দর্শক-শ্রেণীর জরিপ জাহাজ
দর্শক-শ্রেণী হলো বাংলাদেশে নির্মিত জরিপ জাহাজের শ্রেণী যা বাংলাদেশ নৌবাহিনী কর্তৃক ব্যবহৃত হয়। এই জাহাজগুলো ওয়ান২ত্রি নেভাল আর্কিটেক্ট, অস্ট্রেলিয়া এর প্রযুক্তিগত সহায়তায় খুলনা শিপইয়ার্ডে নির্মাণ করা হয়। জাহাজ দুটি সামুদ্রিক এবং উপকূলীয় অঞ্চলে সকল প্রকার হাইড্রোগ্রাফিক এবং ওশানোগ্রাফিক জরিপ কার্য পরিচালনা করতে সক্ষম।[১][২]
শ্রেণি'র সারাংশ | |
---|---|
নাম: | দর্শক-শ্রেণীর জরিপ জাহাজ |
নির্মাতা: |
|
ব্যবহারকারী: | বাংলাদেশ নৌবাহিনী |
নির্মিত: | ২০২০-বর্তমান |
অনুমোদন লাভ: | ২০২০-বর্তমান |
সম্পন্ন: | ২টি |
সক্রিয়: | ২টি |
সাধারণ বৈশিষ্ট্য | |
প্রকার: | জরিপ জাহাজ |
দৈর্ঘ্য: | ৩৮.৭৮ মিটার (১২৭.২ ফু) |
প্রস্থ: | ৮.৪০ মিটার (২৭.৬ ফু) |
গভীরতা: | ৩.১৭ মিটার (১০.৪ ফু) |
প্রচালনশক্তি: | ২ × ৬০০ অশ্বশক্তি (৪৫০ কিওয়াট) ক্যাটারপিলার ডিজেল ইঞ্জিন |
গতিবেগ: | ১৪ নট (২৬ কিমি/ঘ; ১৬ মা/ঘ) |
সেন্সর এবং কার্যপদ্ধতি: |
|
রণসজ্জা: | ৪ × সিআইএস-৫০ ১২.৭ মিমি বিমান-বিধ্বংসী কামান |
ইতিহাস
সম্পাদনাসশস্ত্র বাহিনীর জন্য গৃহীত দীর্ঘমেয়াদী আধুনিকায়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার দেশীয় উৎস থেকে সমরাস্ত্র সংগ্রহ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সামুদ্রিক এবং উপকূলীয় অঞ্চলে সকল প্রকার হাইড্রোগ্রাফিক এবং ওশানোগ্রাফিক জরিপ কার্য পরিচালনা করতে এসকল জাহাজের প্রয়োজনীয়তা পরিলক্ষিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অধীনস্থ খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড এবং প্রতিরক্ষা ক্রয় মহাপরিদপ্তর এর মধ্যকার ২টি জরিপ জাহাজ নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। জাহাজ নির্মাণে প্রয়োজনীয় নকশা ও প্রযুক্তি সরবরাহ করে ওয়ান২ত্রি নেভাল আর্কিটেক্ট, অস্ট্রেলিয়া। জাহাজ দুটি নির্মাণে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও উপকরণ সরবরাহ করে গ্রেড ওয়ান মেরিন শিপইয়ার্ড, মালয়েশিয়া। সম্পূর্ণ প্রজেক্ট ডিজাইন, সাপ্লাই এবং লজিস্টিক ম্যানেজমেন্ট সম্পন্ন করে গোল্ডেন মেরিটাইম টেকনোলজি, ঢাকা। অবশেষে ৫ নভেম্বর, ২০২০ সালে বানৌজা দর্শক ও বানৌজা তল্লাশী নৌবাহিনীতে কমিশন লাভ করে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফ্রান্স ভিত্তিক ক্লাসিফিকেশন সোসাইটি ব্যুরো ভেরিটাস (বিভি) এর নীতিমালা অনুসরন করে জাহাজ দুটি নির্মিত হয়।[৩]
বৈশিষ্ট্য ও যান্ত্রিক কাঠামো
সম্পাদনাবানৌজা দর্শক ও বানৌজা তল্লাশি জাহাজ দুটির দৈর্ঘ্য ৩২.৭৮ মিটার (১০৭.৫ ফু), প্রস্থ ৮.৪ মিটার (২৮ ফু) এবং গভীরতা ৩.১৭ মিটার (১০.৪ ফু)। প্রতিটি জাহাজ ২টি ৬০০ অশ্বশক্তি (৪৫০ কিওয়াট) ক্যাটারপিলার ডিজেল ইঞ্জিন দ্বারা সজ্জিত। যার ফলে জাহাজ দুটি সর্বোচ্চ ১৪ নট (২৬ কিমি/ঘ; ১৬ মা/ঘ) গতিতে চলতে সক্ষম। দেশের উপকূলীয় এলাকায় সকল ধরনের হাইড্রোগ্রাফিক এবং ওশানোগ্রাফিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করার সক্ষমতা রয়েছে জাহাজ দুটির। সেন্সর এবং কার্যপদ্ধতি হিসেবে প্রতিটি জাহাজে থাকবে:
- ১টি র্যাডার;
- ১টি হাল মাউনন্টেড মাল্টি-বিম ইকো সাউন্ডার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র);
- ১টি হাল মাউনন্টেড সিঙ্গেল-বিম ইকো সাউন্ডার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র);
- ১টি ডিজিপিএস রিসিভার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র);
- ১টি সাউন্ড ভেলোসিটি প্রোফাইলার (যুক্তরাজ্য);
- ১টি মাল্টিরোল ডিসপ্লে সহ নেভিগেশন র্যাডার (জাপান);
- ১টি চৌম্বকীয় কম্পাস (জাপান);
- ১টি জিপিএস রিসিভার (ফুরুনো);
- ১টি ইকো সাউন্ডার (কোডেন);
- ১টি রাডার অ্যাঙ্গেল ইন্ডিকেটর;
- ১টি ভিএইচএফ সেট (আইকম);
- ১০টি ভিএইচএফ ওয়াকিটকি সেট (আইকম/মটোরোলা)।
রণসজ্জা
সম্পাদনাদুর্যোগ ও শান্তি কালীন সময়ে সহায়ক ভূমিকায় নিয়োজিত এই জাহাজটিতে রয়েছে:
- ৪টি সিআইএস-৫০ ১২.৭ মিমি বিমান-বিধ্বংসী মেশিনগান;
- এছাড়াও যুদ্ধকালীন বিশেষ পরিস্থিতিতে জাহাজটিতে ৪টি ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র কিউডব্লিউ-২ ম্যানপ্যাড মোতায়েন করা যায়।
জাহাজসমূহ
সম্পাদনানাম | নিশান | নির্মানাদেশ | কমিশন | টীকা |
---|---|---|---|---|
বানৌজা দর্শক | এ৫৮১ | ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৫ নভেম্বর ২০২০ | সক্রিয় |
বানৌজা তল্লাশী | এ৫৮২ | সক্রিয় |
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "2 x Hydrographic Survey vessel"। খুলনা শিপইয়ার্ড। ২৫ মার্চ ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০১৭।
- ↑ "আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল নৌবাহিনী- Bangladesh Navy"। ২৭ নভেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জুন ২০২৩।
- ↑ "নৌবাহিনীর নতুন তিনটি আধুনিক যুদ্ধজাহাজ 'ওমর ফারুক', 'আবু উবাইদাহ', 'প্রত্যাশা', এবং দুইটি জরিপ জাহাজ 'দর্শক'এবং 'তল্লাশী'এর কমিশনিং করলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা"। আইএসপিআর। ২০২২-০৭-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-২৭।