দিওয়ানা (১৯৯২-এর চলচ্চিত্র)
এই নিবন্ধটির একটা বড়সড় অংশ কিংবা সম্পূর্ণ অংশই একটিমাত্র সূত্রের উপর নির্ভরশীল। |
দিওয়ানা (ইংরেজি: Deewana) ১৯৯২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি ভারতীয় হিন্দি চলচ্চিত্র। ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন রাজ কান্বর, প্রযোজনা করেছিলেন গুড্ডু ধনোয়া ও ললিত কাপুর।
দিওয়ানা | |
---|---|
পরিচালক | রাজ কান্বর |
প্রযোজক | গুড্ডু ধানোয়া, ললিত কাপুর |
শ্রেষ্ঠাংশে | ঋষি কাপুর শাহরুখ খান দিব্যা ভারতী |
সুরকার | নাদিম শ্রাবন |
পরিবেশক | ডিইআই |
মুক্তি | ২৫ জুন ১৯৯২ [১] |
স্থিতিকাল | ১৮৫ মিনিট |
দেশ | ভারত |
ভাষা | হিন্দি |
আয় | ₹১৬ কোটি[২] |
প্রধান তিনটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঋষি কাপুর, শাহরুখ খান এবং দিব্যা ভারতী। এই ছবিটির মাধ্যমে শাহরুখ খান চলচ্চিত্রে অভিষেক করেছিলেন, যদিও তিনি মূখ্য ভূমিকায় ছিলেননা এবং দ্বিতীয় অর্ধেকে কেবল তাকে দেখা গিয়েছিল।
কাহিনী সংক্ষেপ
সম্পাদনাকাজল (দিব্যা ভারতী) প্রেমে পড়ে এবং বিয়ে করে একজন বিখ্যাত গায়ক রবিকে (ঋষি কাপুর)। তারা সদ্যঃ বিবাহিত জীবন সুখেদঃখে একসঙ্গে বসবাস করতে চায়। এদিকে রবির লোভী কাকা ধীরেন্দ্র প্রতাব (অমরিশ পুরি) এবং কাকাতো ভাই (মোহনিশ বেল্), যে রবির সম্পদে তাদের হাত বসানোর এটে চলেছে একের পর এক। কাজলকে প্রথমে ধর্ষণ করতে চেষ্টা করে আকাশের কাকাতো ভাই, কিন্তু ব্যর্থ হয় যখন আকাশ তাকে পরাজিত করে। অতএব, রবির লোভী কাকা রবিকে হত্যা করতে গুন্ডা পাঠায় এবং তাকে পাহাড় থেকে ফেলে দেয়া হয়। সেইসঙ্গে রবির কাকাতো ভাইও মারা যায়। কাজলের শ্বাশুড়ী (সুশমা শেঠ) তাকে স্বামী হারার হতাশা থেকে দূরে রাখতে তারা চলে যান এক নতুন শহরে একটি নতুন জীবন শুরু করার জন্য। এই শহরে এসে সব কষ্টদায়ক অভিজ্ঞতা ভুলে থাকার চেষ্টা করে।
একদিন এক যুবক রাজা (শাহরুখ খান), মোটর সাইকেল দিয়ে যেতে কাজলের শ্বাশুড়ীর গায়ে আঘাত লাগে তারপর কাজল তাকে চড় মারে। কাজলকে বিধবার বেসে দেখে হতভম্ব রাজা চেয়ে থাকে কাজলের দিকে, এইতো সেই কাজল যাকে একবার দেখে মুগ্ধ হয়েছিল সে, কাজলের পিছনে ঘুরতে ঘুরতে- রাজা একসময় কাজলের প্রেমে পড়ে যায়। কাজলের শ্বাশুড়ী রাজাকে নিজ সন্তান মেনে সে কাজলকে সাথে রাজার বিয়ে দিতে চান, রাজার বাবা রামকান্ত শশী (দিলীপ তহিল), একটি বিধবা নারী কমিটির সভাপতি। রাজা তার বাবাকে জানায় সে একজন বিধবা নারীকে ভালোবাসে এবং তাকে বিয়ে করতে চায়, কিন্তু তার বাবা অস্বীকার করে। রাজার বাবা কাজলকে হত্যা করতে একদল গুন্ডা পাঠালে রাজা গুন্ডাদের হাত থেকে কাজলকে বাচায় এবং জানতে পারে এরা তার বাবার ভাড়া করা গুন্ডা। রাজা তার বাবাকে জিজ্ঞাসা করে উত্তর পায়- সে তার পুত্র তাই পুত্রের ভালোর জন্য আরোও অনেক কিছু করতে পার্রে, রাজাও সাফ সাফ জানিয়ে দেয় সে কাজলকেই বিয়ে করবে। রাজা, কাজলের শ্বাশুড়ীকে মাকে ডেকে কাজল ভিক্ষা চায়, বিয়ে করতে চায়। তার শ্বাশুড়ী খুব অনুভব করে যে কাজলের পুনরায় বিয়ে করা উচিত এবং কাজলকে বিয়ে করতে তাকে বোঝায় ওর শ্বাশুড়ী। রাজা এবং কাজলের বিয়ে হয়। সাগর তাকে বলে যে- সে তাকে ততক্ষন পর্যন্ত স্পর্শ করবে না যতক্ষন না কাজল মন থেকে তাকে গ্রহণ করবে। রাজা একটি কাজের জন্য দেখে এবং তার বন্ধু তার সঙ্গে একটি গ্যারেজ খোলে। একদিন, রাজা একটি জীপ পরীক্ষা করতে বাইরে গিয়েছিল, জীপের ব্রেক ব্যর্থ হয় এবং একটি দুর্ঘটনা ঘটে রাজা কিছুটা আঘাত পায়। কাজল দুর্ঘটনার খবর শুনে তার মনে একটা ধাক্কা লাগে, সে রাজাকে দেখতে হাসপাতাল যায়। কাজল রাজাকে সেবা করতে করতে কোন একসময় সাগরের প্রতি দুর্বল হয় এবং তার সঙ্গে প্রেমে পড়ে।
রাজা আর কাজলের মনের মিল হওয়ার পর তারা বেশ সুখেই দিন কাটাচ্ছে, একদিন হঠাৎ একদল গুন্ডার হামলা থেকে রাজা একটি মানুষকে (রবি) উদ্ধার করে একটি হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা করে, এবং তার সাথে বন্ধুত্ব হয়। রবিকে যখন রাজা বলে যে আজ তার বউয়ের জন্মদিন, রবি চমকে উঠে কারণ তারও বউয়ের জন্মদিন এই একই দিনে ছিল। রাজা তার বউয়ের জন্মদিনে বন্ধুকে বাড়িতে নিয়ে আসে এবং কাজলের সঙ্গ পরিচয় করিয়ে দেয়, স্বামীর বন্ধুকে দেখে মনে বড় ধাক্কা খায় কাজল মনে প্রশ্ন জাগে যে রবিকে তার কাক ও কাকার লোকজন হত্যা করতে স্পষ্টতঃ দেখেছি, কিন্ত ও বেঁচে গিয়েছিল? কখন সত্য প্রকাশ করা হয় না, কাজল রাজা একসঙ্গে থাকে। রবির কাকা যখন জানতে পারে রবি বেচে আছে সে তাদেরকে হত্যা করতে চেষ্টা করে তখন রাজা সময়মতো আবির্ভূত হয়। রাজা আর রবি মিলে ওর কাকার গুন্ডাদের প্রতিহত করছিল। কিন্তু, তারা জানেনা যে কোনখানে কাজলকে আটকে রেখেছে। কাকাকে পরাজিত করার পর তারা কাজলকে খুঁজে পায়, কাজলের শরীরে একটি টাইম বোমা বেঁধে রেখেছে। রাজা বন্ধ কক্ষটিতে কাচ ভেঙ্গে বোমা বিস্ফোরন বন্ধ করতে বোমার সংযোগ তার কেঁটে উদ্ধার করে। এদিকে ওর কাকা আবার আবির্ভূত হয় এবং সে রাজাকে হামলা করে কাজলকে পুনরায় বিধবা বানাবে বলে। রবি রাজাকে বাচাতে গিয়ে নিজে আত্মহূতি দেয় এবং সে তার কাকাকেও হত্যা করে, রাজা আর কাজলের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে পৃথিবী থেকে চিরতরে বিদায় নেয়- রাজা এবং কাজলকে একত্রে রেখে।
শ্রেষ্ঠাংশে
সম্পাদনা- ঋষি কাপুর - রবি
- শাহরুখ খান - রাজা
- দিব্যা ভারতী - কাজল
- অমরিশ পুরি - ধীরেন্দ্র প্রতাব
- মোহনিশ বেহল - নরেন্দ্র (ধীরেন্দ্র'র ছেলে)
- অলোক নাথ - মিঃ শর্মা
- সুশমা শেঠ - রবি'র মা
- দিলীপ তহিল - রামকান্ত শশী (রাজা'র বাবা)
সঙ্গীত
সম্পাদনাসঙ্গীত পরিচালনার জন্য নাদিম এবং শ্রাবণ শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেছিলেন; গানের কথা লিখেছিলেন শমীর।
গানের তালিকা
সম্পাদনাট্রাক | গান | কণ্ঠশিল্পী |
---|---|---|
১ | "আয়সি দিওয়ানিগি" | বিনোদ রাঠোড় ও অলকা ইয়াগনিক |
২ | "সোচেঙ্গে তুমহে পিয়ার" | কুমার শানু |
৩ | "তেরি উমিদ তেরা ইন্তেজার" | কুমার শানু ও সাধনা সারগাম |
৪ | "পায়েলিয়া" | কুমার শানু ও অলকা ইয়াগনিক |
৫ | "তেরে দারদ ছে দিল " | কুমার শানু |
৬ | "তেরি ইসি আদা পে সানাম" | কুমার শানু ও সাধনা সারগাম |
৭ | "তেরি উমিদ তেরা ইন্তেজার" | কুমার শানু ও সাধনা সারগাম |
৮ | "কোই না কোই চাহিয়ে" | বিনোদ রাঠোড় |
৯ | "তেরি উমিদ তেরা ইন্তেজার ১" | কুমার শানু ও সাধনা সারগাম |
সম্মাননা
সম্পাদনাদিওয়ানা ১৯৯৩ সালে সর্বমোট পাঁচটি বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করে।
- বিজয়ী শ্রেষ্ঠ গানের কথা - শমীর, গান " তেরি উমিদ তেরা ইন্তেজার "
- বিজয়ী শ্রেষ্ঠ কণ্ঠশিল্পী পুরুষ - কুমার শানু, গান " সোচেঙ্গে তুমহে পিয়ার "
- বিজয়ী শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক - নাদিম শ্রাবন
- বিজয়ী শ্রেষ্ঠ নতুন অভিনেত্রী - দিব্যা ভারতী
- বিজয়ী শ্রেষ্ঠ নবীন অভিনেতা - শাহরুখ খান
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ [১][স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "Boxofficeindia.com"। ১৪ অক্টোবর ২০১৩। ১৪ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- আলোসিনেতে দিওয়ানা (ফরাসি)
- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে দিওয়ানা (ইংরেজি)
- রটেন টম্যাটোসে দিওয়ানা (ইংরেজি)