পদার্থবিজ্ঞান
পদার্থবিজ্ঞান পদার্থ ও তার গতির বিজ্ঞান।[১] বাংলায় "পদার্থবিজ্ঞান" শব্দটি একটি সমাসবদ্ধ পদ। "পদার্থ" ও "বিজ্ঞান" দুটি সংস্কৃত শব্দ নিয়ে এটি গঠিত। এর ইংরেজি পরিভাষা Physics শব্দটি গ্রিক φύσις (ফুঁসিস) অর্থাৎ "প্রকৃতি", এবং φυσικῆ (ফুঁসিকে) অর্থাৎ "প্রকৃতি সম্পর্কিত জ্ঞান" থেকে এসেছে। পদার্থবিজ্ঞান বলতে বলা যেতে পারে এটা হলো গণিতের বাস্তব রূপ। এখানে বিভিন্ন গাণিতিক হিসাব নিকাশ দ্বারা প্রকৃতির বিভিন্ন ঘটনাকে বর্ণনা করা হয়। অত্যন্ত বিমূর্তভাবে বলতে গেলে, পদার্থবিজ্ঞান হল সেই বিজ্ঞান যার লক্ষ্য আমাদের চারপাশের বিশ্বকে বোঝার চেষ্টা করা।[২]
পাশ্চাত্যের ভাষাগুলোতে পদার্থবিজ্ঞানকে "ফিজিক্স" বা এই জাতীয় শব্দ দিয়ে নির্দেশ করা হয়। এই শব্দটি প্রাচীন গ্রিক φυσική (ἐπιστήμη) বা রোমান Physikḗ (epistḗmē), φύσις physis "প্রকৃতি"[৩][৪][৫]) থেকে এসেছে যার অর্থ "প্রকৃতির জ্ঞান"।[৬] যেখানে পদার্থ, পদার্থের গতি এবং স্থান ও সময় মাধ্যমে তার আচরণ এবং শক্তি এবং বল সংক্রান্ত রাশি নিয়ে অধ্যয়ন করা হয়। পদার্থবিজ্ঞান বিজ্ঞানের সবচেয়ে মৌলিক শাখাগুলোর মধ্যে একটি। পদার্থবিজ্ঞানের মূল লক্ষ্য হলো মহাবিশ্বের আচরণ সম্পর্কে অনুধাবন করা ।[ক][৭][৮][৯]
পদার্থবিজ্ঞান প্রাচীনতম একাডেমিক বিষয়ের মধ্যে অন্যতম, সম্ভবত জ্যোতির্বিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে প্রাচীনতম।[১০] শেষ দুই সহস্রাব্দে, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান এবং গণিতের কিছু শাখার পাশাপাশি প্রাকৃতিক দর্শনের অংশ ছিল, কিন্তু ১৭দশ শতকের বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের সময় প্রাকৃতিক বিজ্ঞান তাদের নিজস্ব অধিকার হিসাবে অনন্য গবেষণা কর্মসূচিতে পরিণত হয়।[খ] পদার্থবিদ্যা গবেষণার অনেক আন্তঃসম্পর্কিত এলাকায়, যেমন জৈববিজ্ঞান এবং কোয়ান্টাম রসায়ন হিসাবে ছেদ করে, এবং পদার্থবিজ্ঞানের সীমারেখা কঠোরভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয় না পদার্থবিজ্ঞানে নতুন ধারণাগুলি প্রায়ই অন্যান্য বিজ্ঞানগুলির মৌলিক পদ্ধতি ব্যাখ্যা করে[৭] যখন গণিত এবং দর্শনের ক্ষেত্রে গবেষণার নতুন নতুন উপায়গুলি খোলার সময়।
পদার্থবিজ্ঞান তাত্ত্বিক সাফল্য থেকে উদ্ভূত নতুন প্রযুক্তির অগ্রগতির মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য অবদানও করে। উদাহরণস্বরূপ, তড়িচ্চুম্বকত্ব বা পারমাণবিক পদার্থবিজ্ঞানের বিকাশের অগ্রগতিগুলি সরাসরি নতুন পণ্যগুলির উন্নয়নে পরিচালিত হয়েছে যা নাটকীয়ভাবে একটি আধুনিককালের সমাজ যেমন টেলিভিশন, কম্পিউটার, গার্হস্থ্য যন্ত্রপাতি এবং পারমাণবিক অস্ত্রকে রূপান্তরিত করেছে;[৭] তাপবিদ্যায় অগ্রগতি ঘটেছে শিল্পায়ন উন্নয়ন, এবং মেকানিক্স মধ্যে অগ্রগতি ক্যালকুলাসের (calculus) উন্নয়ন অনুপ্রাণিত করেছেন।
পদার্থবিজ্ঞান জ্ঞানের প্রাচীনতম শাখাগুলির একটি এবং এটির সবচেয়ে প্রাচীন উপশাখার আধুনিক নাম জ্যোতির্বিজ্ঞান।[১২] প্রকৃতি নিয়ে গবেষণা মানুষের আদিমতম কাজের একটি, তবে পদার্থবিজ্ঞান বলতে বর্তমানে যাকে বোঝানো হয় তার জন্ম ১৬শ শতাব্দীর বৈজ্ঞানিক বিপ্লবোত্তর-কালে, যখন এটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণকারী একটি বিজ্ঞানে পরিণত হয়[১৩] তার আগে প্রকৃতি নিয়ে গবেষণার সাধারণ নাম ছিল প্রাকৃতিক দর্শন, যাকে ঠিক বিজ্ঞান বলা যায় না।
জড়পদার্থের ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞানদায়ক বিদ্যা বা শাস্ত্র হিসেবে পদার্থবিজ্ঞান গবেষণার সাথে জড়িত ব্যক্তি পদার্থবিজ্ঞানী-রূপে পরিচিত। পদার্থবিজ্ঞানীরা আমাদের চারপাশের বস্তুজগৎ কি আচরণ করে আর কেনই বা সেইসব আচরণ করে, তা বোঝার চেষ্টা করেন। তাঁরা এ উদ্দেশ্যে অনুকল্প প্রস্তাব করেন, এবং সেগুলি বাস্তবে পর্যবেক্ষণসম্ভব উপাত্তের সাথে মিলিয়ে দেখেন। এই দৃষ্টিকোণ থেকে পদার্থবিজ্ঞান রসায়ন ও জীববিজ্ঞানের সাথে সম্পর্কিত। আবার শাস্ত্রটি দর্শন ও গণিতের সাথেও সম্পর্কিত। উল্লিখিত সমস্ত শাস্ত্রগুলির পারস্পরিক সম্পর্ক ও নির্ভরশীলতা সুসংজ্ঞায়িত নয়, বরং জটিল। প্রকৃতিকে ভালভাবে বিশ্লেষণ করার জন্য এ সংক্রান্ত বৈজ্ঞানিক গবেষণাকে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান এই তিনটি প্রধান বিজ্ঞানে ভাগ করে নেয়া হয়েছে। রসায়নে মৌলিক ও যৌগিক পদার্থ আলোচিত হয়, জীববিজ্ঞানে জীবন ও জীবিত বস্তুসমূহ নিয়ে আলোচনা করা হয়, আর বাকী সব কিছু আলোচনা করা হয় পদার্থবিজ্ঞানে। দর্শন ও গণিতের সাথে পদার্থবিজ্ঞানের সম্পর্ক আরও জটিল। আধুনিক বিজ্ঞান হিসেবে জন্মলাভের আগ পর্যন্ত পদার্থবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু দর্শনশাস্ত্রে আলোচিত হত এবং বর্তমান দর্শনের নানা শাখায় অধীত বিষয়সমূহ পদার্থবিজ্ঞানীরা ভবিষ্যতে ব্যাখ্যা করার ইচ্ছা রাখেন (যেমন - অস্তিত্বের মত অধিবিদ্যামূলক ধারণাসমূহ), যদিও তা সম্ভব না-ও হতে পারে। পদার্থবিজ্ঞানের ধারণা ও তত্ত্বগুলি প্রায় সার্বজনীনভাবে গাণিতিক সমীকরণের সাহায্যে প্রকাশ করা হয়। তাই গণিতকে প্রায়ই পদার্থবিজ্ঞানের ভাষা বলে অভিহিত করা হয়।[১৪] আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে উপরের সবগুলি শাস্ত্রের মধ্যে গণিতের সাথেই পদার্থবিজ্ঞানের সম্পর্ক সবচেয়ে নিবিড়। পদার্থবিজ্ঞান গণিতের কিছু শাখার উন্নয়নে সরাসরি সহায়তা করেছে, যেমন - ভেক্টর বিশ্লেষণ। আবার বিজ্ঞানের ইতিহাসে এরকম অনেক ব্যক্তি আছেন যারা গণিত ও পদার্থবিজ্ঞান উভয়ক্ষেত্রেই পারদর্শী ছিলেন, যেমন - নিউটন, অয়লার, গাউস, পোয়াঁকারে প্রমুখ। পদার্থবিজ্ঞান ও গণিতের আন্তঃসম্পর্ক পদার্থবিজ্ঞানকে তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান ও পরীক্ষামূলক পদার্থবিজ্ঞান নামের দুইটি প্রধান শাখায় ভাগ করেছে।
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান এবং এর সংশ্লিষ্ট শাস্ত্র গাণিতিক পদার্থবিজ্ঞানে সাধারণত অনুকল্পসমূহ প্রস্তাব করা হয়, আর পরীক্ষামূলক পদার্থবিজ্ঞানে এই অনুকল্পগুলিকে প্রকৃতির সাথে পরীক্ষা করে দেখা হয়। এই দুই শাখা একে-অপরের পরিপূরক: তত্ত্বসমূহ পরীক্ষা করা হয় ও পরীক্ষাশেষে উন্নততর তত্ত্ব প্রস্তাব করা হয়, যেগুলো আবার পরীক্ষা করা হয় এবং এভাবেই ক্রমশ চলতে থাকে। পদার্থবিজ্ঞানের গবেষণা মূলত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা পেশাদারী পরীক্ষাগারে সম্পন্ন করা হয় এবং আধুনিক যুগে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গবেষণা হয় না বললেই চলে। তাত্ত্বিক কাজকর্ম মূলত ব্যক্তিগত হলেও তা অন্যান্য পদার্থবিজ্ঞানীদের সাথে আলোচনা ও সহযোগিতার ভিত্তিতেই ঘটে।[১৫] বর্তমান আধুনিক যুগে পদার্থবিজ্ঞানীরা সাধারণত পদার্থবিজ্ঞানের যে-কোন একটি বিশেষ ক্ষেত্রের উপর দক্ষতা অর্জন করেন, যা অতীতের পদার্থবিজ্ঞানীদের কর্মপন্থার বিপরীত।[১৬] অন্যদিকে নিউটন, অয়লার বা গাউসের মত পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন আলাদা শাখার প্রতিটিতে যথেষ্ট অবদান রেখেছেন, এরকম আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানী খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
প্রযুক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে পদার্থবিজ্ঞান একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞানের শাখা। পদার্থবিজ্ঞানীদের কাজ বিদ্যুৎ, মোটর পরিবহন, চিকিৎসা (বিশেষ করে এক্স-রশ্মির ব্যবহার), ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে কাজে লেগেছে। তবে অনেক সময় পদার্থবিজ্ঞানকে পারমাণবিক বোমা তৈরির মত অনৈতিক কাজেও ব্যবহার করা হয়েছে।
পদার্থবিজ্ঞানীরা যদিও গত প্রায় ৪০০ বছর যাবৎ প্রকৃতিকে বোঝার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তা সত্ত্বেও প্রকৃতিতে এখনও অনেক সমস্যা রয়ে গেছে যেগুলোর যথাযথ ব্যাখ্যা আজও খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফলে পদার্থবিজ্ঞান এখনও একটি সক্রিয় শাস্ত্র; বিশ্ব জুড়ে হাজার হাজার গবেষক পদার্থবিজ্ঞানের গবেষণায় রত। অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে পদার্থবিজ্ঞানে গবেষণার পরিমাণ ও পরিসর দুই-ই অনেক বেশি। পদার্থবিজ্ঞানের আধুনিক তত্ত্বগুলো কেবল প্রকৃতির আরও গভীরতর বর্ণনাই দেয়নি, এর অনন্য ও রহস্যময় রূপ আমাদের কাছে আরও পরিষ্কার করে তুলেছে।
ইতিহাস
সম্পাদনাপদার্থবিজ্ঞানের প্রাচীন ইতিহাস
সম্পাদনাবর্তমানে পদার্থবিজ্ঞান বলতে আমরা যে বিষয়টিকে বােঝাই প্রাচীনকালে সেটি শুরু হয়েছিল জ্যোতির্বিদ্যা,আলােকবিজ্ঞান, গতিবিদ্যা এবং গণিতের গুরুত্বপূর্ণ শাখা জ্যামিতিরতির সমন্বয়ে!
গ্রিকদের অবদান
সম্পাদনাগ্রিক বিজ্ঞানী থেলিসের (খ্রিস্টপূর্বাব্দ ৫৮৬-৬২৪) নাম আলাদাভাবে উল্লেখ করা যেতে পারে, কারণ তিনিই প্রথম কার্যকারণ এবং যুক্তি ছাড়া শুধু ধর্ম, অতীন্দ্রিয় এবং পৌরাণিক কাহিনিভিত্তিক ব্যাখ্যা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছিলেন থেলিস, সূর্যগ্রহণের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন এবং লােডস্টোনের চৌম্বক ধর্ম সম্পর্কে জানতেন। সেই সময়ের গণিতবিদ ও বিজ্ঞানীদের মাঝে পিথাগােরাস (৫২৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) একটি স্মরণীয় নাম। জ্যামিতি ছাড়াও কম্পমান তারের ওপর তার মৌলিক কাজ ছিল। গ্রিক দার্শনিক ডেমােক্রিটাস (৪৬০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) প্রথম ধারণা দেন যে পদার্থের অবিভাজ্য একক আছে, যার নাম দেওয়া হয়েছিল এটম (এই নামটি আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান ব্যবহার করে থাকে)। তবে বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় তার ধারণাটি প্রমাণের কোনাে সুযােগ ছিল না বলে সেটি সবার কাছে গ্রহণযােগ্য ছিল না। সেই সময়কার সবচেয়ে বড় দার্শনিক এবং বিজ্ঞানী এরিস্টটলের মাটি, পানি, বাতাস ও আগুন দিয়ে সবকিছু তৈরি হওয়ার মতবাদটিই অনেক বেশি গ্রহণযােগ্য ছিল। (আরিস্তারাকস (৩১০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) প্রথমে সূর্যকেন্দ্রিক সৌরজগতের ধারণা দিয়েছিলেন এবং তার অনুসারী সেলেউকাস যুক্তিতর্ক দিয়ে সেটি প্রমাণ করেছিলেন, যদিও সেই যুক্তিগুলাে এখন কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে .গ্রিক বিজ্ঞান এবং গণিত তার সর্বোচ্চ শিখরে উঠেছিল সর্বকালের একজন শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী আর্কিমিডিসের (২৮৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) সময় । তরল পদার্থে উধ্বমুখী বলের বিষয়টি এখনাে বিজ্ঞান বইয়ের পঠনসূচিতে থাকে। গােলীয় আয়নায় সূর্যরশ্মিকে কেন্দ্রীভূত করে দূর থেকে শত্রুর যুদ্ধজাহাজে আগুন ধরিয়ে তিনি যুদ্ধে সহায়তা করেছিলেন। গ্রিক আমলের আরেকজন বিজ্ঞানী ছিলেন ইরাতেস্থিনিস (২৭৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দ), যিনি সেই সময়ে সঠিকভাবে পৃথিবীর ব্যাসার্ধ বের করেছিলেন।
বিজ্ঞানের উত্থান পর্ব (মধ্যযুগীয় ইউরোপের অবদান)
সম্পাদনাষোড়শ এবং সপ্তদশ শতাব্দীতে ইউরোপে পদার্থবিজ্ঞানের জগতে একটি বিস্ময়কর বিপ্লবের শুরু হয়, সময়টা ছিল ইউরোপীয় রেঁনেসার যুগ। ১৫৪৩ সালে কোপার্নিকাস তার একটি বইয়ে সূর্যকেন্দ্রিক একটি সৌরজগতের ব্যাখ্যা দেন (বইয়ের প্রকাশক ধর্মযাজকদের ভয়ে লিখেছিলেন যে এটি সত্যিকারের ব্যাখ্যা নয়, শুধু একটি গাণিতিক সমাধান মাত্র!) ।কোপার্নিকাসের তত্ত্বটি দীর্ঘাদন লোকচক্ষুর আড়ালে পড়ে ছিল, গ্যালিলিও (১৫৬৪-১৬৪২) সেটিকে সবার সামনে নিয়ে আসেন। তিনি গাণিতিক সূত্র দেওয়ার পর পরীক্ষা করে সেই সূত্রটি প্রমাণ করার বৈজ্ঞানিক ধারার সূচনা করেন। গ্যালিলিওকে অনেক সময় আধুনিক বিজ্ঞানের জনক বলা হয়। তবে সূর্যকেন্দ্রিক সৌরজগতের প্রবন্তা হওয়ার কারণে তিনি চার্চের কোপানলে পড়েছিলেন এবং শেষ জীবনে তাঁকে গৃহবন্দী হয়ে কাটাতে হয়। ১৬৮৭ খ্রিষ্টাব্দে আইজাক নিউটন বলবিদ্যার তিনটি এবং মহাকর্ষ বলের সূত্র প্রকাশ করেন, যেটি বল এবং গতিবিদ্যার ভিত্তি তৈরি করে দেয়। আলোকবিজ্ঞান এবং অন্য আরো কাজের সাথে সাথে বিজ্ঞানী নিউটন লিবনিজের সাথে গণিতের নতুন একটি শাখা ক্যালকুলাস আবিষ্কার করেছিলেন. অষ্টাদশ শতাব্দীর আগে তাপকে ভরহীন এক ধরনের তরল হিসেবে বিবেচনা করা হতো। ১৭৯৮ সাল কাউন্ট রামফোর্ড দেখান,তাপ এক ধরনের শক্তি এবং যান্ত্রিক শক্তিকে তাপশক্তিতে রুপান্তুর করা যায়। আরও অনেক বিজ্ঞানীর গবেষণার ওপর ভিত্তি করে লর্ড কেলভিন ১৮৫০ সালে তাপ গতিবিজ্ঞানের (থার্মোডিনামিক্সের) দুটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্র দিয়েছিলেন। বিদ্যুৎ ও চুষকের ওপরেও এই সময় ব্যাপক গবেষণা শুরু হয়। ১৭৭৮ সালে কুলম্ব বৈদ্যুতিক চার্জের ভেতরকার বলের জন্য সূত্র আবিষ্কার করেন। ১৮০০ সালে ভোল্টা বৈদ্যুতিক ব্যাটারি আবিষ্কার করার পর বিদ্যুৎ নিয়ে নানা ধরনের গবেষণা শুরু হয়। ১৮২০ সালে অরস্টেড দেখান বিদ্যুৎ প্রবাহ দিয়ে চুম্বক তৈরি করা যায়। ১৮৩১ সালে ফ্যারাডে এবং হেনরি ঠিক তার বিপরীত প্রক্রিয়া আবিষ্কার করেন। তারা দেখান চৌম্বক ক্ষেত্রের পরিবর্তন করে বিদ্যুৎ তৈরি করা যায়। ১৮৬৪ সালে ম্যাক্সওয়েল তার বিখ্যাত ম্যাক্সওয়েল সমীকরণ দিয়ে পরিবর্তনশীল বিদ্যুৎ ও চৌম্বক ক্ষেত্রকে একই সূত্রের মাঝে নিয়ে এসে দেখান যে আলো আসলে একটি বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ। বিদ্যুৎ ও চুম্বক আলাদা কিছু নয়, আসলে এ দুটি একই শক্তি দুটি ভিন্ন রূপ। এটি সময়োপযোগী একটি আবিষ্কার ছিল,কারণ ১৮০১ সালে ইয়ং পরীক্ষার মাধ্যমে আলোর তরঙ্গ ধর্মের প্রমাণ করে রেখেছিলেন।
আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের পূর্ব-যুগ
সম্পাদনামাইকেল ফ্যারাডে (১৭৯১-১৮৬৭) বিদুত্যের চৌম্বক ক্রিয়া নিয়ে কাজ করেন। তিনিই প্রথম উদ্ভাবন করেন যে, বিদুত্যের চৌম্বক ক্রিয়া রয়েছে। এরপর পদার্থবিজ্ঞানের মঞ্চে আবির্ভূত হন জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল (১৮৩১-১৮৭৯)। তিনি বিদ্যুৎ ও চৌম্বক ক্ষেত্রকে একীভূত করে চারটি অসাধারণ সূত্র প্রদান করে। এ সূত্রগুলোকে পদার্থবিজ্ঞানে ম্যাক্সওয়েলের সূত্র নামে পরিচিত। এ সূত্রগুলোকে পদার্থবিজ্ঞানের অন্যতম সেরা আবিষ্কার হিসেবে গণ্য করা হয়। এ সময় বেতার তরঙ্গ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয় ও এর উপর গবেষণা চলে। বাঙালি বিজ্ঞানী আচার্য স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু (১৮৫৮-১৯৩৭) বেতার তরঙ্গ নিয়ে কাজ করা বিজ্ঞানীদের মধ্যে অন্যতম। তিনিই প্রথম বিনা তারে একস্থান থেকে অন্যস্থানে বার্তা প্রেরণে সক্ষম হন। তবে তার এ আবিষ্কারের পেটেন্ট না করানোর কারণে তিনি নোবেল প্রাইজ থেকে বঞ্চিত হন। প্রায় একই সময় ইতালিয়ান বিজ্ঞানী গুগলিয়েলমো মার্কনিও বিনা তারে একস্থান থেকে অন্যস্থানে বার্তা প্রেরণ করেন। তিনি তার কাজের পেটেন্ট করানোর ফলে প্রথম স্বীকৃতভাবে রেডিও আবিষ্কার হিসেবে গণ্য হন। তাকে ১৯০৯ সালে নোবেল প্রাইজ দেয়া হয়। এছাড়া ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে উইলহেলম রন্টজেন (১৮৪৫-১৯২৩) এক্স রে আবিষ্কার করেন। এ কাজের জন্য তিনি ১৯০১ সালে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। এছাড়া হেনরি বেকেরেল ও কুরি দম্পতি এ সময় তেজস্ক্রিয়তা নিয়ে কাজ করেন। প্রমুখ বিজ্ঞানীদের হাত ধরেই এ সময় পদার্থবিজ্ঞান এগোতে থাকে।
পদার্থবিজ্ঞানের প্রধান শাখাসমূহ
সম্পাদনাপদার্থবিজ্ঞান শাস্ত্রের পরিপক্বতার সাথে সাথে প্রকৃতিতে পর্যবেক্ষণযোগ্য ভৌত ঘটনাগুলিকে এর কতগুলি বিশেষ বিশেষ শাখার অধীনে বণ্টন করে নেওয়া হয়েছে। যদিও পদার্থবিজ্ঞানের সমস্ত ক্ষেত্রগুলিকে একত্রে একক একটি তত্ত্বের অধীন হিসেবে মনে করা হয়ে থাকে, এ ধারণাটি এখনও প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি। পদার্থবিজ্ঞানের মূল শাখাগুলি এরকম:
- চিরায়ত বলবিজ্ঞান: চিরায়ত বলবিজ্ঞানে বস্তুসমূহের উপর বলের ক্রিয়ার পদার্থ-বৈজ্ঞানিক মডেল আলোচিত হয়। এই মডেল নিষ্পত্তিমূলক (deterministic)। চিরায়ত বলবিজ্ঞানকে কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানের সীমা হিসবে গণ্য করা হয়, যদিও এটা প্রমাণ করা এখনও সম্ভব হয়নি। চিরায়ত বলবিজ্ঞানকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়:
- নিউটনীয় চিরায়ত বলবিজ্ঞান, আইজাক নিউটন ও তাঁর গতি সংক্রান্ত বিধিগুলির নাম অনুসারে।
- আপেক্ষিক বলবিজ্ঞান, আলবার্ট আইনস্টাইন এবং তাঁর সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব ও বিশেষ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব অনুসারে।
- কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান: এই শাখায় পারমাণবিক ও অতি-পারমাণবিক ব্যবস্থাসমূহ এবং বিকিরণের সাথে এদের সম্পর্ক পর্যবেক্ষণযোগ্য রাশির সাপেক্ষে আলোচনা করা হয়। কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানের ভিত্তি পর্যবেক্ষণটি হচ্ছে সব ধরনের শক্তি কিছু বিচ্ছিন্ন এককের গুচ্ছ আকারে নিঃসরিত হয়, যে গুচ্ছগুলির নাম কোয়ান্টা (বহুবচনে)। কোয়ান্টাম তত্ত্বে পর্যবেক্ষণযোগ্য কণাগুলির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের কেবল সম্ভাবনাভিত্তিক বা পরিসংখ্যানিক গণনা সম্ভব, এবং এগুলি তরঙ্গ ফাংশনের আকারে আলোচনা করা হয়।
- তড়িৎ-চুম্বকত্ব : এই শাখায় তড়িৎ-চুম্বকীয় ক্ষেত্রের পদার্থবিজ্ঞান আলোচিত হয়। তড়িৎ-চুম্বকীয় ক্ষেত্র এমন একটি ক্ষেত্র যা সর্বত্র বিস্তৃত এবং বৈদ্যুতিক চার্জ-যুক্ত কণার উপর এটি বল প্রয়োগ করতে পারে। একইভাবে বৈদ্যুতিক আধানের উপস্থিতি ও চলন কোন তড়িৎ-চুম্বকীয় ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করতে পারে।
- পরিসংখ্যানিক বলবিজ্ঞান ও তাপগতিবিজ্ঞান: এই শাখাগুলিতে তাপ, কাজ ও এনট্রপি আলোচিত হয়। তাপগতিবিজ্ঞানে বড় আকারের (macroscopic) ব্যবস্থার শক্তি নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং এর উপর তাপমাত্রা, চাপ, আয়তন, যান্ত্রিক কাজ ইত্যাদির প্রভাব গবেষণা করা হয়। পরিসংখ্যানিক বলবিজ্ঞানে বৃহদায়তনিক (macroscopic) ব্যবস্থার ক্ষুদ্রায়তনিক (microscopic) উপাদানগুলিতে পরিসংখ্যানের পদ্ধতি প্রয়োগ করে তাপগতিবিজ্ঞানের বৃৃৃৃৃৃহদায়তনিক (macroscopic) দৃষ্টিভঙ্গি এবং চিরায়ত বা কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানে ব্যাখ্যাকৃত পদার্থের পারমাণবিক আচরণের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করা হয়।
পদার্থবিজ্ঞানের শাখা
সম্পাদনা- শব্দবিজ্ঞান (Acoustics) - কঠিন বস্তুর তরল পদার্থ, এবং গ্যাস (যেমন কম্পন এবং শব্দ হিসাবে) মধ্যে যান্ত্রিক তরঙ্গ অধ্যয়ন
- কৃষিপদার্থবিজ্ঞান (Agrophysics) - পদার্থবিজ্ঞান গবেষণায় কৃষি সংস্থাগুলোর প্রয়োগ।
- মৃত্তিকা পদার্থবিজ্ঞান (Soil physics) - মাটির ভৌত ধর্ম এবং প্রক্রিয়াগুলোর অধ্যয়ন।
- নভোপদার্থবিজ্ঞান (Astrophysics ) - মহাজাগতিক বস্তুসমূহের ভৌত ধর্ম অধ্যয়ন।
- জ্যোতির্বিজ্ঞান (Astronomy) - পৃথিবীর বাইরে মহাবিশ্ব এবং তার গঠন ও বিকাশের পাশাপাশি বিবর্তন, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, আবহাওয়াবিদ্যা এবং মহাকাশীয় বস্তুর গতি (যেমন ছায়াপথ, গ্রহ, নক্ষত্র,ধূমকেতু ইত্যাদি) এবং পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাইরে উৎপন্ন (যেমন হিসাবে মহাজাগতিক পটভূমি বিকিরণ) ঘটনাবলি।
- জ্যোতির্গতিবিজ্ঞান (Astrodynamics) - রকেট এবং অন্যান্য মহাকাশযানের গতিবিধি সংক্রান্ত বাস্তব সমস্যার জন্য বলবিদ্যার প্রয়োগ।
- নভোমিতি বা জ্যোতির্মিতি (Astrometry) - জ্যোতির্বিজ্ঞানের শাখা যা বড় এবং অন্যান্য খ-বস্তুসমূহের অবস্থান ও অবস্থানের সঠিক পরিমাপের সাথে জড়িত।
- ছায়াপথ-বহিঃস্থ জ্যোতির্বিজ্ঞান (Extragalactic astronomy) - জ্যোতির্বিদ্যার শাখা যা আমাদের নিজস্ব আকাশগঙ্গা ছায়াপথের বাইরের বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কিত।
- ছায়াপথ জ্যোতির্বিজ্ঞান (Galactic astronomy) - আমাদের নিজস্ব আকাশগঙ্গা ছায়াপথ এবং তার সমস্ত বিষয়বস্তু অধ্যয়ন।
- ভৌত বিশ্বতত্ত্ব (Physical cosmology) - মহাবিশ্বের বৃহৎ-স্তরের কাঠামো এবং গতিবিদ্যা গবেষণা এবং তার গঠনের এবং বিবর্তন সম্পর্কে মৌলিক আলোচনার সাথে সংশ্লিষ্ট।
- গ্রহীয় বিজ্ঞান (Planetary science) - গ্রহগুলোর (পৃথিবী সহ) উপগ্রহ,চন্দ্র ও গ্রহের সিস্টেম, বিশেষ করে সৌর সিস্টেম এবং তাদের গঠন প্রক্রিয়াগুলে।
- নাক্ষত্রিক জ্যোতির্বিজ্ঞান (Stellar astronomy) - প্রাকৃতিক বিজ্ঞান যা মহাজাগতিক বস্তুর (যেমন তারা, গ্রহ, ধূমকেতু, তারকা সংমিশ্রণ এবং ছায়াপথ) এবং পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল (যেমন মহাজাগতিক পটভূমি বিকিরণ)
- আবহমণ্ডলীয় পদার্থবিজ্ঞান (Atmospheric physics) - বায়ুমন্ডলে ভৌত পদার্থ প্রয়োগের অধ্যয়ন
- পারমাণবিক, আণবিক, এবং আলোকীয় পদার্থবিদ্যা (Atomic, molecular, and optical physics) -
- জীবপদার্থবিজ্ঞান বা প্রাণ-পদার্থবিজ্ঞান (Biophysics) - জৈবিক পদ্ধতিগুলি অধ্যয়ন করার জন্য পদার্থবিজ্ঞানের পদ্ধতি ব্যবহার করে এমন আন্তঃসম্পর্কিত বিজ্ঞান।
- চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান (Medical physics) - পদার্থবিজ্ঞানের ধারণা, ঔষধের তত্ত্ব ও পদ্ধতি।
- স্নায়ু পদার্থবিজ্ঞান (Neurophysics) - স্নায়ুতন্ত্র সম্পর্কে তথ্যলাভের জন্য ভৌত কৌশলের ব্যবহার ও বিকাশ।
- রাসায়নিক পদার্থবিজ্ঞান (Chemical physics) - পদার্থবিজ্ঞানের শাখা যা পদার্থবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে রাসায়নিক প্রক্রিয়াগুলি অধ্যয়ন।
- চিরায়ত পদার্থবিজ্ঞান (Classical physics) - পদার্থবিজ্ঞান যা কোয়ান্টাম বলবিদ্যার আবির্ভাবের পূর্বাভাস দেয়।
- পরিগণনামূলক পদার্থবিজ্ঞান (Computational physics) - পদার্থবিজ্ঞানের সমস্যা সমাধানের জন্য সাংখ্যিক নির্দেশক্রম বা অ্যালগরিদমগুলির গবেষণা এবং বাস্তবায়ন, যার জন্য একটি পরিগণনামূলক তত্ত্ব ইতোমধ্যে বিদ্যমান।
- ঘনীভূত পদার্থ পদার্থবিজ্ঞান (Condensed matter physics) - ঘনীভূত পদার্থের ভৌত বৈশিষ্ট্য অধ্যয়ন।
- হিমবিজ্ঞান (Cryogenics) - অত্যন্ত নিম্ন তাপমাত্রায় (-150 ডিগ্রী সি, -238 ° ফা বা 123 কেলভিন) বস্তু উৎপাদন এবং এ তাপমাত্রায় এদের আচরণের গবেষণা।
- গতিবিজ্ঞান (Dynamics) - গতির পরিবর্তন এবং গতির পরিবর্তনগুলো সম্পর্কে গবেষণা।[১৭]
- কণা পদার্থবিজ্ঞান(particle physics)- পদার্থের পরমাণুর গঠন ও তাদের বিকিরণ নিয়ে আলোচনা করে।
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ R. P. Feynman, R. B. Leighton, M. Sands (1963), The Feynman Lectures on Physics, আইএসবিএন ০-২০১-০২১১৬-১ Hard-cover. p.1-1 ফাইনম্যান পারমাণবিক অনুকল্প দিয়ে আরম্ভ করেছেন।
- ↑ H.D. Young & R.A. Freedman, University Physics with Modern Physics: 11th Edition: International Edition (2004), Addison Wesley. Chapter 1, section 1.1, page 2 -এ বলা হয়েছে: "Physics is an experimental science. Physicists observe the phenomena of nature and try to find patterns and principles that relate these phenomena. These patterns are called physical theories or, when they are very well established and of broad use, physical laws or principles."
- ↑ "physics"। Online Etymology Dictionary। ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "physic"। Online Etymology Dictionary। ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ φύσις, φυσική, ἐπιστήμη. Liddell, Henry George; Scott, Robert; পারসিয়াস প্রজেক্টে এ গ্রিক–ইংলিশ লেক্সিকন
- ↑ At the start of The Feynman Lectures on Physics, Richard Feynman offers the atomic hypothesis as the single most prolific scientific concept: "If, in some cataclysm, all [] scientific knowledge were to be destroyed [save] one sentence [...] what statement would contain the most information in the fewest words? I believe it is [...] that all things are made up of atoms – little particles that move around in perpetual motion, attracting each other when they are a little distance apart, but repelling upon being squeezed into one another ..." (Feynman, Leighton এবং Sands 1963, পৃ. I-2)
- ↑ ক খ গ "Physics is one of the most fundamental of the sciences. Scientists of all disciplines use the ideas of physics, including chemists who study the structure of molecules, paleontologists who try to reconstruct how dinosaurs walked, and climatologists who study how human activities affect the atmosphere and oceans. Physics is also the foundation of all engineering and technology. No engineer could design a flat-screen TV, an interplanetary spacecraft, or even a better mousetrap without first understanding the basic laws of physics. (...) You will come to see physics as a towering achievement of the human intellect in its quest to understand our world and ourselves.Young ও Freedman 2014, পৃ. 1
- ↑ "Physics is an experimental science. Physicists observe the phenomena of nature and try to find patterns that relate these phenomena."Young ও Freedman 2014, পৃ. 2
- ↑ "Physics is the study of your world and the world and universe around you." (Holzner 2006, পৃ. 7)
- ↑ Krupp 2003
- ↑ Cajori 1917, পৃ. 48–49
- ↑ Evidence exists that the earliest civilizations dating back to beyond 3000BC, such as the Sumerians, Ancient Egyptians, and the Indus Valley Civilization, all had a predictive knowledge and a very basic understanding of the motions of the Sun, Moon, and stars.
- ↑ ফ্রান্সিস বেকন (১৬২০) তাঁর Novum Organum গ্রন্থে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রচলনের বিরোধী ছিলেন।
- ↑ "Philosophy is written in that great book which ever lies before our eyes. I mean the universe, but we cannot understand it if we do not first learn the language and grasp the symbols in which it is written. This book is written in the mathematical language, and the symbols are triangles, circles and other geometrical figures, without whose help it is humanly impossible to comprehend a single word of it, and without which one wanders in vain through a dark labyrinth." -- গ্যালিলিও (১৬২৩), The Assayer, G. Toraldo Di Francia (1976), The Investigation of the Physical World আইএসবিএন ০-৫২১-২৯৯২৫-X p.10-এ উদ্ধৃত।
- ↑ অতীতেও পদার্থবিজ্ঞানীরা একে অপরের সাথে যোগাযোগ রাখতেন। এপ্রসঙ্গে নিউটন ও রবার্ট হুক এবং আইনস্টাইন ও বোরের মধ্যকার পত্র-যোগাযোগ স্মরণীয়।
- ↑ উদাহরণস্বরূপ নিউটন আলোকবিজ্ঞান, বলবিজ্ঞান এবং অভিকর্ষের উপর অবদান রাখেন; অয়লার এবং গাউস পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখেন।
- ↑ https://en.wiki.x.io/wiki/Outline_of_physics#Branches_of_physics
গ্রন্থপঞ্জী
সম্পাদনা- Hawking, Stephen (1988). A Brief History of Time. Bantam. আইএসবিএন ০-৫৫৩-১০৯৫৩-৭.
- Feynman, Richard (1994). Character of Physical Law. Random House. আইএসবিএন ০-৬৭৯-৬০১২৭-৯.
- Greene, Brian (2000). The Elegant Universe: Superstring ,Hidden Dimensions, and the Quest for the Ultimate Theory. Vintage. আইএসবিএন ০-৩৭৫-৭০৮১১-১.
- Penrose, Roger (2005). The Road to Reality - A Complete Guide to the Laws of the Universe. Knopf.
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের পাঠ্যপুস্তক
সম্পাদনা- প্রাথমিক
- Feynman, Richard; Leighton, Robert; Sands, Matthew (1989). Feynman Lectures on Physics. Addison-Wesley. আইএসবিএন ০-২০১-৫১০০৩-০.
- Hewitt, Paul (2001). 'Conceptual Physics with Practicing Physics Workbook (9th ed.). Addison Wesley. আইএসবিএন ০-৩২১-০৫২০২-১.
- Serway, Raymond A.; Jewett, John W. (2004). Physics for Scientists and Engineers (6th ed.). Brooks/Cole. আইএসবিএন ০-৫৩৪-৪০৮৪২-৭.
- ব্যাচেলর্স/স্নাতক
- Resnick, Halliday. (2014). Fundamentals of Physics (10th ed.). Wiley. ISBN 978-1118230619.
- Thornton, Stephen T.; Marion, Jerry B. (2003). Classical Dynamics of Particles and Systems (5th ed.). Brooks Cole. আইএসবিএন ০-৫৩৪-৪০৮৯৬-৬.
- Griffiths, David J. (1998). Introduction to Electrodynamics (3rd ed.). Prentice Hall. আইএসবিএন ০-১৩-৮০৫৩২৬-X.
- Hecht, Eugene (2001). Optics (4th ed.). Pearson Education. আইএসবিএন ০-৮০৫৩-৮৫৬৬-৫.
- Kroemer, Herbert; Kittel, Charles (1980). Thermal Physics (2nd ed.). W. H. Freeman Company. আইএসবিএন ০-৭১৬৭-১০৮৮-৯.
- Griffiths, David J. (2004). Introduction to Quantum Mechanics (2nd ed.). Prentice Hall. আইএসবিএন ০-১৩-৮০৫৩২৬-X.
- Tipler, Paul; Llewellyn, Ralph (2002). Modern Physics (4th ed.). W. H. Freeman. আইএসবিএন ০-৭১৬৭-৪৩৪৫-০.
- Griffiths, David J. (1987). Introduction to Elementary Particles. Wiley, John & Sons, Inc. আইএসবিএন ০-৪৭১-৬০৩৮৬-৪.
- Arfken, George B.; Weber, Hans J. (2000). Mathematical Methods for Physicists (5th ed.). Academic Press. আইএসবিএন ০-১২-০৫৯৮২৫-৬.
- গ্র্যাজুয়েট প্রাথমিক
- Goldstein, Herbert (2002). Classical Mechanics. Addison Wesley. আইএসবিএন ০-২০১-৬৫৭০২-৩.
- Jackson, John D. (1998). Classical Electrodynamics (3rd ed.). Wiley. আইএসবিএন ০-৪৭১-৩০৯৩২-X.
- Huang, Kerson (1990). Statistical Mechanics. Wiley, John & Sons, Inc. আইএসবিএন ০-৪৭১-৮১৫১৮-৭.
- Merzbacher, Eugen (1998). Quantum Mechanics. Wiley, John & Sons, Inc. আইএসবিএন ০-৪৭১-৮৮৭০২-১.
- গ্র্যাজুয়েট বিশেষায়িত ক্ষেত্রসমূহ
- Peskin, Michael E.; Schroeder, Daniel V. (1994). Introduction to Quantum Field Theory. Perseus Publishing. আইএসবিএন ০-২০১-৫০৩৯৭-২.
- Thorne, Kip S.; Misner, Charles W.; Wheeler, John Archibald (1973). Gravitation. W.H. Freeman. আইএসবিএন ০-৭১৬৭-০৩৪৪-০.
- Wald, Robert M. (1984). General Relativity. University of Chicago Press. আইএসবিএন ০-২২৬-৮৭০৩৩-২.
- Hawking, S.W., Ellis, F.R (1973). The large scale structure of space-time. Cambridge University Press. আইএসবিএন ০-৫২১-০৯৯০৬-৪.
ইতিহাস
সম্পাদনা- Cropper, William H. (2004). Great Physicists: The Life and Times of Leading Physicists from Galileo to Hawking. Oxford University Press. আইএসবিএন ০-১৯-৫১৭৩২৪-৪.
- Gamow, George (1988). The Great Physicists from Galileo to Einstein. Dover Publications. আইএসবিএন ০-৪৮৬-২৫৭৬৭-৩.
- Heilbron, John L. (2005). The Oxford Guide to the History of Physics and Astronomy. Oxford University Press. আইএসবিএন ০-১৯-৫১৭১৯৮-৫.
- Weaver, Jefferson H. (editor) (1987). The World of Physics. Simon and Schuster. আইএসবিএন ০-৬৭১-৪৯৯৩১-৯. A selection of 56 articles, written by physicists. Commentaries and notes by Lloyd Motz and Dale McAdoo.
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাসাধারণ
সম্পাদনা- Usenet Physics FAQ - ইউজনেটের sci.physics ও অন্যান্য পদার্থবিজ্ঞান নিউজগ্রুপের তৈরি করা প্রশ্নোত্তর।
- পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার সংক্রান্ত ওয়েবসাইট
- Physics Today - পদার্থবিজ্ঞানের দৈনিক খবরাখবর
সংগঠন
সম্পাদনা- AIP.org - American Institute of Physics-এর ওয়েবসাইট
- IOP.org ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২১ মে ২০১৯ তারিখে - Institute of Physics-এর ওয়েবসাইট
- APS.org - American Physical Society-এর ওয়েবসাইট
- পদার্থ বিজ্ঞান[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ The term 'universe' is defined as everything that physically exists: the entirety of space and time, all forms of matter, energy and momentum, and the physical laws and constants that govern them. However, the term 'universe' may also be used in slightly different contextual senses, denoting concepts such as the cosmos or the philosophical world.
- ↑ Francis Bacon's 1620 Novum Organum was critical in the development of scientific method.[১১]
- ↑ A brief history of time।