নাচোল উপজেলা
নাচোল উপজেলা, বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা।ইলামিত্রের স্মৃতি বিজড়িত এই এলাকা বর্তমানে শিক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নতি লাভ করেছে।
নাচোল | |
---|---|
উপজেলা | |
মানচিত্রে নাচোল উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°৪৩′৪৮.০০০″ উত্তর ৮৮°২৩′২৪.০০০″ পূর্ব / ২৪.৭৩০০০০০০° উত্তর ৮৮.৩৯০০০০০০° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | রাজশাহী বিভাগ |
জেলা | চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ২৮৩.৬৮ বর্গকিমি (১০৯.৫৩ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (2011)[১] | |
• মোট | ১,৪৬,৬২৭ |
• জনঘনত্ব | ৫২০/বর্গকিমি (১,৩০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৬৮.০৫% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৬৩০০ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৫০ ৭০ ৫৬ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
অবস্থান ও আয়তন
সম্পাদনা২৮৩.৬৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই উপজেলার উত্তর-পশ্চিমে গোমস্তাপুর উপজেলা, দক্ষিণ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা, পূর্বে তানোর উপজেলা ও নিয়ামতপুর উপজেলা। মহানন্দা, হাজারদিঘী, দামুস বিল ইত্যাদি এ এলাকার উল্লেখযোগ্য নদী ও খাল।
ইতিহাস
সম্পাদনা১৯৪৯ সালে ইলা মিত্রের নেতৃত্বে সমগ্র নাচোলে তেভাগা আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। নাচোলের কৃষকরা বিশেষ করে সাঁওতালরা ছিল এই আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি। এই আন্দোলন “নাচোল আন্দোলন” বা “নাচোলের কৃষক আন্দোলন” নামেও পরিচিত।
প্রশাসনিক এলাকা
সম্পাদনা১৯১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত নাচোল থানা ১৯৮৪ সালে উপজেলায় উন্নীত হয়। একটি নাচোল সদর পৌরসভা ও ৪টি ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত। ৫.১৫ বর্গ কিলোমিটারের নাচোল শহর দুটি মৌজা নিয়ে গঠিত।
পৌরসভা
সম্পাদনাইউনিয়ন পরিষদ সমূহ
সম্পাদনাজনসংখ্যার উপাত্ত
সম্পাদনা১,৪৬,৬২৭ জন। উল্লেখযোগ্য উপজাতি সাঁওতাল। সাক্ষরতার গড় হার ৬৮.০৫%। নাচোল শহরের জনসংখ্যা প্রায় ৭৩৯১ জন; পুরুষ ৫৩.২%; মহিলা ৪৬.৮% জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১৫৪০ জন।
স্বাস্থ্য
সম্পাদনা- উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্স - ১টি,
- স্বাস্হ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র - ৪টি।
- নাচোল ডায়াবেটিক হাসপাতাল-১ টি।
প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩৮টি
সম্পাদনানাচোল উপজেলা বরেন্দ্র অঞ্চলভুক্ত হওয়ায় এবং জনবসতি অনেক কম হওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশপাশের উপজেলা থেকে তুলনামূলক কম।কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে এই উপজেলা তাদের শিক্ষাব্যবস্থায় অনেক অগ্রগতি লাভ করেছে। জেলার শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান এশিয়ান স্কুল এন্ড কলেজ এই উপজেলায় অন্তর্ভুক্ত। এ উপজেলায় কলেজ ৮টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৮টি, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩৮টি, বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ৪৭টি।
কলেজের তালিকা[২]
- নাচোল সরকারি কলেজ
- নাচোল মহিলা কলেজ
- মির্জাপুর কলেজ
- শহীদ স্মৃতি ডিগ্রী কলেজ বকুলতলা বাজার
- রাজবাড়ী কলেজ
- সোনাইচন্ডী কারিগরি মহাবিদ্যালয়
- হাজীডাঙ্গা কারিগরি মহাবিদ্যালয়
- এশিয়ান স্কুল এন্ড কলেজ,নাচোল
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তালিকা[৩]
- নাচোল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়
- নাচোল সরকারি খ.ম উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়
- মুন্সী হযরত আলী উচ্চ বিদ্যালয়
- গোলাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়
- নেজামপুর উচ্চ বিদ্যালয়
- মাক্তাপুর উচ্চ বিদ্যালয়
- ভেরেন্ডী উচ্চ বিদ্যালয়
- ভাতসা উচ্চ বিদ্যালয়
- রাজবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়
- নাসিরাবাদ দুলাহার উচ্চ বিদ্যালয়
- মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয়
- লক্ষীপুর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়
- দোগাছী বরেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়
নাচোল উপজেলা সদরের মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহঃ
- এশিয়ান স্কুল এন্ড কলেজ
- নাচোল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়
- পাঠশালা স্কুল এন্ড কলেজ
- নাচোল উপজেলা স্কুল
- নাচোল খ ম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
- মুন্সী হযরত আলী উচ্চ বিদ্যালয়
কৃষি
সম্পাদনা- জমি
- মোট চাষযোগ্য জমি ২৬,৩২৫ হেক্টর,
- পতিত জমি ২০১ হেক্টর,
- এক-ফসলী জমি ৫৫%,
- দ্বি-ফসলী জমি ৪২%,
- ত্রি-ফসলী জমি ২.২৪% এবং
- অনাবাদী জমি ০.৭৬%।
- ভূমি মালিকানা
কৃষকদের মধ্যে ৩০% ভূমিহীন, ৩৯% প্রান্তীয়, ২৫% মধ্যবিত্ত এবং ৬% ধনী। এখানে মাথাপিছু জমির পরিমাণ ০.১৬ হেক্টর।
- জমির মূল্য
প্রতি হেক্টর প্রথম শ্রেনীর কৃষি জমির মূল্য ২০,০০,০০০ থেকে ৩০,০০,০০০ টাকা।
- প্রধান ফসল - ধান, গম, ডাল ও শাক-সবজি।
- বিলুপ্ত ও বিলুপ্তপ্রায় শষ্য - চীনা, নীল, কোদা, মাইর্যা (এক প্রকার ডাল)।
- প্রধান ফল - আম, কাঁঠাল, লিচু, জাম, তাল, নারিকেল, বরই ইত্যাদি।
- খামার - মৎস্য খামার ১টি, দুগ্ধ খামার ২টি, পোল্ট্রি ফার্ম ২৭টি।
অর্থনীতি
সম্পাদনা- পেশা - কৃষি ৪২.৪৩%, কৃষিজীবী শ্রমিক ৩৪.৩১%, মজুর ৩৪.১১%, ব্যবসা ৯.০৭%, চাকুরি ২.৮%, অন্যান্য ৮.২৪%।
- কুটির শিল্প - মাটির তৈজসপত্র তৈরি ও বাঁশ-বেতের কাজ।
- প্রধান রপ্তানী পণ্য - ধান, আম, পেয়ারা, বরই ইত্যাদি ।
যোগাযোগ ব্যবস্থা
সম্পাদনা- সড়কপথ - পাকা ৭১ কি.মি., আধাপাকা ৭ কি.মি. , কাঁচা ৩৫৫ কি.মি.;
- রেলপথ - ২০.৫ কি.মি.;
- জলপথ - ২ নটিক্যাল মাইল।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি
সম্পাদনা- ইলা মিত্র।১৯৪৯ সালে ইলা মিত্রের নেতৃত্বে সমগ্র নাচোলে তেভাগা আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। নাচোলের কৃষকরা বিশেষ করে সাঁওতালরা ছিল এই আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি। এই আন্দোলন “নাচোল আন্দোলন” বা “নাচোলের কৃষক আন্দোলন” নামেও পরিচিত।
- মাহিয়া মাহি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়িকা, তানোরের মুণ্ডুমালা নামক জায়গায় জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু তার নিজস্ব বাসভবন ছিল নাচোল উপজেলার মাক্তাপুর এলাকায়।
দর্শনীয় স্থান
সম্পাদনা- রাজবাড়ী - আঝইর গ্রাম;
- স্বপ্নপল্লী - জংলা দোগাছী নাচোল;
- রূপসী বাংলা পার্ক, নাচোল;
- গ্রীনল্যান্ড পার্ক, কন্যানগর,নাচোল;
বিবিধ
সম্পাদনা- হাট-বাজার ও মেলা
১৫টি হাট-বাজার এবং ৬টি মেলা (নাচোল দুর্গাপূজা মেলা উল্লেখযোগ্য)।
- শিল্প ও সংষ্কৃতি
- ক্লাব - ১৩টি,
- পাবলিক লাইব্রেরী - ৪টি,
- থিয়েটার গ্রুপ - ১টি,
- সাহিত্য সংঘ - ১টি,
- সিনেমা হল - ২টি,
- অডিটোরিয়াম - ১টি,
- অটো রাইস মিল - ২টি,
- ম্যাংগো জুস ফ্যাক্টরি - ১টি।
- সিনেমা হল দুটি থাকলেও বর্তমানে দুইটি হলই বন্ধ ।
- এন.জি.ও.
ব্রাক, প্রশিকা, কারিতাস, আশ্রয়, বাংলাদেশ ইসলামিক ইয়থ সোসাইটি (বাইস)।
- ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান
মসজিদ ৩৬৭টি এবং মন্দির ৪টি।
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "এক নজরে নাচোল উপজেলা"। বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। জুন ২০১৪। ৬ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০১৪।
- ↑ জেলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ। "নাচোল উপজেলার কলেজের তালিকা"। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা। ১৪ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ জেলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ। "নাচোল উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তালিকা"। chapainawabganj.gov.bd। ১৩ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ নভেম্বর ২০১৬।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাএই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |