নারী বিদ্যা এমন এক শিক্ষা ক্ষেত্র। এটি লিঙ্গের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক গঠন, মর্যাদার নীতি ও নীপীড়ন এবং নারী ও পুরুষের পরিচিতি ও জাতি, যৌন অভিমুখিতা, সামাজিক অবস্থা এবং প্রতিবন্ধকতার ক্ষেত্রে পার্থক্যগুলোর মধ্যে তাদের লিঙ্গ ও ক্ষমতার সম্পর্ক পরীক্ষা করে নারীবাদকে কেন্দ্র করে নারীদের জীবন ও অভিজ্ঞতা অধ্যয়নের উপর মনোযোগ প্রদান করাই এর মূল লক্ষ্য।[]

নারী বিদ্যা সাথে সম্পর্কিত জনপ্রিয় ধারণাগুলোর মধ্যে রয়েছে: নারীবাদী তত্ত্ব, স্ট্যান্ডপয়েন্ট থিওরি, পৃথকীকরণ, বহুসংস্কৃতিবাদ, বহুজাতিক নারীবাদ, সামাজিক ন্যায়বিচার, প্রতিক্রিয়া অধ্যায়ন, মূর্তকরণ, জৈবরাজনীতি এবং বস্তুবাদ[] নারী বিদ্যার সাথে সংশ্লিষ্ট গবেষণা কার্যক্রম এবং প্রণালির মধ্যে রয়েছে: নৃকুলবিদ্যা, অটোথনোগ্রাফি, ফোকাস গ্রুপ, জরীপ, সম্প্রদায়ভিত্তিক গবেষণা, বক্তৃতা বিশ্লেষণ এবং সমালোচনামূলক তত্ত্ব, উত্তর-কাঠামোবাদ এবং কুয়ের তত্ত্বের সম্পর্কিত অধ্যায়ন।[] লিঙ্গ, বর্ণ, শ্রেণি, যৌনতা এবং অন্যান্য সামাজিক বৈষম্যের বিভিন্ন সামাজিক রীতিগুলো সম্পর্কে এতে গবেষণা এবং সমালোচনা করে।

নারী বিদ্যা জেন্ডার বিদ্যা, নারীবাদ অধ্যায়ন, যৌনতা অধ্যায়ন এবং বৃহত্তরভাবে সাংস্কৃতিক গবেষণা, জাতি গবেষণা এবং আফ্রিকান-আমেরিকান গবেষণার সাথে জড়িত।[]

এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৭০০ এর অধিক প্রতিষ্ঠানে এবং বিশ্বব্যাপী ৪০টির বেশি দেশে নারী বিদ্যার পাঠ প্রদান করা হয়।[]

ইতিহাস

সম্পাদনা

অস্ট্রেলিয়া

সম্পাদনা

১৯৫৬ সালে অস্ট্রেলীয় নারীবাদী, ম্যাডজ ডসন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডাল্ট এডুকেশন বিভাগে একটি বক্তৃতা প্রদান করেন এবং নারীর অবস্থান সম্পর্কে গবেষণা ও শিক্ষকতা শুরু করেন। ডসনের কোর্স, "একটি পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে নারী" সর্বোপ্রথম নারী বিদ্যার কোর্সগুলোর মধ্যে একটিতে পরিণত হয়, যাতে পশ্চিম ইউরোপের নারীদের আর্থ-সামাজিক এবং রাজনৈতিক অবস্থানের উপর মনোযোগ প্রদান করা হয়।[]

যুক্তরাষ্ট্র

সম্পাদনা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম স্বীকৃত নারী বিদ্যার কোর্স ১৯৬৯ সালে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।[] ১ বছরের নারী সচেতনতা উত্তোলনকারী দলগুলোর প্রস্তুতি, সমাবেশ এবং ৭ কমিটি এবং সভার সামনে পিটিশন উপস্থাপন এবং অনানুষ্ঠানিক ও পরীক্ষামূলক শ্রেণি কার্যক্রম এবং উপস্থাপনা চালনা করার পর ১৯৭০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে স্যান ডিয়েগো কলেজে (বর্তমানে স্যান ডিয়েগো স্ট্যাট বিশ্ববিদ্যালয়) সর্বােপ্রথম নারী বিদ্যা কার্যক্রম প্রতিষ্ঠিত হয়[][]। জাতীয় নারী স্বাধীনতা আন্দোলন এর সাথে যৌথ প্রচেষ্টায় শিক্ষার্থী এবং সম্প্রদায়ের সদস্যগণ নারী বিদ্যার জন্য একটি তদর্থক কমিটি গঠন করে।[১০] ১৯৭১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় নারী বিদ্যা কার্যক্রমটি ক্যানসাস এর উইচিতা -এ অবস্থিত উইচিতা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি প্রধানত ইংরেজি বিভাগ এবং পরিচালনা কর্তৃপক্ষের নারী সদস্যসহ সম্প্রদায়ের নারী সদস্যদের দ্বারা কার্যকর হয়।[১১] ১৯৭৪ সালের মধ্যে, স্যান ডিয়েগো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় অনুষদের সদস্যগণ এই বিভাগটির অন্তর্ভূক্তির জন্য রাষ্ট্রব্যাপী অভিযান শুরু করেন। তৎকালীন সময়ে এই কাজ এবং ক্ষেত্রগুলো অত্যন্ত রাজনৈতিক ছিল।[১২] আনুষ্ঠানিক বিভাগ ও কর্মসূচির পূর্বে নারী অনুষদ সদস্যগণ অনানুুষ্ঠানিকভাবে ক্যাম্পাসের আশেপাশে নারী বিদ্যার কোর্সের বিজ্ঞাপন দিত এবং এচাড়াও তারা বিনা পারিশ্রমিকে তাদের প্রধান শিক্ষকতা এবং পরিচালনার দায়িত্বের সাথে নারী বিদ্যার পাঠদান করেন।[১৩] এমনকি বর্তমানেও অনেক ক্ষেত্রে যে অনুষদ নারী বিদ্যার পাঠদান করে তারা ক্যাম্পাসের অন্যান্য বিভাগেও অনুষদের দায়িত্ব পালন করে।[১৪]

প্রথম আন্তঃবিভাগীয় নারী বিদ্যার পঁজিকা, “ফেমিনিস্ট স্টাডিস” ১৯৭২ সালে প্রকাশিত হওয়া শুরু হয়।[১৫] যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নারী বিদ্যা সংঘ ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।[১৬]

১৯৭৭ সালে রাষ্ট্রব্যাপী মোট ২৬৬টি নারী বিদ্যার কার্যক্রম বিদ্যমান ছিল, যার সংখ্যা পরবর্তী দশকে বৃদ্ধি পায় এবং ১৯৮৯ সালে ৫৩০ এ পরিণত হয়।[১৭]

১৯৮০ দশকের দিকে নারী বিদ্যার ক্ষেত্রটি সংরক্ষণশীল দলগুলোর সমালোচনা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে থাকা নারীদের মধ্যে বিদ্যমান সাদা বর্ণের অস্তিত্ববাদী এবং বিপরীত লিঙ্গের জন্য ভিন্ন ভিন্ন সূবিধার বিষয়গুলো নিয়ে নারী আন্দোলনের সাথে জড়িত নারীদের উদ্বিগ্নতার কারণে বাধাগ্রস্ত হলেও যুক্তরাষ্ট্রে দেশব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নারী বিদ্যার কোর্সগুলোর উন্নতি ও বিকাশ লক্ষ করা যায়। [১৮] নারীবাদী আন্দোলন যা থেকে নারী বিদ্যা চালু হয়েছে, সেটির রাজনৈতিক লক্ষ ১৯৯০ এর দশকের প্রচলিত প্রাতিষ্ঠানিক নারীবাদের সাথে মতভেদের স্বীকার হয়।[১৯] “নারী” -এর ধারণা বর্ধিত হতে থাকায়, লিঙ্গের সামাজিক গঠন আবিষ্কারের ফলে এই ক্ষেত্রটি বিস্তৃত হয় এবং উভয় লিঙ্গ অধ্যায়ন এবং যৌনতা অধ্যায়ন শুরু হয়।

১৯৯০ এবং ২০০০ এর দশকে নারী বিদ্যার ক্ষেত্রগুলো বৃদ্ধি পায় এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় নারী বিদ্যা, লিঙ্গ বিদ্যা এবং নারীবাদ অধ্যায়নের উপর মেজর, মাইনর এবং সার্টিফিকেট প্রদান করা শুরু করে। ১৯৯০ সালে প্রথম নারী বিদ্যায় প্রথম আনুষ্ঠানিক পিএইচ.ডি. কার্যক্রম ইমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়।[২০] ২০১২ সালে, যুক্তরাষ্ট্রে ১৬টি প্রতিষ্ঠান নারী বিদ্যায় পিএইচ.ডি. প্রদান করত।[২১][২২] তারপর থেকে ইউসি সান্তা ক্রুজ (২০১৩), কেনটাকি-লেক্সিনটন বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৩), স্টোনি ব্রক বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৪), এবং ওরেগন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়েও নারী বিদ্যায় পিএইচ.ডি. প্রদান করা শুরু হয়।[২৩][২৪][২৫][২৬]

এলিজাবেথ বার্ড এর মতে, যুক্তরাজ্যে নারী স্বাধীনতা আন্দোলন (ডাবলিউএলএম), শ্রমিক শিক্ষা সংস্থা, “সিআর”, বামপন্থী অগ্রগামী দলগুলো এবং বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ এর সাথে জড়িত থাকা বহির্মুখী বিভাগগুলো পরিচালিত অপ্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা হিসেবে নারী বিদ্যার শুরু হয়।[২৭] বার্ড অ্যানা কুট এবং বিটরিক্স কেম্পবেল নামক দুজন নারীবাদীর কথা উল্লেখ করেন, যারা ১৯৬০-৭০ এর নারী বিদ্যার ক্রমন্নতি সম্পর্কে অনেক অংশগ্রহণকারীর সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন, যাদের মতে, “১৯৬৯ এর গ্রীস্মকালে জুলিয়েট মিসেল শিক্ষার্থী প্রতিবাদ আন্দোলনের অংশ হিসেবে মৌলবাদী শিক্ষদের অনুষ্ঠিত “বিশ্ববিদ্যালয় বিরোধী” -তে ‘সমাজে নারীর ভূমিকা’ নামক একটি সংক্ষিপ্ত শিক্ষাক্রমের পাঠদান করেন”।[২৭][২৮] ম্যাগি হাম এই গ্রীস্মকালীন শিক্ষাক্রমটিকে ব্রিটেনের প্রথম শিক্ষাক্রম হিসেবে চিহ্নিত করেন।[২৭][২৯]

মারগারিটা রেন্ডেল, উনাগ হারনেট, জো ফেয়ারব্যার্নস তাদের লেখা সহায়িকায় ১৭টি অস্নাতক, একটি স্নাতকোত্তর “এবং নারী বিদ্যার চার কলেজের বিদ্যমান সুযোগগুলো এবং যুক্তরাজ্যে “উইমেন ইন সোসাইটি” নামে অভিহিত নারী বিদ্যার ৬টি পলিটেকনিক কোর্স এর কথা উল্লেখ করেছেন।[৩০] তারা যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা থেকে সহায়িকাটি সংকলন করেন এবং তারা সেটি ১৯৭৪ সালে জাতীয় শিক্ষার্থী সংঘের জন্য সু বিয়েরডেন এবং অ্যারিকা স্টিভেনসন এর পূর্বে প্রকাশিত গবেষণার সাথে যুক্ত করে।[২৭]

১৯৭৭ সাল থেকে পলিটেকনিক অব সেন্টার লন্ডন নারী বিদ্যায় একটি খন্ডকালীন স্নাতক ডিপ্লোমা কোর্স এর পাঠদান দিত। ১৯৭৮ সালে লন্ডন ইন্সট্রিটিউট অব এডুকেশন “অধিকার” বিষয়ক একটি এমএ কোর্স এর আয়োজন করে, যার মধ্যে নারী অধিকার অন্তর্ভূক্ত ছিল।

১৯৮০ সালে, কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় নারী বিদ্যায় প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে অভিহিত এমএ কোর্স শুরু করে, যার উন্নয়নের নেতৃত্বে ছিলেন ম্যারি ইভানস।[২৭] কেন্ট এর পর ব্র্যাডফোর্ড (১৯৮২), সেফফিল্ড সিটি পলিটেকনিক (১৯৮৩) এবং ওয়ারউইক (১৯৮৩) এবং ইয়র্ক (১৯৮৪) সালে এমএ নারী বিদ্যায় এমএ কোর্স চালু করে। ১৯৯০ সালে, পলিটেকনিক অব নর্থ ইস্ট লন্ডন এবং প্রেস্টন পলিটেকনিক এ নারী বিদ্যায় খন্ডকালীন বি.এ কোর্স চালু হয়।[২৭] ১৯৯৩ সালে, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী বিদ্যার কোর্স চালু করার জন্য ভেরোনিকা বিচি -কে নিয়োগ দেওয়া হয়।[৩১]

যুক্তরাজ্যে নারী বিদ্যার বর্তমান কোর্সগুলো কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি সেবায় পাওয়া যায়।[৩২]

মধ্য এশিয়া

সম্পাদনা

২০১৫ সালে, কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে লিঙ্গ এবং নারী বিদ্যায় প্রথম মাস্টার্স ডিগ্রী কোর্স চালু করা হয়।[৩৩]

তাত্ত্বিক এবং গবেষণা পদ্ধতি

সম্পাদনা
 
নারী ও লিঙ্গ শিক্ষার শিক্ষার্থীরা হাইফা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রথমদিকে নারী বিদ্যার পাঠ এবং পাঠ্যসূচিতে “নারীরা কেন অন্তর্ভূ্ক্ত নয়?” এবং “নারীরা কোথায়?” -এ প্রশ্নগুলো ছিল মূখ্য। উচ্চতর শিক্ষায় আরো বেশি নারীদের উভয় শিক্ষার্থী এবং অনুষদ হিসেবে আরো বেশি অংশগ্রহণের সাথে অধিকাংশ কোর্স এবং শিক্ষাক্রমের পুরুষত্ব ভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠে। ইংরেজি, ইতিহাস এবং দর্শন এর মতো সাধারণ বিভাগে নারী অনুষদ নারীর উপর কেন্দ্র করে পাঠদান শুরু করে। “ব্যক্তিগত মানেই রাজনৈতিক” নারী আন্দোলনের এ ধারণাকে কেন্দ্র করে যৌন রাজনীতি, সমাজে নারীর ভূমিকা এবং যেসব উপায়ে নারীর ব্যক্তিগত জীবন বৃহত্তর ক্ষমতা গঠনের প্রতিচ্ছবি সেগুলো নিয়ে বিভিন্ন কোর্স চালু হয়।[৩৪]

১৯৭০ এর দশক থেকে নারী শিক্ষার বিশেষজ্ঞরা লিঙ্গ এবং এর সাথে জাতি, জাতিগত পটভূমি, শ্রেণি, বয়স, ধর্ম, যৌনতা এবং সমাজে শক্তি কাঠামো তৈরির সক্ষমতা এবং প্রতিবন্ধকতা বোঝার জন্য আধূনিক উত্তরাধুনিক নারীবাদের পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করেন এ পদ্ধতিতে ভাষা, সামাজিক আধিপত্যতা এবং লিঙ্গগুলোর পরিচিতি এবং গঠনের উপর মনোযোগ প্রদান করা হয়। এই তত্ত্বগুলোর মূলে ছিল এই ধারণা যে, পরিচিতি, জেন্ডার, লিঙ্গ এবং প্রকৃতিকভাবে নয়, বরং সমাজ দ্বারা তৈরি।[৩৫]

নারী বিদ্যার কোর্সগুলোর সাথে জড়িত প্রধান তত্ত্বগুলোর মধ্যে রয়েছে: নারীবাদী তত্ত্ব,ইন্টারসেকশনালিটি, স্টান্ডপয়েন্ট তত্ত্ব, ট্রান্সন্যাশনাল নারীবাদ, সামাজিক বিচার। পরিমাণগত, গুণগত এবং মিশ্রিত পদ্ধতির মাধ্যমে নারী বিদ্যার সাথে সম্পর্কিত গবেষণা কার্যক্রমে নারী এবং নারীর অভিজ্ঞতাকে জরিপের কেন্দ্রে রাখা হয়। নারীবাদী গবেষকেরা জ্ঞান সম্মৃদ্ধে তাদের ভূমিকা স্বীকার করেন এবং গবেষণক এবং গবেষণার বিষয়বস্তুর মধ্যে সম্পর্ক ব্যাখ্যা করেন। []

নারীবাদী তত্ত্ব

সম্পাদনা

নারীবাদী তত্ত্ব নারীর জীবনের অভিজ্ঞতা এবং অবস্থা স্বীকার, বিশ্লেষন এবং বর্ণনা করে যে লেখাগুলো লিঙ্গ বৈষম্যতা এবং অসমনতা চিহ্নিত করে সেগুলোকে নির্দেশ করে।[৩৬] বেল হুকস, সিমন দ্য বোভোয়ার, প্যাট্রিসিয়া হিল কোলিনস এবং অ্যালিস ওয়াকার এর মতো লেখক এবং তাত্ত্বিকগণ তাদের “ফেমিনিস্ট থিওরি ফ্রোম মার্জিন টু সেন্টার” (লেখক: হুকস), “ইন সার্চ অব আউয়ার মাদার’স গার্ডেন” (ওয়াকার), “ব্লাক ফেমিনিস্ট থোট: নোলেজ, কনসিয়াসনেস এন্ড দ্য পলিটিকস অব এমপাওয়ামেন্ট” (কোলিনস) এর মতো কীর্তিগুলোর মাধ্যমে নারীবাদী তত্ত্বে শ্রদ্ধার সাথে যেভাবে জাতি ও লিঙ্গ পারস্পরিকতা নারীর অবিজ্ঞতাকে প্রভাবিত কর তা যুক্ত করনে। অ্যালিস ওয়াকার কৃষ্ণবর্ণ বর্ণের নারীদের সক্ষমতা এবং সংস্কৃতি এবং সৌন্দর্য উৎযাপনের সাথে তাদের সামাজিক পরিবর্তন এবং স্বাধীনতার সংগ্রামের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে একটি নতুন শব্দ, “উইমেনিসম” তৈরি করেন।[৩৭] প্যাট্রিসিয়া হিল কোলিনস নারীবাদী তত্ত্বে “ম্যাট্রিক্স অব ডোমিনেশন” এর ধারণা প্রবর্তন করে। ম্যাট্রিক্স অব ডোমিনেশন এই ধারণা প্রবর্তন করে যে, জাতি, বর্ণ এবং লিঙ্গ নিপীড়নের নীতির একটি অংশ, যা দিয়ে নিপীড়ন ও অধিকারের অভিজ্ঞতা তৈরি হয়।[৩৮]

 
গ্রন্থাগারে নারী বিদ্যা প্রাঙ্গনে নারীরা

ইন্টারসেকশনালিটি

সম্পাদনা

মানুষের অভিজ্ঞতা, জটিলতা এবং সমাজ সম্পর্কে বোঝার একটি পদ্ধতি।[৩৯] নারীবাদের তৃতীয় তরঙ্গের সাথে জড়িত কিম্বারলি ক্রেমসো এর ইন্টারসেকশনালিটি তত্ত্বটি নারীবাদী বিশেষজ্ঞদের কাছে প্রধান তত্ত্বীয় কাঠামোতে পরিণত হয়েছে, যার মাধ্যমে তাদের মধ্যে অনেকে কোনো ব্যাক্তির সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিচিতি, সামাজিক লিঙ্গ, জাতি, বয়স, যৌন আকর্ষণ এবং তার প্রতি বৈষম্যের মধ্যে সম্পর্ক আলোচনা করে।[৪০] ইন্টারসেকশনালিটি অনুসারে, শক্তি ও মর্যাদার শ্রেণিবিন্যাস এবং যেসব প্রভাবের মাধ্যমে তা জীবনে পরিলক্ষিত হয় তা বোঝার জন্য এ সম্পর্কগুলো বিবেচনা করতে হবে।[৪১] সামাজিক এবং রাজনৈতিক জীবনের ঘটনাসমুহ একই কারণে ঘটে বলে বিবেচনা করা হলেও, ইন্টারসেকশনালিটি অনুসারে, সামাজিক বৈষম্য এবং নিপীড়ন নির্ভর করে কোনো ব্যাক্তির বিভিন্ন কারণের উপর নজর কতটা জড়ালো তার উপর। ইন্টারসেকশনালিট অনুসারে, বৈষম্যতা ক্ষমতা দ্বারা নয়, বরং নিজস্ব পরিচিতি দিয়ে হিসাব করা হয়।[৩৯][৪০]

স্টান্ডপয়েন্ট তত্ত্ব

সম্পাদনা

স্টান্ডপয়েন্ট তত্ত্ব বা নারীবাদী স্টান্ডপয়েন্ট তত্ত্ব হলো জ্ঞান উৎপাদন এবং ক্ষমতার অনুশীলনে তার প্রভাব জটিলভাবে পরীক্ষা করার একটি পদ্ধতি, যা ১৯৮০ সালে প্রবর্তিত হয়।[৪২][৪৩] স্টান্ডপয়েন্ট তত্ত্ব এ ধারণা দ্বারা পরিচালিত যে, জ্ঞান সমাজে অবস্থান করে কিন্তু জ্ঞান উৎপাদনের ক্ষেত্রে সংখ্যালঘিষ্ঠ্য এবং কম স্বচ্ছারদের তা থেকে বঞ্চিত করা হয় বা তাদের সীমাবদ্ধ রাখা হয়। মার্ক্সবাদী চিন্তা থেকে উদীয়মান, স্টান্ডপয়েন্ট তত্ত্ব যে গবেষণাগুলো রাজনৈতিক এবং সামাজিক “সত্যের” বিরুদ্ধে সেগুলোকে সমর্থন করে।[৪৪] স্টান্ডপয়েন্ট তত্ত্ব অনুসারে, সমাজে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়া বিশেষভাবে পুরুষের জন্য একং পুরুষের দ্বারা তৈরি হওয়ায় ক্ষমতা শুধুমাত্র পুরুষ লিঙ্গের মধ্যেই আছে।[৪২] স্টান্ডপয়েন্ট তত্ত্ব সমাজে উপস্থাপিত হওয়ার একটি উদাহরণ হলো রাজনৈতিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে এটির উপস্থাপিত হওয়া। যার কারণ এ গবেষণার ক্ষেত্রটি পুরুষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। মার্ক্সবাদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মার্ক একটি ধারণা ব্যাক্ত করেন, যা অনুসারে, যা ক্ষমতায় থাকে তারা যাদের ক্ষমতায় থাকে তাদের পরিপ্রেক্ষিত বুঝতে অক্ষম।[৪২] এ থেকে বোঝা যায় যে, স্টান্ডপয়েন্ড তত্ত্ব সমাজে নারীদের নীপিড়িত হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পুরুষের অক্ষমতাকে স্বীকার করে।

ট্রান্সন্যাশনাল নারীবাদী তত্ত্ব

সম্পাদনা

পৃথিবীব্যাপী নব্য উদারবাদ, বিশ্বায়ন এবং সাম্রাজ্যবাদের প্রতিক্রিয়া হিসেবে, নারী ও পুরুষের মধ্যে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সমতা এবং সমাজের ধারার সাথে ট্রান্সন্যাশনাল নারীবাদের কথা চিন্তা করা হয়।[৪৫] শিক্ষাক্ষেত্রে যে পদ্ধতিতে লিঙ্গ অধ্যায়ন প্রচারিত, শেখানো এবং অগ্রাধিকার প্রাপ্ত হয় সেই পদ্ধতির প্রতি আপত্তি প্রকাশ এবং বাধা প্রদানের জন্য নারী বিদ্যার পাঠ্যসূচীতে ট্রান্সন্যাশনাল নারীবাদী তত্ত্ব যুক্ত করা হয়।[৪৬] ট্রান্সন্যাশনাল নারীবাদী তত্ত্ব ক্রমাগতভাবে সমাজের ঐতিহ্যগত বিভাজনগুলোকে প্রশ্নের মুখে ফেলে, যা চলমান রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক বিশ্বাসের ক্ষেত্রে জরুরি।[৪৭] একটি গুরুত্বপূর্ন স্বীকৃতি ট্রান্সন্যাশনাল নারীবাদী পরিপ্রেক্ষিত থেকে অগ্রগতি লাভ করে, যা হচ্ছে, ছিল এবং ভবিষ্যতেও একটি বৈশ্বিক চেষ্টা হিসেবে হতে থাকবে।[৪৮] একটি ট্রান্সন্যাশনাল নারীবাদী পরিপ্রেক্ষিত নির্দেশ করে যে, লিঙ্গগুলোর মধ্যে সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক অবিচার বিশ্বায়নের ফলে বৈশ্বিক লিঙ্গ বৈষম্যতা বৃদ্ধিতে অবদান রাখতে পারে। যদিও, এমনটি শুধু মাত্র হতে পারে যদি কোনো ব্যাক্তি পৃথিবীব্যাপী সম্মানজনক কোনো অবস্থানে আসে।[৪৮]

সামাজিক বিচার

সম্পাদনা

নারী বিদ্যার শুরু থেকে এর সাথে নারী আন্দোলনের সম্পর্ক থাকায়, সক্রিয়তাবাদ এর একটি ভিত্তি। বর্ধিত সামাজিক বিচার নারী বিদ্যার কোর্স, পাঠ্যক্রম এবং বিভাগগুলোর একটি প্রধান অংশতে পরিণত হয়েছে। সামাজিক বিচারের তত্ত্বটি শুধুমাত্র সাম্প্রদায়িক দ্বন্দের সাথে সম্পর্কিত, এটি ব্যক্তিগত পর্যায়ের জন্য প্রযোজ্য নয়, বরং সামাজিক পর্যায়ে প্রযোজ্য।[৪৯] কিছু সমালোচক নারী বিদ্যার শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলক সক্রীতাবাদ এবং সামাজিক বিচারের কাজে জড়িত হওয়ার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত থাকলেও শিক্ষার্থীরা সামাজিক বিচারের প্রকল্পগুলোর সাথে যুক্ত হচ্ছেন।[৫০] নারী বিদ্যা শুধুমাত্র গার্হস্থ্য সহিংসতা, কর্মক্ষেত্রে বৈষম্যতা এবং বাড়ির কাজ বিভাজনে লিঙ্গের পার্থক্যের ধারণাতেই শুধুমাত্র মনযোগ দেয় না, বরং এই ধারণাগুলো বোঝার ভিত্তি উদ্দেশ্য প্রদান করে, যা নারীদের জীবন উন্নতর করার জন্য প্রধান প্রদক্ষেপ।[৫১]

প্রতিনিধিত্ব

সম্পাদনা

প্রতিনিধিত্ব দ্বারা নিজস্ব এবং স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সক্ষমতাকে নির্দেশ করে।[৫২] সামাজিক লিঙ্গ, জাতি এবং ধর্মের মতো বিভিন্ন সামাজিক কারণে কারো প্রতিনিধিত্ব বাধা পেতে পারে।[৫২] নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে, প্রতিনিধিত্বকে নারীবাদের প্রথম তরঙ্গের একটি বৈশিষ্ট্য হিসেবে থাকা এক পক্ষীয় নিপীড়নকে সমান করার একটি চেষ্টা।[৫৩] নারীবাদীরা প্রতিনিধিত্বকে বিশ্বব্যাপী লিঙ্গগুলোর সম্পর্ক পুনর্নির্মাণ করান মাধ্যমে নতুন স্বায়ত্তশাসন এবং পরাধীনতা সৃষ্টির চেষ্টায় ব্যবহার করছেন।[৫৩] সমাজে অনুক্রমিক অবস্থানে থাকায় নারীদের প্রতিনিধিত্বের অভাব নারী বিদ্যায় স্বীকার করা হয়। যেহেতু লিঙ্গ সাম্যতা বৃদ্ধি সমাজে আরো প্রতিনিধিত্ব সৃষ্টি করতে পারে, তাই নারীবাদীরা সেক্ষেত্রে সক্রিয়ভাবে চেষ্ট করে যাচ্ছে।[৫৩]

বস্তুবাদ তত্ত্ব

সম্পাদনা

বস্তুবাদী তত্ত্ব ১৯৬০ এবং ১৯৭০ এর দশকে নারীবাদের অন্তর্ভূক্ত সমাজকর্ম থেকে উদ্ভূত হয়।[৫৪] বস্তুবাদ তত্ত্ব ইতিহাস, প্রতিনিধিত্ব এবংআদর্শবাদের মার্ক্সবাদী তত্ত্বের সাথে অত্যন্ত সম্পর্কিত। যদিও ভাষা ও সংস্কৃতির সাথে দর্শনের সম্পর্ক দ্বারা এ দুটি বিষয়কে পৃথক করা যায়।[৫৪] সামাজিক বিশ্লেষণ এবং সামাজিক সম্পর্ক উভয়কেই প্রশ্নের মুখে ফেলে, যা যেকোনো সমাজের বস্তুগত অবস্থায় লক্ষণীয়।[৫৪] শুধু লিঙ্গ দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা গবেষণা ছাড়াও বস্তুগত অবস্থা নারীদের জীবনের বাস্তব দিকগুলোর সাথে সম্পর্কিতভাবেও অধ্যায়ন করা হয়।[৫৪] বস্তুবাদী নারীবাদীরা বলেন যে, এর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে যে, এ বিষয়গুলো নারীবাদীদের পরিপ্রেক্ষিত থেকে বিবেচনা করা, যার মাধ্যমে তারা দাবি করেন যে, সামাজিক লিঙ্গ ঐতিহাসিকভাবে তৈরি এবং এটি পরিবর্তনশীল এবং এর মধ্যে বা নতুন কোনো কিছু উদ্ভাবন হতে পারে।[৫৪] বস্তুবাদী নারীবাদীরা যে যুক্তিগুলোর মতে, নারীদের ভূমিকা- মূলত পরিবারিক বিষয়সমূহ, গৃহজীবন এবং মাতৃত্ব।[৫৪] বস্তুবাদ তত্ত্ব লিঙ্গ সংক্রান্ত যে বক্তব্যগুলোতে নারীদের অগুরুত্বপূর্ণ বলে ব্যাক্ত করা হয়েছে সেই বক্তব্যগুলো বিশ্লেষণ করে। বস্তুবাদী নারীবাদের সবচেয়ে প্রভাবশালী দিক হচ্ছে এটির আদর্শের প্রশ্নসমুহ দ্বারা বিশ্লেষণ এবং ইতিহাস ও প্রতিনিধিত্বের উপর এর নির্ভরশীলতার মাত্রা।[৫৪]

শিক্ষানীতি

সম্পাদনা

বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে নারী বিদ্যার কোর্সগুলোর ক্ষেত্রে গবেষণা, তত্ত্ব এবং অনুশীলনের একটি ত্রয়ী পদ্ধতির শিক্ষানীতি ব্যবহার করা হয়। অনেক সময়ই নারী বিদ্যার একটি মৌলিক সংস্কৃতি হিসেবে অধ্যাপককে জ্ঞানের উৎস হিসেবে বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়।[৫৫] শিক্ষার্থীদের তাদের নিজেদের দায়িত্ব এবং শিক্ষা পদ্ধতির দায়িত্ব নিয়ে তাদের শিক্ষা “গ্রহণ করে নেওয়ার” জন্য উৎসাহিত করা হয়।[৫৬] সামাজিক লিঙ্গ, জাতি, শ্রেণি, যৌনতা এবং পরিচিতি রাজনীতির সাথে এবং সামাজিক রীতির সাথে জড়িত অন্যান্য বিষয়গুলোকে নারী বাদী দৃষ্টি থেকে উদ্ভাবন করতে নারী বিদ্যার কার্যক্রম এবং কোর্সগুলো তৈরি। মিডিয়া হার, লিঙ্গ, যৌনতা, জাতি, জাতিগত পটভূমি, নারীদের ইতিহাস, কুইয়ার তত্ত্ব, বহুসংস্কৃতিবাদ এবং অন্যান্য সম্পর্কিত কোর্স সহ নারী বিদ্যার কোর্সগুলো বিভিন্ন বিষয়ের উপর মনযোগ প্রদান করে। অনুষদ এই কোর্সগুলোকে জনপ্রিয় সংস্কৃতি, অর্থনীতিতে নারী, প্রজনন এবং পরিবেশগত ন্যায়বিচার, নারীর স্বাস্থ সহ বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেণিভুক্ত করে।[৫৭]

নারীবিদ্যার কার্যক্রম সমাজ কর্মের কাজের সাথে জড়িত এবং এবং প্রায়ই এমনভাবে তৈরি, যা তাদের প্রাতিষ্ঠানিক পাঠ্যক্রমের বাইরের তত্ব এবং সক্রিয়তাবাদের সাথে সম্পর্কিত। কিছু নারী বিদ্যার কোর্স শিক্ষাথীদের সম্প্রদায় ভিত্তিক ইন্টার্নশিপ, যাতে তারা তাদের প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার এবং নিপীড়নের গঠন কীভাবে নারীর জীবনে প্রভাব ফেলে তার অভিজ্ঞতা লাভ করে। নারী বিদ্যার পাঠ্যক্রম এর কোর্সগুলোর বিষয়গুলোর উপর আলোচনা এবং অধ্যায়নের সাথে সেবামূলক শিক্ষায় জড়িত হতে উৎসাহিত করে। ম্যাসাচুসেটস আর্মহার্সট বিশ্ববিদ্যালয়ের, ডেফনি পাতেই এই বিষয়টির সমালোচনা করেন। তার মতে, তার মতে, তারা (অনুষদ) শিক্ষার চেয়ে রাজনীতিকে অধিক গুরুত্ব প্রদান করেন। তিনি বলেন, “এই প্রোগ্রামগুলোর অনুষদ সদস্যদের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে সংবেদনশীল ভাষার প্রতি নজর রাখা, নারীদের অনুকূলে বিবেচিত গবেষণা পদ্ধতিগুলোকে বিজয়ী করা (যেমন: পরিমাণবাচকের পরিবর্তে গুণবাচক) এবং থেরাপি সভার মতো শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করা।”[৫৭] নারী বিদ্যার শিক্ষাথীরা পরিচিতি গঠনকারী উপাদানগুলো বিশ্লেষণ করে, যার ফলে প্রতিষ্ঠানিক ক্ষমতা কাঠামো ভেঙে যায়। এরকম শিক্ষানীতির কারণে নারী বিদ্যার শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সামাজিক পরিবর্তন এবং সমাজে ক্ষমতা বৈষম্যের বিষয়ে কিছু করার জন্য হাতিয়ার নিয়ে বের হয়।[৫৮]

উল্লেখযোগ্য নারী বিদ্যার বিশেষজ্ঞদের মধ্যে রয়েছেন: সারলেট বাঞ্চ, প্যাট্রিসিয়া হিল কোলিনস, অ্যাঞ্জেলা ডেভিস, চ্যারি মোরাগা, অর্দে লোর্দ, বারবারা রানসবি এবং অ্যাদ্রিয়ান রিচ।

আভ্যন্তরীন প্রতিষ্ঠানিক সমালোচনা

সম্পাদনা

“প্রফেসিং ফেমিনিজম: এডুকেশন এন্ড ইনডক্ট্রিমিনেশন ইন উইমেন’স স্টাডিস” -বইয়ে ৩০ জন নারী বিদ্যার শিক্ষাবিদ “অনেক নারী বিদ্যার পাঠ্যক্রমে অন্তর্নিহিত থাকা অস্বাস্থকর অবস্থা এবং ধ্বংসাত্মক প্রবনতার” সমালোচনা করেন। তারা “এই বিবদমান বুদ্ধিবৃত্তিবাদ বিরোধিতা সম্পর্কে নারী বিদ্যার অন্যান্য অনুষদের অন্যান্য সদস্যদের সাথে আলোচনা করতে অক্ষম” বলে প্রকাশ করেন। তারা এর সাথে দাবি করেন, “শিক্ষার্থী থেকে শিক্ষক সবক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিশুদ্ধতার প্রতি সব সময় জোর দেওয়া হয়”।[৫৯]

আরও দেখুন

সম্পাদনা
  1. Shaw, Susan M.; Lee, Janet (২০১৪-০৪-২৩)। Women's voices, feminist visions: classic and contemporary readings (Sixth সংস্করণ)। New York, NY: McGraw-Hill। আইএসবিএন 978-0078027000ওসিএলসি 862041473 
  2. Oxford Handbook of Feminist Theory. Oxford University Press. 2018. ISBN 978-0190872823. OCLC 1002116432.
  3. Hesse-Biber, Sharlene Nagy (২০১৩-০৭-১৮)। Feminist research practice: a primer (Second সংস্করণ)। Thousand Oaks, CA: SAGE Publications। আইএসবিএন 9781412994972ওসিএলসি 838201827 
  4. Wiegman, Robyn (২০০২)। Women's studies on its own: a next wave reader in institutional change । Durham: Duke University Press। আইএসবিএন 9780822329862ওসিএলসি 49421587 
  5. Berger, Michele Tracy; Radeloff, Cheryl (২০১৫)। Transforming Scholarship: Why Women's and Gender Studies Students Are Changing Themselves and the World। New York: Routledge। পৃষ্ঠা 7আইএসবিএন 978-0-415-83653-1 
  6. "Ardent warrior for women's rights"। ২০০৩-০৭-৩১। 
  7. Kahn, Ada P. (২০০৬)। The Encyclopedia of Stress and Stress-related Diseases (2nd সংস্করণ)। Facts on File। পৃষ্ঠা 388। আইএসবিএন 978-0816059379। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১২ 
  8. *Salper, Roberta (নভেম্বর ২০১১)। "San Diego State 1970: The Initial Year of the Nation's First Women's Studies Program"Feminist Studies37 (3): 658–682। 
  9. "SDSU Women's Studies Department"। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১৪ 
  10. "History :: Department of Women's Studies at San Diego State University"womensstudies.sdsu.edu। ১৬ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ ডিসেম্বর ২০১৫ 
  11. Chinyere Okafor citing from The Center for Women's Studies' papers at WSU
  12. Boxer, Marilyn J. (Fall ২০০২)। "Women's studies as women's history"। Women's Studies Quarterly30 (3–4): 42–51। জেস্টোর 40003241 
  13. Ginsberg, Alice E. (২০০৮)। "Triumphs, Controversies, and Change: 1970s to the Twenty-First Century"The Evolution of American Women's Studies: Reflections on Triumphs, Controversies, and Change। New York: Palgrave Macmillan। পৃষ্ঠা 11আইএসবিএন 978-0-230-60579-4 
  14. Berger, Michele Tracy; Radeloff, Cheryl (২০১৫)। Transforming Scholarship: Why Women's and Gender Studies Students Are Changing Themselves and the World। New York: Routledge। পৃষ্ঠা 49আইএসবিএন 978-0-415-83653-1 
  15. "History"। Feminist Studies। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মে ২০১৪ 
  16. "NWSA"nwsa.org। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১৫ 
  17. "A National Census of Women's Studies Programs" (পিডিএফ)NORC Project: 25। ডিসেম্বর ২০০৭। 
  18. Ginsberg, Alice E., সম্পাদক (২০০৮)। The evolution of American women's studies: reflections on triumphs, controversies, and change (1st সংস্করণ)। New York: Palgrave Macmillan। পৃষ্ঠা 16আইএসবিএন 9780230605794ওসিএলসি 224444238 
  19. Wiegman, Robyn (২০০৮)। "Feminism, Institutionalism, and the Idiom of Failure"। Scott, Joan Wallach। Women's Studies on the Edge। Durham: Duke University Press। পৃষ্ঠা 41। আইএসবিএন 978-0-8223-4274-8 
  20. "Women's, Gender, and Sexuality Studies"। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১৪ 
  21. "NWSA"nwsa.org। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১৫ 
  22. "Artemis Guide to Women's Studies in the U.S"। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১৪ 
  23. "UC Santa Cruz – Feminist Studies"feministstudies.ucsc.edu। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-২২ 
  24. "PHD Program | Gender & Women's Studies"gws.as.uky.edu। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-২২ 
  25. "Women's, Gender, and Sexuality Studies"www.stonybrook.edu। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-২২ 
  26. "PhD in Women, Gender, and Sexuality Studies! | College of Liberal Arts | Oregon State University"liberalarts.oregonstate.edu। ২০১৫-০৯-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-২২ 
  27. Bird, Elizabeth (২০০৩-০৬-০১)। "Women's studies and the women's movement in Britain: origins and evolution, 1970–2000"Women's History Review (ইংরেজি ভাষায়)। 12 (2): 263–288। আইএসএসএন 0961-2025ডিওআই:10.1080/09612020300200351 
  28. Coote, Anna; Campbell, Beatrix (১৯৮২)। Sweet Freedom: the struggle for women’s liberation। London: Pan Macmillan। 
  29. Humm, Maggie (১৯৯৪)। Feminisms: a reader। Hemel Hempstead: Harvester Wheatsheaf। পৃষ্ঠা xvi। 
  30. Hartnett, Oonagh; Rendel, Margarita; Fairbairns, Zoe (১৯৭৫)। Women’s Studies Courses in the United Kingdom। London: Margarita Rendel। 
  31. Taylor, Barbara (২০২১-০১-৩১)। "Veronica Beechey obituary"the Guardian (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-২৭ 
  32. "Universities and Colleges Admissions Service, United Kingdom"UCAS। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১৪ 
  33. FaithWorld (২০১৫-১০-২৬)। "Kabul University unlikely host for first Afghan women's studies programme"। Blogs.reuters.com। ২০১৫-১০-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১১-০২ 
  34. Ginsberg, Alice E., সম্পাদক (২০০৮)। The evolution of American women's studies: reflections on triumphs, controversies, and change (1st সংস্করণ)। New York: Palgrave Macmillan। পৃষ্ঠা 69আইএসবিএন 9780230605794ওসিএলসি 224444238 
  35. Levin, Amy K. (২০০৭)। "Questions for A New Century: Women's Studies and Integrative Learning" (পিডিএফ)www.nwsa.org। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ১৮, ২০১৭ 
  36. Kolmar, Wendy K.; Bartkowski, Frances (২০১৩)। Feminist theory: a reader (4th সংস্করণ)। New York: McGraw-Hill Higher Education। পৃষ্ঠা 2আইএসবিএন 9780073512358ওসিএলসি 800352585 
  37. Phillips, Layli (২০০৬)। The Womanist reader। New York: Routledge। আইএসবিএন 9780415954112ওসিএলসি 64585764 
  38. Collins, Patricia Hill (২০০৯)। Black feminist thought: knowledge, consciousness, and the politics of empowerment (2nd সংস্করণ)। New York। আইএসবিএন 9780415964722ওসিএলসি 245597448 
  39. Hill Collins, P.; Bilge, S. (২০১৬)। Intersectionality। Cambridge, UK: Polity Press। আইএসবিএন 978-0-7456-8448-2 
  40. Cooper, Brittney (২০১৬)। "Intersectionality"। Disch, Lisa; Hawkesworth, Mary। The Oxford Handbook of Feminist Theory। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 385–406। আইএসবিএন 978-0-19-932858-1ডিওআই:10.1093/oxfordhb/9780199328581.013.20 
  41. Carastathis, Anna (২০১৪)। "The Concept of Intersectionality in Feminist Theory" (পিডিএফ)Philosophy Compass9 (5): 304–314। ডিওআই:10.1111/phc3.12129 – ResearchGate-এর মাধ্যমে। 
  42. Potter, M (২০১৪)। "Loyalism, Women and Standpoint Theory"। Irish Political Studies29 (2): 258–274। এসটুসিআইডি 145719308ডিওআই:10.1080/07907184.2012.727399 
  43. Harding, Sandra G. (২০০৪)। The feminist standpoint theory reader: intellectual and political controversies। New York: Routledge। পৃষ্ঠা 2। আইএসবিএন 978-0415945004ওসিএলসি 51668081 
  44. Hekman, Susan (১৯৯৭)। "Truth and Method: Feminist Standpoint Theory Revisited"Signs22 (2): 341–365। এসটুসিআইডি 13884397জেস্টোর 3175275ডিওআই:10.1086/495159 
  45. Moghadam, Valentine M. (২০১১)। "Transnational Feminisms"। Lee, Janet; Shaw, Susan M.। Women worldwide: transnational feminist perspectives on women। New York, NY: McGraw-Hill। পৃষ্ঠা 15আইএসবিএন 9780073512297ওসিএলসি 436028205 
  46. Parisi, Laura (২০১২)। "Transnational"। Orr, Catherine Margaret; Braithwaite, Ann; Lichtenstein, Diane Marilyn। Rethinking women's and gender studies। New York: Routledge। পৃষ্ঠা 326। আইএসবিএন 9780415808316ওসিএলসি 738351967 
  47. Minoo (১৯৯৯)। Between Woman and Nation: Nationalisms, Transnational Feminisms, and the State (ইংরেজি ভাষায়)। Duke University Press। আইএসবিএন 978-0-8223-2322-8 
  48. Shome, R. (২০০৬)। "Transnational Feminism and Communication Studies: The Communication Review, 9(4), 255–267."। এসটুসিআইডি 145239698ডিওআই:10.1080/10714420600957266 
  49. Capeheart, Loretta; Milovanovic, Dragan (২০০৭)। Social Justice: Theories, Issues, and Movements । Piscataway: Rutgers University Press। পৃষ্ঠা 2আইএসবিএন 9780813541686ওসিএলসি 437192947 
  50. Johnson, Jennifer L.; Luhmann, Susanne (২০১৬)। "Social Justice for (University) Credit? The Women's and Gender Studies Practicum in the Neoliberal University. (Report)"। Resources for Feminist Research34 (3–4): 40। 
  51. "Women's and Gender Studies"Texas Tech University 
  52. Barker, C. (২০০৫)। Cultural Studies: Theory and Practice। London: Sage। আইএসবিএন 0-7619-4156-8 
  53. Mcnay, L (২০০৩)। "Agency, Anticipation and Indeterminacy in Feminist Theory. Feminist Theory, 4(2), 139–148"। এসটুসিআইডি 143574634ডিওআই:10.1177/14647001030042003 
  54. Hennessy, R.; Ingraham, C. (১৯৯৯)। "Materialist Feminism: A Reader in Class, Difference, and Women's Lives: Canadian Journal of Communication" 
  55. Shrewsbury, Carolyn M. (Fall ১৯৮৭)। "What is feminist pedagogy?"। Women's Studies Quarterly15 (3–4): 6–14। জেস্টোর 40003432 
    • See also: Shrewsbury, Carolyn M. (Fall ১৯৯৩)। "What is feminist pedagogy?"। Women's Studies Quarterly21 (3–4): 8–16। জেস্টোর 40022001 
  56. Rich, Adrienne (২০০৫)। "Claiming an Education"। Anderson, Chris; Runciman, Lex। Open Questions। New York: Bedford/St. Martin's। পৃষ্ঠা 608–611। 
  57. Berger, Michele Tracy (২০১৫)। Transforming Scholarship (Second সংস্করণ)। Abingdon, Oxon: Routledge। পৃষ্ঠা 35–40। 
  58. Bubriski, Anne; Semaan, Ingrid (২০০৯)। "Activist Learning vs. Service Learning in a Women's Studies Classroom"। Human Architecture: Journal of the Sociology of Self-Knowledge7 (3): 91–98। 
  59. Patai, DAPHNE; Koertge, Noretta (২০০৩)। Professing feminism: education and indoctrination in women's studies (English ভাষায়)। United States: HarperCollins। পৃষ্ঠা 13, 18। আইএসবিএন 9780739104552 

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  • Borland, K. (1991). That's not what I said: Interpretive conflict in oral narrative research. In Giuck, S. & Patai, D. (Eds.), Women's Words: The Feminist Practice of Oral History (pp. 63–76). NY: Routledge
  • Brooks, A. (2007). Feminist standpoint epistemology: Building knowledge and empowerment through women's lived experiences. In Hesse-Biber, S.N. & Leavy, P.L. (Eds.), Feminist Research Practice (pp. 53–82). CA: Sage Publications.
  • Brooks, A. & Hesse-Biber, S.N. (2007). An invitation to feminist research. In Hesse-Biber, S.N. & Leavy, P.L. (Eds.), Feminist Research Practice (pp. 1–24). CA: Sage Publications.
  • Buch, E.D. & Staller, K.M. (2007). The feminist practice of ethnography. In Hesse-Biber, S.N. & Leavy, P.L. (Eds.), Feminist Research Practice (pp. 187–221). CA: Sage Publications.
  • Dill, T.B & Zambrana, R. (2009) Emerging Intersections: Race, Class and Gender in Theory, Policy and Practice. NJ: Rutgers University Press.
  • Fausto-Sterling, Anne (2000). Sexing the body: gender politics and the construction of sexuality. New York: Basic Books. আইএসবিএন ০-৪৬৫-০৭৭১৪-৫.
  • Halse, C. & Honey, A. (2005). Unraveling ethics: Illuminating the moral dilemmas of research ethics. Journal of Women in Culture and Society, 30 (4), 2141–2162.
  • Harding, S. (1987). Introduction: Is there a feminist method? In Harding, S. (ed.), Feminism & Methodology. (pp. 1–14). IN: Indiana University Press.
  • Hesse-Biber, S.N. (2007). The practice of feminist in-depth interviewing. In Hesse-Biber, S.N. & Leavy, P.L. (Eds.), Feminist Research Practice (pp. 111–148). CA: Sage Publications.
  • Hyam, M. (2004). Hearing girls' silences: Thoughts on the politics and practices of a feminist method of group discussion. Gender, Place, and Culture, 11 (1), 105–119.
  • Leavy, P.L. (2007a). Feminist postmodernism and poststructuralism. In Hesse-Biber, S.N. & Leavy, P.L. (Eds.), Feminist Research Practice (pp. 83–108). CA: Sage Publications.
  • Leavy, P.L. (2007b). The practice of feminist oral history and focus group interviews. In Hesse-Biber, S.N. & Leavy, P.L. (Eds.), Feminist Research Practice (pp. 149–186). CA: Sage Publications.
  • Leavy, P.L. (2007c). The feminist practice of content analysis. In Hesse-Biber, S.N. & Leavy, P.L. (Eds.), Feminist Research Practice (pp. 223–248). CA: Sage Publications.
  • Leckenby, D. (2007). Feminist empiricism: Challenging gender bias and “setting the record straight.” In Hesse-Biber, S.N. & Leavy, P.L. (Eds.), Feminist Research Practice (pp. 27–52). CA: Sage Publications.
  • Lykes, M.B. & Coquillon, E. (2006). Participatory and Action Research and feminisms: Towards Transformative Praxis. In Sharlene Hesse-Biber (Ed.). Handbook of Feminist Research: Theory and Praxis. CA: Sage Publications.
  • Miner-Rubino, K. & Jayaratne, T.E. (2007). Feminist survey research. In Hesse-Biber, S.N. & Leavy, P.L. (Eds.), Feminist Research Practice (pp. 293–325). CA: Sage Publications.

আরও পড়ুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা