থাইল্যান্ড

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি রাষ্ট্র
(থাইল্যান্ডের ভাষা থেকে পুনর্নির্দেশিত)

থাইল্যান্ড[] (থাই: ประเทศไทย, râat-chá-aa-naa-jàk tai, রাত্ চা আ- না- জাক্ তাই), যার ঐতিহাসিক নাম শ্যামদেশ বা সিয়াম[][১০][১১] এবং দাপ্তরিক নাম থাই রাজ্য, হলো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ৫,১৩,১২০ বর্গকিলোমিটার (১,৯৮,১২০ মা)ইল জুড়ে বিস্তৃত ৭ কোটি জনসংখ্যার একটি দেশ।[] এর উত্তরে মিয়ানমারলাওস, পূর্বে লাওসকম্বোডিয়া, দক্ষিণে থাইল্যান্ড উপসাগরমালয়েশিয়া এবং পশ্চিমে আন্দামান সাগরমিয়ানমার অবস্থিত। এছাড়া দক্ষিণ-পূর্বে ভিয়েতনামের সাথে এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে ইন্দোনেশিয়াভারতের সাথে থাইল্যান্ডের সামুদ্রিক সীমান্ত ভাগ করে। থাইল্যান্ডে একাধিক অভ্যুত্থানসামরিক একনায়কতন্ত্রের অভিজ্ঞতা লাভ করেছে। ২০১৯ সাল থেকে থাইল্যান্ড নামমাত্র একটি সংসদীয় সাংবিধানিক রাজতন্ত্র। তবে বাস্তবে সংবিধানের কাঠামোগত সুবিধাগুলো ক্ষমতায় সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণকে সুনিশ্চিত করেছে।[১২] ব্যাংকক দেশটির রাজধানী ও বৃহত্তম শহর

থাই রাজ্য

  • ราชอาณาจักรไทย (থাই)
  • Ratcha-anachak Thai
জাতীয় সঙ্গীত: เพลงชาติไทย
ফ্লেং চাৎ তাই

রাজকীয় সঙ্গীতสรรเสริญพระบารมี
“ফ্লেং সান্সোয়েন ফ্রা বারামি”
 থাইল্যান্ড-এর অবস্থান (সবুজ)

– এশিয়া-এ (হালকা সবুজ & গাঢ় ধূসর)
– আসিয়ান-এ (হালকা সবুজ)

রাজধানী
ও বৃহত্তম নগরী বা বসতি
ব্যাংকক
১৩°৪৫′ উত্তর ১০০°২৯′ পূর্ব / ১৩.৭৫০° উত্তর ১০০.৪৮৩° পূর্ব / 13.750; 100.483
সরকারি ভাষাথাই[]
কথ্যভাষা
নৃগোষ্ঠী
(২০১৯)[]
ধর্ম
(২০২৩)[]
জাতীয়তাসূচক বিশেষণথাই
সরকারএককেন্দ্রিক সংসদীয় অর্ধগণতান্ত্রিক[] সাংবিধানিক রাজতন্ত্র
মহা ভজিরালঙ্কম
পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা
আইন-সভাজাতীয় আইনসভা
সিনেট
প্রতিনিধি সভা
প্রতিষ্ঠা
১২৩৮–১৪৪৮
১৩৫১–১৭৬৭
১৭৬৭–১৭৮২
• রাত্তানাকোসিন রাজ্য
৬ই এপ্রিল ১৭৮২
২৪শে জুন ১৯৩২
৬ই এপ্রিল ২০১৭
আয়তন
• মোট
৫,১৩,১২০ কিমি (১,৯৮,১২০ মা) (৫০শ)
• পানি (%)
০.৪ (২,২৩০ কিমি)
জনসংখ্যা
• ২০২১ আনুমানিক
নিরপেক্ষ হ্রাস ৬৬,১৭১,৪৩৯[] (২০শ)
• ২০১০ আদমশুমারি
৬৪,৭৮৫,৯০৯[] (২১শ)
• ঘনত্ব
১৩২.১/কিমি (৩৪২.১/বর্গমাইল) (৮৮শ)
জিডিপি (পিপিপি)২০২২ আনুমানিক
• মোট
বৃদ্ধি $১.৪৭৫ ট্রিলিয়ন[] (২৩শ)
• মাথাপিছু
বৃদ্ধি $২১,০৫৭[] (৭৭শ)
জিডিপি (মনোনীত)২০২২ আনুমানিক
• মোট
বৃদ্ধি $৫২২.০১২ বিলিয়ন[] (২৩শ)
• মাথাপিছু
বৃদ্ধি $৭,৪৪৯[] (৮৯শ)
জিনি (২০১৯)৩৪.৯[]
মাধ্যম
মানব উন্নয়ন সূচক (২০১৯)০.৭৭৭[]
উচ্চ · ৭৯শ
মুদ্রাবাত (฿) (THB)
সময় অঞ্চলইউটিসি+৭ (ইউটিসি+০৭:০০)
তারিখ বিন্যাসদদ/মম/সসসস (থাসৌব)
গাড়ী চালনার দিকবাঁ
কলিং কোড+৬৬
ইন্টারনেট টিএলডি

থাইল্যান্ড একমাত্র দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় রাষ্ট্র যা যুদ্ধকালীন সময় ব্যতীত কখনও কোন ইউরোপীয় বা বিদেশী শক্তির নিয়ন্ত্রণে ছিল না। ১৭৮২ সাল থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত দেশটিতে পরম রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত ছিল। ১৯৩২ সালে বিদ্রোহীরা একটি অভ্যুত্থান ঘটায় এবং দেশে সাংবিধানিক রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে। তখন থেকে আজ পর্যন্ত থাইল্যান্ড বহু সামরিক ও বেসামরিক সরকারের অধীনে শাসিত হয়েছে। ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত দেশটি শ্যামদেশ (থাই: สยาม সায়াম্‌) নামে পরিচিত ছিল। ঐ বছর এর নাম বদলে থাইল্যান্ড রাখা হয়। তবে ১৯৪০-এর দশকের শেষের দিকে আবারও একে শ্যামদেশ নামে ডাকা হত। ১৯৪৯ সালে দ্বিতীয়বারের মত থাইল্যান্ড নামটি গ্রহণ করা হয়।

থাইল্যান্ডের মধ্যভাগে রয়েছে একটি বিস্তীর্ণ উর্বর সমভূমি। এই সমভূমির মধ্য দিয়ে দেশের প্রধান নদী চাও ফ্রায়া এবং এর শাখানদী ও উপনদীগুলি প্রবাহিত হয়েছে। এই অঞ্চলে দেশের ধান ও অন্যান্য ফসলের অধিকাংশের আবাদ হয়। মধ্যভাগের সমভূমির পশ্চিম, উত্তর ও পূর্ব দিক ঘিরে রেখেছে পাহাড় ও মালভূমি। পশ্চিমের পর্বতশ্রেণী দক্ষিণ দিকে মালয় উপদ্বীপে প্রসারিত হয়েছে। থাইল্যান্ডের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর ব্যাংকক চাও ফ্রায়া নদীর মোহনায় থাইল্যান্ড উপসাগরের তীরে অবস্থিত।

থাইল্যান্ডের জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ থাই জাতির মানুষ। এরা প্রায় সবাই থেরবাদী বৌদ্ধধর্ম পালন করে। থাইল্যান্ডে বসবাসকারী অন্যান্য জাতির মধ্যে আছে চীনা, মালয় ও আদিবাসী পাহাড়ি জাতি, যেমন মং ও কারেন। থাইল্যান্ডের পরিশীলিত ধ্রুপদী সঙ্গীতনৃত্য এবং লোকশিল্প বিখ্যাত। কৃষিপ্রধান দেশ হলেও ১৯৮০-র দশক থেকে থাইল্যান্ডের অর্থনীতির দ্রুত উন্নতি ঘটছে।

ব্যুৎপত্তি

সম্পাদনা

ইতিহাস

সম্পাদনা

বান চিয়াং সংস্কৃতির সময় থেকেই থাইল্যান্ডে বিভিন্ন স্থানীয় সংস্কৃতি বিরাজ করছিল। তবে ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এর সংস্কৃতিতে ভারত, চীন এবং অন্যান্য দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় প্রতিবেশীর সংস্কৃতির প্রভাব পড়েছে। প্রথম সিয়ামিজ/থাই রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করা হয় বৌদ্ধ সুখোথাই (থাই: สุโขทัย সুখোঠাই, অর্থাৎ "সুখোদয়") সাম্রাজ্যকে, যার সূচনা হয় ১২৩৮ সালে। চতুর্দশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে বৃহত্তর সিয়ামিজ সাম্রাজ্য আয়ুত্থাইয়া (থাই: อยุธยา আয়ুট্‌ঠায়া, মূলতঃ অয়ুধ্যা) প্রাধান্য লাভ করে। ১৪৩১ সালে সিয়ামিজ সৈন্য কর্তৃক অ্যাংকর লুণ্ঠনের পর অ্যাংকরের অনেক হিন্দু প্রথা ও আচার-অনুষ্ঠান সিয়ামের সংস্কৃতির অংশ হয়ে পড়ে।

১৭৬৭ সালে বর্মীদের হাতে আয়ুত্থাইয়ার পতনের পর কিছুকাল রাজা তাকসিনের (থাই: ตากสิน টাক্‌সিন্‌) অধীনে থোনবুরি (থাই: ธนบุรี ঠোন্‌বুরি, অর্থাৎ "ধনপুর") থাইল্যান্ডের রাজধানী ছিলো। ১৭৮২ সালে রাজা প্রথম রাম চাকরি সাম্রাজ্যের রাজধানী হিসেবে ব্যাংকককে বেছে নেন।

ষোড়শ শতাব্দী থেকে থাইল্যান্ডে ইউরোপীয় শক্তিগুলির আগমন ঘটতে থাকে। তবে তাদের প্রচুর চাপ সত্ত্বেও থাইল্যান্ড দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একমাত্র দেশ যা কোন ইউরোপীয় শক্তির উপনিবেশে পরিণত হয়নি। এর প্রধান দু'টি কারণ হলঃ সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতকে থাইল্যান্ডে ধারাবাহিকভাবে যোগ্য শাসকের শাসন এবং ব্রিটিশফরাসিদের মধ্যকার শত্রুতার সুযোগ নেয়া। অবশ্য ইউরোপীয় চাপের কারণে তারা ঊনবিংশ শতকে বিভিন্ন সংস্কার করতে বাধ্য হয় এবং ব্রিটিশদের ব্যবসায়িক সুবিধার জন্য কিছু বড় ছাড় দিতে হয়। উদাহরণস্বরূপ, ১৯০৯ সালে অ্যাংলো-সিয়ামিজ চুক্তির ফলে তারা দক্ষিণের তিনটি প্রদেশ হারায় যা পরবর্তীতে মালয়েশিয়ার তিনটি উত্তর প্রদেশে পরিণত হয়।

১৯৩২ সালে একটি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের ফলে নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে থাইল্যান্ড জাপানের পক্ষ নেয়, তবে যুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রে পরিণত হয়। থাইল্যান্ড উপর্যুপরি বেশ কিছু সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যায়। ১৯৮০-এর দশকে তাদের গণতন্ত্রে উত্তরণ ঘটে। ২০০৬ সালের ১৯শে সেপ্টেম্বর সামরিক বাহিনী থাকসিন সিনাওয়াত্রার (থাই: ทักษิณ ชินวัตร ঠাক্‌সিন্‌ ছিন্নাওয়াট্‌ [tʰáksǐn tɕʰinnawát]) নির্বাচিত সরকারকে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত করে।

রাজনীতি এবং সরকার

সম্পাদনা

থাইল্যান্ড একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র। ১৯৯২ সাল থেকে ২০০৬-এর কু পর্যন্ত দেশটি একটি কার্যকর গণতন্ত্র হিসেবেই বিবেচিত হয়েছিল। ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে একটি বহুদলীয়, মুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশটিতে গণতন্ত্র পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হয়। থাইল্যান্ডের সংবিধানে রাজাকে খুব কম ক্ষমতাই দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি জাতীয় পরিচয় ও ঐক্যের প্রতীক। রাজা ভূমিবল অতুল্যতেজ (থাই: ภูมิพลอดุลยเดช ফুমিফোন্‌ আটুন্‌য়াডেট্‌")১৯৪৬ সাল থেকে তার মৃত্যু (অক্টোবর ২০১৬ সাল) অবধি রাজপদে অধিষ্ঠিত ছিলেন এবং জনগণের উপর তাঁর বিরাট প্রভাব রয়েছে। তিনি কখনও কখনও রাজনৈতিক সংকট মীমাংসায় এগিয়ে আসতেন। তার পুত্র ভাজিরালংকর্ণ (বা রামা দশম) রাজপদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন।

২০০৭ সালের সংবিধান অনুযায়ী থাইল্যান্ডের জাতীয় আইনসভা দুইটি কক্ষে বিভক্ত - সিনেট বা উচ্চকক্ষ এবং প্রতিনিধিসভা বা নিম্নকক্ষ। উচ্চকক্ষের সদস্যসংখ্যা ১৫০; এদের মধ্যে ৭৬ জন জনগণের সরাসরি ভোটে প্রতি প্রদেশ থেকে ১ জন করে নির্বাচিত হয়ে আসেন। বাকী ৭৪ জন সিনেট সদস্য নির্বাচন কমিশনের তৈরি করা একটি তালিকা থেকে বিচারক ও ঊর্ধ্বতন অফিসারদের দ্বারা বাছাই হন। নিম্নকক্ষে ৪৮০ জন সদস্য, এবং এদের মধ্যে ৪০০ জন থাইল্যান্ডের বিভিন্ন জেলা ও নির্বাচনী এলাকা থেকে সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন। বাকীদেরকে বিভিন্ন দলের তৈরি করা তালিকা থেকে আনুপাতিক হারে বাছাই করা হয়।

থাইল্যান্ডের আইন ব্যবস্থাতে ঐতিহ্যবাহী থাই এবং পশ্চিমা আইনের সম্মিলন ঘটেছে। সংবিধান অনুসারে সাংবিধানিক আদালত হল আপিল বিভাগের সর্বোচ্চ আদালত। বিচারক, সংসদীয় নেতা এবং ঊর্ধ্বতন নিরপেক্ষ কর্মকর্তাদের একটি কমিটি সাংবিধানিক আদালতের সদস্যদের মনোনয়ন দেন। সিনেট তাদের মনোনয়ন নিশ্চিত করে এবং রাজা তাদেরকে কাজে নিয়োগ দেন। বিচার বিভাগের আদালতগুলো ফৌজদারী ও দেওয়ানী মামলাগুলি পরিচালনা করে। এগুলি কোর্ট অভ ফার্স্ট ইনস্ট্যান্স, কোর্ট অভ আপিল্‌স এবং সুপ্রিম কোর্ট --- এই তিন স্তরে বিভক্ত। থাইল্যান্ডের দক্ষিণ সীমান্তবর্তী অঞ্চলে, যেখানে মুসলমানেরা সংখ্যাগুরু, সেখানে প্রাদেশিক ইসলামী কমিটিসমূহ সীমত পরিসরে পারিবারিক, বিবাহ ও বিবাহবিচ্ছেদ সংক্রান্ত শালিশ পরিচালনা করতে পারে।

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের গভর্নর জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন। কিন্তু থাইল্যান্ডের বাকী ৭৫টি প্রদেশের গভর্নর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নিযুক্ত হন।

অবকাঠামো

সম্পাদনা

প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ

সম্পাদনা
প্রদেশ ছয়-অঞ্চল (ভৌগোলিক) চার-অঞ্চল (রাজনৈতিক) ছয়-অঞ্চল (আবহবিদ্যাগত) পাঁচ-অঞ্চল (পর্যটন)
আমনাত চারোয়েন, বুয়েঙ্গ কান, বুরীরাম, চাইয়াফুম, কালাসিন, খোন কাইন, লোই, মহা সারাখাম, মুক্ডাহান, নাখোন ফানোম, নাখোন রাটচাসিমা, নং বুয়া লাম্ফু, নংখাই, রই এট, সাকন নাখন, সি সা কেত, সুরীন, উবোন রাতচাথানি, উদন থানি, ইয়াসোথন উত্তর-পূর্ব উত্তর-পূর্ব উত্তর-পূর্ব উত্তর-পূর্ব
চিয়াং মাই, চিয়াং রাই, ল্যাম্পাং, লামফুন, মে হং সন, নান, ফায়াও, ফ্রায়, উত্তরাদিত উত্তর উত্তর উত্তর উত্তর
টাক পশ্চিম
সুখোথাই, ফিতসানুলক, ফিচিট, কামফায়েং ফেট, ফেচাবুন মধ্য
নাখোন সাভান, উথাই থানি মধ্য
আং থং, চৈনাত, Phra Nakhon Si Ayutthaya, ব্যাংকক, Lop Buri, Nakhon Pathom, Nonthaburi, Pathum Thani, Samut Prakan, Samut Sakhon, Samut Songkhram, Saraburi, Sing Buri, Suphan Buri মধ্য মধ্য
নাখোন নায়োক পূর্ব
Chachoengsao, Chanthaburi, চোন বুড়ি, প্রাচীন বুড়ি, Rayong, Sa Kaeo, Trat পূর্ব পূর্ব
Kanchanaburi, Ratchaburi পশ্চিম মধ্য মধ্য
Phetchaburi, Prachuap Khiri Khan দক্ষিণ, পূর্ব উপকূল
Chumphon, Nakhon Si Thammarat, Narathiwat, Pattani, Phatthalung, Songkhla, Surat Thani, Yala দক্ষিণ দক্ষিণ দক্ষিণ
ক্রাবি, Phang Nga, ফুকেট, Ranong, সাতুন, Trang দক্ষিণ, পশ্চিম উপকূল

শাসন ব্যবস্থ্যার সুবিধার জন্য থাইল্যান্ড কে ৭৬ প্রদেশে ভাগ করা হয়েছে।

 
ব্যাংকক

থাইল্যান্ড এর ৫,১৪,০০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা যা মূল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যভাগে পরেছে। দেশটির এই ভৌগোলিক অবস্থান জাতির সামাজ এবং সংস্কৃতিকে ভিষণভাবে প্রভাবিত করেছে-দেশটি এশিয়া থেকে মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুর যাওয়ার একমাত্র পথ নিয়ন্ত্রণ করে।

৫১৪,০০০ বর্গকিলোমিটার এলাকাবিশিষ্ট থাইল্যান্ডকে ভৌগোলিকভাবে কয়েকটি অঞ্চলে ভাগ করা যায়। দেশের উত্তরাঞ্চল পাহাড়ি, সর্বোচ্চ শিখর দোই ইন্থাননের উচ্চতা ২,৫৭৬ মিটার (৮,৪৫১ ফুট)। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে রয়েছে খোরাত মালভূমি, যার পূর্বসীমায় দিয়ে বয়ে চলেছে মেকং নদী। দেশের মধ্যাঞ্চলের বৃহদাংশ জুড়ে আছে চাও ফ্রায়া নদীর প্রধানত সমতল উপত্যকা। দক্ষিণ দিকে সরু ক্রা যোজক মালয় উপদ্বীপে বিস্তৃত হয়েছে।

এখানকার জলবায়ু বিষুবীয় এবং মৌসুমি বায়ু দ্বারা প্রভাবিত। মধ্য মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিম উষ্ণ, আর্দ্র মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয়, আবার নভেম্বর থেকে মধ্য মার্চ পর্যন্ত উত্তর-পূর্ব শুষ্ক, শীতল মৌসুমি বায়ুর প্রভাব দেখা যায়। দক্ষিণাঞ্চলের আবহাওয়া সবসময়ই উষ্ণ ও আর্দ্র থাকে।

অর্থনীতি

সম্পাদনা

দেশের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য মূলত পাট্টায়া শহরের নিকটবর্তী লায়েম চাবাঙ বন্দরের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।

এখানে ঔষুধ-পত্রের দাম বিশ্বে সর্বনিম্ন।

জনমিতি

সম্পাদনা

থাই ভাষার প্রমিত রূপ থাইল্যান্ডের সরকারি ভাষা। এই প্রমিত থাই ভাষাতে এখানকার প্রায় ৪০% লোক কথা বলেন। এছাড়া থাই ভাষার অন্যান্য উপভাষায় আরও প্রায় ৫০% লোক কথা বলেন। থাইল্যান্ডে আরও প্রায় ৭০টি ভাষা প্রচলিত। এদের মধ্যে দক্ষিণ মিন ভাষা (চীনা ভাষার একটি উপভাষা, যার বক্তাসংখ্যা প্রায় ১০ লাখ), মালয় ভাষা (বক্তাসংখ্যা প্রায় ২৪ লাখ) এবং খ্মের ভাষা (বক্তাসংখ্যা প্রায় ১০ লাখ) উল্লেখযোগ্য। আন্তর্জাতিক কর্মকাণ্ডে ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা হয়।

থাইল্যান্ডে ধর্ম (২০২৩)

[১৩]

  ইসলাম (৫%)
  ধর্মহীন (১%)
  অঘোষিত (১%)

বৌদ্ধধর্ম থাইল্যান্ডের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদাসম্পন্ন ধর্ম।[১৪] দেশটির সবচেয়ে প্রচলিত ধর্ম হল থেরবাদ বৌদ্ধধর্ম, যা থাই আত্মপরিচয় ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। এদেশে বৌদ্ধধর্মে সক্রিয় অংশগ্রহণ বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। থাইল্যান্ডে চীনের পর বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক সংখ্যক বৌদ্ধ রয়েছে।[১৫] ২০০০ সালের আদমশুমারি অনুসারে, ২০১০ সালে দেশটির ৯৪.৬% ও ৯৩.৫৮% জনগণ নিজেদের থেরবাদ ঐতিহ্যের বৌদ্ধ হিসাবে আত্মপরিচয় দিয়েছে।

 
থেরবাদ বৌদ্ধধর্মের সামানেরা, থাইল্যান্ডের সর্বাধিক অনুশীলিত ধর্ম।

মুসলিমরা ২০১৮ সালে জনসংখ্যার ৫.৪% নিয়ে গঠিত থাইল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় গোষ্ঠী।[১৬] ইসলাম বেশিরভাগই দেশের দক্ষিণতম প্রদেশগুলিতে কেন্দ্রীভূত: পাত্তানি, ইয়ালা, সাতুন, নারাথিওয়াত ও সোংখ্লা চুমফোনের অংশবিশেষ, যেগুলো প্রধানত মালয় জাতিগোষ্ঠীসুন্নি মুসলিম অধ্যুষিত। খ্রিস্টানরা ২০১৮ সালে জনসংখ্যার ১.১৩ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করেছিল, বাকি জনসংখ্যা হিন্দুশিখধর্মাবলম্বীদের নিয়ে গঠিত, যারা বেশিরভাগই দেশের শহরগুলোতে বসবাস করে। থাইল্যান্ডে একটি ছোট কিন্তু ঐতিহাসিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ ইহুদি সম্প্রদায়ও রয়েছে যারা ১৭শ শতকে এসেছিল। এসেছে।

থাই সংবিধান কোনো সরকারি ধর্ম ঘোষণা করে না এবং ধর্মের স্বাধীনতা প্রদান করে। এমনকি কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন ধর্মীয় গোষ্ঠীকে নিবন্ধন করে না যেগুলো গৃহীত হয়নি এবং ধর্মপ্রচারক, অনিবন্ধিত ধর্মীয় সংগঠনের পাশাপাশি অবাধে কাজ করার অনুমতিপ্রাপ্ত মিশনারিদের সংখ্যাও সীমাবদ্ধ রাখে। ধর্মীয় বিশ্বাস বা চর্চার উপর ভিত্তি করে সামাজিক অপব্যবহারের বা বৈষম্যের কোন ব্যাপক রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।[১৭] থাই আইন আনুষ্ঠানিকভাবে পাঁচটি ধর্মীয় গোষ্ঠীকে স্বীকৃতি দেয়: বৌদ্ধ, মুসলিম, ব্রাহ্মণ-হিন্দু, শিখ ও খ্রিস্টান।[১৮] তবে কিছু আইন বৌদ্ধ রীতি থেকে অনুপ্রাণিত, যেমন ধর্মীয় পবিত্র দিনগুলোতে মদ বিক্রি নিষিদ্ধ করা।[১৯]

সংস্কৃতি

সম্পাদনা

আরও দেখুন

সম্পাদনা

রেফারেন্স

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Thailand", The World Factbook.
  2. John Draper; Joel Sawat Selway (জানুয়ারি ২০১৯)। "A New Dataset on Horizontal Structural Ethnic Inequalities in Thailand in Order to Address Sustainable Development Goal 10"Social Indicators Research141 (4): 284। এসটুসিআইডি 149845432ডিওআই:10.1007/s11205-019-02065-4। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ 
  3. "Global Religion – Religious Beliefs Across the World" (পিডিএফ)Ipsos। মে ২০২৩। ১২ মে ২০২৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০২৩ 
  4. "Thailandometers"। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০২২ 
  5. (থাই ভাষায়) National Statistics Office, "100th anniversary of population censuses in Thailand: Population and housing census 2010: 11th census of Thailand" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১২ জুলাই ২০১২ তারিখে. popcensus.nso.go.th.
  6. "Report for Selected Countries and Subjects"International Monetary Fund। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  7. "Gini Index"। World Bank। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২১ 
  8. "Human Development Report 2020" (পিডিএফ) (ইংরেজি ভাষায়)। United Nations Development Programme। ১৫ ডিসেম্বর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০২০ 
  9. "Siam"ডিকশনারী.কম। র‍্যান্ডম হাউজ। 
  10. "Siam definition and meaning"Collins English Dictionary। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০২০ 
  11. "Global Religion – Religious Beliefs Across the World" (পিডিএফ)Ipsos। মে ২০২৩। ১২ মে ২০২৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০২৩ 
  12. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Buddhism in Thai Constitution নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  13. "The Global Religious Landscape"। Pew Research Center। ডিসেম্বর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৫ নভেম্বর ২০১৮ 
  14. "US Department of State, Thailand"। State.gov। সংগ্রহের তারিখ ২৫ এপ্রিল ২০১০ 
  15. United States Bureau of Democracy, Human Rights and Labor. Thailand: International Religious Freedom Report 2007. The article incorporates text from this source, which is in the public domain.
  16. "2018 Report on International Religious Freedom: Thailand"US Department of State। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুন ২০২১ 
  17. "No alcohol sales today - Makha Bucha Day"Thaiger (ইংরেজি ভাষায়)। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০২১ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা
সরকারী
General information
ভ্রমণ
অন্যান্য


উদ্ধৃতি ত্রুটি: "lower-alpha" নামক গ্রুপের জন্য <ref> ট্যাগ রয়েছে, কিন্তু এর জন্য কোন সঙ্গতিপূর্ণ <references group="lower-alpha"/> ট্যাগ পাওয়া যায়নি