পিটার হ্যান্ডসকম্ব
পিটার স্টিফেন প্যাট্রিক হ্যান্ডসকম্ব (ইংরেজি: Peter Handscomb; জন্ম: ২৬ এপ্রিল, ১৯৯১) ভিক্টোরিয়ার ব্রুকস হিল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য তিনি। ২০১০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়কাল থেকে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করছেন। বর্তমানে তিনি ভিক্টোরিয়া ও মিডলসেক্সের অধিনায়কের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | পিটার স্টিফেন প্যাট্রিক হ্যান্ডসকম্ব | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | ব্রুক্স হিল, ভিক্টোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া | ২৬ এপ্রিল ১৯৯১|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | হ্যাঙ্ক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উচ্চতা | ১.৮৩ মিটার (৬ ফুট ০ ইঞ্চি) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি অফ ব্রেক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | ব্যাটসম্যান, উইকেট-রক্ষক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৪৪৭) | ৩০ নভেম্বর ২০১৬ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ৩ জানুয়ারি ২০১৯ বনাম ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ২১৯) | ১৯ জানুয়ারি ২০১৭ বনাম পাকিস্তান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ ওডিআই | ১১ জুলাই ২০১৯ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টি২০আই অভিষেক (ক্যাপ ৯৪) | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ বনাম ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টি২০আই | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ বনাম ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০১১/১২ - বর্তমান | ভিক্টোরিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০১২/১৩ - ২০১৮/১৯ | মেলবোর্ন স্টার্স | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০১৫ | গ্লুচেস্টারশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০১৬ | রাইসিং পুনে সুপারজায়ান্টস (জার্সি নং ৫৪) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০১৭ | ইয়র্কশায়ার (জার্সি নং ৫৪) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০১৯ | ডারহাম (জার্সি নং ৫৪) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০২০ - ২০২১ | মিডলসেক্স | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৯ ডিসেম্বর ২০১৯ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে মেলবোর্ন স্টার্স, ভিক্টোরিয়া, ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে গ্লুচেস্টারশায়ার ও ইয়র্কশায়ার এবং ভারতীয় ক্রিকেটে রাইজিং পুনে সুপারজায়ান্টস দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলে থাকেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী তিনি। পাশাপাশি, মাঝে-মধ্যে উইকেট-রক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন ‘হ্যাঙ্ক’ ডাকনামে পরিচিত পিটার হ্যান্ডসকম্ব।
শৈশবকাল
সম্পাদনাঅস্ট্রেলিয়ায় ইংরেজ পিতা-মাতার অভিবাসনের সুবাদে ব্রিটিশ নাগরিকেরও মর্যাদা লাভ করছেন পিটার হ্যান্ডসকম্ব।[১] ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি টেনিস খেলোয় দক্ষ তিনি। প্রতিভাবান কিশোর টেনিস খেলোয়াড় ছিলেন। তবে, ক্রিকেটের দিকেই মনোনিবেশ ঘটান।[১] ভিক্টোরিয়ার পক্ষে অনূর্ধ্ব-১৭ ও অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটের উভয় পর্যায়ে অংশ নেন।[২] অক্টোবর, ২০০৯ সালে সফররত শ্রীলঙ্কান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে খেলার জন্যে অস্ট্রেলিয়ার অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সদস্যরূপে মনোনীত হন।[৩]
২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো সংবাদ শিরোনামে চলে আসেন। এ পর্যায়ে তিনি অস্ট্রেলিয়া এ-দলকে নেতৃত্ব দেন। ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার ওডিআই দলের সদস্য ছিলেন। তবে, তাকে কোন খেলাতেই রাখা হয়নি। কিশোর টেনিস হিসেবে নিজের প্রতিভার পরিচয় দেন। তবে, কোর্টের চেয়ে পিচের দিকেই দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন তিনি। ২০১৮-১৯ মৌসুমে ভিক্টোরিয়া দলকে নেতৃত্ব দিয়ে ঘরোয়া একদিনের শিরোপা জয়ে ভূমিকা রাখেন।
২০১১ সালে ইংরেজ ক্লাব ক্রিকেটে ট্রিং পার্কের পক্ষে খেলেন। পাশাপাশি, লিচেস্টারশায়ারের পক্ষে দ্বিতীয় একাদশ চ্যাম্পিয়নশীপের কয়েকটি খেলায় অংশ নেন।[৪]
২০১৪-১৫ মৌসুমে ভিক্টোরিয়ার পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে পুনরায় ফিরে আসেন। তিনটি শতরান সহযোগে ৫৩.৯১ গড়ে রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, বিগ ব্যাশ লিগে মেলবোর্ন স্টার্সের পক্ষে উল্লেখযোগ্য সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে পার্থ স্কর্চার্সের বিপক্ষে অপরাজিত শতরানের ইনিংস খেলেন।[৫] এ শতরানের কল্যাণে বিবিএলে প্রথমবারের মতো ২৫ রানের কোটা অতিক্রম করেন। দলের পক্ষে একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে ২০-এর অধিক রান তুলে তিন উইকেটের জয়ে ভূমিকা রাখেন।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট
সম্পাদনা২০১১ সাল থেকে পিটার হ্যান্ডসকম্বের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রয়েছে। মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান পিটার হ্যান্ডসকম্ব তার নিজস্ব ব্যাটিং কৌশল অবলম্বনে ক্রিকেট খেলে থাকেন। ভিক্টোরিয়ার পক্ষে সুন্দর ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের পর ২০১৬-১৭ মৌসুমে প্রথমবারের টেস্ট ক্রিকেট খেলার জন্যে আমন্ত্রিত হন। শেফিল্ড শিল্ডের খেলায় নিজস্ব সর্বোচ্চ ২১৫ রানের ইনিংস খেলার পরই অ্যাডিলেড টেস্টে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলার সুযোগ লাভ করেন। পূর্ববর্তী গ্রীষ্মকালে ঐ প্রতিযোগিতায় তিনি তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকে পরিণত হয়েছিলেন।
ঘরোয়া পর্যায়ের ক্রিকেটে ভিক্টোরিয়া, মেলবোর্ন স্টার্স ও মিডলসেক্সের পক্ষে খেলেছেন। মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঝে-মধ্যে উইকেট-রক্ষণে এগিয়ে আসেন। শুরুতে জাতীয় দলের নিয়মিত উইকেট-রক্ষক ম্যাথু ওয়েডের অনুপস্থিতিতে খেলেন। ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সালে ভারতের বিপক্ষে প্রথম টি২০আই খেলায় উইকেট-রক্ষক হিসেবে অংশ নেন। তিনি দলের সহঃ অধিনায়কের দায়িত্ব পালনকারী অ্যালেক্স ক্যারি’র পরিবর্তে খেলেন।
২০১১-১২ মৌসুমে ভিক্টোরিয়ার পক্ষে অভিষেক ঘটে তার। শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নামেন। লিস্ট এ ও প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম খেলায় যথাক্রমে ৪২ ও ৭১ রান তুলেন।[৬][৭] ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সালে শেফিল্ড শিল্ডের খেলায় সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজস্ব প্রথম শতরানের ইনিংস খেলেন। অ্যাডিলেড ওভালে ১১৩ রান সংগ্রহ করেন তিনি।[৮] ঐ মৌসুমের শেষদিকে ভিক্টোরিয়ার পক্ষে উইকেট-রক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন। ম্যাথু ওয়েড ও রায়ান কার্টার্সের অনুপস্থিতিতে তিনি এ সুযোগ পান। ২০১২-১৩ মৌসুমে ক্রিকেট ভিক্টোরিয়া কর্তৃপক্ষ তাকে ভিক্টোরিয়া ও মেলবোর্ন স্টার্সের পক্ষে খেলার জন্যে চুক্তিবদ্ধ করায়।[৯] ভিক্টোরিয়ান প্রিমিয়ার ক্রিকেটে সেন্ট কিল্ডা ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে খেলেন। ২০১১-১২ মৌসুমে ক্লাবের শীর্ষ রান সংগ্রাহকে পরিণত হন।[১০]
২০১৫ সালে গ্লুচেস্টারশায়ারের পক্ষে ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে অংশ নেন। এরপূর্বে ইয়র্কশায়ার ও ডারহাম দলে খেলেন। ২০২০ মৌসুমকে ঘিরে স্টুয়ার্ট লয়ের পরিবর্তে মিডলসেক্সের অধিনায়ক হিসেবে তাকে মনোনীত করা হয়। অস্ট্রেলিয়া এ-দলের পক্ষে বিদেশ সফর করেন। ২০১৬ সালের শুরুতে দলের অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত হন।[১১] নভেম্বর, ২০১৬ সালে নিউ সাউথ ওয়েলসের বিপক্ষে নিজস্ব প্রথম দ্বি-শতরানের ইনিংস খেলেন।[১১]
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
সম্পাদনাসমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ষোলোটি টেস্ট ও বাইশটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন পিটার হ্যান্ডসকম্ব। ২৪ নভেম্বর, ২০১৬ তারিখে অ্যাডিলেডে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ৩ জানুয়ারি, ২০১৯ তারিখে সিডনিতে সফরকারী ভারত দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।
ঐ গ্রীষ্মে নিজ দেশে অনুষ্ঠিত চারটি টেস্টে অংশ নিয়ে ৯৯.৭৫ গড়ে ৩৯৯ রান তুলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে একটি টেস্টসহ বাদ-বাকী তিনটি সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেছিলেন তিনি। বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে টেস্ট পর্যায়ে তাৎক্ষণিক সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। অ্যাডিলেডে অভিষেক টেস্টে ৫৪ রান সংগ্রহ করেন তিনি। এছাড়াও, জয়সূচক রান সংগ্রহ করেছিলেন। নিজ দেশে টেস্ট ক্রিকেট আঙ্গিনায় গ্রীষ্মকাল শেষে স্মরণীয় সাফল্যের সন্ধান পান। নিজস্ব প্রথম সাত ইনিংসের কোনটিতেই ৫০-এর কম রানে আউট হননি। এরফলে, টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে এ কৃতিত্বের সাথে নিজেকে যুক্ত করেন।
টেস্ট অভিষেক
সম্পাদনা২০১৬-১৭ মৌসুমে নিজ দেশে দক্ষিণ আফ্রিকা দল খেলতে আসে। শোচনীয়ভাবে সিরিজে পরাজয়বরণ করে স্বাগতিক দল ও দল নির্বাচকমণ্ডলীর সভাপতি রড মার্শ অবসর নেন।[১২] সফরকারীদের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ম্যাট রেনশ, নিক ম্যাডিনসনের ন্যায় কয়েকজন নতুন খেলোয়াড়ের অন্যতম হিসেবে গুরুত্বহীন খেলায় তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[১৩] ২৪ নভেম্বর, ২০১৬ তারিখে অ্যাডিলেডে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে তার টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়।[১৪]
ক্রিস রজার্স তাকে ব্যাগি গ্রীন ক্যাপ প্রদান করেন।[১৫] পাঁচ নম্বরে ব্যাটিং করে পিটার হ্যান্ডসকম্ব দূর্দান্তভাবে তার টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবনের সূচনা করেন।
পাকিস্তানের মুখোমুখি
সম্পাদনাগাব্বায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ১০৫ রানের নিজস্ব প্রথম টেস্ট শতরানের সন্ধান পান। এ পর্যায়ে দলীয় অধিনায়ক স্টিভ স্মিথের সাথে ১৭২ রানের জুটি গড়েছিলেন তিনি।[১৬][১৭] এরপর, সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ১১০ রানের ইনিংস খেলেন। প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে দিবা-রাত্রির টেস্ট খেলায় নিজস্ব প্রথম টেস্ট শতরান করেছিলেন। অপর দুই খেলায় তিনি অর্ধ-শতরান করেন। এরফলে, ৯৮ বছর পর দ্বিতীয় অস্ট্রেলীয় টেস্ট ক্রিকেটে হিসেবে নিজের প্রথম চার টেস্টেই অর্ধ-শতরান করেন।[১৮] কোন ইনিংসেই তিনি অর্ধ-শতরানের পূর্বে আউট হননি।
একই গ্রীষ্মে তার ওডিআই অভিষেক হয়। ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ তারিখে সফররত পাকিস্তান দলের বিপক্ষে পার্থের ওয়াকা গ্রাউন্ডে সিরিজের তৃতীয় একদিনের আন্তর্জাতিকে অভিষেক ঘটে তার।[১৯] অ্যাডাম গিলক্রিস্ট তাকে ওডিআই ক্যাপ উপহার দেন।[২০] অভিষেক খেলায় জুনায়েদ খানের বলে শূন্য রানে কট আউট হন। তবে, নো-বলের বদৌলতে রক্ষা পান। পরবর্তীতে পাকিস্তানের ২৬৪ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় নেমে ৮২ রান সংগ্রহ করেন। এ সংগ্রহটি অভিষেক ওডিআইয়ে যে-কোন অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানের তৃতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল।
এরপর নিজ দেশে ভারত ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে তাকে আসা-যাওয়ায় পালায় থাকতে হয়। তাসত্ত্বেও, নিজেকে ওডিআই দলে মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন। এরপর তিনি ভারত ও বাংলাদেশ গমন করেন। রাঁচি ও চট্টগ্রামের খেলায় দলকে রক্ষা করাসহ জয়সূচক রান তুলেন। ভারত সফরে সীমিত ওভারের খেলায় উইকেট-রক্ষক হিসেবে টি২০আই অভিষেক হয়। মোহালিতে ৩৫৯ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় নিজস্ব প্রথম ওডিআই শতক তুলে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের রেকর্ডে ভূমিকা রাখেন।
তবে, ২০১৭-১৮ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজ চলাকালীন পেস বোলিংয়ের বিপক্ষে তার ব্যাটিং কৌশল প্রশ্নবিদ্ধতার কবলে পড়ে। দুই টেস্ট পর দল থেকে তার স্থানচ্যূতি ঘটে। এরপর, দক্ষিণ আফ্রিকায় কুখ্যাত সফরে কেপ টাউনে বলে আঁচড়ের ন্যায় কেলেঙ্কারীর ঘটনার পর জোহেন্সবার্গে তাকে খেলার জন্যে আমন্ত্রণ জানানো হয়। স্টিভ স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নারের নিষেধাজ্ঞার কারণে তাকে স্থায়ীভাবে দলে রাখার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু, ভারতে অস্ট্রেলিয়া এ-দলের সফরে দূর্বলমানের ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রদর্শনের কারণে অক্টোবর, ২০১৮ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত টেস্ট সফরে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা থেকে তাকে দূরে রাখা হয়।
৩০ জানুয়ারি, ২০১৭ তারিখে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিয়মিত উইকেট-রক্ষক ম্যাথু ওয়েডের বিকল্প হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[২১] পূর্বে ১৩টি ওডিআইয়ে অংশ নেয়া সত্ত্বেও ২০১৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে স্মিথের প্রত্যাবর্তনে দূরে রাখা হয়। তবে, সেমি-ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আঘাতের কারণে তাকে দলে নিয়ে আসা হয়। মাত্র ৪ রান সংগ্রহ করেন ও তার দল শোচনীয়ভাবে পরাভূত হয়।
ভারত গমন
সম্পাদনাএপ্রিল, ২০১৮ সালে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া কর্তৃক ২০১৮-১৯ মৌসুমের জন্যে তাকে জাতীয় পর্যায়ে চুক্তিবদ্ধ করা হয়।[২২][২৩] ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সালে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিক সিরিজ খেলার উদ্দেশ্যে তাকে অস্ট্রেলিয়া দলে ঠাঁই দেয়া হয়।[২৪] ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ তারিখে বিশাখাপত্তমে রাত্রিকালীন প্রথম টি২০আইয়ে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয় তার।[২৫]
মার্চ, ২০১৯ সালে ওডিআই তিনি তার প্রথম শতরানের ইনিংস খেলেন। মোহালিতে সিরিজের চতুর্থ ওডিআইয়ে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে তিনি ১১৭ রান করেছিলেন।[২৬]
ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে অনুষ্ঠিত জুলাই, ২০১৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ খেলার উদ্দেশ্যে তাকে অস্ট্রেলিয়া দলে যুক্ত করা হয়। ঐ প্রতিযোগিতায় শন মার্শের আঘাতপ্রাপ্তির ফলে তাকে স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছিল।[২৭]
অ্যাশেজ দলে তাকে নেয়া হয়নি। তবে, ডারহাম দলে খেলার জন্যে চুক্তিবদ্ধ হন। ২০১৯ সালের ভাইটালিটি ব্ল্যাস্টে ক্যামেরন ব্যানক্রফ্টের স্থলাভিষিক্ত হন।[২৮]
খেলার ধরন
সম্পাদনাফিল্ডার হিসেবে তিনি বেশ কার্যকর ও দক্ষতার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। স্লিপ এলাকা, শর্ট লেগ, পয়েন্টসহ উইকেট-রক্ষক হিসেবেও তিনি খেলে থাকেন।
ব্যাটসম্যান হিসেবে পিটার হ্যান্ডসকম্ব তার অধিকাংশ শটই অফের দিকে সামনের পায়ে ভর রেখে খেলে থাকেন। এছাড়াও, ডিপ অঞ্চলেও খেলেন। এ পর্যায়ে তাকে স্ট্যাম্পের খুব কাছে বিপজ্জ্বনক অবস্থায় খেলতে দেখা যায়। ডানহাতি পেস বোলারদের ইনসুইঙ্গার ও অফ কাটারে তিনি বেশ নিজেকে গুটিয়ে নেন। ইনিংস চলাকালীন উইকেট রক্ষার্থে পরিবর্তনশীল প্রবণতা তার মাঝে বিদ্যমান। ২০১৮ সালে ভারতের বিপক্ষে খেলার জন্যে তাকে টেস্ট দলে ফিরিয়ে আনার পর টের পাওয়া যায়। নিজ দেশে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে তৃতীয় টেস্ট খেলার পর তাকে বাদ দেয়া হয়।[২৯][৩০]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ Coverdale, Brydon (2011). Young gun Handscomb looks to bat long – ESPNCricinfo. Published 25 October 2011. Retrieved 23 November 2012.
- ↑ Miscellaneous Matches played by Peter Handscomb (31) – CricketArchive. Retrieved 23 November 2012.
- ↑ Under-19 ODI Matches played by Peter Handscomb (4) – CricketArchive. Retrieved 23 November 2012.
- ↑ Second Eleven Championship Matches played by Peter Handscomb (2) – CricketArchive. Retrieved 23 November 2012.
- ↑ Hogan, Jesse (২০১৫-০১-২২)। "BBL: Peter Handscomb century drives Stars to win over Scorchers"। The Sydney Morning Herald (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-০৮।
- ↑ Queensland v Victoria, Ryobi One-Day Cup 2011/12 – CricketArchive. Retrieved 23 November 2012.
- ↑ Queensland v Victoria, Sheffield Shield 2011/12 – CricketArchive. Retrieved 23 November 2012.
- ↑ Handscomb, Quiney give Victoria good start – ESPNCricinfo. Published 2 November 2012. Retrieved 23 November 2012.
- ↑ Peter Handscomb player profile – Victorian Bushrangers. Retrieved 23 November 2012.
- ↑ Saints in 2012–13 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে – Victorian Premier Cricket. Retrieved 23 November 2012.
- ↑ ক খ "Handscomb in prime position for Test debut"। Cricket Australia। ১৮ নভেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জানুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "Australian cricket's chairman of selectors Rod Marsh resigns"। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "Renshaw, Maddinson, Handscomb to make Test debuts"। ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "South Africa tour of Australia, 3rd Test: Australia v South Africa at Adelaide, Nov 24–28, 2016"। ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ baggy green
- ↑ "Australia's quicks blow Pakistan away"। ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১৬।
- ↑ "A tale of two rookies"। ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১৬।
- ↑ "Peter Handscomb equals 96-year-old Australian record with fourth half-century since Test debut"। Fox Sports। ৪ জানুয়ারি ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জানুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "Pakistan tour of Australia, 3rd ODI: Australia v Pakistan at Perth, Jan 19, 2017"। ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জানুয়ারি ২০১৭।
- ↑ @phandscomb54 receives Australian ODI cap No.219 from the great @gilly381
- ↑ "Sore Wade uncertain for Napier ODI"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "Carey, Richardson gain contracts as Australia look towards World Cup"। ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০১৮।
- ↑ "Five new faces on CA contract list"। Cricket Australia। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০১৮।
- ↑ "Australia name squad for India tour"। Cricket Australia। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "1st T20I (N), Australia tour of India at Visakhapatnam, Feb 24 2019"। ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "Peter Handscomb maiden century keeps Australia in hunt against India in Mohali"। News Nation। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৯।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "Peter Handscomb replaces injured Shaun Marsh in Australia's World Cup squad"। ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০১৯।
- ↑ "Durham brings in Peter Handscomb to replace Bancroft"। SportStar। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ "Handscomb must make change: Ponting"। cricket.com.au (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-০৫।
- ↑ "England will be hoping Australia continue to pick Peter Handscomb for Ashes, says Ricky Ponting"। Fox Sports (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-১২-০৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-০৬।
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে পিটার হ্যান্ডসকম্ব (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে পিটার হ্যান্ডসকম্ব (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
- টুইটারে পিটার হ্যান্ডসকম্ব