পিড়িং শাক

উদ্ভিদের গণ

পিড়িং শাক (সংস্কৃত: স্পৃক্কা) (যার বৈজ্ঞানিক নাম: ট্রিগোনেলা কর্নিকুলাটা)  হল বর্ষজীবী নরম কাণ্ড ও অল্প সুগন্ধযুক্ত শাক। এটি 'প্যাপিলিওনেসি' (Papilionaceae) পরিবারের একপ্রকার প্রজাতির ভেষজ উদ্ভিদ। দেখতে অনেকটা মেথি শাকের মত এবং একে বনমেথিও বলে। ইংরাজীতে একে 'cultivated fenugreek' বলে। সমগ্র পৃথিবীতে এই গণের নব্বইটি প্রজাতি বর্তমান। তার মধ্যে ভারতবর্ষে এগারোটি প্রজাতি বিদ্যমান।[] হিমালয়ের পশ্চিমাঞ্চলে, বিহার, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে এটি জন্মায়।

পিড়িং শাক
Trigonella corniculata
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: উদ্ভিদ
বিভাগ: সংবাহী উদ্ভিদ
শ্রেণী: সপুষ্পক উদ্ভিদ
পরিবার: Papilionaceae
গণ: Trigonella
প্রজাতি: Trigonella corniculata
দ্বিপদী নাম
Trigonella corniculata
(L.) Aug.DC.
প্রতিশব্দ

Trigonella balansae Boiss. & Reut.
Pharnaceum spergula (L.) Dillwyn
Mollugo spergula L.
Glinus spergula var. rotundifolia (Ewart & A.H.K.Petrie) Ewart & P.H.Jarrett
Glinus oppositifolius var. parviflorus Hauman
Glinus mollugo Fenzl
Glinus cambessedesii var. villosus Fenzl
Glinus cambessedesii var. nudiusculus Fenzl
Glinus cambessedesii Fenzl

বর্ণনা

সম্পাদনা

পিড়িং সবুজ রঙের নরম কাণ্ডের দশ-পনেরো ইঞ্চি উচ্চতার অল্প শাখা-প্রশাখাযুক্ত গুল্মজাতীয় গাছ। এটি শীতকালে ভিজে জমিতে জন্মায়। তবে চাষ করতে হলে আশ্বিন মাসের শেষে অথবা কার্তিক মাসের প্রথমে ( অক্টোবর মাসে) এর বীজ বপন করতে হয়। পিড়িং- এর পাতা এক ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা এবং এক এক জায়গায় অনেকগুলি পাতা হয়। ফুল কমলালেবু রঙের। ছোট ছোট শুঁটি হয় এবং এর মধ্যে ৫/৬ টি বীজ থাকে। বীজগুলি মেথির মত দেখতে হলেও আকারে ছোট হয়। তাই একে খুদে মেথিও বলে। পিড়িং শাকের স্বাভাবিক আস্বাদ তিক্ত (তেতো), কিন্তু গুণধর্মে মধুর।  পিড়িং শাকের ভেষজ গুণের জন্য সমগ্র উদ্ভিদ ও বীজ ঔষধার্থে ব্যবহৃত হয়।

ব্যবহার

সম্পাদনা

পিড়িং শাক বেগুনের সঙ্গে বা শুধুই ভেজে খাওয়া হয়।

ঔষধি গুণের জন্য-
  • মেহ রোগে - পিড়িং শাকের রস দুই বা আড়াই চামচ গরম করে প্রত্যহ খেতে হয়।
  • মুত্রকৃচ্ছে- পিড়িং শাকের রস অথবা পিড়িং বীজ এক চামচ একধাপ গরম জলে ১০/১২ ঘন্টা ভিজিয়ে পরের দিন সকালে ছেঁকে দুবেলা  পান করলে প্রস্বাবের কষ্ট লাঘব হয়। অম্লরোগেও উপকার হয়।
  • কাসিসহ শরীরের জ্বালা ও বমিতে- পিড়িং বীজ ২ চামচ একধাপ গ্লাস গরমজলে কয়েকঘন্টা ভিজিয়ে রেখে সারাদিন মাঝে মাঝে খেতে হয়।
  • অত্যধিক ঘামে- পিড়িং বীজ দেড় বা দুই চামচ একটু থেঁতো  করে এক গ্লাস গরম জলে ভিজিয়ে,  ছেঁকে সেই জলটা বারে বারে খেতে হবে।
বাহ্য প্রয়োগ-
  • ছুঁচ ফোটানো ব্যথা ও চুলকানিতে- পিড়িং শাকের রস ও পিড়িং বীজ তিল তেলে পাক করে (আয়ুর্বেদীয় পদ্ধতিতে) মাখলে এবং কিছু পরে গরম জলে স্নান করলে উপশম হয়।[]

প্রজাতি

সম্পাদনা

বর্তমানে গৃহীত প্রজাতির মধ্যে রয়েছে:[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. শিবকালী ভট্টাচার্য (১৯৮৪)। চিরঞ্জীব বনৌষধি (সপ্তম খণ্ড)। আনন্দ পাবলিশার্স, কলকাতা। পৃষ্ঠা ৬৭–৭১। আইএসবিএন 978-81-7066-612-7 
  2. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; AllegedlyPoWOknowsall নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি