নাহিম রাজ্জাক

বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ

নাহিম রাজ্জাক (জন্ম: ফেব্রুয়ারি ৭, ১৯৮১) একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন সদস্য এবং চারবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য। ২০২৪ সালে অসহযোগ আন্দোলনের পর রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করলে তিনি সংসদ সদস্য পদ হারান।[]

নাহিম রাজ্জাক
শরীয়তপুর-৩ আসনের
সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
ডিসেম্বর ২০১১(উপনির্বাচন) – ৬ আগস্ট ২০২৪
পূর্বসূরীআব্দুর রাজ্জাক (রাজনীতিবিদ)
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মনাহিম রাজ্জাক
(1981-02-07) ফেব্রুয়ারি ৭, ১৯৮১ (বয়স ৪৩)
নাগরিকত্ববাংলাদেশ
জাতীয়তাবাংলাদেশি
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
দাম্পত্য সঙ্গীমালেয়া হোসাইন
পিতামাতাআব্দুর রাজ্জাক (রাজনীতিবিদ) (বাবা)

শিক্ষা জীবন

সম্পাদনা

নাহিম রাজ্জাক গভঃ ল্যাবরেটরী স্কুল, ঢাকাতে তার শিক্ষাজীবন শুরু করেন। পরে তিনি ভারতের দার্জিলিং এ অবস্থিত St. Paul School থেকে 'ও- লেভেল' এবং আজমীরে অবস্থিত মেয়ো কলেজ থেকে 'এ-লেভেল' সম্পন্ন করেন। তিনি যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থিত মিডলসেক্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসা ও বিপণন বিষয়ে (ডাবল মেজরসহ) স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। এরপর যুক্তরাজ্যের সারেতে অবস্থিত কিংস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিপণন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন।

রাজনৈতিক জীবন

সম্পাদনা

শিক্ষা জীবন শেষ করে নাহিম যুক্তরাজ্যে মার্কেটিং বিষয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। ২০০৪ সালের ২১শে আগস্টে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর গ্রেনেড হামলায় তার বাবা আব্দুর রাজ্জাক (রাজনীতিবিদ) গুরুতর আহত হন। এরই প্রেক্ষিতে নাহিম যুক্তরাজ্যের কর্মজীবনে ইস্তফা দিয়ে দেশে ফিরে আসেন এবং রাজনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়েন। ৩ বছরের রাজনৈতিক কার্যকলাপের প্রেক্ষিতে তিনি ২০০৮ সালের নবম জাতীয় নির্বাচনে প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন। ২৩ ডিসেম্বর ২০১১ সালে তার বাবার মৃত্যুর পর তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান এবং নির্বাচনে জয়লাভ করে প্রথমবারের মত সংসদ সদস্য হন। ৫ জানুয়ারী, ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় নির্বাচনে তিনি দ্বিতীয়বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন[]। এরই মাধ্যমে তিনি ৩৫ বছরের কম বয়সে দুই বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সারাদেশের তরুন প্রজন্মকে এক প্ল্যাটফর্মে আনতে এবং আইন প্রনয়নে তাদের মতামতকে তুলে ধরতে গঠিত হয় 'ইয়ং বাংলা'[]। তিনি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য[] হিসেবে ২০১৪ সাল থেকে যুক্ত ছিলেন। তিনি ২০১৫ সালে 'ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ' (E-commerce Association of Bangladesh) গড়ে তুলতে সাহায্য করেন এবং তিনি সংগঠনের অন্যতম পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করছেন[]। নাহিম রাজ্জাক "জলবায়ু পরিষদ[], বাংলাদেশ" এর আহবায়ক হিসেবে কাজ করেন। এই পরিষদ দাতব্য সংস্থা হিসেবে জৈব জ্বালানী ব্যবহার কমাতে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানী ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে সারা বিশ্বের আইনপ্রনেতাদেরকে পরামর্শ দিয়ে থাকে। ৫ আগস্ট ২০২৪ সালে অসহযোগ আন্দোলনের মুখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারত পালিয়ে গেলে পরদিন ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙ্গে দিলে তিনি সংসদ সদস্য পদ হারান।[]

পারিবারিক তথ্য

সম্পাদনা

নাহিম রাজ্জাকের জন্ম রাজনৈতিক পরিবারে। তাঁর পিতা আব্দুর রাজ্জাক (রাজনীতিবিদ) ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। আব্দুর রাজ্জাক ষাটের দশকের ছাত্র আন্দোলন 'নিউক্লিয়াস' এর তিনজন গঠনকালীন সদস্যের একজন এবং বাংলাদেশের রাজনীতিতে অন্যতম প্রভাবশালী নেতা। মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং যুদ্ধের সময় তিনি স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর প্রধান হিসেবে কাজ করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭০ এর প্রাদেশিক নির্বাচনে জয়লাভ করেছিলেন। তিনি স্বাধীন বাংলার পাঁচবারের সংসদ সদস্য, ১৯৯৬ - ২০০১ আওয়ামী লীগ সরকারের পানিসম্পদ মন্ত্রনালয়ের সাবেক মন্ত্রী ছিলেন। নাহিম রাজ্জাকের মা, ফরিদা রাজ্জাক ছিলেন একজন শিক্ষক এবং সমাজকর্মী। তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি আব্দুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

নাহিম রাজ্জাক এবং মালেয়া হোসাইন দম্পতির দু'জন পুত্রসন্তান রয়েছে।

পুরস্কার ও সম্মাননা

সম্পাদনা

১। Top 10 Outstanding Youth Person (TOYP) given by Junior Chamber International

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. জনকণ্ঠ, দৈনিক। "জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা"দৈনিক জনকণ্ঠ || Daily Janakantha (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-২৬ 
  2. "১০ম জাতীয় সংসদ সদস্য তালিকা (ইংরেজি)"www.parliament.gov.bd। ২০১৭-১১-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১২-২২ 
  3. "Youngbangla"। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০১৫ 
  4. "সংসদীয় স্থায়ী কমিটি | যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়-গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার"www.moysports.gov.bd। ২০১৫-১২-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১২-২২ 
  5. "e-Commerce Fair BD"। ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০১৫ 
  6. "Climate Parliament: Legislators working worldwide to combat climate change"। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০১৫