দক্ষিণ এশিয়া কৃত্রিম উপগ্রহ
দক্ষিণ এশিয়া কৃত্রিম উপগ্রহ, যা জিএসএটি-৯ নামে পরিচিত, একটি ভূ-সমলয়[৪] যোগাযোগ এবং আবহাওয়া উপগ্রহ, যা দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) সদস্য দেশগুলির জন্য ভারতের ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) দ্বারা পরিচালিত হয়।[৫] কৃত্রিম উপগ্রহটি যোগাযোগ ও দুর্যোগ মোকাবেলায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে সহায়তা করবে। ২০১৭ সালের ৫ মে এই কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে উৎক্ষেপ করা হয়।[৬] ২০১৪ সালে নেপালে আয়োজিত ১৮ তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার প্রতিবেশী প্রথম নীতির অংশ হিসাবে সার্ক সদস্য দেশগুলির[৭][৮] চাহিদা পূরণের জন্য উপগ্রহের ধারণাটি উত্থাপন করেন।[৯] আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, মালদ্বীপ, নেপাল এবং শ্রীলঙ্কা হল কৃত্রিম উপগ্রহটি দ্বারা উপলব্ধ বহু মাত্রিক সুবিধার ব্যবহারকারী দেশ।
দক্ষিণ এশিয়া কৃত্রিম উপগ্রহ | |||||
---|---|---|---|---|---|
নাম | জিস্যাট-৯ | ||||
অভিযানের ধরন | যোগাযোগ / আবহাওয়া | ||||
পরিচালক | আইএসআরও | ||||
সিওএসপিএআর আইডি | ২০১৭-০২৪এ | ||||
এসএটিসিএটি নং | ৪২৬৯৫ | ||||
ওয়েবসাইট | জিএসএটি-৯ | ||||
অভিযানের সময়কাল | ১২ বছর | ||||
মহাকাশযানের বৈশিষ্ট্য | |||||
বাস | আই-২কে | ||||
প্রস্তুতকারক | ইসরো কৃত্রিম উপগ্রহ সেন্টার স্পেস অ্যাপ্লিকেশন্স সেন্টার | ||||
উৎক্ষেপণ ভর | ২,২৩০ কেজি (৪,৯১৬ পা) | ||||
শুষ্ক ভর | ৯৭৬ কেজি (২,১৫২ পা) | ||||
আয়তন | ১.৫৩ × ১.৬৫ × ২.৪০ মি (৫.০ × ৫.৪ × ৭.৯ ফু) | ||||
ক্ষমতা | ৩৫০০ ওয়াট | ||||
অভিযানের শুরু | |||||
উৎক্ষেপণ তারিখ | ৫ মে, ২০১৭[১] | ||||
উৎক্ষেপণ রকেট | ভূস্থিত উপগ্রহ উৎক্ষেপন যান মার্ক ২-এফ০৯[২] | ||||
উৎক্ষেপণ স্থান | সতীশ ধবন এসএলপি | ||||
ঠিকাদার | ইসরো | ||||
কক্ষপথের বৈশিষ্ট্যসমূহ | |||||
নতি | ০.০৪১৩° | ||||
কক্ষীয় প্রসঙ্গ-সময়বিন্দু | ৫ জুন ২০১৭, ১৭:০২:৪৩; উইটিসি[৩] | ||||
ট্রান্সপন্ডার | |||||
ব্যান্ড | ১২ × কেইউ ব্যান্ড | ||||
কভারেজ অঞ্চল | সার্ক | ||||
----
|
পাকিস্তান এই প্রকল্পে যোগ দেয়নি এবং জানিয়েছিল যে তারা নিজস্ব উপগ্রহ নিয়ে কাজ করছে,[১০] ফলস্বরূপ, পাকিস্তান এই প্রকল্পে অংশ নিতে অস্বীকার করে।[১১] তবে "আর্থিক এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা" প্রদানের প্রস্তাব জানায়। ভারত পাকিস্তানের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলে যে তারা চায় এই প্রকল্পটি একটি "উপহার" হবে এবং বহু-দেশের সহযোগিতা সময় সাপেক্ষ হবে।[১২] আফগানিস্তান প্রাথমিকভাবে উপগ্রহের অনাবদ্ধ ছিল।[১৩]
দক্ষিণ এশিয়া কৃত্রিম উপগ্রহ টেলি-মেডিসিন, টেলি-শিক্ষা, ব্যাংকিং এবং টেলিভিশন সম্প্রচারের সুযোগের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করে। এটি আর্ট টেকনোলজির রিমোট সেন্সিং স্টেট দিয়ে সজ্জিত রয়েছে যা সঠিক সময়ের আবহাওয়ার সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির ভূতত্ত্ব পর্যবেক্ষণে সহায়তা করে।[১৪]
পটভূমি
সম্পাদনাইতিহাস
সম্পাদনা২০১৪ সালে কাঠমুন্ডুতে অনুষ্ঠিত সার্ক সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য একটি কৃত্রিম উপগ্রহ তৈরির ঘোষণা দেয় ভারত। তখন এর নামকরণ করা হয় "সার্ক কৃত্রিম উপগ্রহ"। কিন্তু পাকিস্তান এই কৃত্রিম উপগ্রহের সাথে যুক্ত হতে অনিচ্ছা প্রকাশ করায় এর নাম রাখা হয় দক্ষিণ এশিয়া কৃত্রিম উপগ্রহ। এর নির্মাণ খরচ পড়েছে ৪৫০ কোটি ভারতীয় রুপি। ৫মে শুক্রবার ভারতের স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ২৭ মিনিটে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীহরিকোটা সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে কৃত্রিম উপগ্রহটি সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়।[১৫]
এই কৃত্রিম উপগ্রহ নির্মাণের উদ্যোগ ছিল আমাদের অংশীদারিত্বের সম্পর্কের সবচেয়ে অগ্রসর পরিসর গড়ে তোলার পথে যাত্রা। আর আমাদের জনগণের প্রয়োজন অগ্রভাগে রাখতে আমাদের সমন্বিত সংকল্পের প্রতীক এটি।
আঞ্চলিক সমন্বয় গড়ে তোলার ব্যাপারে কদাচিৎ কথা হলেও এ উদ্যোগের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়া সত্যিকারের সমন্বয় শুরু করলো।
গঠন
সম্পাদনাদক্ষিণ এশিয়া কৃত্রিম উপগ্রহের ওজন ২১৯৫ কেজি। এতে ১২টি কু-ব্যান্ড ট্রান্সপন্ডার রয়েছে।
পাকিস্তানের অনিচ্ছা
সম্পাদনাভারত তার প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য "উপহার" স্বরূপ দক্ষিণ এশিয়া কৃত্রিম উপগ্রহ তৈরি করে। এই কৃত্রিম উপগ্রহের সুবিধা নেওয়া থেকে পাকিস্তান নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়।
অংশীদার দেশসমূহ
সম্পাদনা- ভারত
- বাংলাদেশ
- ভুটান
- মালদ্বীপ
- শ্রীলঙ্কা
- নেপাল ও
- আফগানিস্তান।
সুবিধা
সম্পাদনাএই কৃত্রিম উপগ্রহ আবহাওয়ার পূর্বাভাস, দুর্যোগ পরিস্থিতিতে জরুরি যোগাযোগ, দূরশিক্ষণ, দূর-চিকিৎসা ও অন্যান্য প্রযুক্তির ক্ষেত্র সম্প্রসারণ করবে। আকাশে অবস্থান করে ভূ-পর্যবেক্ষণ, খনিজ পদার্থ, পানির উৎসের সন্ধান, এমনকি প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাসেও এই কৃত্রিম উপগ্রহটি বড় ভূমিকা নিতে পারবে [১৫]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Richardson, Derek (৫ মে ২০১৭)। "India sends GSAT-9 into orbit atop GSLV"। Spaceflight Insider। ৬ জুন ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৭।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;brochure
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ "GSAT-9 - Orbit"। Heavens-Above। ৫ জুন ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৭।
- ↑ "GSAT-9"। Indian Space Research Organisation। ১৫ এপ্রিল ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০১৭।
- ↑ "Isro-Saarc satellite to be a communication vehicle"। Deccan Herald। Deccan Herald News Service। ১২ জানুয়ারি ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ "৫ মে যাত্রা শুরু করবে দক্ষিণ এশিয়া স্যাটেলাইট"। দ্যা ডেইলি স্টার (Bangla ভাষায়)। ২০১৭-০৪-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৫-০২।
- ↑ "Isro Says Saarc Satellite Configuration Will Be Finalised Soon"। NDTV। Indo Asian News Service। ৩০ মার্চ ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ "'Space diplomacy' in South Asia"। BBC News। ১ জুলাই ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ "India's SAARC satellite proposal: a boost to a multilateral space agenda"। The Space Review। ১৮ আগস্ট ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ "India calls satellite 'gift to South Asia', Pakistan says no thanks"। Dawn। ৫ মে ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Times of India, 2015
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Arora, Medhavi (৫ মে ২০১৭)। "India launches satellite for South Asian countries, Pakistan says no thanks"। CNN।
- ↑ "After Pakistan, Afghanistan shows no interest in PM Narendra Modi's satellite project"। The Economic Times। Press Trust of India। ১৫ মে ২০১৬।
- ↑ "SAARC Satellite Likely to be Launched Next Year, Pakistan Agrees to Participate"। NDTV। Indo Asian News Service। ২৩ জুন ২০১৫।
- ↑ ক খ Kantho, Kaler। "দক্ষিণ এশিয়া স্যাটেলাইটের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য | কালের কণ্ঠ"। Kalerkantho। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-০৩।