মোহাম্মদ নজমুল হক (১ ফেব্রুয়ারি ১৯২৪-১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর হাতে অপহরণ ও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত চট্টগ্রামের দুর্নীতি দমন বিভাগের উপ-পরিচালক ছিলেন।[][] ২০১৫ সালে তার জন্মস্থান নওগাঁ জেলায় শহীদ নাজমুল হক পুলিশ ব্যারাক সংস্কারের পরে তার নামে নামকরণ করা হয়।[][] ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার প্রদান করে।[][][][][]

মোহাম্মদ নজমুল হক
পি.এস.পি, পি.পি.এম[]
জন্ম(১৯২৪-০২-০১)১ ফেব্রুয়ারি ১৯২৪
মৃত্যু১৯৭১(1971-00-00) (বয়স ৪৬–৪৭)
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)
 পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পেশাদুর্নীতি দমন বিভাগের উপপরিচালক ও পুলিশ
কর্মজীবন১৯৫০ -১৯৭১
পরিচিতির কারণস্বাধীনতা পুরস্কার (২০১৭) (মরণোত্তর)[]
সন্তানশহিদুল ইসলাম

জীবন এবং কর্মজীবন

সম্পাদনা

১৯৪৪ সালে নজমুল হক নওগাঁয় জন্মগ্রহণ করেন।[][] তিনি নওগাঁ কে.ডি. সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট এবং রাজশাহী কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট অর্জন করেন। তারপরে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক (এলএলবি) ডিগ্রি অর্জন করেন। নজমুল হক উচ্চতর পুলিশ প্রশিক্ষণের জন্য ওয়াশিংটন ডিসির আন্তর্জাতিক পুলিশ একাডেমিতে অংশগ্রহণ করেন।[]

নজমুল হক রাজশাহীর নিকটবর্তী সারদা বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি থেকে পুলিশ প্রশিক্ষণ শেষ করেন। ১৯৫০ সালে তিনি ময়মনসিংহে উপ-বিভাগীয় পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে পূর্ব পাকিস্তান পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি ফরিদপুর, কুষ্টিয়া এবং বরিশাল জেলায় দায়িত্ব পালন করেন।[][]

১৯৬৪ সালে নজমুল হকের নাম পাকিস্তান পুলিশ সার্ভিসে (পি.এস.পি) অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরবর্তীকালে ১৯৬৭ সালে তিনি পাকিস্তান পুলিশ পদক পান।[]

১৯৭১ সালে চট্টগ্রামের দুর্নীতি দমন বিভাগের উপ-পরিচালকের দায়িত্ব পালনকালে, শেখ মুজিবুর রহমানের জাতীয় আহ্বানে সাড়া দিয়ে নজমুল হক পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে দামপাড়া পুলিশ লাইনে সংঘর্ষে কর্মকর্তাদের নেতৃত্ব দেন।[][]

২০১৫ সালে নজমুল হকের সম্মানে নওগাঁ পুলিশ লাইনে শহীদ নাজমুল হক পুলিশ ব্যারাকের উদ্বোধন করা হয়। [][]

স্বাধীনতা পুরস্কার

সম্পাদনা

২০১৭ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ঘোষিত স্বাধীনতা পুরস্কারেরস্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ ক্ষেত্রে নজমুল হককে মরণোত্তর সন্মাননা দেওয়া হয়।[][][][][] তার পক্ষে পুরস্কারটি তার ছেলে শহিদুল ইসলাম গ্রহণ করে।[][১০][১১]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের তালিকা"বাংলাদেশ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মে ২০২১ 
  2. "Bangladesh Independence Day Award Ceremony 2017"YouTube। ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১ 
  3. Miah, Nurul Haque (নভেম্বর ১৭, ২০১৫)। "A Profile of Shaheed Muhammad Nazmul Haque" (পিডিএফ)Barta। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১ 
  4. "Shaheed Nazmul Haque Police Barracks inaugurated at Naogaon"Daily Sun (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-০৫-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-০১ 
  5. "Shaheed Nazmul Haque Police Barracks inaugurated at Naogaon"Daily Sun। নভেম্বর ১৮, ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১ 
  6. "স্বাধীনতা পুরস্কার ২০১৭" (পিডিএফ)cabinet.gov.bd। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মে ২০২১ 
  7. "২০১৭ সালের স্বাধীনতা পদক তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী"ডিএমপি নিউজ। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৫-২৫ 
  8. ডটকম, জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর। "স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছে বিমান বাহিনী"bangla.bdnews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৫-২৫ 
  9. প্রতিবেদক, নিজস্ব। "স্বাধীনতা পুরস্কার পেলেন ১৫ ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠান"Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৫-২৫ 
  10. "Air Force, 15 people get Independence Award 2017"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-০২-১৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-০১ 
  11. Correspondent, Senior; bdnews24.com। "Bangladesh Air Force, 15 individuals win Independence Award 2017"bdnews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-০১ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা