নিউ টাউন, কলকাতা
নিউ টাউন বা রাজারহাট নিউ টাউন হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একটি পরিকল্পিত শহর। এটি পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার একটি উপশহর[৪][৫] এবং এটি নিউ টাউন কলকাতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনকেডিএ) দ্বারা পরিচালিত।[৬] ভারত সরকার নিউ টাউনকে "সোলার সিটি" ও "স্মার্ট গ্রিন সিটি" বলে আখ্যায়িত করেছে।[৭]
নিউ টাউন রাজারহাট নিউ টাউন | |
---|---|
পরিকল্পিত উপশহর | |
স্থানাঙ্ক: ২২°৩৫′২২″ উত্তর ৮৮°২৮′২৯″ পূর্ব / ২২.৫৮৯৪° উত্তর ৮৮.৪৭৪৮° পূর্ব | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
জেলা | কলকাতা |
অঞ্চল | কলকাতা মহানগর অঞ্চল |
সরকার | |
• ধরন | সংবিধিবদ্ধ উন্নয়ন বোর্ড |
• শাসক | নিউ টাউন কলকাতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনকেডিএ), পশ্চিমবঙ্গ আবাসন পরিকাঠামো উন্নয়ন সংস্থা (হিডকো) |
আয়তন[১][২] | |
• মোট | ৯৩.৩ বর্গকিমি (৩৬.০ বর্গমাইল) |
উচ্চতা | ৯ মিটার (৩০ ফুট) |
জনসংখ্যা (ডিসেম্বর ২০১৪)[৩] | |
• মোট | ৩৬,৫৪১ |
• জনঘনত্ব | ৩৯০/বর্গকিমি (১,০০০/বর্গমাইল) |
ভাষা | |
• সরকারি | বাংলা, ইংরেজি |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+৫:৩০) |
পিন | ০০১৩৫, ৭০০১৩৬, ৭০০১৫৬, ৭০০১৫৭, ৭০০১৬০, ৭০০১৬১ |
টেলিফোন কোড | +৯১ ৩৩ |
যানবাহন নিবন্ধন | WB |
লোকসভা কেন্দ্র | বারাসত |
বিধানসভা কেন্দ্র | রাজারহাট নিউ টাউন |
ওয়েবসাইট | www |
বিধাননগরের মতো নিউ টাউনে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প গড়ে উঠেছে। এটি দেশে দ্রুত বর্ধনশীল প্রধান শহরগুলির মধ্য একটি। এখানে আবাসন ও নির্মাণ শিল্পেরও প্রসার ঘটেছে। পশ্চিমবঙ্গ আবাসন পরিকাঠামো উন্নয়ন সংস্থার (হিডকো) পরিকল্পনায় নিউ টাউনে সড়ক, নিষ্কাশন, নর্দমা ব্যবস্থা, জলের সরবরাহের লাইন, প্রধান সৌন্দর্যায়ন সম্পর্কিত অবকাঠামোগত কাজ এবং ভবন, প্রকল্প, উদ্যান, জাদুঘর, ভূগর্ভপথ, উড়ালপুল ইত্যাদির মতো নির্মাণ কাজ সম্পাদন হয়।[৮]
ইতিহাস
সম্পাদনাপ্রাচীন সভ্যতা
সম্পাদনাসম্প্রতি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতাত্ত্বিক ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের এক দল গবেষক, দেশকাল নামক বিধাননগরভিত্তিক একটি ইতিহাসচর্চার গোষ্ঠীর সূত্রে অ্যাকোয়াটিকার নিকটে কোচপুকুরে একটি ঢিবিতে খননকার্য চালান। এবং সেখান থেকে আনুমানিক প্রায় দুহাজার বছরের পুরনো কিছু ভগ্ন মৃৎ সামগ্রীর খোঁজ পান। গবেষকদের অনুমান উত্তর ও পূর্ব দমদম এবং বিধাননগর মহকুমা জুড়ে প্রাচীন কোনও সভ্যতার অস্তিত্ব ছিল, কারণ এই অঞ্চল অধুনালুপ্ত প্রাচীন বিদ্যাধরী নদী অববাহিকার অংশ।[৯]
জমি অধিগ্রহণ
সম্পাদনাএই অঞ্চলটিতে মূলত বিশাল আবাদযোগ্য জমি এবং জলাশয় রয়েছে, যা পরিকল্পিত পদ্ধতিতে অধিগ্রহণ ও বিকাশ লাভ করে। মূলত পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর নেতৃত্বে ১৯৯০-এর দশকের শেষভাগে আবাসিক ও শিল্প সুবিধাগুলি এবং এই অঞ্চলের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বিনিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়।[১০] মাস্টার প্ল্যানটি এমন একটি জনপদের পরিকল্পনা করা হয় যা প্রতিবেশী পরিকল্পিত সল্টলেকের চেয়ে কমপক্ষে তিনগুণ বড়।
নিউ টাউন গঠিত হওয়ার আগে এলাকাটি পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম উর্বর অঞ্চল ছিল। কেষ্টপুর, বাগজোলা এবং তাদের সংলগ্ন আরও তিনটি খাল দ্বারা সেচ হওয়া, এলাকাটি ছিল এক জলাভূমি, যা একটি সমৃদ্ধ কৃষিজমির ব্যবস্থা ছিল এবং কৃষকরা স্থায়ীভাবে কৃষিকাজে নিয়জিত ছিল। ১৯৯৯ সালের এপ্রিল মাসে বামফ্রন্ট সরকার ঔপনিবেশিক ভূমি অধিগ্রহণ আইন দ্বারা নিউ টাউন শহর স্থাপনের জন্য প্রায় ৭,০০০ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ শুরু করে। এটি কর্পোরেট পরিষেবা এবং বিস্তৃত আবাসিক চত্বর হিসাবে পরিকল্পনা করা হয়।[১১]
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১১ সালের জুন মাসে ঘোষণা করেন যে তার সরকার নিউ টাউনে আর জমি অধিগ্রহণ করা হবে না। নিউ টাউন জনপদের জন্য ১৯৯৯ সালে ৭,০৮৫ একর (২,৮৬৭ হেক্টর) জমি অধিগ্রহণ করে বামফ্রন্ট সরকার। ৭,০৮৫ একর (২,৮৬৭ হেক্টর) জমির মধ্যে ২৫০ একর (১০০ হেক্টর) জমি ইচ্ছুক কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় করা হয় এবং বাকি জমি (৬,৮৩৫ একর (২,৭৬৬ হেক্টর)*) অধিগ্রহণ করা হয়। ২০১১ সালের হিসাব অনুযায়ী ৭,০৮৫ একর (২,৮৬৭ হেক্টর) জমির মধ্যে ১,৮০৭ একর (৭৩১ হেক্টর) জমি অব্যবহৃত অবস্থাতে রয়েছে।[১২]
বাম সরকারের রাজারহাট সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের ২৫ টি মৌজা বিস্তৃত জনপদের জন্য আরও ১,৫৮৭ একর জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১১ সালে প্রত্যাখ্যান করে।[১২]
স্মার্ট সিটি
সম্পাদনাভারতের পূর্ববর্তী সংযুক্ত প্রগতিশীল জোট সরকার নিউ টাউনকে "সোলার সিটি" হিসাবে ঘোষণা করেছিল। পরবর্তীকালে ক্ষমতায় আসার পর জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট সরকার এই শহরটিকে 'স্মার্ট গ্রিন সিটি" হিসাবে ঘোষণা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বারা প্রদত্ত একটি প্রস্তাব অনুসারে এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সহায়তায়।[১৩][১৪] কিন্তু পরবর্তীকালে নিউ টাউন স্মার্ট সিটিজ মিশন থেকে বাদ পড়ে গেল যখন রাজ্যের সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস সরকার ওই প্রতিযোগিতা থেকে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত শহরকে বাদ দিল।[১৫] ভারত সরকারের স্মার্ট সিটিতে উন্নীত করার জন্য প্রদত্ত ₹১,০০০ কোটিও বাতিল করল রাজ্য সরকার।[১৬]
ভূগোল
সম্পাদনানিউ টাউন উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার রাজারহাট থানা এবং দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স ও কাশীপুর থানার ৪৫টি মৌজা জুড়ে বিস্তৃত। শহরের মোট আয়তন ৬০.৩৫৪ বর্গকিলোমিটার (২৩.৩০৩ মা২)। নিউ টাউন অ্যাকশন এরিয়া ১, ২ ও ৩ এবং কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক এলাকা (সিবিডি) দ্বারা গঠিত।[১৭] ২০১৬ সালের আগস্ট মাসে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল নিউ টাউনকে কলকাতা মহানগর অঞ্চলের অংশ হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।[১৮]
ইকো পার্কে অবস্থিত হ্রদটি নিউ টাউনের সবচেয়ে বড় হ্রদ এবং এই হ্রদটির আয়তন ০.৪২ কিলোমিটার (০.২৬ মা)।[১৯]
পরিকল্পনা
সম্পাদনানিউ টাউনের প্রস্তাবিত আয়তন ৯৩.৯ বর্গকিলোমিটার (২৩,২০০ একর), যার মধ্যে ৩০.৮ বর্গকিলোমিটার (৭,৬০০ একর) আয়তন টাউনশিপের জন্য এবং বাকি ৬০.৩৫৪ বর্গকিলোমিটার (১৪,৯১৪ একর) আয়তন পরিকল্পনার অধীন। নিউ টাউনের টাউনশিপ অ্যাকশন এরিয়া ১, ২ ও ৩ এবং একটি কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক এলাকা (সিবিডি) নিয়ে গঠিত।[২০] হিডকোর পূর্ববর্তী পরিকল্পনা এলাকায় অ্যাকশন এরিয়া ৪-ও ছিল, যদিও এর উল্লেখ আর পাওয়া যায়নি। কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক এলাকাটি অ্যাকশন এরিয়া ১ ও ২-এর মাঝে অবস্থিত। নিউ টাউনের গৃহমালিক, সম্পত্তি কর, ভবন নির্মাণ ইত্যাদির ডাটাবেসকে সম্মিলিত করার জন্য হিডকো ভৌগোলিক তথ্য ব্যবস্থা যোগ করেছিল।[২১]
জলবায়ু
সম্পাদনানিউ টাউন | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
জলবায়ু লেখচিত্র | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
|
নিউ টাউনের জলবায়ু ক্রান্তীয় সাভানা প্রকৃতির। বার্ষিক গড় তাপমাত্রা ২৬.৩ °সে (৭৯.৩ °ফা) এবং মাসিক গড় তাপমাত্রা ১৯.৮–৩০.৫ °সে (৬৭.৬–৮৬.৯ °ফা)-এর মধ্যে থাকে।[২২] এখানে গ্রীষ্মকাল উষ্ণ ও আর্দ্র। এই সময় গড় তাপমাত্রা ৩০.৫ °সে (৮৬.৯ °ফা)-এর[২২] কাছাকাছি থাকলেও মে-জুন মাসে সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রা প্রায়শই ৪০ °সে (১০৪ °ফা) ছাড়িয়ে যায়। শীতকাল সাধারণত মাত্র আড়াই মাস স্থায়ী হয়। ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা ৯–১১ °সে (৪৮–৫২ °ফা)-এর কাছাকাছি থাকে। সাধারণভাবে মে মাস শহরের উষ্ণতম মাস। অন্যদিকে জানুয়ারি শীতলতম মাস। জানুয়ারির গড় তাপমাত্রা ১৯.৪ °সে (৬৬.৯ °ফা)।[২২] গ্রীষ্মের শুরুতে প্রায়শই শিলাবৃষ্টি, ঝড় ও বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। এর স্থানীয় নাম কালবৈশাখী।
দক্ষিণ-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর বঙ্গোপসাগরীয় শাখাটি শহরে বৃষ্টিপাত ঘটানোর জন্য দায়ী। বর্ষাকাল সাধারণত স্থায়ী হয় জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত। শহরের বার্ষিক ১৬৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের অধিকাংশই এই সময়ে ঘটে থাকে। জুলাই মাসে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সর্বোচ্চ থাকে। এই সময় গড়ে ৩৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়।[২২]
জনসংখ্যা
সম্পাদনা২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে নিউ টাউন কলকাতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এক সমীক্ষা অনুযায়ী, শহরের জনসংখ্যা ৩৬,৫৪১।[২৩] শহরের আয়তন ৩৫.৫২ বর্গকিলোমিটার (১৩.৭১ মা২) হলে নিউ টাউনের জনঘনত্ব ১,০০০ প্রতি বর্গকিলোমিটার (২,৬০০/বর্গমাইল)।[১৭]
সরকার ও রাজনীতি
সম্পাদনানিউ টাউন রাজারহাট নিউ টাউন বিধানসভা কেন্দ্র ও বারাসত লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত।
পৌর প্রশাসন
সম্পাদনানিউ টাউন কোন পৌরসভা দ্বারা পরিচালিত হয় না। এটি নিউ টাউন কলকাতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনকেডিএ) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ২০০৮ সালে নভেম্বর মাসে দ্য নিউ টাউন কলকাতা উন্নয়ন আইন, ২০০৭ (পশ্চিমবঙ্গ আইন ৩০, ২০০৭) আইনের অধীনে বিভিন্ন পৌর পরিষেবা প্রদান করার জন্য এনকেডিএ গঠিত হয়। এটি একটি পৌর স্থানীয় সরকার (ইউএলবি) তৈরির জন্য একটি অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা।[১৮][২৪]
পশ্চিমবঙ্গ আবাসন পরিকাঠামো উন্নয়ন সংস্থা (হিডকো) নিউ টাউনের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত করে।[২৫] নিউ টাউন ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (এনটিইএসসিএল) শহরে বিদ্যুৎ পরিষেবা প্রদান করে।[২৬]
পৌর পরিষেবা
সম্পাদনানিউ টাউন ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (এনটিইএসসিএল), নিউ টাউনে বিদ্যুৎ পরিষেবা প্রদান করে।[২৬] পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সংস্থা ওয়েস্ট বেঙ্গল ফায়ার সার্ভিস দমকলের দায়িত্বে রয়েছে। বিধান্নগর পুলিশ কমিশনারেট এখানকার আইনশৃঙ্খল রক্ষার দায়িত্বে রয়েছে।
অর্থনীতি
সম্পাদনাসল্টলেকের পর নিউ টাউন কলকাতার দ্বিতীয় তথ্য প্রযুক্তি কেন্দ্র হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। ক্রমবর্ধমান হারে টেক পার্কের বৃদ্ধির জন্য নিউ টাউন পূর্ব ভারতের আইটি ও আইটিইএস-এর পছন্দের গন্তব্য হয়ে উঠেছে। এখানে অনেক প্রধান প্রধান তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার কার্যালয় রয়েছে, যেমন এরিকসন, অ্যাকসেনচার, ক্যাপজেমিনি, টেক মহিন্দ্রা, আইটিসি ইনফোটেক, মাইন্ডট্রি, আদানি ল্যাবস, ব্রিটিশ টেলিকম, টাটা কন্সাল্টেন্সি সার্ভিসেস, উইপ্রো, ইনফোসিস, কগনিজ্যান্ট টেক্নলজি সলিউশন্স ইত্যাদি।[২৭] এছাড়া এখানে হিডকো দ্বারা নির্মিত বেঙ্গল সিলিকন ভ্যালি টেক হাব ও ফিনটেক হাব রয়েছে।[২৮]
সংস্কৃতি
সম্পাদনাদর্শনীয় স্থান
সম্পাদনানিউ টাউনের ইকো পার্ক হল ভারতের বৃহত্তম এবং এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম উদ্যান। উদ্যানটি ২০০ একরের একটি কৃত্রিম ঝিলকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। মাদার’স ওয়াক্স মিউজিয়াম ইকো পার্কের ঠিক উল্টো দিকে অবস্থিত। অ্যাকোয়াটিকা শহরের ৭৫,০০০ বর্গ ফুটের একটি জলবৈশ্বিক উদ্যান। পূর্ব ভারতের এটি বৃহত্তম জল চিত্তবিনোদক উদ্যান।
পরিবহন
সম্পাদনাদ্রুতগামী গণপরিবহন
সম্পাদনা- কলকাতা মেট্রো লাইন ৬: কলকাতা মেট্রো রেলের নিউ গড়িয়া–বিমানবন্দর রেলপথ (লাইন ৬) নিউ টাউনের অ্যাকশন এরিয়া ১ ও ২ জুড়ে বিস্তৃত, এবং নভেম্বর ২০২৩-এর হিসাব অনুযায়ী এই অংশটি নির্মাণাধীন। ২০২৬ সালের আগে এই অংশ চালু হয়ে যাবে।[২৯][৩০]
- লাইট রেল: অ্যাকশন এরিয়া ১-এর নারকেলবাগান চৌমাথা থেকে অ্যাকশন এরিয়া ৩ পর্যন্ত লাইট রেল পরিবহন ব্যবস্থার প্রস্তাব করা হয়েছিল। এর আনুমানিক খরচ প্রায় ₹ ৪,৫০০ কোটি (ইউএস$ ৫৫০.০৫ মিলিয়ন)।[৩১][৩২] এর আগে নিউ টাউন কলকাতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনকেডিএ) শহরে মনোরেল পরিবহনের প্রস্তাব করলেও অতিরিক্ত খরচের জন্য ২০২০ সালে মনোরেলের পরিবর্তে সস্তা রজ্জুপথ ব্যবস্থার প্রস্তাব করেছিল।[৩৩]
সড়ক
সম্পাদনানিউ টাউনের অ্যাকশন এরিয়া ১, ২ ও ৩, চারটি আর্টারিয়াল রোড দ্বারা পরস্পর যুক্ত আছে। এর মধ্যে মেজর আর্টারিয়াল রোড বা মেইন আর্টারিয়াল রোড (এমএআর) নিউ টাউনের প্রধান সড়ক, যা অ্যাকশন এরিয়া ১ ও ২ দিয়ে যায়।[৩২] মেজর আর্টারিয়াল রোড বিশ্ব বাংলা সরণির অন্তর্গত। পশ্চিমবঙ্গ আবাসন পরিকাঠামো উন্নয়ন সংস্থা (হিডকো) নিউ টাউনে বৈদ্যুতিক বাস চালু করেছে এবং কলকাতা মেট্রো লাইন ৬ মেজর আর্টারিয়াল রোড বরাবর বিস্তৃত।[৩২] ২০১৫ সালে নিউ টাউনের ২৫টি বিভিন্ন বাস রুটে প্রায় ৩০০টি বাস চলে।[২৬] তবে অ্যাকশন এরিয়া ৩-এ গণপরিবহন তেমন বিস্তৃত নয়।[৩২]
২০১৫ সাল থেকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিধাননগর সেক্টর ৫ পর্যন্ত মেজর আর্টারিয়াল রোডসহ ১০.৫ কিলোমিটার (৬.৫ মা) ওয়াই-ফাই এলাকা স্থাপন করা হয়েছে, যা ভারতের প্রথম ওয়াই-ফাই সড়ক সংযোগ স্থাপন। এটি ইতিমধ্যে সবুজ করিডোর হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে।[৩৪]
শিক্ষা
সম্পাদনাবিশ্ববিদ্যালয়
সম্পাদনাক্রীড়া
সম্পাদনাএআইএফএফ ন্যাশনাল সেন্টার অব এক্সিলেন্স হচ্ছে একটি ফুটবল চত্বর যেখানে ভারতের প্রথম রুফটপ পিচ রয়েছে। এই চত্বরের আয়তন ১৫ একর (৬১,০০০ বর্গমিটার) এবং এর জন্য ₹ ২০০ কোটি (ইউএস$ ২৪.৪৫ মিলিয়ন) বিনিয়োগ করা হয়েছে।[৩৭]
ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল নিউ টাউনে একটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম তৈরি করছে। ২০২২ সালে সিএবি ₹ ২০০ কোটি (ইউএস$ ২৪.৪৫ মিলিয়ন) খরচ করে ১৪ একর (৫৭,০০০ বর্গমিটার) জমি অধিগ্রহণ করেছে।[৩৮][৩৯]
আরও দেখুন
সম্পাদনা- কলকাতা পশ্চিম আন্তর্জাতিক মহানগরী – হাওড়া শহরের অদূরে পরিকল্পিত শহর
- লেক টাউন, কলকাতা – দক্ষিণ দমদম পৌরসভার পরিকল্পিত শহর
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "NKDA Overview"। ১৫ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ West Bengal Housing Infrastructure Development Corporation (WBHIDCO) (২৭ জানুয়ারি ২০১৪)। "Landuse and Development Control Plan for New Town Planning Area 2012" (পিডিএফ)। ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "NKDA Overview"। https://www.icra.in/Rationale/GetRationaleFile/27752 (ইংরেজি ভাষায়)। ICRA।
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য); - ↑ "Satellite Towns List"।
- ↑ "Danger in Satellite townships"।
- ↑ "NTKDA Act, 2007" (পিডিএফ)। NTKDA। ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ মার্চ ২০১৭।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;neliti
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ "Times of India"। timesofindia.indiatimes.com। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মে ২০১৫।
- ↑ মাজি মণ্ডল, শুভদীপ (২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২)। "নিউ টাউনে ঢিবি থেকে পাওয়া গেল প্রত্নসামগ্রী"। আনন্দবাজার পত্রিকা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২।
- ↑ "New Town Kolkata"। HIDCO Bhawan। ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "Farmers Demand Return of Lands Acquired for Rajarhat Township in West Bengal"। www.landconflictwatch.org/। সংগ্রহের তারিখ ০৭ এপ্রিল ২০২০। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ ক খ "Mamata land lock on New Town"। www.telegraphindia.com। ২৫ জুন ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৭ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ "শিকে ছঁড়িল কলকাতার,"স্মাট সিটি" হবে নিউটাউন"। ২৪ ঘণ্টা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৬।
- ↑ http://timesofindia.indiatimes.com/city/kolkata/West-Bengal-seeks-smart-green-city-tag-for-New-Town/articleshow/37867094.cms[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "West Bengal: Mamata dumps Centre's Smart City project, to develop cities on its own"। The Indian Express (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯ আগস্ট ২০১৬। ২ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০১৭।
- ↑ "Green City Mission: Rs 50 lakh each for all 125 municipalities in West Bengal"। The Indian Express (ইংরেজি ভাষায়)। ২১ ডিসেম্বর ২০১৬। ১১ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০১৭।
- ↑ ক খ "Archived copy" (পিডিএফ)। ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ ক খ "KMA notification" (পিডিএফ)। Urban Development Department, Government of West Bengal। ২০ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১৬।
- ↑ "About Ecopark"। ৭ এপ্রিল ২০২০। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ "Archived copy" (পিডিএফ)। ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "HIDCO Overview"। ১৫ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ ক খ গ ঘ "NEW TOWN CLIMATE"। en.climate-data.org। সংগ্রহের তারিখ ৭ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ "NKDA Overview"। https://www.icra.in/Rationale/GetRationaleFile/27752 (ইংরেজি ভাষায়)। ICRA।
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য); - ↑ "Background"। New Town Kolkata Development Authority (NKDA)। ২৬ মে ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মে ২০২২।
- ↑ "HIDCO Overview"। ১৫ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ ক খ গ "Smart City Proposal" (পিডিএফ)। NKDAMAR। Ministry of Urban Development, Government of India। পৃষ্ঠা 7। ১৩ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৬।
- ↑ "Kolkata's Sector V, New Town on overdrive, add 20,000 IT jobs in last 6 months"। The Times of India। ১৫ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "HIDCO to come up with 'vertical city' in Fintech hub"। ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯। ২৭ জুন ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০২০।
- ↑ "Rail set to take over East-West"। The Telegraph। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১১। ১ জুন ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১১।
- ↑ "Hidco clears route for Garia-airport Metro"। The Times of India। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১১। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১১।
- ↑ "HIDCO plans Monorail type Light Rail Transit System for New Town and Salt Lake in Kolkata | Metro Rail Today"।
- ↑ ক খ গ ঘ "Kolkata: Hi-tech link plan for New Town's Action Area III"। The Times of India। ২০২০-০২-২৬। আইএসএসএন 0971-8257। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-১৯।
- ↑ MP, Team (২০২০-০২-০৭)। "Soon, ropeway services to connect areas in New Town"। www.millenniumpost.in (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-১৯।
- ↑ "10.5km Wi-Fi zone in Rajarhat New Town"। The Times of India। ২০১৪-০৬-১৮। আইএসএসএন 0971-8257। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-১৯।
- ↑ "Best Top Private Amity University Kolkata in West Bengal|Engineering|Colleges|Universities|Institutes|Business|Management"। ২ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জানুয়ারি ২০১৬।
- ↑ "UEM Kolkata: Best Engineering and Management University in Kolkata"। ১৫ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৬।
- ↑ "AIFF in talks with corporates for building National Centre of Excellence"। ২০ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "CAB bought 14 Acre land in Rajarhat for the new International Stadium"। ৫ জুন ২০২২।
- ↑ "State to hand overNew Town plot to Sourav for stadium"। The Times of India। ৫ জুন ২০২২।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- নিউ টাউন কলকাতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনকেডিএ)
- পশ্চিমবঙ্গ আবাসন পরিকাঠামো উন্নয়ন সংস্থা (হিডকো)