীবনের পড়াশোনা সম্পন্ন করেছিলেন।[] তিনি ১৯৩৪ সালে ম্যাট্রিক পাস করেছিলেন, তার পরে তিনি ইন্টারমিডিয়েট কোর্স সম্পন্ন করার জন্য কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। পরে তিনি অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং ১৯৩৮ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীকালে, তিনি গুয়াহাটির আর্ল আইন কলেজ থেকে আইন বিষয়ে পড়াশোনার জন্য নাম লেখান।

রাজনৈতিক জীবন

সম্পাদনা

তিনি স্কুল জীবন থেকেই রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করেছিলেন এবং মুক্তি সংঘ নামে একটি সংস্থার সচিব ছিলেন। ১৯৩১ সালে, তিনি এবং তাঁর সহকর্মীরা ব্রিটিশ ভারত কর্তৃক বিপ্লবী নেতা ভগৎ সিংকে ফাঁসি দেওয়ার বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ সংগঠিত করেছিলেন এবং যার ফলে তাঁকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। অতঃপর তিনি প্রাইভেট ছাত্র হিসাবে পড়াশোনা চালিয়ে যান। আর্ল আইন কলেজেও তাঁর ছাত্র রাজনীতি অব্যাহত ছিল; তিনি ১৯৪০ সালে কলেজ ইউনিয়নের সেক্রেটারি ছিলেন। এটা সেই সময়ে ছিল যখন মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী সত্যাগ্রহ আহ্বান করেছিলেন, যেটি আইন অমান্য আন্দোলনের একটি অংশ হিসেবে এবং ভারত ছাড়ো আন্দোলনের অগ্রদূত হিসেবে (যা দুই বছর পর সংগঠিত হয়েছিল) করা হয়েছিল।[] অতঃপর দাস এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। তিনি কারাগারে বন্দী ছিলেন, যা কার্যকরভাবে তাঁর আইন অধ্যয়নকে হ্রাস করেছিল।

পুরস্কার এবং সম্মাননা

সম্পাদনা

ভারত সরকার তাঁকে তাম্রপত্র স্বাধীনতা সংগ্রামী পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করেছিল, কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন যে তিনি কোন কিছু প্রত্যাশা না করেই ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নিয়েছিলেন।[] ১৯৯৯ সালে, সরকার তাঁকে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পদ্মভূষণ প্রদান করে।[] জীবনের পরবর্তী দিনগুলোতে, তিনি বয়স সম্পর্কিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন[] এবং পরবর্তীতে তাঁকে কলকাতায় উডল্যান্ডস নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করতে হয়েছিল, যেখানে ২০০৩ সালের ৯ই নভেম্বর তারিখে তিনি ৮৮ বছর বয়সে মারা যান।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Pushpa Lata Das (1951-2003)"। India Online। ২০১৬। ১৮ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০১৬ 
  2. "Pushpalata's memories live on"। The Telegraph। ২১ নভেম্বর ২০০৩। ৪ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০১৬ 
  3. "Puspa Lata Das Biography"। Maps of India। ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০১৬ 
  4. "Padma Awards" (পিডিএফ)। Ministry of Home Affairs, Government of India। ২০১৬। ১৫ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০১৬ 
  5. Guptajit Pathak (২০০৮)। Assamese Women in Indian Independence Movement: With a Special Emphasis on Kanaklata Barua। Mittal Publications। পৃষ্ঠা 118–। আইএসবিএন 978-81-8324-233-2 
  6. "Individual Satyagraha 1940-41"। GK Today। ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০১৬ 
  7. "Freedom Struggle in Assam"। Press Information Bureau, Government of India। ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০১৬ 
  8. "Freedom fighter Pushpalata Das dead"। Zee News। ৯ নভেম্বর ২০০৩। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০১৬ 
  9. "Freedom fighter Pushpalata Das passes away"। Times of India। ১০ নভেম্বর ২০০৩। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০১৬