নিজামত ইমামবাড়া

ভারতের একটি ভবন

নিজামত ইমামবাড়া ভারতের মুর্শিদাবাদে একটি শিয়া মুসলিম জামাতের স্থান। বর্তমান নিজামাত ইমামবাড়াটি ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে নবাব মনসুর আলী খান নির্মাণ করেছিলেন। এটি নবাব সিরাজউদ্দৌলা নির্মিত পুরাতন ইমামবাড়া ১৮৪২ এবং ১৮৪৬-এর আগুনে ধ্বংস হওয়ার পরে নির্মিত হয়েছিল। এই ইমামবাড়াটি ভারত ও পশ্চিমবঙ্গ তথা এশিয়ার বৃহত্তম ইমামবাড়া[][][] হাজার দুয়ারী প্রাসাদের ঠিক বিপরীতে এবং ভাগীরথী নদী থেকে মাত্র কয়েক ফুট দূরে অবস্থিত।[]

নিজামত ইমামবাড়া
নিজামত ইমামবাড়া, ভারত ও বাংলার বৃহত্তম ইমামবাড়া। এটি হাজার দুয়ারী প্রাসাদের ঠিক বিপরীতে এবং ভাগীরথী নদীর পাশে অবস্থিত।
মানচিত্র
সাধারণ তথ্যাবলী
ধরনইমামবাড়া
স্থাপত্যশৈলীইসলামি স্থাপত্য
শহরমুর্শিদাবাদ
দেশভারত
স্থানাঙ্ক২৪°১১′১৮″ উত্তর ৮৮°১৬′০৭″ পূর্ব / ২৪.১৮৮৩৭৪° উত্তর ৮৮.২৬৮৬২৩° পূর্ব / 24.188374; 88.268623
সম্পূর্ণবর্তমান ভবন: ১৮৪৭
সংস্কার১৮৪৬-এর অগ্নিদাহের পর ১৮৪৮-এ পুনর্নির্মিত, এবং বর্তমানে ভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ এর রক্ষণাবেক্ষণ চালাচ্ছে
ভগ্নপ্রাপ্ত১৮৪২ ও ১৮৪৬-এ অগ্নিদাহ
নির্মাণব্যয়৬ লাখ স্বর্ণমুদ্রার বেশি
স্বত্বাধিকারীভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণপশ্চিমবঙ্গ সরকার
অধিভুক্তিশিয়া ইসলাম
মাত্রা
অন্যান্য মাত্রাবর্তমান ভবন: ৬৮০ ফুট (২১০ মিটার)
নকশা ও নির্মাণ
স্থপতিবর্তমান ভবন: মনসুর আলী খান

নির্মাণ

সম্পাদনা

পুরাতন নিজামত ইমামবাড়া

সম্পাদনা

পুরানো নিজামত ইমামবাড়াটি নিজামত দুর্গ এলাকায় নবাব সিরাজ উদ-দৌলা নির্মাণ করেছিলেন । তিনি ইট এবং মর্টার কিনেছিলেন এবং নিজ হাতে ভবনের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। তবে পুরনো ইমামবাড়াটি মূলত কাঠের তৈরি ছিল। যেখানে এই ইমামবাড়াটি তৈরি করা হয়েছিল সেখানে ৬ ফুট গভীরে খনন করা হয়েছিল। এটি মাটি দিয়ে পুনরায় পূর্ণ করা হয়েছিল যা মক্কা থেকে আনা হয়েছিল যেন দরিদ্র মুসলিমরা মক্কার মাটি স্পর্শ করতে পারে।[]

১৮৪২ সালে পুরানো ইমামবাড়া প্রথমবার আগুন ধরে এবং আংশিকভাবে ধ্বংস হয়। ১৮৪৬ সালের ২৩ ডিসেম্বর আগুনে এটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়। সেদিন ইউরোপীয়দের সাথে নবাবরা মীর জাফর এর পৌত্র ,বাবর আলী খান-এর পৌত্র, দ্বিতীয় মুবারাক আলী খান-এর পৌত্র পাঁচ বছর বয়সী হাসান আলী মির্জার অন্নপ্রাশন অনুষ্ঠান উদযাপনের জন্য একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিল। আতশবাজি ফেলে যাওয়ায় মাঝরাতে ইমামবাড়ায় আগুন লেগে সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। পুরাতন মদীনা মসজিদ ছাড়া আর কিছুই টিকেনি।[]

নতুন নিজামত ইমামবাড়া

সম্পাদনা

নতুন ইমামবাড়াটি ১৮৪৭ সালে নবাব নাজিম মনসুর আলী খান হাজারদুয়ারি প্রাসাদের ঠিক বিপরীতে সাদেক আলী খানের তত্ত্বাবধানে এবং নির্দেশনায় ৬ লাখের বেশি অর্থ ব্যয়ে নির্মাণ করেছিলেন। হাজারদুয়ারি প্রাসাদের উত্তর মুখের সমান্তরালে প্রধান প্রবেশপথটি দক্ষিণমুখী। রাজমিস্ত্রিরা মাত্র ১১ মাস সময় নেয় নির্মাণকাজ শেষ করার জন্য তাদের মজুরির পাশাপাশি তারা খাবারও পেত। বর্তমান ইমামবাড়াটি ৬৮০ ফুট লম্বা, তবে প্রস্থ ভিন্ন। মদিনা মসজিদের যে কেন্দ্রীয় ব্লকটি রয়েছে তার দৈর্ঘ্য ৩০০ ফুট। উত্তরে পুরাতন ভবনের জায়গা থেকে কিছুটা দূরে এটি নির্মিত হয়েছিল। ইমামবাড়াটি হাজারদুয়ারি প্রাসাদের ঠিক বিপরীতে এবং ভাগীরথী নদীর তীরে অবস্থিত। নদীর তীর এবং ইমামবাড়ার পশ্চিম দেয়ালের মধ্যে ব্যবধান কয়েক ফুট হতে পারে।[][]

চিত্রশালা

সম্পাদনা
নিজামত ইমামবাড়ার উত্তর দরজা হতে বিস্তৃত দৃশ্য

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "নিজামত ইমামবাড়া মসজিদের বিবরণ"murshidabad.gov.in। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-১৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. "নিজামত ইমামবাড়া | District Murshidabad | India"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-২৪ 
  3. "হাল ফিরতে চলেছে নিজামত ইমামবাড়ার, হবে রক্ষনাবেক্ষন"News18 বাংলা। ২০২৩-০৬-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-২৪ 
  4. "Murshidabad"www.indiaprofile.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-২৪