দিল্লি সালতানাত
দিল্লি সালতানাত বলতে মধ্যযুগে ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম শাসনকালকে বুঝানো হয়। ১২০৬ থেকে ১৫২৬ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে ভারতে রাজত্বকারী একাধিক মুসলিম রাজ্য ও সাম্রাজ্যগুলি “দিল্লী সালতানাত” নামে অভিহিত।[৩][৪] এই সময় বিভিন্ন তুর্কি ও আফগান রাজবংশ দিল্লি শাসন করে। এই রাজ্য ও সাম্রাজ্যগুলি হল: মামলুক সুলতান (১২০৬-৯০)[৫], খিলজি রাজবংশ (১২৯০-১৩২০), তুঘলক রাজবংশ (১৩২০-১৪১৩), সৈয়দ রাজবংশ (১৪১৩-৫১) এবং লোদি রাজবংশ (১৪৫১-১৫২৬)। এই সালতানাত মঙ্গোলদের( চাগাতাই খানাত থেকে) আক্রমণকে প্রতিহত করার কয়েকটি শক্তির মধ্যে অন্যতম বলে পরিচিত।[৬]
দিল্লি সালতানাত دلی سلطنت | |||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
১২০৬–১৫২৬ | |||||||||
দিল্লি সালতানাতের ঐতিহাসিক মানচিত্র | |||||||||
রাজধানী | |||||||||
প্রচলিত ভাষা | ফার্সি (দাপ্তরিক),[১] হিন্দাবি (১৪৫১ থেকে)[২] | ||||||||
ধর্ম | সুন্নি ইসলাম | ||||||||
সরকার | রাজতন্ত্র | ||||||||
সুলতান | |||||||||
• ১২০৬–১২১০ | কুতুবউদ্দিন আইবেক | ||||||||
• ১৫১৭–১৫২৬ | ইবরাহিম লোদি | ||||||||
ঐতিহাসিক যুগ | মধ্যযুগ | ||||||||
• প্রতিষ্ঠা | ১২০৬ | ||||||||
• বিলুপ্ত | ১৫২৬ | ||||||||
|
মুহাম্মদ ঘুরির প্রাক্তন তুর্কি মামলুক দাস কুতুবুদ্দিন আইবেক দিল্লির প্রথম সুলতান ছিলেন এবং তার মামলুক রাজবংশ উত্তর ভারতের বিশাল অঞ্চল জয় করেন। এর পরে, খিলজি রাজবংশ বেশিরভাগ মধ্য ভারতকেও জয় করতে সক্ষম হয়, তবে উভয়ই পুরো ভারত উপমহাদেশকে জয় করতে ব্যর্থ হয়। সালতানাতটি তুঘলক রাজবংশের সময়ে ভারতীয় উপমহাদেশের বেশিরভাগ অঞ্চল দখল করে এর ভৌগোলিক সীমানার দিক থেকে শীর্ষে পৌঁছে।[৭] এর পরে বিজয়নগর সাম্রাজ্য এবং মেওয়ার মতো হিন্দু সাম্রাজ্যের স্বাধীনতা দাবি করার কারণে সালতানাতের পতন ঘটে, এবং শাহী বাংলার মতো নতুন মুসলিম সালতানাতের উদ্ভব ঘটে।[৮][৯]
দিল্লির সুলতানি আমলে , ভারতীয় সভ্যতার সাথে ইসলামী সভ্যতার মিশ্রণ ঘটেছিল এবং আফ্রো-ইউরেশিয়ার বৃহৎ অংশে বিস্তৃত একটি বিশ্বব্যবস্থা এবং বিস্তৃত আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কগুলির সাথে ভারতীয় উপমহাদেশের যোগাযোগ আরও সংহতকরণ ছিল, যার একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ছিল ভারতীয় সংস্কৃতি এবং সমাজের উপর।[১০] তাদের শাসনের সময়টিতে ইন্দো-ইসলামিক স্থাপত্যের প্রাথমিকতম রূপগুলি[১১][১২] যান্ত্রিক প্রযুক্তির বৃহত্তর ব্যবহার[১৩] ভারতের জনসংখ্যা এবং অর্থনীতিতে বৃদ্ধির হার[১৪] এবং হিন্দি-উর্দু ভাষার উত্থান ব্যাপক ভাবে লক্ষ্য করা যায়।[১৫] দিল্লি সুলতানি ১৩ ও ১৪ শতকে মঙ্গোল সাম্রাজ্যের সম্ভাব্য ধ্বংসাত্মক আগ্রাসন প্রতিহত জন্য পরিচিত ছিল।[১০] ১৫২৬ সালে দিল্লি সালতানাত মুঘল সাম্রাজ্যের কাছে পরাজিত হয়।
মামলুক বংশ
সম্পাদনাভারতে তুর্কি আধিপত্যের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন গজনির শাসনকর্তা মুহাম্মদ ঘুরি। ভারত বিজয়ের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে ১১৭৫ খ্রিষ্টাব্দে মুলতান ও উচ্ বিজয়ের মাধ্যমে তিনি ভারতে পদার্পণ করেন। এরপর একে একে পেশাওয়ার, লাহোর ও পশ্চিম পাঞ্জাব জয় করেন। ১১৯১ খ্রিষ্টাব্দে থানেশ্বরের নিকট তরাইনের যুদ্ধক্ষেত্রে দিল্লি ও আজমিরের চৌহানবংশীয় রাজা পৃথ্বীরাজ চৌহানের সম্মুখীন হন। তরাইনের প্রথম যুদ্ধে মুহাম্মদ ঘুরির বাহিনী পৃথ্বীরাজের বাহিনীর কাছে সম্পূর্ণ পরাজিত হলেও পরের বছর (১১৯২ খ্রিষ্টাব্দ) পৃথ্বীরাজ চৌহান মুহাম্মদ ঘুরির হাতে পরাজিত ও নিহত হন। অতঃপর ভারতে তার বিজিত স্থানগুলির শাসনভার নিজের বিশ্বস্ত অনুচর কুতুবউদ্দিন আইবেকের হাতে অর্পণ করে গজনি প্রত্যাবর্তন করেন মুহাম্মদ ঘুরি। কুতুবউদ্দিনের নেতৃত্বে মিরাট, দিল্লি, রণথাম্বোর, গুজরাত, বুন্দেলখণ্ড প্রভৃতি অঞ্চল অধিকৃত হয়। তার অন্যতম সেনাপতি ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খলজী ১২০৩ খ্রিষ্টাব্দে বিহার ও ১২০৫-০৬ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা জয় করেন। এইভাবে উত্তর ভারতের এক বিস্তৃর্ণ অঞ্চলে প্রত্যক্ষ মুসলিম আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
কুতুবউদ্দিন আইবেক (১২০৬-১০ খ্রিস্টাব্দ)
সম্পাদনা১২০৬ খ্রিষ্টাব্দে নিঃসন্তান মুহাম্মদ ঘুরি মৃত্যু হলে গজনির সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে কুতুবউদ্দিন আইবক নিজেকে স্বাধীন সার্বভৌম নরপতি ঘোষণা করেন। ১২০৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ‘সুলতান’ উপাধি গ্রহণ করেন। তার সিংহাসনারোহণের ফলে দিল্লিতে স্বাধীন সুলতানি শাসনের গোড়াপত্তন হয়। ‘আইবেক’ কথাটির অর্থ হল 'ক্রীতদাস'। মুহাম্মদ ঘুরি কুতুবউদ্দিন আইবেককে ক্রীতদাস হিসেবে ক্রয় করেছিলেন। এই কারণে ইংরেজ ঐতিহাসিকরা তার প্রতিষ্ঠিত রাজবংশকে দাসবংশ নামে এবং ১২০৬ থেকে ১২৯০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়কে মামলুকদের শাসনকাল হিসেবে অভিহিত করেন।[১৬] আধুনিক ঐতিহাসিকগণ অবশ্য সার্বভৌম সুলতান কুতুবউদ্দিনের প্রতিষ্ঠিত রাজবংশকে দাসবংশ হিসেবে চিহ্নিত করার পক্ষপাতী নন।
সিংহাসনে আরোহণের পর কুতুবউদ্দিন আইবেক মাত্র চার বছর জীবিত ছিলেন। এই সময়কালে তিনি রাজ্য বিজয় বা প্রশাসন পরিচালনায় বিশেষ কোনো কৃতিত্ব দেখাতে পারেননি। তবে দানশীলতার জন্য তিনি লাখবক্স বা লক্ষদাতা নামে পরিচিত ছিলেন। দিল্লি ও আজমীরে নির্মিত তার দুটি মসজিদ ইসলামের প্রতি তার শ্রদ্ধা ও শিল্পানুরাগের সাক্ষ্যবহন করছে। এছাড়া দিল্লির উপকণ্ঠে কুতুবউদ্দিন বখতিয়ার কাকী নামক সুফির স্মৃতিতে তিনি এক স্তম্ভ নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এই স্তম্ভটি বর্তমানে কুতুবমিনার নামে পরিচিত।
ইলতুতমিশ (১২১১-৩৬ খ্রিস্টাব্দ)
সম্পাদনাকুতুবউদ্দিন আইবেকের মৃত্যুর পর ১২১১ খ্রিষ্টাব্দে তার দত্তকপুত্র আরাম শাহ্কে সিংহাসনচ্যুত করে দিল্লির মসনদে বসেন কুতুবউদ্দিনের জামাতা ইলতুতমিশ।[১৭] প্রথম জীবনে ইলতুতমিস ছিলেন কুতুবউদ্দিনের ক্রীতদাস। পরে তার কর্মদক্ষতা ও বিচক্ষণতায় মুগ্ধ হয়ে কুতুবউদ্দিন তার সঙ্গে নিজ কন্যার বিবাহ দান করে তাকে বাদাউনের শাসনকর্তা নিয়োগ করেন।
সিংহাসনে আরোহণের পর ইলতুতমিসকে একাধিক বৈদেশিক আক্রমণ ও আঞ্চলিক বিদ্রোহের সম্মুখীন হতে হয়। কিন্তু ইলতুতমিস কঠোর হাতে সমস্ত বিদ্রোহ দমন করেন ও বৈদেশিক আক্রমণ প্রতিহত করেন।[১৮] শুধু তাই নয় উজ্জয়িনীসহ বেশ কিছু নতুন অঞ্চলও তিনি সালতানাতের অন্তর্ভুক্ত করেন। ইলতুৎমিশ মুলতান ও বাংলাকে মুসলিম শাসকদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং পাশাপাশি রথম্ভম্বোর এবং সিওয়ালিকদের মতো হিন্দু শাসকদের কাছ থেকে বিজয় করেন। তিনি তাজ আল-দ্বীন ইল্ডিজকে আক্রমণ, পরাজিত ও মৃত্যুদন্ড দেন, যিনি মূলত মু'আইজ-আদ-দ্বীন মুহম্মদ ঘোরির উত্তরাধিকারী হিসাবে তার অধিকার দাবি করেন।[১৯] তার রাজনৈতিক বিচক্ষণতার কারণে ভারতের বিস্তৃর্ণ অঞ্চল মোঙ্গল সেনানায়ক চেঙ্গিজ খানের আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পায়।
১২২৯ খ্রিষ্টাব্দে বাগদাদের খলিফা তাকে ‘সুলতান-ই-আজম’ উপাধি দিলে দিল্লি সালতানাতের গৌরব বৃদ্ধি পায় এবং এই সালতানাত স্বতন্ত্র ও সার্বভৌম অস্তিত্ব মুসলিম জগতে স্বীকৃত হয়। কৃতজ্ঞতাবশত ইলতুতমিশ তার মুদ্রায় নিজেকে ‘খলিফার সেনাপতি’ বলে উল্লেখ করেন।
ইলতুৎমিশের শাসন ১২৩৬ অবধি স্থায়ী ছিল। তার মৃত্যুর পরে দিল্লির সালতানাত দুর্বল উত্তরসূরীর হাতে চলে যায়। মুসলিম অভিজাতদের সাথে দ্বন্দ্ব, হত্যাকাণ্ড এবং স্বল্পকালীন মেয়াদে সালতানাত চলতে থাকে।
রাজিয়া সুলতানা (১২৩৬-৪০ খ্রিস্টাব্দ)
সম্পাদনারাজিয়া সুলতানা (১২০৫ - ১২৪০) (ফার্সি / উর্দূ: رضیہ سلطانہ) সুলতান ইলতুতমিশের কন্যা ও ভারতবর্ষের প্রথম মহিলা শাসক। তিনি একাধারে একজন ভাল প্রশাসক ও সেনাপতি ছিলেন; তাছাড়া যুদ্ধক্ষেত্রে একজন দক্ষ সৈন্য হিসেবে তার পরিচিতি ছিল। সুলতান ইলতুতমিশের সবথেকে যোগ্য পুত্র সুলতানের জীবদ্দশায় মৃত্যু বরণ করলে সুলতান তার কন্যা রাজিয়া সুলতানাকে দিল্লির শাসক হিসেবে মনোনিত করে যান। যখনই ইলতুতমিশের রাজধানী ছাড়তে হত, তিনি তখন তার কন্যা রাজিয়া সুলতানাকে শাসনভার বুঝিয়ে দিয়ে যেতেন।
সুলতানের মৃত্যুর পর তার আরেক পুত্র রুকনউদ্দিন ফিরোজ দিল্লির শাসন কেড়ে নেন এবং প্রায় সাত মাসের মত শাসন করেন। ১২৩৬ সালে দিল্লির জনগণের সাহায্য নিয়ে রাজিয়া সুলতানা তার ভাইকে অপসারণ করে ক্ষমতায় আরোহণ করেন।
রাজিয়া সুলতানা সাম্রাজ্যে শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন। শাসনকার্য দৃঢ়ভাবে পালন করার জন্য তিনি নারীত্বের আবরণ পরিত্যাগ করে, পুরুষের পোশাক গ্রহণ করেন। এই পোশাকে তিনি জনসম্মুখে, প্রশাসনে ও যুদ্ধক্ষেত্রে আসতেন। ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে রাজিয়া জালাল উদ্দিন ইয়াকুত নামক একজন ইথিওপিয়ান দাসকে নিয়োগ দেন। ইয়াকুতকে তিনি অত্যন্ত বিশ্বাস করতেন। এর ফলে তুর্কিরা রাজিয়ার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে নামেন। ১২৩৯ সালে লাহোরের তুর্কি গভর্নর বিদ্রোহ করে। রাজিয়া তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলে, গভর্নর প্রথমে পালিয়ে যান ও পরে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তারপর ভাতিন্ডার গভর্নর বিদ্রোহ করেণ। রাজিয়া যখন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত হচ্ছিলেন তখন তার তুর্কি কর্মকর্তারা তাকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করে এবং তার ভাই বাহরামকে সুলতান ঘোষণা করে। রাজিয়া ভাতিন্ডার গভর্নরকে বিয়ে করে তার সাহায্যে ক্ষমতা ফিরে পাবার চেষ্টা করেণ। কিন্তু রাজিয়া সুলতানা পরাজিত হন ও পলায়ন করেন। ১২৪০ পলায়নকালে তার একজন ভৃত্য তাকে খাদ্যে বিষ দিয়ে হত্যা করে। এই ভৃত্যই তাকে আশ্রয় দিয়েছিল।
গিয়াসউদ্দিন বলবন (১২৬৬–১২৮৭)
সম্পাদনাগিয়াসউদ্দিন বলবন ১২৬৬ সালে ক্ষমতায় আসা অবধি শাসন ক্ষমতায় রুকন উদ্দিন ফিরুজ থেকে রাজিয়া সুলতানা থেকে মুইজউদ্দিন বাহরাম (১২৪০-১২৪২) থেকেআলাউদ্দিন মাসুদ (১২৪২ - ১২৪৬) থেকে নাসিরউদ্দিন মাহমুদ (১২৪৬–১২৬৬) ক্ষমতায় আসে।[১৯][২০] তার স্থলাভিষিক্ত হন ১৭ বছর বয়সী মুইজউদ্দিন কায়কোবাদ, যিনি জালালউদ্দিন খিলজিকে সেনাবাহিনীর সেনাপতি নিযুক্ত করেন। খলজি কায়কাবাদকে হত্যা করে এবং ক্ষমতা গ্রহণ করে, এভাবে মামলুক রাজবংশের অবসান ঘটে এবং খলজি রাজবংশ শুরু হয়।
খিলজি বংশ
সম্পাদনাখিলজি রাজবংশ তুর্কি-আফগান ঐতিহ্য ধারণ করতো।[২১][২২][২৩] তারা মূলত তুর্কি বংশোদ্ভূত।[২৪] ভারতের দিল্লি আসার আগে তারা দীর্ঘকাল বর্তমান আফগানিস্তানে বসতি স্থাপন করেছিল। "খিলজি" নামটি আফগান গ্রাম বা শহরকে কালাত-ই খিলজি নাম থেকে এসেছে।[২৫] স্থানীয় আফগানদের সাথে তাদের আন্তঃসম্পর্ক, আফগান অভ্যাস এবং রীতিনীতি গ্রহণের কারণে তারা অন্যদের দ্বারা জাতিগত আফগান হিসাবে বিবেচিত হয়েছিল।[২৬][২৭] এর ফলস্বরূপ, রাজবংশকে তুর্কো-আফগান হিসাবে উল্লেখ করা হয়। আলাউদ্দিন খলজির স্ত্রী এবং শিহাবউদ্দিন ওমরের মা ঝট্যপালি (দেবগিরির রামচন্দ্রের কন্যা) এর মাধ্যমে পরে রাজবংশের ভারতীয় অনুজ সৃষ্টি হয়[২৮]।
খিলজি বংশের প্রতিষ্ঠাতা জালালউদ্দিন ফিরোজ খিলজি। ফিরোজ খিলজি ইতিমধ্যে দিল্লির মুকুটটি নেওয়ার জন্য আফগানদের মধ্যে যথেষ্ট সমর্থন সংগ্রহ করেন।[২৯] তিনি দাস বংশের সুলতান কায়কোবাদ হত্যা করে সিংহাসনে বসেন। তার আরোহণের সময় তার বয়স প্রায় ৭০ বছর ছিল, এবং সাধারণ জনগণের কাছে তিনি বিনয়ী, নম্র ও দয়ালু রাজা হিসাবে পরিচিত ছিলেন।[৩০][৩১] আলাউদ্দিন ফিরোজ ছিলেন তুরস্কো আফগান বংশোদ্ভূত[৩২][৩৩][৩৪] ১২৯৬ সালে তার ভাতিজা ও জামাতা জুনা মুহাম্মদ খিলজি দ্বারা হত্যার আগে তিনি ৬ বছর শাসন করেন[৩৫], যিনি পরে আলাউদ্দিন খলজি নামে পরিচিত হন।
আলা উদ্দিন কারা প্রদেশের গভর্নর হিসাবে সামরিক জীবন শুরু করেছিলেন, সেখান থেকে তিনি মালওয়া (১২৯২) এবং দেবগিরি (১২৯৪) -এ দুটি অভিযানের নেতৃত্ব দেন। ক্ষমতা গ্রহণের পরে তার সামরিক অভিযানগুলো এই ভূমিগুলির পাশাপাশি দক্ষিণ ভারতের অন্যান্য রাজ্যের দিকে হতে থাকে। তিনি গুজরাত, রণথম্বোর, চিতোর এবং মালওয়া জয় করেছিলেন।[৩৬] তবে উত্তর-পশ্চিম থেকে মঙ্গোল আক্রমণ এবং লুণ্ঠন অভিযানের কারণে এই বিজয়গুলি বাধা প্রাপ্ত হয়। মঙ্গোলরা লুণ্ঠনের পরে থেমে যায় এবং সালতানাতের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে আক্রমণ বন্ধ করে দেয়।[৩৭]
মঙ্গোলরা সরে যাওয়ার পরে আলাউদ্দিন খিলজি মালিক কাফুর ও খসরু খানের মতো জেনারেলদের সহায়তায় দিল্লির সুলতানিকে দক্ষিণ ভারতে প্রসারিত করতে থাকেন। তারা পরাজিতকারীদের কাছ থেকে প্রচুর যুদ্ধের লুঠ (আনওয়াতান) সংগ্রহ করেন।[৩৮] তার সেনাপতিরা যুদ্ধের জিনিসপত্র সংগ্রহ করেন এবং গনিমাত প্রদান করেন (আরবি: الْغَنيمَة, যুদ্ধের সম্পদের উপর কর), যা খিলজি শাসনকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে। লুণ্ঠনের মধ্যে ছিল ওয়ারালালের বিখ্যাত কোহিনূর হীরাও ছিল।[৩৯]
আলাউদ্দিন খিলজি কর নীতি পরিবর্তন করে, কৃষি করকে ২০% থেকে বাড়িয়ে ৫০% (শস্য ও কৃষি উৎপাদনে প্রদেয়) করেন, স্থানীয় প্রধানদের দ্বারা আদায় করা শুল্কে প্রদত্ত কমিশন প্রত্যহার করেন এবং তার কর্মকর্তাদের মধ্যে সামাজিকীকরণ নিষিদ্ধ করেছেন এবং আন্তঃ মহৎ পরিবারগুলিতে বিয়ে নিষিদ্ধ করেন যা তার বিরুদ্ধে যে কোনও বিরোধী শক্তি সৃষ্টি রোধ করতে সহায়তা করেছিল এবং তিনি কর্মকর্তা, কবি এবং পণ্ডিতদের বেতন হ্রাস করেন।[৩৫] এই কর নীতিগুলি এবং ব্যয় নিয়ন্ত্রণগুলি তার ক্রমবর্ধমান সেনাবাহিনীকে প্রদানের জন্য তার কোষাগারকে শক্তিশালী করেছিল; তিনি রাজ্যের সমস্ত কৃষিজাত পণ্য ও পণ্যাদির উপর দাম নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি এই পণ্যগুলি কোথায়, কীভাবে এবং কাদের দ্বারা বিক্রি করা যেতে পারে তার নিয়ন্ত্রণও চালু করেন। শাহানা-ই-মান্ডি নামে বাজার তৈরি করা হয়েছিল।[৪০] মুসলিম বণিকদেরকে সরকারী মূল্যে কেনা ও পুনরায় বিক্রয় করার জন্য এই "মান্ডি "সমূহে একচেটিয়া অনুমতি এবং অধিকার দেওয়া হয়েছিল। এই বণিকদের ব্যতীত অন্য কেউ কৃষকদের কাছ থেকে কিনতে বা শহরে বিক্রি করতে পারত না। যারা এই "ম্যান্দিস" বিধি লঙ্ঘন করেছে তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়েছিল, প্রায়শই ত হতো অঙ্গহানির মাধ্যমে। শস্য আকারে সংগৃহীত কর রাজ্যের সংরক্ষণাগারে সংরক্ষণ করা হ্তো যাতে পরবর্তী দুর্ভিক্ষের সময়, এই শস্য সেনাবাহিনীর জন্য পর্যাপ্ত খাবার নিশ্চিত করে।[৩৫]
১৩১৬ সালে আলাউদ্দিনের মৃত্যুর পরে তার সেনাপতি মালিক কাফুর, যিনি ভারতে একটি হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন, ক্ষমতা গ্রহণের চেষ্টা করেছিলেন। তার পারস্য ও তুর্কি আভিজাতীয়দের সমর্থন না থাকায় পরবর্তীতে তাকে হত্যা করা হয়।[৩৫] শেষ খলজি শাসক ছিলেন আলাউদ্দিন খলজির ১৮ বছরের পুত্র কুতুবউদ্দিন মোবারক শাহ খিলজি, যিনি আলা উদ্দিনের অপর সেনাপতি খসরু খান কর্তৃক নিহত হওয়ার আগে চার বছর শাসন করেছিলেন। খসরু খানের রাজত্ব মাত্র কয়েক মাস স্থায়ী হয়েছিল, যখন গাজী মালিক, পরে গিয়াসউদ্দিন তুগলক নামে অভিহিত হন, ১৩২০ সালে তাকে হত্যা করে ক্ষমতা গ্রহণ করেন, এভাবে খিলজি রাজবংশের অবসান ঘটে এবং তুঘলক রাজবংশ শুরু হয়।[৪১][৪২]
তুঘলক বংশ
সম্পাদনাতুঘলকাবাদ-কে প্রশাসনিক কেন্দ্র করে ১৩২০ খ্রিষ্টাব্দে গিয়াসউদ্দিন তুগলক এই সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছিলেন তুর্কি-ভারতীয় বংশোদ্ভূত; তার বাবা ছিলেন তুর্কি দাস এবং মা ছিলেন হিন্দু।[৪৩] গিয়াসউদ্দিন তুগলক পাঁচ বছর রাজত্ব করেন এবং তুঘলকাবাদ নামে দিল্লির নিকটে একটি শহর গড়ে তোলেন। ভিনসেন্ট স্মিথের মতো কিছু ঐতিহাসিকের মতে[৪২], তিনি তার পুত্র জুনা খান কর্তৃক নিহত হন, যিনি ১৩২৫ সালে ক্ষমতায় আরোহণ করেন। জুনা খান নিজেকে মুহাম্মদ বিন তুঘলকের নাম ধারণ করেন এবং ২৬ বছর শাসন করেন।[৪৪] তার শাসনামলে, ভারত উপমহাদেশের বেশিরভাগ অংশ সালতানাতের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং ভৌগোলিক সীমারেখার দিক দিয়ে দিল্লি সালতানাত শীর্ষে পৌঁছে।[৭]
মুহাম্মদ বিন তুঘলক ছিলেন কুরআন, ফিকহ, কবিতা ও অন্যান্য ক্ষেত্রের বিস্তৃত জ্ঞানসম্পন্ন একজন বুদ্ধিজীবী। তিনি তার আত্মীয়-স্বজন ও উজিরদের সম্পর্কেও গভীরভাবে সন্দেহ করতেন, তার বিরোধীদের প্রতি যা অত্যন্ত তীব্র ছিলেন এবং এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যা অর্থনৈতিক উত্তেজনার কারণ হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, তিনি রৌপ্য মুদ্রার বদলে সাধারণ ধাতুগুলি থেকে মুদ্রা তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন - এমন একটি সিদ্ধান্ত ব্যর্থ হয়েছিল যেহেতু সাধারণ লোকেরা তাদের বাড়িতে থাকা সাধারণ ধাতু থেকে নকল মুদ্রা তৈরি করে এবং কর এবং জিজিয়া প্রদানের জন্য ব্যবহার করতো।[৪৫]
১৩২৭ সালে, মুহাম্মদ বিন তুঘলক দিল্লি থেকে দক্ষিণ ভারতের দাক্ষিণাত্য অঞ্চলে দৌলতাবাদ-এ (বর্তমান ঔরঙ্গাবাদ, মহারাষ্ট্র-এর অংশ ) রাজধানী সরিয়ে দেন। তিনি দিল্লির জনগণকে দৌলতাবাদ স্থানান্তরে বাধ্য করে। যারা অস্বীকার করেছিল তাদের হত্যা করা হয়েছিল। দৌলতাবাদে যেতে ব্যর্থ হওয়া এক অন্ধ ব্যক্তিকে ৪০ দিনের পুরো যাত্রার জন্য টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল - লোকটি যাত্রা পথে মারা গিয়েছিল, তার দেহ খসে পড়েছিল এবং কেবল তার বাঁধা পা দৌলতাবাদে পৌঁছেছিল।[৪৫] রাজধানী স্থানান্তর ব্যর্থ হয়েছিল কারণ দৌলতাবাদ শুষ্ক ছিল এবং নতুন রাজধানীতে পান করার মতো পর্যাপ্ত পানীয় জল ছিল না। এরপরে রাজধানী পুনারায় দিল আনা হয়। তবুও, মুহাম্মাদ বিন তুঘলকের আদেশ ইতিহাসকে প্রভাবিত করেছিল যেহেতু দাক্ষিণাত্য অঞ্চলে বিপুল সংখ্যক দিল্লি থেকে আসা মুসলমানরা পরে আর মুহাম্মদ বিন তুঘলকের সাথে দিল্লিতে বসবাস করতে ফিরে আসেনি। তৎকালীন দিল্লির বাসিন্দাদের দাক্ষিণাত্য অঞ্চলে এই আগমনের ফলে মধ্য ও দক্ষিণ ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
মুহাম্মদ বিন তুগলকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ১৩২৭ সালে শুরু হয়েছিল, তার রাজত্ব অবধি অব্যাহত থাকে এবং কালক্রমে সালতানাতের ভৌগোলিক সীমা সঙ্কুচিত হ্তে থাকে। দিল্লি সালতানাতের আক্রমণগুলির প্রত্যক্ষ প্রতিক্রিয়া হিসাবে দক্ষিণ ভারতে বিজয়নগর সাম্রাজ্যের সূচনা হয়েছিল[৪৬] এবং দিল্লির শাসন থেকে দক্ষিণ ভারতকে স্বাধীন করে।[৪৭] 1337 সালে, মুহাম্মদ বিন তুঘলক হিমালয়ের উপর দিয়ে তার বাহিনীর কিছু অংশ প্রেরণ করে, চীন আক্রমণ করার নির্দেশ দেন। কয়েক জন যাত্রা থেকে বেঁচে গিয়েছিল, এবং ব্যর্থ হওয়ার জন্য তাদের ফেরাতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল। তার রাজত্বকালে, রাজস্ব আয় কমে যায় এবং ১৩২৯-১৩৩২ সালের সাধারণ ধাতব কয়েনের মতো তার নীতিগুলি ব্যর্থ হয়। রাষ্ট্রীয় ব্যয় কাটাতে তিনি কর বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। যারা কর দিতে ব্যর্থ হয়েছিল হত্যা করা হয়েছিল। দুর্ভিক্ষ, ব্যাপক দারিদ্র্য এবং বিদ্রোহ সমগ্র রাজ্য জুড়ে বৃদ্ধি পেয়েছিল। ১৩৩৮ সালে তার নিজের ভাগ্নে মালওয়াতে বিদ্রোহ করেছিলেন, যাকে তিনি আক্রমণ করেন,ধরেন এবং হত্যা করেন। ১৩৩৯ সালে, স্থানীয় মুসলিম শাসকদের অধীনে পূর্ব অঞ্চলগুলি এবং হিন্দু রাজাদের নেতৃত্বে দক্ষিণের অংশগুলি বিদ্রোহ করে এবং দিল্লি সালতানাত থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। মুহাম্মদ বিন তুঘলকের প্রতিক্রিয়া জানানোর মতো সামর্থ ছিল না।[৪৮] ঐতিহাসিক ওয়ালফোর্ড এর মতে, মুহাম্মদ বিন তুঘলকের শাসনকালে বেশিরভাগ ভারতবর্ষ ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হয়েছিল।[৪৯][৫০] ১৩৪৭ সালের মধ্যে বহমনী সালতানাত দক্ষিণ এশিয়ার দাক্ষিণাত্য অঞ্চলে একটি স্বাধীন এবং শক্তিশালী মুসলিম রাজ্যে পরিণত হয়েছিল।[৫১] মুহাম্মদ বিন তুঘলক ১৩৫১ সালে দিল্লির সুলতানির বিরুদ্ধে বিদ্রোহী গুজরাতের লোকদের ধাওয়া ও শাস্তি দেওয়ার সময় মারা যান।
তার পরে, ফিরোজ শাহ তুঘলক (১৩৫১-১৩৮৮) তার উত্তরাধিকারি হন। যিনি ১৩৫৯ সালে ১১ মাস বাংলার সাথে যুদ্ধ চালিয়ে রাজ্যে পুরাতন সীমানা ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে, বাংলার পতন হয়নি। ফিরোজ শাহ ৭ বছর রাজত্ব করেন। তার রাজত্বে যমুনা নদী থেকে একটি সেচ খাল খনন দ্বারা খাদ্য সরবরাহ স্থিতিশীল করা এবং দুর্ভিক্ষ হ্রাস করার চেষ্টা করেন। একজন শিক্ষিত সুলতান, ফিরুজ শাহ একটি স্মৃতিচারণ রেখে গেছেন।[৫২] এতে তিনি লিখেছেন যে তিনি নির্যাতন চালানোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন, যেমন অঙ্গচ্ছেদ, চোখের উপড়ে ফেলা, মানুষকে জীবিত কেটে ফেলা, শাস্তি হিসাবে মানুষের হাড় পিষে দেওয়া,গলাতে গলিত সীসা ঢালা, মানুষকে আগুন পোড়ানো, হাত-পাতে নখ তুলে ফেলা ইত্যাদি।
ধর্মান্তরিত হওয়ার শাস্তি হিসাবে ফিরোজ শাহ বহু শিয়া এবং হিন্দুদের হত্যা করেছিলেন। ফিরোজ শাহ তুগলক হিন্দুদের সুন্নি ইসলামে ধর্মান্তরিতদের জন্য কর এবং জিজিয়া থেকে অব্যাহতি দেয় , পাশাপাশি তাদের নানা উপঢৌকন প্রদান করেন। একই সাথে, তিনি কর এবং জিজিয়াকে বাড়িয়ে দেন এবং এটিকে তিনটি স্তরে মূল্যায়ন করেন এবং তার পূর্বসূরীদের অনুশীলন বন্ধ করেন যারা ঐতিহাসিকভাবে সমস্ত হিন্দু ব্রাহ্মণকে জিজিয়া থেকে অব্যাহতি দিয়েছিল।[৫৬]
ফিরোজ শাহ তুঘলকের মৃত্যুর ফলে অরাজকতা ও রাজ্য ভাগ হয়ে যায়। এই রাজবংশের শেষ শাসকরা উভয়ই ১৩৯৪ থেকে ১৩৯৭ সাল পর্যন্ত নিজেদের সুলতান বলে অভিহিত করেন: দিল্লি থেকে শাসনকর্তা ফিরুজ শাহ তুঘলকের নাতি নাসির উদ্দিন মাহমুদ শাহ তুঘলক এবং ফিরোজ শাহ তুঘলকের আরেক আত্মীয় নাসির উদ্দিন নুসরত শাহ তুঘলক দিল্লি থেকে কয়েক মাইল দূরে ফিরোজবাদ থেকে শাস্ন করেন।[৫৭] দুই আত্মীয়ের মধ্যে যুদ্ধ ১৩৯৮ সালে তৈমুরের অভিযান অবধি অব্যাহত ছিল। তৈমুর, যিনি পশ্চিমা পণ্ডিত সাহিত্যে তৈমুর লং নামে পরিচিত, তিনি ছিলেন তৈমুরি সাম্রাজ্যের তুর্কি শাসক। তিনি দিল্লির সালতানাতের শাসকদের দুর্বলতা এবং ঝগড়া সম্পর্কে অবগত হয়েছিলেন, তাই তিনি তার বাহিনী নিয়ে দিল্লি অভিযান চালিয়ে লুটতরাজ ও সমস্ত পথে হত্যাকাণ্ড করেছিলেন।[২০][৫৮] তৈমুরের গণহত্যার অনুমান ১০০,০০ থেকে ২০০,০০০ লোকের মধ্যে ছিল।[৫৬][৫৯]
সৈয়দ বংশ
সম্পাদনাসৈয়দ রাজবংশটি তুর্কি রাজবংশ[৬০] ছিল যা ১৪১৫ থেকে ১৪৫১ সাল পর্যন্ত দিল্লি সালতানাত শাসন করেছিল।[৫১] তৈমুর লং এর আক্রমণ ও লুণ্ঠন দিল্লি সুলতানিকে নড়বড়ে করে দিয়েছিল, এবং সৈয়দ রাজবংশের শাসন সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়। আনিমারী শিমেলের মতে, রাজবংশের প্রথম শাসক হিসাবে খিজির খানকে উল্লেখ করেন, যিনি তৈমুরের প্রতিনিধিত্ব করার দাবিতে ক্ষমতা গ্রহণ করেন। এমনকি তার কর্তৃত্বকে দিল্লির লোকেদের কাছেও প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। তার উত্তরসূরী ছিলেন মোবারক খান, যিনি নিজেকে মুবারক শাহ হিসাবে ঘোষণা করেন এবং পাঞ্জাবের হারিয়ে যাওয়া অঞ্চলগুলি পুনরায় অর্জনের চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ব্যর্থ হন।[৫৬]
সৈয়দ রাজবংশকে ১৪৫১ সালে বিতাড়িত করে লোদি রাজবংশ ক্ষমতায় আসে।
লোদি বংশ
সম্পাদনালোদি রাজবংশটি পশতুন[৬১] (আফগান) লোদি উপজাতির অন্তর্ভুক্ত ছিল। বাহলুল খান লোদি ,লোদি রাজবংশের সূচনা করেছিলেন এবং প্রথম পশতুন ছিলেন যিনি দিল্লির সুলতানি শাসন করেছিলেন। বাহলুল লোদি দিল্লি সালতানাতের প্রভাব বিস্তার করতে জৌনপুর সালতানাত আক্রমণ করে তার রাজত্ব শুরু করেন এবং একটি চুক্তির মাধ্যমে আংশিকভাবে সফল হন। এরপরে, দিল্লি থেকে বারাণসী পর্যন্ত অঞ্চল (তৎকালীন বঙ্গ প্রদেশের সীমান্তে) অঞ্চলটি আবার দিল্লির সালতানাতের প্রভাবে ফিরে আসে।
বাহলুল লোদি মারা যাওয়ার পরে তার পুত্র নিজাম খান ক্ষমতা গ্রহণ করেন, নিজে সিকান্দার লোদি নামধারণ করেন এবং ১৪৮৯ থেকে ১৫১৭ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেন। রাজবংশের অন্যতম বিখ্যাত শাসক সিকান্দার লোদি তার ভাই বারবক শাহকে জৌনপুর থেকে বহিষ্কার করেছিলেন এবং তার পুত্র জালাল খানকে নিয়োগ করেন। তারপরে বিহার দখল করার জন্য পূর্ব দিকে অগ্রসর হন। বিহারের মুসলিম গভর্নররা আনুগত্য শিকার ও শুল্ক দিতে সম্মত হন, তবে দিল্লি সালতানাতের থেকে স্বাধীন ভাবে পরিচালিত ছিলেন। সিকান্দার লোদি মন্দিরগুলি ধ্বংস করার অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, বিশেষত মথুরা জুড়ে। তিনি তার রাজধানী এবং আদালত দিল্লি থেকে আগ্রায় সরিয়ে নিয়েছিলেন।[৬২] সিকান্দার তার শাসনকালে আগ্রায় ইন্দো-ইসলামিক স্থাপত্যের সাহায্যে ভবনগুলি তৈরি করেন এবং দিল্লির সালতানাত শেষ হওয়ার পরেও মুগল সাম্রাজ্যের সময়ে আগ্রার সমৃদ্ধি অব্যাহত ছিল।[৬৩]
১৫১৭ সালে সিকান্দার লোদি স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেন এবং তার দ্বিতীয় পুত্র ইব্রাহিম লোদি ক্ষমতা গ্রহণ করেন। ইব্রাহিম আফগান ও পার্সিয়ান অভিজাত বা আঞ্চলিক প্রধানদের সমর্থনকে ভালো ভাবে নেন নি।[৬৪] ইব্রাহিম তার বড় ভাই জালাল খানকে আক্রমণ করে হত্যা করেছিলেন, যিনি তার পিতার দ্বারা জৌনপুরের গভর্নর হিসাবে নিয়োগ এবং আমির ও সেনাপতিদের সমর্থন পেয়েছিলেন। ইব্রাহিম লোদি তার ক্ষমতা সুসংহত করতে অক্ষম হন এবং জালাল খানের মৃত্যুর পরে পাঞ্জাবের গভর্নর দৌলত খান লোদি মুঘল বাবরের কাছে পৌঁছে দিল্লি আক্রমণ করার জন্য তাকে আমন্ত্রণ জানান। ১৫২৬ সালে পানিপথের যুদ্ধে বাবর ইব্রাহিম লোদিকে পরাজিত ও হত্যা করেন। ইব্রাহিম লোদির মৃত্যুর ফলে দিল্লির সালতানাতে শেষ হয় এবং মুঘল সাম্রাজ্য তার স্থলাভিষিক্ত হয়।
অর্থব্যবস্থা
সম্পাদনাদিল্লির সুলতানি আমলে , ভারতীয় সভ্যতার সাথে ইসলামী সভ্যতার মিশ্রণ ঘটেছিল এবং আফ্রো-ইউরেশিয়ার বৃহৎ অংশে বিস্তৃত একটি বিশ্বব্যবস্থা এবং বিস্তৃত আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কগুলির সাথে ভারতীয় উপমহাদেশের যোগাযোগ আরও সংহতকরণ ছিল, যার একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ছিল ভারতীয় সংস্কৃতি এবং সমাজের উপর।[১০]
অর্থনীতিবিদ অ্যাঙ্গাস ম্যাডিসন অনুমান করেছেন যে, মধ্যযুগীয় দিল্লি সুলতানি যুগে ১০০০ সাল থেকে ১৫০০ এর মধ্যে ভারতের জিডিপি, প্রায় ৮০% বেড়ে $ ৬০.৫ বিলিয়ন হয়েছিল,যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল সুলতানদের।[১৪]
দিল্লি সুলতানি আমলে ভারতীয় উপমহাদেশে যান্ত্রিক প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার পাওয়া যায়। ইতোমধ্যে ভারতে অত্যাধুনিক কৃষি, খাদ্যশস্য, বস্ত্র, ওষুধ, খনিজ ও ধাতব ছিল, তবে যান্ত্রিক প্রযুক্তির দিক থেকে এটি ইসলামী বিশ্ব বা চীনের মতো উন্ন্ত ছিল না। ত্রয়োদশ শতাব্দীর আগে, ভারতের জল উত্থাপন চাকা বা গিয়ার, পুলি, ক্যাম বা ক্র্যাঙ্ক সহ অন্যান্য মেশিনগুলির কোনও প্রমাণ পাওয়া যায় নি। এই যান্ত্রিক প্রযুক্তিগুলি ত্রয়োদশ শতাব্দী থেকে ইসলামী বিশ্ব থেকে ভারতে প্রবর্তিত হয়।[১৩] দিল্লি সালতানাত ইসলামিক বিশ্ব থেকে ভারতীয় উপমহাদেশে কাগজ তৈরির ব্যবস্থার প্রসারের জন্য অবদান রাখে। দিল্লি সালতানাতে পূর্বে ভারতীয় উপমহাদেশ কাগজ তৈরি ক্ষেত্রেই বেশিরভাগি উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে (সিন্ধু ও পাঞ্জাব ) উপর নির্ভর ছিল যেগুলি হয় মুসলিম শাসনের অধীনে ছিল অথবা মুসলিম ব্যবসায়ী (গুজরাত) মাধ্যমে আসতো। ত্রয়োদশ শতাব্দীতে দিল্লি সালতানাত প্রতিষ্ঠার পরে কাগজ উৎপাদন উত্তর ভারতে ব্যাপক আকার ধারণ করে এবং ১৫ তম এবং ১৬ শতকের মধ্যে দক্ষিণ ভারতে ছড়িয়ে পড়ে।[৬৫] দিল্লি সুলতানি আমলে চরকাও উপমহাদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। ভারতে সুতির বুননের প্রাথমিক সূত্রগুলি অস্পষ্ট এবং স্পষ্টভাবে একটি চাকা শনাক্ত করতে পারা যায় না, তবে সম্ভবত হস্ত বুনন ছিল। ভারতের প্রথম চরকা দিকের বিষয়টি দ্ব্যর্থহীনভাবে ১৩৫০ খ্রিস্টাব্দের উল্লেখ করা হয়েছে যা সম্ভবত ইরান থেকে ভারতে প্রবর্তিত হয়েছিল।[১৩]
১৩-১৪ শতকের গোড়ার দিকে দিল্লি সুলতানদের যুগে ভারতীয় উপমহাদেশে ওয়ার্ম গিয়ার রোলার সুতার জিন আবিষ্কৃত হয়[৬৬] এবং এখনও ভারতে ব্যবহৃত হয়।[৬৭] আর একটি উদ্ভাবন হলো, কটন জিনে বাঁকা হাতলের ব্যবহার, ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম দেখা যায় দিল্লি সালতানাতের শের দিকে বা মুঘল সাম্রাজ্যের গোড়ার দিকে।[৬৬]
জনসংখ্যা
সম্পাদনাআধুনিক ইতিহাসবিদদের অনিশ্চিত অনুমান অনুসারে, ১ খিস্টাব্দ থেকে ১০০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত মধ্যযুগে ভারতীয় রাজ্যে মোট ভারতীয় জনসংখ্যা মূলত ৭৫ মিলিয়ন ছিল। মধ্যযুগীয় দিল্লি সুলতানি যুগে ১০০০ সাল থেকে ১৫০০ সাল অবধি, ভারত হাজার বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো স্থায়ী জনসংখ্যা বৃদ্ধির অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়, এবং জনসংখ্যা ১৫০০ খ্রিস্টাব্দে প্রায় ৫০% বৃদ্ধি পেয়ে ১১০ মিলিয়নে দাঁড়য়।[৬৮][৬৯]
সংস্কৃতি
সম্পাদনাযদিও ভারতীয় উপমহাদেশটি প্রাচীনকাল থেকেই মধ্য এশিয়া থেকে আক্রমণকারী ছিল, তবে মুসলিম আক্রমণগুলি আলাদা ছিল, পূর্ববর্তী হানাদাররা যারা প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থায় অধিষ্ঠিত হয়েছিল কিন্তু তার বিপরীতে, সফল মুসলিম বিজয়ীরা তাদের ইসলামী পরিচয় ধরে রেখেছে এবং নতুন আইনি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা তৈরি করেছে যা চ্যালেঞ্জযুক্ত এবং সাধারণত অনেক ক্ষেত্রেই সামাজিক আচরণ ও নীতিশাস্ত্রের বিদ্যমান ব্যবস্থাগুলি ছাড়িয়ে যায়, এমনকি অমুসলিম প্রতিদ্বন্দ্বী এবং সাধারণ জনগণকে অনেকাংশে প্রভাবিত করে, যদিও অমুসলিম জনগোষ্ঠী তাদের নিজস্ব আইন ও রীতিনীতি ত্যাগ করেছিল।[৭০] তারা নতুন সাংস্কৃতিক ব্যবস্থা চালু করেছে যা কোন না কোন ভাবে বিদ্যমান সাংস্কৃতিক ব্যবস্থা থেকে ভিন্ন ছিল। এর ফলে এক নতুন ভারতীয় সংস্কৃতির উত্থান হয় যা প্রকৃতিতে মিশে গিয়েছিল, এবং প্রাচীন ভারতীয় সংস্কৃতির থেকে ভিন্ন। ভারতে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান ছিল ইসলাম গ্রহণকারী মুসলমান। এই বিষয়টিও সংস্কৃতির মিশ্রনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।[৭১]
উত্তর ভারতের মধ্য ইন্দো-আর্য অপভ্রংশ থেকে গড়ে ওঠা দিল্লি সুলতানদের যুগে হিন্দুস্তানি ভাষা (হিন্দি/উর্দু) হতে শুরু করে । উত্তর ভারতে দিল্লি সুলতানদের সময় ১৩শ শতকে বসবাস করা আমির খস্রু হিন্দুস্থানীর একটি রূপ ব্যবহার করেন, যা ছিল এই সময়কালের লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা।[৭২]
স্থাপত্য
সম্পাদনা১২০৬ সালে কুতুবুদ্দিন আইবেকের অধীনে দিল্লি সুলতানাতের সূচনা মধ্য এশীয় শৈলীর মতো ভারতে একটি বৃহৎ ইসলামী রাষ্ট্রের সূচনা করে।[৭৩] মসজিদ এবং সমাধিসৌধের সাথে মুসলিম অভিজাতদের প্রয়োজনীয় বড় বড় বিল্ডিংগুলির ধরন এবং শৈলীগুলো পূর্ব ভারতে নির্মিত মন্দির থেকে খুব আলাদা ছিল। এগুলোতে শীর্ষে প্রায়শই বড় গম্বুজ ছিল এবং খিলানগুলি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা ছিল। এই দুটি বৈশিষ্ট্যই হিন্দু মন্দির স্থাপত্য এবং অন্যান্য আদিবাসী ভারতীয় শৈলীতে খুব কমই ব্যবহৃত হয়েছিল। উভয় ধরনের স্থাপত্যে মূলত একটি উচ্চ গম্বুজের নিচে একটি বৃহৎ স্থান নিয়ে গঠিত ছিল এবং হিন্দু মন্দিরের স্থাপত্যের পক্ষে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, রূপক ভাস্কর্যটি সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলে।[৭৪]
দিল্লির গুরুত্বপূর্ণ কুতুব কমপ্লেক্সটি ১১৯৯ সালের দিকে মুহাম্মদ ঘুরি অধীনে শুরু হয়েছিল এবং এটি কুতুবুদ্দিন আইবেক এবং পরবর্তীকালের সুলতানদের অধীনে অব্যাহত ছিল। কুওওয়াত-উল-ইসলাম মসজিদ, এখন একটি ধ্বংসাবশেষ, ছিল এখানের প্রথম কাঠামো ছিল। অন্যান্য প্রাথমিক ইসলামী স্থাপত্যের মতো এটি ধ্বংস হওয়া হিন্দু এবং জৈন মন্দিরগুলির কলামগুলির উপাদানসমুহ পুনরায় ব্যবহার করে, যার একই প্ল্যাটফর্মটি পুনরায় ব্যবহার করা হয়েছিল।[৭৫]
এটির পাশেই অত্যন্ত লম্বা কুতুব মিনার, যা মিনার বা বিজয় টাওয়ার, যার মূল চারটি স্তরে ৭৩ মিটার উচ্চতায় পৌঁছে। এর নিকটতম তুলনাকারী হ'ল ৬২ মিটারের আফগানিস্তানের জ্যাম মিনার যা দিল্লি টাওয়ারের সম্ভাব্য সূচনা হওয়ার এক দশক বা তারও বেশি আগে তৈরী হয়। উভয়ের পৃষ্ঠতল বিস্তৃতভাবে শিলালিপি এবং জ্যামিতিক নিদর্শন দিয়ে সজ্জিত করা হয়।[৭৫] সাধারণভাবে মিনারগুলি ভারতে ব্যবহার করা ধীর ছিল এবং প্রায়শই সেখানে উপস্থিত প্রধান মসজিদ থেকে আলাদা যেত।[৭৩]
-
ঝহোপ্রা মসজিদ
-
দিল্লির ইলতুতমিশের সমাধিসৌধ, ১২৩36 খ্রিস্টাব্দে কর্বেল খিলান সহ
-
সম্ভবত ভারতে প্রথম "আসল" তোরণ; দিল্লিতে গিয়াসউদ্দিন বলবনের সমাধি (মৃত্যু ১২৮৭)
-
দিল্লির হাউজ খাস কমপ্লেক্সে মণ্ডপগুলি
-
দিল্লির লোদি গার্ডেনে সিকান্দার লোদির সমাধি
সালতানাতের পতন
সম্পাদনাকুতুবউদ্দীন আইবক দিল্লির সালতানাতের গোড়াপত্তন করেছিলেন। অতঃপর তুর্ক-আফগান সুলতানরা দিল্লিতে প্রায় তিনশ বছর রাজত্ব করেন। এ দীর্ঘ রাজত্বকালে অনেক সুলতানের রদবদল ঘটেছে; সাম্রাজ্যে নানা বিদ্রোহ-বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। সুলতানী আমলের শেষদিকে সাম্রাজ্য দুর্বল হয়ে পড়ে। সালতানাতের শেষ সুলতান ছিলেন ইবরাহীম লোদী। পানিপথের প্রথম যুদ্ধে সুলতান ইবরাহীম লোদীর পরাজয়ের সঙ্গে সঙ্গে দিল্লি সালতানাতের অবসান ঘটে। দিল্লি সালতানাতের পতনের পশ্চাতে নানাবিধ অভ্যন্তরীণ ত্রুটিবিচ্যুতি এবং বহিঃশত্রুর আক্রমণের প্রচণ্ডতা ও ধ্বংসলীলা দায়ী ছিল। স্বৈরতন্ত্রকে ভিত্তি করে দিল্লির সালতানাতের শাসনব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল। সাম্রাজ্যে সুলতানের সর্বময় কর্তৃত্ব ছিল। স্বৈরতন্ত্রের সাফল্য নির্ভর করে শাসকের ব্যক্তিত্ব, মর্যাদা, যোগ্যতা, বিচক্ষণতা ও দৃঢ়তার ওপর। এরূপ শাসনব্যবস্থায় জনগণের ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে কোনো মূল্য দেওয়া হয় না। শাসক তার শক্তির নীতি প্রয়োগ করে জনগণের আনুগত্য ও শ্রদ্ধা অর্জন করেন। দিল্লি সালতানাতের মাত্র কয়েকজন ব্যতীত অন্য সবাই স্বৈরাচারী শাসন পরিচালনার অনুপযুক্ত ছিলেন। ফলে শাসনব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং প্রাদেশিক শাসনকর্তা ও জনগণের ওপর তাদের কর্তৃত্ব লোপ পায়।
দিল্লি সালতানাতে যে কয়েকজন যোগ্য, শক্তিমান ও প্রতিভাশালী সুলতান ছিলেন, দুর্ভাগ্যবশত তারা কেউই উপযুক্ত উত্তরাধিকারী রেখে যেতে পারেননি। সুলতান শামসউদ্দীন ইলতুতমিশ একজন যোগ্য শাসক ছিলেন। তিনি রাজ্যে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন। তার মৃত্যুর পর রুকুনউদ্দীন ফিরুজ, রাজিয়া, মুইযউদ্দীন বাহরাম, আলাউদ্দীন মাসুদ প্রমুখ দুর্বল উত্তরাধিকারীরা পর পর সিংহাসন লাভ করেন, তাদের সময়ে রাজ্যের সর্বত্র দুর্যোগ ও গোলযোগ দেখা দেয়।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Arabic and Persian Epigraphical Studies - Archaeological Survey of India"। Asi.nic.in। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৮।
- ↑ আলম, মুজাফফর (১৯৯৮)। "The pursuit of Persian: Language in Mughal Politics"। মডার্ন এশিয়ান স্টাডিজ (ইংরেজি ভাষায়)। ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। ৩২ (২): ৩১৭–৩৪৯। ডিওআই:10.1017/s0026749x98002947।
Hindavi was recognized as a semi-official language by the Sor Sultans (1540–1555) and their chancellery rescripts bore transcriptions in the Devanagari script of the Persian contents. The practice is said to have been introduced by the Lodis (1451–1526).
- ↑ "Delhi sultanate | Muslim kingdom, India"। Encyclopedia Britannica (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৮।
- ↑ Schimmel, Annemarie (১৯৮০)। Islam in the Indian Subcontinent (ইংরেজি ভাষায়)। BRILL। আইএসবিএন 978-90-04-06117-0।
- ↑ Sen, Sailendra. (২০১৩)। Textbook of medieval indian history.। Primus Books। আইএসবিএন 93-80607-34-2। ওসিএলসি 822894456।
- ↑ Barua, Pradeep. (২০০৫)। The state at war in South Asia। Lincoln: University of Nebraska Press। আইএসবিএন 1-4237-1020-7। ওসিএলসি 60714474।
- ↑ ক খ "Muḥammad ibn Tughluq | sultan of Delhi"। Encyclopedia Britannica (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৮।
- ↑ Kulke, Hermann. (১৯৯৮)। A history of India। Rothermund, Dietmar. (৩য় সংস্করণ)। London: Routledge। পৃষ্ঠা ১৮৭–১৯০। আইএসবিএন 0-203-44345-4। ওসিএলসি 51067013।
- ↑ Smith, Vincent Arthur (১৯২০)। The Oxford History of India: From the Earliest Times to the End of 1911 (ইংরেজি ভাষায়)। Clarendon Press। পৃষ্ঠা ২১৭।
- ↑ ক খ গ Asher, B; Talbot, Catherine. (২০০৬-০৩-১৬)। India Before Europe (ইংরেজি ভাষায়)। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা ৫০–৫২। আইএসবিএন 978-0-521-80904-7।
- ↑ Welch, Anthony (১৯৯৩)। "Architectural Patronage and the Past: The Tughluq Sultans of India"। Muqarnas। 10: 311–322। আইএসএসএন 0732-2992। ডিওআই:10.2307/1523196।
- ↑ Page, J. A. (১৯২৭)। Guide To The Qutb Delhi। Osmania University, Digital Library Of India। Government Of India Central Publication Branch।
- ↑ ক খ গ Pacey, Arnold. (১৯৯০)। Technology in world civilization : a thousand-year history (১ম এম আই টি প্রেস সংস্করণ)। Cambridge, Mass.: MIT Press। আইএসবিএন 0-262-16117-6। ওসিএলসি 20131080।
- ↑ ক খ Maddison, Angus. (২০০৭)। Contours of the world economy, 1-2030 AD : essays in macro-economic history। Oxford: Oxford University Press। আইএসবিএন 978-0-19-922720-4। ওসিএলসি 123968405।
- ↑ Keith, Brown (২০১০-০৪-০৬)। Concise Encyclopedia of Languages of the World (ইংরেজি ভাষায়)। Elsevier। আইএসবিএন 978-0-08-087775-4।
- ↑ Jackson, Peter (১৯৯০)। "The Mamlūk institution in early Muslim India*"। Journal of the Royal Asiatic Society (ইংরেজি ভাষায়)। 122 (2): 340–358। আইএসএসএন 2051-2066। ডিওআই:10.1017/S0035869X00108585।
- ↑ Bosworth, Clifford Edmund. (১৯৯৬)। The new Islamic dynasties : a chronological and genealogical manual (Enl. and updated ed সংস্করণ)। New York: Columbia University Press। আইএসবিএন 0-231-10714-5। ওসিএলসি 35029627।
- ↑ Prasad, Ishwari (১৯২৫)। History of medieval India, from 647 A.D. to the Mughal conquest, (English ভাষায়)। Allahabad: Indian Press। ওসিএলসি 5530916।
- ↑ ক খ Ackermann, Marsha E. (২০০৮)। Encyclopedia of world history। New York: Facts on File। আইএসবিএন 978-0-8160-6386-4। ওসিএলসি 82287280।
- ↑ ক খ Jackson, Peter (২০০৩-১০-১৬)। The Delhi Sultanate: A Political and Military History (ইংরেজি ভাষায়)। Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0-521-54329-3।
- ↑ Khan, Hussain Ahmad (২০১৪-১২-১৮)। Artisans, Sufis, Shrines: Colonial Architecture in Nineteenth-Century Punjab (ইংরেজি ভাষায়)। Bloomsbury Academic। পৃষ্ঠা ১৫। আইএসবিএন 978-1-78453-014-3।
- ↑ Yunus, Mohammad; Parmar, Aradhana (২০০৩)। South Asia: A Historical Narrative (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। আইএসবিএন 978-0-19-579711-4।
- ↑ Mandal, Asim Kumar (২০০৩)। The Sundarbans of India: A Development Analysis (ইংরেজি ভাষায়)। Indus Publishing। পৃষ্ঠা ৪৩। আইএসবিএন 978-81-7387-143-6।
- ↑ "Khaljī dynasty | Indian dynasty"। Encyclopedia Britannica (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-২৩।
- ↑ Thorpe, Showick Thorpe Edgar (২০০৯)। The Pearson General Studies Manual 2009, 1/e (ইংরেজি ভাষায়)। Pearson Education India। আইএসবিএন 978-81-317-2133-9।
- ↑ Chaurasia, Radhey Shyam (২০০২)। History of Medieval India: From 1000 A.D. to 1707 A.D. (ইংরেজি ভাষায়)। Atlantic Publishers & Dist। আইএসবিএন 978-81-269-0123-4।
- ↑ Cavendish, Marshall (২০০৬)। World and Its Peoples (ইংরেজি ভাষায়)। Marshall Cavendish। পৃষ্ঠা ৩২০। আইএসবিএন 978-0-7614-7571-2।
- ↑ Lal, Kishori Saran (১৯৬৮)। History of the Khaljis, A.D. 1290-1320 (ইংরেজি ভাষায়)। Asia Publishing House।
- ↑ Yunus, Mohammad; Parmar, Aradhana (২০০৩)। South Asia: A Historical Narrative (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। আইএসবিএন 978-0-19-579711-4।
- ↑ Srivastava, Ashirbadi Lal (১৯৬৬)। The Sultanate of Delhi, 711-1526 A.D.: Including the Arab Invasion of Sindh, Hindu Rule in Afghanistan and Causes of the Defeat of the Hindus in Early Medieval Age (ইংরেজি ভাষায়)। Shiva Lal Agarwala। পৃষ্ঠা ১৪১। ওসিএলসি 607636383।
- ↑ Habibullah, A. B. M. (১৯৭০)। A Comprehensive History of India: The Delhi Sultanat (A.D. 1206-1526), ed. by Mohammad Habib and Khaliq Ahmad Nizami (ইংরেজি ভাষায়)। People's Publishing House। ওসিএলসি 31870180।
- ↑ Puri, B. N.; Das, M. N. (২০০৩-১২-০১)। A Comprehensive History of India: Comprehensive history of medieval India (ইংরেজি ভাষায়)। Sterling Publishers Pvt. Ltd। আইএসবিএন 978-81-207-2508-9।
- ↑ "Khilji Dynasty Map, Khilji Empire"। Maps of India। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-২৩।
- ↑ Chaurasia, Radhey Shyam (২০০২)। History of Medieval India: From 1000 A.D. to 1707 A.D. (ইংরেজি ভাষায়)। Atlantic Publishers & Dist। আইএসবিএন 978-81-269-0123-4।
- ↑ ক খ গ ঘ The Cambridge history of Islam। Holt, P. M. (Peter Malcolm),, Lambton, Ann K. S., 1912-2008,, Lewis, Bernard, 1916-2018,। Cambridge [England]। আইএসবিএন 0-521-07567-X। ওসিএলসি 107078।
- ↑ Mikaberidze, Alexander। Conflict and conquest in the Islamic world : a historical encyclopedia। Mikaberidze, Alexander,। Santa Barbara, Calif.। আইএসবিএন 978-1-59884-337-8। ওসিএলসি 763161287।
- ↑ Grousset, René, 1885-1952. (১৯৭০)। The empire of the steppes : a history of central Asia। New Brunswick, N.J.: Rutgers University Press। আইএসবিএন 0-8135-0627-1। ওসিএলসি 90972।
- ↑ Frank Fanselow (1989), Muslim society in Tamil Nadu (India): an historical perspective, Journal Institute of Muslim Minority Affairs, 10(1), pp 264-289
- ↑ Kulke, Hermann. (১৯৯৮)। A history of India। Rothermund, Dietmar. (3rd ed সংস্করণ)। London: Routledge। আইএসবিএন 0-203-44345-4। ওসিএলসি 51067013।
- ↑ AL Srivastava, Delhi Sultanate 5th Edition, এএসআইএন B007Q862WO, pp 156-158
- ↑ Welch, Anthony; Crane, Howard (১৯৮৩)। "The Tughluqs: Master Builders of the Delhi Sultanate"। Muqarnas। 1: 123–166। আইএসএসএন 0732-2992। জেস্টোর 1523075। ডিওআই:10.2307/1523075।
- ↑ ক খ Smith, Vincent Arthur (১৯২০)। The Oxford History of India: From the Earliest Times to the End of 1911 (ইংরেজি ভাষায়)। Clarendon Press। পৃষ্ঠা 231–235।
- ↑ Malik, Jamal (২০০৮)। Islam in South Asia: A Short History (ইংরেজি ভাষায়)। BRILL। আইএসবিএন 978-90-04-16859-6।
- ↑ Elliot, Henry Miers (মার্চ ২০১৩)। Dowson, John, সম্পাদক। "History india told its own historians muhammadan period volume 3 | South Asian history" (Paperback)। Cambridge University Press (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসবিএন 9781108055857। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৩-০১।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ক খ গ Smith, Vincent Arthur (১৯২০)। The Oxford History of India: From the Earliest Times to the End of 1911 (ইংরেজি ভাষায়)। Clarendon Press। পৃষ্ঠা 236–242।
- ↑ Kulke, Professor of Asian History Hermann; Kulke, Hermann; Rothermund, Dietmar (২০০৪)। A History of India (ইংরেজি ভাষায়)। Psychology Press। আইএসবিএন 978-0-415-32919-4।
- ↑ Mehta, Jl। Advanced Study in the History of Medieval India (ইংরেজি ভাষায়)। Sterling Publishers Pvt. Ltd। পৃষ্ঠা ৯৭। আইএসবিএন 978-81-207-1015-3।
- ↑ Smith, Vincent Arthur (১৯২০)। The Oxford History of India: From the Earliest Times to the End of 1911 (ইংরেজি ভাষায়)। Clarendon Press। পৃষ্ঠা ২৪২–২৪৮।
- ↑ Walford, Cornelius (১৮৭৯)। The Famines of the World: Past and Present ... (ইংরেজি ভাষায়)। E. Stanford। পৃষ্ঠা ৯–১০।
- ↑ Walsh, Judith E. (২০১১)। A brief history of India (2nd ed সংস্করণ)। New York: Checkmark Books। পৃষ্ঠা ৭০–৭২। আইএসবিএন 978-0-8160-8362-6। ওসিএলসি 703548521।
- ↑ ক খ See:
- M. Reza Pirbha, Reconsidering Islam in a South Asian Context, আইএসবিএন ৯৭৮-৯০০৪১৭৭৫৮১, Brill
- The Islamic frontier in the east: Expansion into South Asia, Journal of South Asian Studies, 4(1), pp. 91-109
- Sookoohy M., Bhadreswar - Oldest Islamic Monuments in India, আইএসবিএন ৯৭৮-৯০০৪০৮৩৪১৭, Brill Academic; see discussion of earliest raids in Gujarat
- ↑ Elliot, H. M. (Henry Miers); Dowson, John (১৮৬৭)। The history of India : as told by its own historians. The Muhammadan period। Cornell University Library। London : Trübner & Co.।
- ↑ McKibben, William Jeffrey (১৯৯৪)। "The Monumental Pillars of Fīrūz Shāh Tughluq"। Ars Orientalis। 24: 105–118। জেস্টোর 4629462।
- ↑ HM Elliot & John Dawson (1871), Tarikh I Firozi Shahi - Records of Court Historian Sams-i-Siraj The History of India as told by its own historians, Volume 3, Cornell University Archives, pp 352-353
- ↑ Prinsep, J (১৮৩৭)। "Interpretation of the most ancient of inscriptions on the pillar called lat of Feroz Shah, near Delhi, and of the Allahabad, Radhia and Mattiah pillar, or lat inscriptions which agree therewith"। Journal of the Asiatic Society। 6 (2): 600–609।
- ↑ ক খ গ Schimmel, Annemarie. (১৯৮০)। Islam in the Indian subcontinent। Leiden: E.J. Brill। আইএসবিএন 0-585-36750-7। ওসিএলসি 47010593।
- ↑ Smith, Vincent Arthur (১৯২০)। The Oxford History of India: From the Earliest Times to the End of 1911 (ইংরেজি ভাষায়)। Clarendon Press।
- ↑ The encyclopaedia of Islam.। Gibb, H. A. R. (Hamilton Alexander Rosskeen), 1895-1971., Bearman, P. J. (Peri J.) (নতুন সংস্করণ)। Leiden: Brill। ১৯৬০–২০০৯। আইএসবিএন 90-04-16121-X। ওসিএলসি 399624।
- ↑ Trotter, Lionel J। "History of India, from the Earliest Times to the Present Day"। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৩-০৫।
- ↑ Walsh, Judith E. (২০১১)। A brief history of India (2nd ed সংস্করণ)। New York: Checkmark Books। আইএসবিএন 978-0-8160-8362-6। ওসিএলসি 703548521।
- ↑ Chatterjee, Ramananda (১৯৬১)। The Modern Review (ইংরেজি ভাষায়)। Prabasi Press Private, Limited।
- ↑ "Lodī dynasty | Indian history"। Encyclopedia Britannica (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৩-০৭।
- ↑ Petersen, Andrew. (১৯৯৬)। Dictionary of Islamic architecture। London: Routledge। আইএসবিএন 0-203-20387-9। ওসিএলসি 50488428।
- ↑ Richards, John F. (১৯৬৫)। "The Economic History of the Lodi Period: 1451-1526"। Journal of the Economic and Social History of the Orient। 8 (1): 47–67। আইএসএসএন 0022-4995। জেস্টোর 3596342। ডিওআই:10.2307/3596342।
- ↑ Habib, Irfan (২০১১)। Economic History of Medieval India, 1200-1500 (ইংরেজি ভাষায়)। Pearson Education India। আইএসবিএন 978-81-317-2791-1।
- ↑ ক খ Habib, Irfan (২০১১)। Economic History of Medieval India, 1200-1500 (ইংরেজি ভাষায়)। Pearson Education India। আইএসবিএন 978-81-317-2791-1।
- ↑ Lakwete, Angela (২০০৩-১২-০৫)। Inventing the Cotton Gin: Machine and Myth in Antebellum America (ইংরেজি ভাষায়)। JHU Press। আইএসবিএন 978-0-8018-7394-2।
- ↑ Angus Maddison (2001), The World Economy: A Millennial Perspective, pages 241-242 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ নভেম্বর ২০২০ তারিখে, OECD Development Centre
- ↑ Angus Maddison (2001), The World Economy: A Millennial Perspective, page 236 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ নভেম্বর ২০২০ তারিখে, OECD Development Centre
- ↑ Metcalf, Barbara D.; Metcalf, Thomas R. (২০০৬-০৯-২৮)। A Concise History of Modern India (ইংরেজি ভাষায়)। Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-1-139-45887-0।
- ↑ Eaton, Richard M. (১৯৯৬-০৭-৩১)। The Rise of Islam and the Bengal Frontier, 1204-1760 (ইংরেজি ভাষায়)। University of California Press। আইএসবিএন 978-0-520-20507-9।
- ↑ Ogilvie, Sarah (২০১০-০৪-০৬)। Concise Encyclopedia of Languages of the World (ইংরেজি ভাষায়)। Elsevier। আইএসবিএন 978-0-08-087775-4।
- ↑ ক খ Harle, J. C. (James C.) (১৯৯৪)। The art and architecture of the Indian subcontinent (2nd ed সংস্করণ)। New Haven: Yale University Press। আইএসবিএন 0-300-06217-6। ওসিএলসি 31525046।
- ↑ Blair, Sheila. (১৯৯৪)। The art and architecture of Islam 1250-1800। Bloom, Jonathan (Jonathan M.), Ettinghausen, Richard.। New Haven [Conn.]: Yale University Press। পৃষ্ঠা ১৪৯। আইএসবিএন 0-300-05888-8। ওসিএলসি 29598711।
- ↑ ক খ Ettinghausen, Richard. (২০০১)। Islamic art and architecture 650-1250। Grabar, Oleg., Jenkins, Marilyn, 1940- (2nd ed সংস্করণ)। New Haven, CT: Yale University Press। পৃষ্ঠা ১৬৪–১৬৫। আইএসবিএন 0-300-08867-1। ওসিএলসি 44764251।
- This article contains material from the Library of Congress Country Studies, which are United States government publications in the public domain. See Country Study, Pakistan
গ্রন্থপুঞ্জি
সম্পাদনা- Fernand Braudel The Perspective of the World, vol. III of Civilization and Capitalism (Harper & Row), 1984.
- Peter Jackson The Delhi Sultanate. A Political and Military History (Cambridge) 1999
- Majumdar, R. C. (ed.), The History and Culture of the Indian People, Volume VI, The Delhi Sultanate, (Bombay) 1960; Volume VII, The Mughal Empire, (Bombay) 1973.
- Nizami, Khaliq Ahmad Some Aspects of Religion and Politics in India in the Thirteenth Century (Delhi) 1961 (Revised Edition Delhi 2002)
- Memoir of the Emperor Timur (Malfuzat-i Timuri) Timur's memoirs on his invasion of India. Compiled in the book: "The History of India, as Told by Its Own Historians. The Muhammadan Period", by Sir H. M. Elliot, Edited by John Dowson; London, Trubner Company; 1867–1877
- Dietmar Rothermund, Geschichte Indiens Vom Mittelalter bis zur Gegenwart, C.H. Beck.
- Elliot, Sir H. M., Edited by Dowson, John. The History of India, as Told by Its Own Historians. The Muhammadan Period; published by London Trubner Company 1867–1877. (Online Copy: The History of India, as Told by Its Own Historians. The Muhammadan Period; by Sir H. M. Elliot; Edited by John Dowson; London Trubner Company 1867–1877 - This online Copy has been posted by: The Packard Humanities Institute; Persian Texts in Translation; Also find other historical books: Author List and Title List)
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- Delhi Sultanate Dynasty ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৬ জুন ২০২০ তারিখে
- List of rulers of Delhi