নাফ নদী
নাফ নদ (বর্মী: နတ်မြစ်) বাংলাদেশের পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের কক্সবাজার জেলার একটি নদ। নদটির দৈর্ঘ্য ৬৩ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১৩৬৪ মিটার এবং প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক নাফ নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর “পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের নদী নং ০৭”।[১]
নাফ নদ | |
নাফ নদ
| |
দেশসমূহ | বাংলাদেশ, মিয়ানমার |
---|---|
অঞ্চল | চট্টগ্রাম বিভাগ |
জেলা | কক্সবাজার জেলা |
উৎস | মিয়ানমার |
মোহনা | বঙ্গোপসাগর |
দৈর্ঘ্য | ৬৩ কিলোমিটার (৩৯ মাইল) |
নাফ নদের গড় গভীরতা ১২৮ ফুট (৩৯ মি), এবং সর্বোচ্চ গভীরতা ৪০০ ফুট (১২০ মি)। নদীটিকে প্রথম অ্যাংলো-বার্মা যুদ্ধের অন্যতম একটি কারণ বলে মনে করা হয়।
প্রবাহ
সম্পাদনাবাংলাদেশের দক্ষিণ প্রান্তে বার্মা সীমান্তে অবস্থিত একটি নদী। এটি কক্সবাজার জেলার দক্ষিণ পূর্ব কোনা দিয়ে প্রবাহিত। মূলত এটি কোন নদী নয়, বঙ্গোপসাগরের বর্ধিত অংশ। এর পানি তাই লবনাক্ত। এর পশ্চিম পাড়ে বাংলাদেশের টেকনাফ উপজেলা এবং পূর্ব পাড়ে বার্মার আরাকান প্রদেশের আকিয়াব অবস্থিত। এর প্রস্থ স্থান বিশেষে ১.৬১ কিমি হতে ৩.২২ কিমি হয়ে থাকে। নদীটির মোহনায় শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্ট মার্টিন্স দ্বীপ অবস্থিত।
ঘটনা
সম্পাদনানাফ নদীতে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু আলোচিত ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে রয়েছে, মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক জেলে ও শরণার্থীদের গুলিবর্ষণ, বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিজিবি কর্তৃক বার্মার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো এবং সবশেষে কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গার মিয়ানমার থেকে নাফ নদী দিয়ে শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণ। নিম্নে কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে:
- ফেব্রুয়ারি ১৯৯২ — বার্মার আধাসামরিক বাহিনী লুন টিনের সদস্যরা নাফ নদী পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে দিকে আসা ২০ জন শরণার্থীকে গুলি করে হত্যা করে।[২]
- ২৪ মার্চ ১৯৯৪ — মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের একটি দল নাফ নদীতে ছোট নৌকার মাধ্যমে মাছ শিকার করছিল, এসময় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পশ্চিমের কমান্ডের সদস্যরা জেলেদের কাছ থেকে ঘুষ দাবি করেন কিন্তু জেলার টাকা না দিতে পারায় তাদের রশি দিয়ে বেঁধে মিয়ানমারের মাংডু শহরের বালু খালি গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়।[২] ৫ দিন ধরে ৮ জন রোহিঙ্গা জেলেকে নির্যাতনের পর তাদের ফায়ারিং স্কোয়াডে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়।[৩]
- ২৭ অক্টোবর ২০০১ — নাফ নদীতে মাছ ধরার সময় বার্মার সীমান্ত রক্ষী বাহিনী একজন বাংলাদেশিকে হত্যা করে, ২ জনকে আহত করে এবং ১৩ জনকে অপহরণ করে।[৪]
- ২২ জানুয়ারি ২০০৫ — নাফ নদী অতিক্রম করার সময় মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ৭০ জনকে গুলি করে হত্যা করে। অস্ত্র বিহীন এতোগুলো মানুষকে হত্যা করার পর মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর পক্ষ থেকে তাদের কার্যক্রমকে বৈধতা দেওয়া জন্য বলা হয়েছিল, “লোকগুলো চাল পাচারের সাথে জড়িত বলে তাদের সন্দেহ”।[৫]
- জুন ২০১২ — মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে হাজার হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী নাফ নদী পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে যদিও বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী তাদের বেশ কয়েক দলকে ফেরত পাঠিয়েছিল।[৬][৭][৮][৯] ২০১২ সালের ১১ই জুলাই মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি থেইন সেইন মিয়ানমার থেকে সব রোহিঙ্গাকে বহিষ্কারের কথা বলেন অথবা জাতিসংঘে প্রস্তাব করেন ৩ লক্ষ রোহিঙ্গাকে অন্য কোথায় সড়িয়ে নিতে যদিও জাতিসংঘ প্রস্তাবটি সাথে সাথেই বাতিল করে দেয়।[৯]
- আগস্ট ২০১৭ — বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের ঘুমডাম সীমান্ত চৌকির স্টেশন প্রধান বলেন, মায়নমারের সেনাবাহিনী শরণার্থী হিসেবে নাফ নদী পাড়ি দিয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের উপর গুলিবর্ষণ করেছে। এএফপির এক প্রতিবেদকের তথ্য মতে, তিনি পলায়নরত রোহিঙ্গাদের উপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গুলিবর্ষণ ও সীমান্তে মাইন পেতে রাখার ঘটনা দেখেছেন।[১০]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক (ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। "পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের নদী"। বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি (প্রথম সংস্করণ)। ঢাকা: কথাপ্রকাশ। পৃষ্ঠা ২৮৬। আইএসবিএন 984-70120-0436-4।
- ↑ ক খ "Arakan: A Field of Muslim Genocide, News From Bangladesh"। bangladesh-web.com। ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
- ↑ "Burma Human Rights Yearbooks (1994-2008)"। Online Burma/Myanmar Library (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-০৯।
- ↑ "Burmese troops kill one, abduct 13, says Dhaka"। arabnews.com।
- ↑ "2. Extra-judicial Killing, Summary or Arbitrary Execution"। burmalibrary.org। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
- ↑ "Backgrounder: the Rohingya of Myanmar - Geopoliticalmonitor.com"। Geopoliticalmonitor.com।
- ↑ Burma: Mass Arrests, Raids on Rohingya Muslims, Human Rights Watch, July 5, 2012
- ↑ Dwaipayan Barua (১২ জুন ২০১২)। "Border guards push back 500"। দ্য ডেইলি স্টার।
- ↑ ক খ Syed Zain Al-Mahmood (৭ আগস্ট ২০১২)। "Persecuted Burmese tribe finds no welcome in Bangladesh: Bangladesh turns away and bans aid to thousands of displaced Muslim Rohingya people trying to cross river to Teknaf"। The Guardian।
- ↑ "Myanmar security forces 'fire on fleeing Rohingya' amid violence in Rakhine"। SBS। ২৭ আগস্ট ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৭ আগস্ট ২০১৭।
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |