ধাতবতা, জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং বিশ্বতত্ত্বে কোন বস্তুর ধাতবতা বলতে ঐ বস্তুর রাসায়নিক উপাদানের কত ভাগ হাইড্রোজেনহিলিয়ামের চেয়ে ভারী পদার্থ দিয়ে গঠিত তা বোঝায়। অর্থাৎ জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় হাইড্রোজেন এবং হিলিয়ামের চেয়ে ভারী সকল পদার্থকেই বলা হয় মেটাল তথা ধাতু। এটা ধরে নেয়ার সুবিধা আছে। জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক বস্তু যেমন তারার প্রায় পুরোটাই হাইড্রোজেন এবং হিলিয়াম দিয়ে গঠিত হয়, তাই এই দুটো পদার্থের বাইরে সবগুলোকে একটি সাধারণ শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত করা বেশ সুবিধাজনক। উদাহরণ- যদি কোন নীহারিকায় কার্বন, নাইট্রোজেন এবং অক্সিজেন সাধারণের চেয়ে একটু বেশি থাকে তাহলে তাকে আমরা ধাতুসমৃদ্ধ বস্তু বলতে পারি যদিও এই পদার্থগুলোর কোনটিই রসায়ন বা পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায় ধাতু নয়। তাই রসায়ন এবং পদার্থবিজ্ঞানে ধাতু শব্দটিকে যে অর্থে ব্যবহার করা হয় জ্যোতির্বিজ্ঞানে সেই অর্থ করা যাবে না। দুটি ধাতুকে তাই মিলিয়ে ফেলাও ঠিক হবে না।

গ্লোবুলার ক্লাস্টার এম ৮০। গ্লোবুলার ক্লাস্টারে তারাগুলি পপুলেশন ২ -এর প্রধানত পুরানো ধাতবতার দরিদ্র সদস্য।


ভারী উপাদানের উপস্থিতি নক্ষত্রের নিউক্লিয়োসিন্থেসিস অন্তর্গত, এই তত্ত্ব যে মহাবিশ্বে হাইড্রোজেন এবং হিলিয়ামের চেয়ে বেশি ভারী উপাদান ("ধাতু", পরবর্তীতে) তারা বিকশিত হওয়ার সাথে সাথে তারাগুলির অন্ত:সার গঠিত হয়। সময়ের সাথে সাথে, তারার বাতাস এবং সুপারনোভা ধাতুগুলি পার্শ্ববর্তী পরিবেশে জমা হয়, আন্তঃকেন্দ্রীয় মাধ্যমকে সমৃদ্ধ করে এবং নতুন তারা জন্মের জন্য সামগ্রী সরবরাহ করে। এটি অনুসরণ করে যে, ধাতব-দরিদ্র প্রারম্ভিক মহাবিশ্বে তৈরি হওয়া প্রবীণ প্রজন্মের তারায় সাধারণত তরুণ প্রজন্মের তারার তুলনায় কম ধাতবসত্তা রয়েছে, যা আরও বেশি ধাতব সমৃদ্ধ মহাবিশ্ব গঠন করে।

বিভিন্ন ধরনের নক্ষত্রে প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। যা ধাতবতার জন্য চিহ্নিত করে বর্ণালী বিশিষ্টতার উপর ভিত্তি করে, ১৯৪৪ সালে জ্যোতির্বিদ ওয়াল্টার বাডে তারকাদের দুটি পৃথক জনগোষ্ঠীর অস্তিত্বের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। [] এগুলি সাধারণত পপুলেশন-১ (ধাতব সমৃদ্ধ) এবং পপুলেশন-২ (ধাতব-দরিদ্র) তারা হিসাবে পরিচিত হয়। পপুলেশন-৩ হিসাবে পরিচিত তৃতীয় প্রকারের তারকা ১৯৭৮ সালে চালু হয়েছিল। [][][] এই চূড়ান্ত ধাতব-অতি দরিদ্র নক্ষত্রগুলি মহাবিশ্বে নির্মিত "প্রথম" নক্ষত্র হিসাবে তাত্ত্বিকভাবে ধরা হয়েছিল।

সমীকরণ

সম্পাদনা

ধাতবতা নির্ণয়ের সমীকরণ রয়েছে। সকল বস্তুর ধাতবতা সূর্যের সাপেক্ষে প্রকাশ করা হয়। সূর্যের ধাতবতা আনুমানিক ১.৮%। অর্থাৎ মোট ভরের শতকরা ১.৮ ভাগের জন্য দায়ী ধাতুগুলো। সুবিধার জন্য ধাতবতাকে অনেক সময়ই লোহা এবং হাইড্রোজেনের অনুপাত হিসেবে প্রকাশ করা হয়। তাহলে কোন বস্তুর লোহা-হাইড্রোজেন অনুপাত দাড়াচ্ছে:

 

যেখানে   এবং   হচ্ছে প্রতি একক আয়তনে উপস্থিত লোহা এবং হাইড্রোজেন পরমাণুর সংখ্যা। ধাতবতার জন্য অনেক সময় "ডেক্স" এককটি ব্যবহার করা হয়।

গণনার সাধারণ পদ্ধতি

সম্পাদনা

বিভিন্ন জ্যোতির্বিজ্ঞানের বস্তুতে ধাতবতা

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. W. Baade (১৯৪৪)। "The Resolution of Messier 32, NGC 205, and the Central Region of the Andromeda Nebula"Astrophysical Journal100: 121–146। ডিওআই:10.1086/144650বিবকোড:1944ApJ...100..137B 
  2. M. J. Rees (১৯৭৮)। "Origin of pregalactic microwave background"। Nature275 (5675): 35–37। এসটুসিআইডি 121250998ডিওআই:10.1038/275035a0বিবকোড:1978Natur.275...35R 
  3. S. D. M. White; M. J. Rees (১৯৭৮)। "Core condensation in heavy halos - A two-stage theory for galaxy formation and clustering"। Monthly Notices of the Royal Astronomical Society183 (3): 341–358। ডিওআই:10.1093/mnras/183.3.341 বিবকোড:1978MNRAS.183..341W 
  4. J. L. Puget; J. Heyvaerts (১৯৮০)। "Population III stars and the shape of the cosmological black body radiation"। Astronomy and Astrophysics83 (3): L10–L12। বিবকোড:1980A&A....83L..10P 

আরো পড়ুন

সম্পাদনা