থায়োঅ্যাসিটামাইড
থায়োঅ্যাসিটামাইড একটি জৈব সালফার যৌগ যার রাসায়নিক সুত্র C2H5NS। এই সাদা স্ফটিক জলে দ্রবণীয় এবং জৈব এবং অজৈব যৌগগুলির সংশ্লেষণে সালফাইড আয়নের উৎস হিসাবে কাজ করে। এটি একটি প্রোটোটাইপিকাল বা আদ্য থায়োমাইড যৌগ।
নামসমূহ | |
---|---|
ইউপ্যাক নাম
ইথানোথিয়োমাইড
| |
পছন্দসই ইউপ্যাক নাম
Ethanethioamide | |
অন্যান্য নাম
অ্যাসিটোথিয়ামাইড, টিএএ, থায়োসেটিমিডিক এসিড, টিএ, টিএএম
| |
শনাক্তকারী | |
ত্রিমাত্রিক মডেল (জেমল)
|
|
সিএইচইবিআই | |
সিএইচইএমবিএল | |
কেমস্পাইডার | |
ইসিএইচএ ইনফোকার্ড | ১০০.০০০.৪৯৩ |
ইসি-নম্বর | |
কেইজিজি | |
পাবকেম CID
|
|
আরটিইসিএস নম্বর |
|
ইউএনআইআই | |
কম্পটক্স ড্যাশবোর্ড (EPA)
|
|
| |
| |
বৈশিষ্ট্য | |
C2H5NS | |
আণবিক ভর | 75.13 g/mol |
বর্ণ | colourless crystals |
গন্ধ | slight mercaptan |
ঘনত্ব | 1.319 g/cm3[১] |
গলনাঙ্ক | ১১৫ °সে (২৩৯ °ফা; ৩৮৮ K) |
স্ফুটনাঙ্ক | decomposes |
good | |
-42.45·10−6 cm3/mol | |
গঠন | |
স্ফটিক গঠন | monoclinic |
ঝুঁকি প্রবণতা | |
প্রধান ঝুঁকিসমূহ | Foul stench, carcinogenic |
নিরাপত্তা তথ্য শীট | MSDS |
আর-বাক্যাংশ | আর২২, আর৩৬, আর৩৭, আর৪৫ |
এস-বাক্যাংশ | এস৪৫, এস৫৩ |
সম্পর্কিত যৌগ | |
সম্পর্কিত যৌগ
|
acetamide, dithioacetic acid |
সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা ছাড়া, পদার্থসমূহের সকল তথ্য-উপাত্তসমূহ তাদের প্রমাণ অবস্থা (২৫ °সে (৭৭ °ফা), ১০০ kPa) অনুসারে দেওয়া হয়েছে। | |
যাচাই করুন (এটি কি ?) | |
তথ্যছক তথ্যসূত্র | |
গবেষণা
সম্পাদনাপশুদের উপর পরীক্ষামূলক গবেষণায় দেখা গেছে যে থায়োঅ্যাসিটামাইড তীব্র এবং পুরাতন যকৃতের রোগ (ফাইব্রোসিস এবং সিরোসিস) -কে প্রভাবিত করে। পরীক্ষাগারে ইঁদুরের উপর থায়োঅ্যাসিটামাইড প্রয়োগ করে দেখা গেছে যে তার শরীরে হেপাটিক এনসেফালোপ্যাথি, বিপাকীয় অ্যাসিডোসিস, ট্রান্সমিনাসের স্তর বৃদ্ধি, অস্বাভাবিক কোগুলোপ্যাথি এবং সেন্ট্রিওলোবুলার নেক্রোসিস বৃদ্ধি করে যা ক্রনিক লিভার রোগের প্রধান বৈশিষ্ট্য। তাই অনুমান করা হয় যে মানব শরীরেও, বিশেষত যকৃতের রোগে থায়োঅ্যাসিটামাইডের নেতিবাচক প্রভাব পরতে পারে।[২]
রাসায়নিক সমন্বয়
সম্পাদনাথায়োঅ্যাসিটামাইড সালফাইড আয়নের পরিস্থিতি উৎস হিসাবে ধ্রুপদী পদ্ধতিতে গুণগত অজৈব বিশ্লেষণে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। সুতরাং, থায়োঅ্যাসিটামাইড অনেক ধাতব ক্যাটায়ন (ধনাত্মক আধানযুক্ত আয়ন)-এর জলীয় দ্রবণগুলির সাথে সম্পর্কিত ধাতব সালফাইড সরবরাহ করে:
- M2+ + CH3C(S)NH2 + H2O → MS + CH3C(O)NH2 + 2 H+ (M = Ni, Pb, Cd, Hg)
মৃদু ট্রাইভ্যালেন্ট (তিনটি সমযোজী বন্ধনযুক্ত পরমানু) ক্যাটায়ন (As3+, Sb3+, Bi3+) এবং মোনোভ্যালেন্ট (একটি সমযোজী বন্ধনযুক্ত পরমানু) ক্যাটায়ন (Ag+, Cu+) -এর ক্ষেত্রে এই অধঃক্ষেপণ লক্ষ্য করা যায়।
প্রস্তুতি
সম্পাদনাফসফরাস পেন্টাসালফাইডের সঙ্গে অ্যাসিটামাইড যোগ করে থায়োঅ্যাসিটামাইড প্রস্তুত করা হয়। নিম্নলিখিত বিক্রিয়ায় তার বিশদ বিবরন দেওয়া হয়েছে,[৩]
- CH3C(O)NH2 + 1/4 P4S10 → CH3C(S)NH2 + 1/4 P4S6O4
গঠন
সম্পাদনাথায়োঅ্যাসিটামাইড অনুর C2NH2S অংশটি প্ল্যানার (কোন অনুর অন্তর্গত কিছু বা সমস্ত পরমানু যখন একই সমতলে অবস্থান করে তখন সেই পরমানুদের প্ল্যানার বলা হয়।); দুটি কার্বন পরমানু বা C-C -এর মধ্যবর্তী দূরত্ব ১.৫০ অ্যামস্ট্রং, একটি কার্বন ও সালফার পরমানু বা C-S -এর মধ্যবর্তী দূরত্ব ১.৬৮ অ্যামস্ট্রং এবং একটি কার্বন ও নাইট্রোজেন পরমানু বা C-N -এর মধ্যবর্তী দূরত্ব ১.৩১ অ্যামস্ট্রং। লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে কার্বন-কার্বন পরমানুর মধ্যবর্তী দুরত্বের তুলনায় কার্বন-সালফার এবং কার্বন-নাইট্রোজেন পরমানুর মধ্যবর্তী দূরত্ব অপেক্ষাকৃত কম। এর কারণ হল এদের মধ্যে একাধিক বন্ধন বর্তমান।[১]
সতর্কতা
সম্পাদনাথায়োঅ্যাসিটামাইড একটি ২বি শ্রেণিভুক্ত কারসিনোজেন (এমন একটি পদার্থ যা মানবশরীরে ক্যান্সার বা কর্কট রোগ উতপাদন করতে পারে)। তাই এর ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন হওয়া বিশেষ প্রয়োজন। পরীক্ষা করে দেখা গেছে কোন প্রাণী থায়োঅ্যাসিটামাইড -এর সংস্পর্শে এলে যে তাদের শরীরে হেপাটোটক্সিসিটি বা যকৃৎ -এ বিষক্রিয়া হতে পারে। ইঁদুরের শরীরে পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, একটি পূর্ণবয়স্ক ইঁদুরের শরীরে থায়োঅ্যাসিটামাইড জনিত বিষক্রিয়ার পরিমাণ, প্রতি কেজিতে ৩০১ মিলিগ্রাম অথবা ৩০১ মিলিগ্রা./কেজি অপরপক্ষে অপরিনতবয়স্ক ইঁদুরের শরীরে থায়োঅ্যাসিটামাইড জনিত বিষক্রিয়ার পরিমান, প্রতি কেজিতে ৩০০ মিলিগ্রাম অথবা ৩০০ মিলিগ্রা./কেজি যা পূর্ণবয়স্ক ইঁদুরের প্রায় সমান সমান।[৪] এর ফলে বোঝা যায় যে থায়োঅ্যাসিটামাইড -এর প্রভাবে প্রাণীদের শরীরে আভ্যন্তরীণ কিছু পরিবর্তন হয়। এই পরিবর্তন বেশিরভাগই শরীরের রাসায়নিক উপাদান বা উৎসেচক সম্পর্কিত; অর্থাৎ থায়োঅ্যাসিটামাইড -এর প্রভাবে প্রাণীদের শরীরে উতসেচকের মাত্রার পরিবর্তন ঘটে যার মধ্যে সিরাম অ্যালানাইন ট্রান্সমিনিজ, এস্পারেট ট্রান্সমিনিজ এবং এস্পার্টিক অ্যাসিডের স্তরের পরিবর্তন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।[৫] এর ফলেই থায়োঅ্যাসিটামাইড ব্যবহারের ফলে প্রাণী শরীরে ক্যান্সার, যকৃৎ সম্পর্কিত রোগ উৎপাদন হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই থায়োঅ্যাসিটামাইড -এর ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত এবং এর পরিমিত ব্যবহার হওয়া প্রয়োজন।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ Trevor W. Hambley, David E. Hibbs, Peter Turner, Siân. T. Howard, Michael B. Hursthouse (২০০২)। "Insights into Bonding and Hydrogen Bond Directionality in Thioacetamide from the Experimental Charge Distribution"। J. Chem. Soc., Perkin Trans. (2): 235–239। ডিওআই:10.1039/B109353C।
- ↑ Dwivedi DK, Jena GB (২০১৮)। "Glibenclamide protects against thioacetamide-induced hepatic damage in Wistar rat: investigation on NLRP3, MMP-2, and stellate cell activation"। Naunyn-Schmiedeberg's Archives of Pharmacology। 391 (11): 1257–1274। এসটুসিআইডি 51890984। ডিওআই:10.1007/s00210-018-1540-2। পিএমআইডি 30066023।
- ↑ Schwarz, G. (১৯৪৫)। "2,4-Dimethylthiazole"। অর্গানিক সিন্থেসিস। 25: 35। ; Collective Volume, 3, পৃষ্ঠা 332
- ↑ "HSDB: THIOACETAMIDE CASRN: 62-55-5"। Hazardous Substances Data Bank।
- ↑ Ali, S.; Ansari, K. A.; Jafry, M. A.; Kabeer, H.; Diwakar, G. (২০০০)। "Nardostachys jatamansi protects against liver damage induced by thioacetamide in rats"। Journal of Ethnopharmacology। 71 (3): 359–363। ডিওআই:10.1016/S0378-8741(99)00153-1। পিএমআইডি 10940571।
- "Thioacetamide (Sulfo amine)"। Chemical Land 21। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০০৬।