পকুধ কচ্চায়ন

ভারতীয় দার্শনিক

পকুধ কচ্চায়ন (পালি: पकुध कच्चायन) বা প্রকুধ কাত্যায়ন (সংস্কৃত: प्रकुध कात्यायन) গৌতম বুদ্ধের সমসাময়িক একজন ভারতীয় নিত্যপদার্থবাদী দার্শনিক ছিলেন। তাঁর দর্শনকে শাশ্বতবাদ[] (পালি: सस्सतवाद, সস্সতবাদ) বা পরমাণুবাদও বলা হয়ে থাকে।

পরিচয়

সম্পাদনা

সুত্তপিটকের দীঘনিকায়ের সামঞ্ঞফলসুত্তে মগধের রাজা অজাতসত্তু্র সঙ্গে পকুধ কচ্চায়নের সাক্ষাৎকারের বর্ণনা থেকে তাঁর সম্বন্ধে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া যায়। সংযুত্তনিকায়ে তাঁকে পকুধকো কাতিয়ানো (পালি: पकुधक कातियानो) এবং প্রশ্ন উপনিষদে তাকেও কবন্ধিন নামে অভিহিত করা হয়েছে। কবন্ধিন শব্দটি তাঁর শারীরিক অঙ্গবিকৃতিকে নির্দেশ করে।[]:১৩,১৪

সামঞ্ঞফলসুত্ত অনুসারে, পকুধ কচ্চায়ন তেজ, বায়ু, জল ও ক্ষিতি এই চতুর্ভূতের সঙ্গে চেতনা, সুখ ও দুঃখকে পৃথক পৃথক উপাদান বলে মনে করেছেন। এই সাতটি উপাদান শুধু পরস্পর পৃথক তাই নয়, এগুলি অনির্মিত, অচল, অবধ্য ও অবিকৃত। এই উপাদানগুলি পরস্পরকে পরিবর্তন করতে বা প্রভাবিত করতে অক্ষম এবং সুখ-দঃখ ভাগী হতে অক্ষম। এখানে কেউ নিহত বা ঘাতক, বক্তা বা শ্রোতা, জ্ঞাতা ও বা জ্ঞানার্থী কেউ নেই। তাঁর মতে এই উপাদানগুলির মধ্যে যথেষ্ট শূন্যস্থান রয়েছেন, যেখানে আঘাত করলে মূল উপাদানকে স্পর্শ করা যায় না। তীক্ষ্ণ অস্ত্র দ্বারা মুন্ডচ্ছেদ করলে হত্যা করা হয় ন্স, কারণ অস্ত্র এই সাতটি উপাদানের মধ্যে অবস্থিত শূন্যস্থানে পতিত হয়। দৃশ্য উপাদানের মধ্যে এই সূক্ষ্ম উপাদানকে মানলেও তিনি শূন্য বা ব্যোমকে অষ্টম উপাদান হিসেবে গ্রহণ করেননি।[]:৭৭, ৭৮[] সূত্রকৃতাঙ্গ নামক জৈন গ্রন্থে তাঁর মতবাদ সম্বন্ধে বর্ণনা রয়েছে।[]:১৪

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Rhys Davids, T.W. & William Stede (eds.) (1921-5). The Pali Text Society’s Pali–English Dictionary. Chipstead: Pali Text Society., p. 700[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. হালদার, মণিকুন্তলা (১৯৯৬) বৌদ্ধধর্মের ইতিহাস, প্রকাশক মহাবোধি বুক এজেন্সী, ৪এ, বঙ্কিম চ্যাটার্জী ষ্ট্রীট, কলিকাতা-৭৩, ISBN ৯৭৮-৯৩-৮০৩৩৬-৩৩-৬
  3. রাহুল সাংকৃত্যায়ন (১৯৮৮) দর্শন দিগদর্শন, দ্বিতীয় খণ্ড অনুবাদক- ছন্দা চট্টোপাধ্যায়, প্রকাশক- চিরায়ত প্রকাশন প্রাইভেট লিমিটেড, ১২ বঙ্কিম চ্যাটার্জী ষ্ট্রীট, কলিকাতা-৭৩
  4. Thanissaro Bhikkhu (trans.) Samaññaphala Sutta: The Fruits of the Contemplative Life (1997)

আরো পড়ুন

সম্পাদনা