পতি পত্নী অউর ভো (১৯৭৮-এর চলচ্চিত্র)

১৯৭৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি হিন্দি চলচ্চিত্র

পতি পত্নী অউর ভো (হিন্দি: पति पत्नी और वो, বাংলা: স্বামী, স্ত্রী এবং সে) হচ্ছে ১৯৭৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি হিন্দি চলচ্চিত্র। হাস্যরসাত্মক ব্যভিচারবাদী এই চলচ্চিত্রে সঞ্জীব কুমার এবং বিদ্যা সিনহা মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। এছাড়াও ছিলেন রঞ্জিতা কৌর, ঋষি কাপুর, নীতু সিং এবং পারভিন ববি। চলচ্চিত্রটি ১৯৭৯ সালে শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্য বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জেতে।[]

পতি পত্নী অউর ভো
পোস্টার
পরিচালকবিআর চোপড়া
প্রযোজকবিআর চোপড়া
রচয়িতাকমলেশ্বর
শ্রেষ্ঠাংশেসঞ্জীব কুমার
বিদ্যা সিনহা
সুরকাররবীন্দ্র জৈন
মুক্তি
  • ৭ জুলাই ১৯৭৮ (1978-07-07)
স্থিতিকাল১৪১ মিনিট
দেশভারত
ভাষাহিন্দি

২০১৯ সালে একই নামে একটি চলচ্চিত্র পুনর্নির্মিত হিসেবে মুক্তি পায়, যেটিতে কার্তিক আর্যন এবং ভূমি পেডনেকর ছিলেন।[][]

কাহিনীসংক্ষেপ

সম্পাদনা

চলচ্চিত্রটির কাহিনী এ্যাডাম এবং ঈভের উপাখ্যানের কার্টুন দেখানোর মাধ্যমে শুরু হয়। এ্যাডাম হচ্ছে এখানে রঞ্জিত, শারদা হচ্ছে ঈভ এবং আপেল হচ্ছে নির্মলা।

রঞ্জিত একটি কম্পানিতে চাকরি করে তবে তার বেতন এতই কম যে সে সাইকেলে চড়ে অফিসে যায়। তার সাইকেল একদিন তাকে নিয়ে শারদার সামনে পড়ে। শারদাও সাইকেল চালাচ্ছিলো এবং তার সাইকেল নষ্ট হয়ে যায়। একই দিনে সন্ধ্যায় রঞ্জিত তার এক বন্ধুর বিয়ের অনুষ্ঠানে শারদার সঙ্গে কথা বলতে বলতে তার প্রেমে পড়ে যায় এবং শীঘ্রই তারা বিয়ে করে।

কয়েক বছর পরে রঞ্জিত তার অফিসে একটু উঁচু পদে উঠেছে এবং তার একটি পুত্রসন্তান হয়েছে। শারদা এবং রঞ্জিত ভালোভাবেই জীবনযাপন করছিলো কিন্তু হঠাৎ নির্মলা নামের এক নারী এসে তাদের জীবন ওলটপালট করে দেয়। এই তরুণীটি হচ্ছে রঞ্জিতের অফিসের নতুন কর্মী। নির্মলা দেখে রঞ্জিতের তার প্রতি আকর্ষণ ওঠে। শারদার চেয়ে নির্মলাকেই রঞ্জিতের বেশি আকর্ষণীয় এবং সুন্দর মনে হয়। নির্মলা প্রথমে জানেই না যে রঞ্জিত বিবাহিত।

রঞ্জিত নির্মলার সঙ্গ পাবার জন্য অনেক অভিনয় করা শুরু করে। সে তার স্ত্রী শারদাকে ক্যান্সার রোগী সাজায় যে বেশি দিন বাঁচবেনা। নির্মলা রঞ্জিতের ওপর মায়া দেখায় এবং রঞ্জিত নির্মলার সঙ্গ পাবার একটা সোজা পথ পেয়ে যায়। শারদা কিংবা রঞ্জিতের ঘনিষ্ঠ বন্ধু কেউই রঞ্জিত এবং নির্মলার কর্মকাণ্ড সন্দেহ করতে পারেনা। একদিন রঞ্জিত শারদাকে বলে যে সে একটা মিটিংয়ের কারণে অফিস থেকে দেরি করে বাসায় ফিরবে। রঞ্জিত নির্মলাকে বাইরে রেস্তোরাঁয় খাওয়ানোর জন্য নিয়ে যায়। পরের দিন বাসায় রঞ্জিতের শার্টের পকেটে একটি রুমালে লিপস্টিক দেখতে পায় শারদা।

শারদা রঞ্জিতকে রুমালটির ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে রঞ্জিত বলে যে এটা অফিসের অন্য একজনের রুমাল যার রুমাল সে ভুল করে নিয়ে এসেছে। শারদা রঞ্জিতকে বিশ্বাস করে। রঞ্জিত তার পরবর্তী পদক্ষেপগুলো আরো সতর্কভাবে নেওয়ার চিন্তা করে। অপরদিকে শারদাও ভাবে যে তার ভয় ছিলো অমূলক। রঞ্জিত দুটি কবিতার বই কেনে। একই বই তবে দুটি সে কেনে একটিতে শারদার নাম লিখার জন্য এবং আরেকটিতে নির্মলার নাম লিখার জন্য, লিখে ফেলে সে তাদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করার জন্য।

রঞ্জিত সিদ্ধান্ত নেয় যে সে নির্মলার সঙ্গে বিয়ে ছাড়াই একত্রবাস করবে। শারদা ঐদিন রঞ্জিতকে নির্মলাকে একটা হোটেলে একসঙ্গে দেখে ফেলে। শারদা পরে রঞ্জিতকে এই মিটিংয়ের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে রঞ্জিত মিথ্যে কথা বলে। শারদার ভয় এবং সন্দেহ নিশ্চিত হয়। শারদা গোপনে নির্মলা আর রঞ্জিতের কর্মকাণ্ড অনুসরণ করে এবং তাদের ছবি তোলে। অনেক আলামত সংগ্রহ করার পর শারদা নির্মলার কাছে এক সাংবাদিক সেজে যায়। নির্মলা যে কখনো রঞ্জিতের কথির ক্যান্সাররোগী স্ত্রীকে দেখেনি শারদার সঙ্গে কথা বলে তাকে ব্ল্যাকমেইলার মনে করে। কিন্তু শারদা তাকে নিশ্চয়তা দেয় যে সে এই ধরনের কিছু করবেনা।

শারদা নির্মলার কাছে তার সত্য পরিচয় প্রকাশ করে দেয়। এর মধ্যে রঞ্জিত আরেকটি পদোন্নতি পায় এবং শারদাকে এটি বলার জন্য আসে। শারদা তাকে বলে যে সে ফেঁসে গেছে, রঞ্জিত কিছুই বুঝতে পারেনা। সে পেছনে তাকিয়ে দেখে যে নির্মলা তাদের বাসায়। শারদা বলে যে সে তাকে ছেড়ে দেবে এবং তালাকের কাগজপত্র তৈরির কাজ শুরু করা হবে। শারদা এবং নির্মলা একে অপরকে আলিঙ্গন করে। রঞ্জিত তার এক বন্ধুকে টেলিফোন করে বলে যে নির্মলা শারদাকে তার সম্পর্কে অনেক মিথ্যা কথা বলেছে।

রঞ্জিতের বন্ধু তার পক্ষ নেয় এবং নির্মলার চরিত্র সম্পর্কে সেও বানিয়ে বলে। শারদা রঞ্জিতের বন্ধুকে বিভিন্ন প্রমাণ দেখায় যেগুলো সে নিজে সংগ্রহ করেছিলো যে রঞ্জিতই নির্মলার সঙ্গে প্রেম করার চেষ্টা করেছে। শারদা রঞ্জিতকে বলে যে নির্মলা অথবা তার (শারদার) মধ্য থেকে যে কোনো একজনকে নির্বাচন করতে যে সে কাকে ভালোবাসে। রঞ্জিত গোপনে নির্মলাকে কিছু টাকা দেয় সমস্যার সমাধানের জন্য। কিন্তু নির্মলা শারদাকে টাকা ফিরিয়ে দিয়ে রঞ্জিতের সমস্যাকে আরো বাড়িয়ে তোলে। শারদা রঞ্জিতকে ছাড়ার প্রস্তুতি নিতে থাকে এবং নির্মলাও রঞ্জিতের অফিসের চাকরি ছেড়ে দেয়। শারদা শেষবারের মত রঞ্জিতকে দেখতে আসে এবং তাদের একমাত্র পুত্রসন্তান জিজ্ঞেস করে যে কি হয়েছে।

শারদা রঞ্জিতকে আরো একটি সুযোগ দেবার সিদ্ধান নেয় তাদের বাচ্চার কথা ভেবে। রঞ্জিত আবার অফিস শুরু করে এবং নতুন একজন নারী কর্মী তাদের অফিসে আসে যাকে রঞ্জিত আবার আকৃষ্ট হয় এবং রঞ্জিতের বন্ধু রঞ্জিতকে পুনঃবিপদের ব্যাপারে সতর্ক করে।

অভিনয়ে

সম্পাদনা

সঙ্গীত

সম্পাদনা

সকল গানের গীতিকার আনন্দ বকশী; সকল গানের সুরকার রবীন্দ্র জৈন।

গান
নং.শিরোনামগায়ক-গায়িকাদৈর্ঘ্য
১."লাড়কি সাইকেল ওয়ালি"মহেন্দ্র কাপুর, আশা ভোঁসলে 
২."না আজ থা না কাল থা"কিশোর কুমার 
৩."তেরে নাম তেরে নাম"মহেন্দ্র কাপুর 
৪."ঠাণ্ডে ঠাণ্ডে সে পানি সে"মহেন্দ্র কাপুর, আশা ভোসলে, সুষমা শ্রেষ্ঠ পূর্ণিমা 

পুরস্কার

সম্পাদনা
বছর মনোনয়ন / কাজ পুরস্কার ফলাফল
১৯৭৯ কমলেশ্বর[] শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্য বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার বিজয়ী
সঞ্জীব কুমার শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার মনোনীত
রঞ্জিতা কৌর শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার মনোনীত

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Best Screenplay Award"। Filmfare Award Official Listings, Indiatimes। ২৯ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ এপ্রিল ২০১৪ 
  2. Taran Adarsh [@taran_adarsh] (১৯ জানুয়ারি ২০১৯)। "Kartik Aaryan, Bhumi Pednekar and Ananya Pandey... BR Chopra's evergreen classic #PatiPatniAurWoh [1978; starring Sanjeev Kumar, Vidya Sinha and Ranjeeta] to be remade... Directed by Mudassar Aziz... Produced by Bhushan Kumar, Juno Chopra and Abhay Chopra... Starts Feb 2019. t.co/0NjriTrjog" (টুইট) – টুইটার-এর মাধ্যমে। 
  3. Taran Adarsh [@taran_adarsh] (২৪ মার্চ ২০১৯)। "Release date confirmed... #PatiPatniAurWoh - starring Kartik Aaryan, Bhumi Pednekar and Ananya Pandey - released on 6 Dec 2019... Directed by Mudassar Aziz... Produced by Bhushan Kumar, Krishan Kumar, Renu Chopra and Juno Chopra. t.co/n4cZYm9I4a" (টুইট) – টুইটার-এর মাধ্যমে। 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা