নয়নতারা (উদ্ভিদ)

একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ/ ফুল বিশেষ

নয়নতারা, একটি উদ্ভিদ, যা তার লালচে গোলাপি পাঁচ পাপড়ির ফুল গুলোর জন্য পরিচিত। এর বৈজ্ঞানিক নাম Catharanthus roseus, এটি Apocynaceae (dogbane, অথবা oleander পরিবার) পরিবারের একটি উদ্ভিদ। বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নামেও পরিচিত, যেমন Cape periwinkle, Madagascar periwinkle, periwinkle, sadabahar, sadaphuli, sadasuhagi, sadsuhagan ইত্যাদি। এর আরেকটি প্রজাতি হলো Vinca rosea। জানা যায়, এর আদি উৎপত্তিস্থল মাদাগাস্কার

Catharanthus roseus
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: উদ্ভিদ
বিভাগ: সপুষ্পক উদ্ভিদ
শ্রেণী: Magnoliopsida
বর্গ: Gentianales
পরিবার: Apocynaceae
গণ: Catharanthus
প্রজাতি: C. roseus
দ্বিপদী নাম
Catharanthus roseus
(কার্ল লিনিয়াস) George Don
প্রতিশব্দ

Vinca rosea

Catharanthus roseus

বর্ণনা

সম্পাদনা

আদি নিবাস মাদাগাস্কার তবে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানআফ্রিকা মহাদেশসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশে এর দেখা পাওয়া যায়। এটি একটি গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। বর্ষজীবী। কখনো কখনো অনেক বছর বেঁচে থাকতেও দেখা যায়। তবে পুরনো হয়ে গেলে ও যত্নে না রাখলে গাছটি শক্ত হয়ে যায়, ফুলও ধরে না। ২/৩ ফুটের বেশি বাড়তে দেখা যায় না। পাতা বিপরীত, মসৃণ, আয়তাকার বা ডিম্বাকৃতি।[] পাঁচ পাপড়ি বিশিষ্ট ফুল। গোলাপি, হালকা গোলাপি ও সাদা রঙের ফুল ফোটে। তবে গন্ধ নেই ফুলে। কাণ্ড কোণাচে ধরনের, রঙ বেগুনি বা সাদা, বারোমাসী উদ্ভিদ, বীজের সাহায্যে বংশ বৃদ্ধি হয়।

 
বাংলাদেশের নয়নতারা ফুল

নয়নতারা ওয়েস্ট ইণ্ডিজের প্রজাতি। ৬০-৮০ সেমি উঁচু। এদের কাণ্ড কোণাচে বেগুনি। এদের পাতা আয়তাকার, গোড়ার দিকে অনেকটা ডিম্বাকার, ৪-৭ সেমি লম্বা, মসৃণ। এসব গাছে প্রায় সারা বছরই ফুল ফোটে। তবে শীতের সময় এ গাছের বৃদ্ধি তুলনামূলক ভাবে কমে যায়। তেমন একটা ফুল ফোটে না। ফুল আকারে ছোট হয়ে যায়। তবে শীতের শেষে এর বৃদ্ধি স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। ফুল সাদা বা গোলাপি রঙের, পুরো ফুল একরঙা হলেও ফুলের মধ্যবিন্দুটি অন্য রংয়েরও হয়। যেমন সাদার মাঝে লাল, গোলাপীর মাঝে হলুদ। ফুলটি গন্ধহীন। ফুলের মাপ ৩-৩.৫ সেমি চওড়া, দলনল সরু, ২.৫ সেমি লম্বা, ৫ পাপড়ির মাঝখানে একটি গাঢ় রঙের ফোঁটা। এদের বীজ চাষ করা হয়। গাছে বীজ পরিপক্ক হওয়ার পর বীজের আবরনটি ফেটে যায় ও বীজ আশেপাশে ছরিয়ে যায়। পরিপক্ক বীজের রং কালো। দেখতে অনেকটা কালোজিরার মতো হয়। বাগান করে চাষ করায় জনপ্রিয়তা রয়েছে, যেকোন ফুল বা ফলের বাগানে এমনকি বাসার ছাদে বা বারান্দায়ও লাগানো যায়।[] বর্তমানে হাইব্রিড প্রজাতির নানান আকর্ষণীয় বর্ণের ( গাঢ় গোলাপি, লাল, গাঢ় বেগুনি, ইত্যাদি) নয়নতারা ফুলের চাষ হতে দেখা যায়।

রাসায়নিক উপাদান

সম্পাদনা

গাছটির পাতা, ফুল ও ডালে বহু মূল্যবান রাসায়নিক উপাদান পাওয়া যায়। ৭০ টিরও বেশি উপক্ষার পাওয়া যায় এ গাছ থেকে। ভিনক্রিস্টিন ও ভিনব্লাস্টিন নামের উপক্ষার দুটি লিউকেমিয়া রোগে বিশেষ ব্যবহার রয়েছে। ডেলটা-ইহোহিম্বিন নামের এক প্রকার রাসায়নিক পদার্থ পাওয়া যায়।

ব্যবহার

সম্পাদনা

ক্রিমি রোগে, মেধাবৃদ্ধিতে, লিউকোমিয়া, মন ভালো করে,রক্ত প্রদরে, রক্তচাপ বৃদ্ধিতে, সন্ধিবাত, বহুমূত্র সহ নানা রোগে এর ব্যবহার রয়েছে। বোলতা প্রভৃতির হুলের জ্বালায়/কীট দংশনে দ্রুত উপশম পেতে নয়নতারা ফুল বা পাতার রস ব্যবহারের প্রচলন লক্ষ্য করা যায়।

চিত্রসম্ভার

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "চোখ জুড়ানো নয়নতারা"The Daily Sangram। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ আগস্ট ২০১৩ 
  2. দ্বিজেন শর্মা, ফুলগুলি যেন কথা, বাংলা একাডেমী, ঢাকা, ডিসেম্বর ২০০৩, পৃষ্ঠা-৫৬।

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা