নারায়ণ দেসাই
নারায়ণ দেসাই (গুজরাটি: નારાયણ દેસાઇ) (২৪ ডিসেম্বর ১৯২৪– ১৫ মার্চ ২০১৫) একজন ভারতীয় গান্ধীবাদী ও লেখক ছিলেন।
নারায়ণ দেসাই | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ১৫ মার্চ ২০১৫ | (বয়স ৯০)
জাতীয়তা | ব্রিটিশ ভারতীয় (১৯২৪-১৯৪৭) ভারতীয় (১৯৪৭-২০১৫) |
পেশা | লেখক, সমাজকর্মী |
প্রতিষ্ঠান | পিস ব্রিগেডস ইন্টারন্যাশনাল ওয়ার রেজিস্টার্স ইন্টারন্যাশনাল |
পরিচিতির কারণ | গান্ধীবাদী, লেখক, শান্তিকামী |
দাম্পত্য সঙ্গী | উত্তরা চৌধুরী |
প্রথম জীবন
সম্পাদনামহাত্মা গান্ধীর ব্যক্তিগত সচিব ও জীবনীকার মহাদেব দেসাইয়ের পুত্র নারায়ণ[১] ১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৪শে ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের বলসর নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন।[২] তার শৈশব ও কৈশোর সেবাগ্রাম ও সবরমতী আশ্রমে কাটে। পিতার নিকট আশ্রমে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন ও চরকা কাটার প্রশিক্ষণ পান।[৩]
সামাজিক আন্দোলন
সম্পাদনাস্বাধীনতা সংগ্রামী নবকৃষ্ণ চৌধুরী ও মালতি দেবীর কন্যা উত্তরা চৌধুরীকে বিবাহের পর নবদম্পতি সুরাট থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে বেদছি গ্রামে নঈ তালীম বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। বিনোবা ভাবের ভূদান আন্দোলনে যোগদান করে নারায়ণ দেসাই সমগ্র গুজরাত পদব্রজে পরিভ্রমণ করে ধনীদের নিকট হতে জমি নিয়ে দরিদ্র ভূমিহীন গ্রামবাসীদের মধ্যে ভাগ করে দেন। তিনি ভূদান আন্দোলনের মুখপত্র হিসেবে ভূমিপুত্র নামক একটি পত্রিকা চালু করেন ও ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এই পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[২]
রাজনীতি
সম্পাদনানারায়ণ দেসাই ভারতে জরুরী অবস্থার অন্যতম সমালোচক ছিলেন। জয়প্রকাশ নারায়ণের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী নারায়ণ অ-কংরেসী রাজনৈতিক দলগুলিকে একত্র করে জনতা পার্টি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
শান্তি আন্দোলন
সম্পাদনাতিনি বিনোবা ভাবে দ্বারা নির্মিত ও জয়প্রকাশ নারায়ণের নেতৃত্বাধীন অখিল ভারতীয় শান্তি সেনা মন্ডলে যোগদান করেন ও পরবর্তীকালে এই সংগঠনের সাধারণ সচিব হয়ে[৪] তিনি তরুণদেরকে এই সংগঠনে যোগ দিতে উদ্বুদ্ধ করেন, যারা তার দ্বারা প্রশিক্ষিত হয়ে সারা ভারতে বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক বিবাদের মধ্যস্থতা ও নিষ্পত্তি ঘটাতে সক্ষম হন। ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দে নারায়ণ দেসাই পিস ব্রিগেডস ইন্টারন্যাশনাল নামক আন্তর্জাতিক শান্তিকামী সংগঠন তৈরীতে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮৯ থেকে ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ওয়ার রেজিস্টার্স ইন্টারন্যাশনাল নামক একটি আন্তর্জাতিক যুদ্ধবিরোধী সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি আন্তর্জাতিক শান্তির জন্য ইউনেস্কো থেকে পুরস্কার লাভ করেন। জয়প্রকাশের মৃত্যুর পর তিনি বেদছি গ্রামে ফিরে গিয়ে সম্পূর্ণ ক্রান্তি বিদ্যালয় স্থাপন করেন, যেখানে গান্ধীবাদী জীবনযাপন ও অহিংসা সম্বন্ধে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
শেষ জীবন
সম্পাদনা২০০৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে নারায়ণ দেসাই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মহাত্মা গান্ধীর বাণী আবৃতি করেন। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৩শে জুলাই থেকে ২০০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৩শে জুলাই তিনি গুজরাত বিদ্যাপীঠের চ্যান্সেলরের দায়িত্ব পালন করেন[২] ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ১০ই ডিসেম্বর তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। যদিও কিছুদিনের মধ্যে তার চেতনা ফিরে আসে, কিন্তু প্রাত্যাহিক কাজে তার স্বাচ্ছন্দ্য ফিরে আসে না। অবশেষে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ই মার্চ সুরাটের মহাবীর ট্রমা সেন্টারে তার মৃত্যু হয়। তার দ্বারা স্থাপিত সম্পূর্ণ ক্রান্তি বিদ্যালয়ে সেইদিনই তার সৎকার করা হয়।[২]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Pandiri, Ananda M. A Comprehensive, Annotated Bibliography on Mahatma Gandhi. Westport, CT: Greenwood Press, 1995. 35.
- ↑ ক খ গ ঘ PTI (১৫ মার্চ ২০১৫)। "Noted Gandhian Narayan Desai passes away"। The Economic Times। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৫।
- ↑ "Narayan Desai passes away"। DeshGujarat। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৫।
- ↑ Hardiman, David. Gandhi in His Times and Ours: The Global Legacy of His Ideas. New York: Columbia UP, 2003. 192.