পুঠিয়া মন্দির চত্বর

রাজশাহীর অন্তর্গত পুঠিয়া উপজেলায় বড় শিব মন্দির

বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের পুঠিয়া উপজেলায় কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পুরনো হিন্দু মন্দির নিয়ে পুঠিয়া মন্দির চত্বর। রাজশাহী শহরের ২৩ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত এখানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ঐতিহাসিক মন্দির রয়েছে।[] রাজশাহীর বিখ্যাত জনহিতৈষী পুঠিয়া রাজ পরিবারের হিন্দু জমিদার রাজাদের দ্বারা মন্দিরগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

শিব সাগর লেকের পাশে অবস্থিত পঞ্চশিব মন্দির। এর বাঁ পাশে রথ মন্দির।

মন্দিরগুলোর বেশ কয়েকটি টেরাকোটা সংবলিত এবং এগুলোর স্থাপত্য জোড় বাংলা স্থাপত্য রীতির সদৃশ। তবে এতে অন্যান্য স্থাপত্য রীতির মিশেল ঘটেছে। পুঠিয়ার রাজবাড়িটি ইন্দো-সারাসেনিক স্থাপত্য রীতি অনুসারে নির্মিত। এই রীতিতে গতানুগতিক হিন্দু স্থাপত্য রীতির সাথে রেনেসাঁস যুগের ইউরোপীয় স্থাপত্যের সংযোগ ঘটেছে। পুঠিয়ার মন্দিরগুলো একটি বিশালাকার লেক বা জলাধারের চারপাশজুড়ে নির্মিত। মন্দিরগুলোর মাঝে একটি সবুজ চত্বরও রয়েছে। রাজা পিতাম্বর ছিলেন পুঠিয়া জমিদার বংশের প্রতিষ্ঠাতা। তবে প্রাচীন এই এলাকার অধিপতি ছিলেন লস্করী খান। লস্করী খান সম্রাট আকবরের শাসনামলে বিদ্রোহী হয়ে উঠলে সেনাপতি মানসিংহ শাসনভার পিতাম্বরের হাতে তুলে দেন। ব্রিটিশ-বাংলার দ্বিতীয় বৃহত্তম জমিদারী ছিল এই পুঠিয়া রাজবংশের। সম্পদের দিক থেকে তারা ছিল ব্রিটিশ-বাংলার সবচেয়ে ধনী। ভারত স্বাধীন হলে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত করে এবং জমিদারির সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে। পুঠিয়া রাজবংশ তখন ভারতে স্থানান্তরিত হয়।

মন্দিরগুলোর তালিকা

সম্পাদনা

পুঠিয়া মন্দির চত্বরে মোট ১৩টি মন্দির রয়েছে।

মন্দিরের নাম সময়কাল স্থাপত্য ধরন অবস্থান
বড় শিব মন্দির ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দ পঞ্চরত্ন
রথ মন্দির ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দ শিব মন্দিরের পাশে
দোল মন্দির, পুঠিয়া ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দ
পঞ্চরত্ন গোবিন্দ মন্দির পঞ্চরত্ন পুঠিয়া রাজবাড়ির ভিতরে
ছোট আহ্নিক মন্দির, পুঠিয়া খ্রি. ১৭শতক রাণীর গোসলের ঘাটের দক্ষিণে
বড় আহ্নিক মন্দির খ্রি. ১৭-১৮শতক
গোপাল মন্দির ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দ
ছোট গোবিন্দ মন্দির খ্রি. ১৮শতক
কৃষ্ণপুর গোবিন্দ মন্দির, পুঠিয়া (সালামের মঠ) চারচালা
কৃষ্ণপুর শিব মন্দির, পুঠিয়া (ক্ষিতিস চন্দ্রের মঠ) খ্রি. ১৮-১৯শতক
কেষ্ট ক্ষ্যাপার মঠ ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দ
বড় গোপাল মন্দির
জগদ্ধাত্রী মন্দির খ্রি. ১৯শতক

গ্যালারি

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. McAdam, Marika. (2004) Lonely Planet's Bangladesh. pp. 114-115.

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা